পরিচ্ছেদঃ পরকালের কাজে প্রতিযোগিতা করা এবং বরকতময় জিনিস অধিক কামনা করার বিবরণ

(৪৩৭) আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একদা আইয়ূব (আঃ) উলঙ্গ হয়ে গোসল করছিলেন। অতঃপর তাঁর উপর সোনার পঙ্গপাল পড়তে লাগল। আইয়ূব (আঃ) তা আঁজলা ভরে ভরে বস্ত্রে রাখতে আরম্ভ করলেন। সুতরাং তাঁর প্রতিপালক আযযা অজাল্ল তাঁকে ডাক দিলেন, হে আইয়ূব! তুমি যা দেখছ তা হতে কি আমি তোমাকে অমুখাপেক্ষী করে দিইনি? তিনি বললেন, অবশ্যই, তোমার ইজ্জতের কসম! কিন্তু আমি তোমার বরকত হতে অমুখাপেক্ষী নই।

وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ بَيْنَا أيُّوبُ يَغْتَسِلُ عُرْيَاناً فَخَرَّ عَلَيْهِ جَرَادٌ مِنْ ذَهَبٍ فَجَعَلَ أيُّوبُ يَحْثِي في ثَوْبِهِ فَنَادَاهُ رَبُّهُ عَزَّ وَجَلَّ : يَا أيُّوبُ ألَمْ أكُنْ أغْنَيتكَ عَمَّا تَرَى قَالَ : بَلَى وَعِزَّتِكَ وَلَكِنْ لاَ غِنى بِيْ عَن بَرَكَتِكَ رواه البخاري

وعن ابي هريرة عن النبي ﷺ قال بينا ايوب يغتسل عريانا فخر عليه جراد من ذهب فجعل ايوب يحثي في ثوبه فناداه ربه عز وجل يا ايوب الم اكن اغنيتك عما ترى قال بلى وعزتك ولكن لا غنى بي عن بركتك رواه البخاري

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ পরকালের কাজে প্রতিযোগিতা করা এবং বরকতময় জিনিস অধিক কামনা করার বিবরণ

(৪৩৮) উমার বিন খাত্ত্বাব (রাঃ) বলেন, একদা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে দান করতে আদেশ দিলেন। সে সময় আমার কাছে বেশ কিছু মাল ছিল। আমি মনে মনে বললাম, যদি কোনদিন আবূ বকরকে হারাতে পারি, তাহলে আজ আমি প্রতিযোগিতায় তাঁকে হারিয়ে ফেলব। সুতরাং আমি আমার অর্ধেক মাল নিয়ে এসে রাসূলুল্লাহর দরবারে হাযির হলাম। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, (এত মাল!) তুমি তোমার ঘরে পরিজনের জন্য কী রেখে এলে? উত্তরে আমি বললাম, অনুরূপ অর্ধেক রেখে এসেছি। আর এদিকে আবূ বকর তাঁর বাড়ির সমস্ত মাল নিয়ে হাযির হলেন। তাঁকে আল্লাহর নবী জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি তোমার পরিজনের জন্য ঘরে কী রেখে এলে? উত্তরে তিনি বললেন, আমি ঘরে তাদের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে রেখে এসেছি! তখনই মনে মনে বললাম যে, আবূ বকরের কাছে কোন প্রতিযোগিতাতেই আমি জিততে পারব না।

عَن عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رضى الله عَنه – قَالَ: أَمَرَنَا رَسُولُ اللهِ ﷺ يَوْمًا أَنْ نَتَصَدَّقَ فَوَافَقَ ذَلِكَ مَالاً عَندِى فَقُلْتُ الْيَوْمَ أَسْبِقُ أَبَا بَكْرٍ إِنْ سَبَقْتُهُ يَوْمًا فَجِئْتُ بِنِصْفِ مَالِى فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَا أَبْقَيْتَ لأَهْلِكَ قُلْتُ مِثْلَهُ قَالَ وَأَتَى أَبُو بَكْرٍ رضى الله عَنه - بِكُلِّ مَا عَندَهُ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَا أَبْقَيْتَ لأَهْلِكَ قَالَ أَبْقَيْتُ لَهُمُ اللهَ وَرَسُولَهُ قُلْتُ لاَ أُسَابِقُكَ إِلَى شَىْءٍ أَبَدًا

عن عمر بن الخطاب رضى الله عنه قال امرنا رسول الله ﷺ يوما ان نتصدق فوافق ذلك مالا عندى فقلت اليوم اسبق ابا بكر ان سبقته يوما فجىت بنصف مالى فقال رسول الله ﷺ ما ابقيت لاهلك قلت مثله قال واتى ابو بكر رضى الله عنه بكل ما عنده فقال له رسول الله ﷺ ما ابقيت لاهلك قال ابقيت لهم الله ورسوله قلت لا اسابقك الى شىء ابدا

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ পরকালের কাজে প্রতিযোগিতা করা এবং বরকতময় জিনিস অধিক কামনা করার বিবরণ

(৪৩৯) আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, একদা মুহাজেরীনদের একটি গরীবের দল আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিবেদন করে বলল, ধনীরা (বেহেশতের) সমস্ত উঁচু উঁচু মর্যাদা ও স্থায়ী সম্পদের মালিক হয়ে গেল। কারণ, তারা নামায পড়ে যেমন আমরা পড়ি, রোযা রাখে যেমন আমরা রাখি, কিন্তু তারা দান করে আমরা করতে পারি না, দাস মুক্ত করে আমরা করতে পারি না। (এখন তাদের সমান সওয়াব লাভের কৌশল আমাদেরকে বলে দিন।) আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি কি তোমাদেরকে এমন আমলের কথা বলে দেব না, যাতে তোমরা প্রতিযোগিতায় অগ্রণী লোকদের সমান হতে পার, তোমাদের পশ্চাদ্বর্তী লোকদের আগে আগে থাকতে পার এবং অনুরূপ আমল যে করে সে ছাড়া তোমাদের থেকে শ্রেষ্ঠ আর কেউ হতে না পারে?

সকলে বলল, অবশ্যই বলে দিন, হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেন, তোমরা প্রত্যেক নামাযের পর ৩৩ বার করে তাসবীহ, তাহমীদ ও তাকবীর পাঠ করবে। (মুহাজেরীনরা খোশ হয়ে ফিরে গেলেন। ওদিকে ধনীরা এ খবর জানতে পেরে তারাও এ আমল শুরু করে দিল।) মুহাজেরীনরা ফিরে এসে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের ধনী ভাইয়েরা এ খবর শুনে তারাও আমাদের মত আমল করতে শুরু করে দিয়েছে। (অতএব আমরা আবার পিছে থেকে যাব।) মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ হল আল্লাহর অনুগ্রহ, তিনি যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ করে থাকেন। (এতে তোমাদের করার কিছু নেই।)

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: إِنَّ فُقَرَاءَ الْمُهَاجِرِينَ أَتَوْا رَسُولَ اللهِ ﷺ فَقَالُوْا ذَهَبَ أَهْلُ الدُّثُورِ بِالدَّرَجَاتِ الْعُلَى وَالنَّعِيمِ الْمُقِيمِ فَقَالَ وَمَا ذَاكَ قَالُوْا يُصَلُّونَ كَمَا نُصَلِّى وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ وَيَتَصَدَّقُونَ وَلاَ نَتَصَدَّقُ وَيُعْتِقُونَ وَلاَ نُعْتِقُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ أَفَلاَ أُعَلِّمُكُمْ شَيْئًا تُدْرِكُونَ بِهِ مَنْ سَبَقَكُمْ وَتَسْبِقُونَ بِهِ مَنْ بَعْدَكُمْ وَلاَ يَكُوْنُ أَحَدٌ أَفْضَلَ مِنْكُمْ إِلاَّ مَنْ صَنَعَ مِثْلَ مَا صَنَعْتُمْ قَالُوْا بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ تُسَبِّحُونَ وَتُكَبِّرُونَ وَتَحْمَدُونَ دُبُرَ كُلِّ صَلاَةٍ ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ مَرَّةً فَرَجَعَ فُقَرَاءُ الْمُهَاجِرِينَ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ ﷺ فَقَالُوْا سَمِعَ إِخْوَانُنَا أَهْلُ الأَمْوَالِ بِمَا فَعَلْنَا فَفَعَلُوا مِثْلَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ ذَلِكَ فَضْلُ اللهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ

عن ابى هريرة قال ان فقراء المهاجرين اتوا رسول الله ﷺ فقالوا ذهب اهل الدثور بالدرجات العلى والنعيم المقيم فقال وما ذاك قالوا يصلون كما نصلى ويصومون كما نصوم ويتصدقون ولا نتصدق ويعتقون ولا نعتق فقال رسول الله ﷺ افلا اعلمكم شيىا تدركون به من سبقكم وتسبقون به من بعدكم ولا يكون احد افضل منكم الا من صنع مثل ما صنعتم قالوا بلى يا رسول الله قال تسبحون وتكبرون وتحمدون دبر كل صلاة ثلاثا وثلاثين مرة فرجع فقراء المهاجرين الى رسول الله ﷺ فقالوا سمع اخواننا اهل الاموال بما فعلنا ففعلوا مثله فقال رسول الله ﷺ ذلك فضل الله يوتيه من يشاء

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ পরকালের কাজে প্রতিযোগিতা করা এবং বরকতময় জিনিস অধিক কামনা করার বিবরণ

(৪৪০) আনাস (রাঃ) বলেন, তাঁর চাচা আনাস ইবনে নাযর (রাঃ) বদর যুদ্ধে অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি (আনাস ইবনে নাযর) বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রথম যুদ্ধে তাঁর সাথে শরীক হতে পারিনি। তাই মহান আল্লাহ যদি আমাকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে কোন যুদ্ধে শরীক হওয়ার সুযোগ দেন, তাহলে তিনি অবশ্যই দেখে নেবেন, আমি কী বীরত্ব সহকারে লড়াই করি। উহুদের যুদ্ধের দিন লোকেরা পরাস্ত হয়ে পালাতে শুরু করলে (তা দেখে) তিনি বললেন, হে আল্লাহ! এসব লোক অর্থাৎ, মুসলিমগণ যা করলো, আমি তার জন্য তোমার কাছে ওজর পেশ করছি এবং মুশরিকরা যা করলো, তার সাথে সম্পর্কহীনতা ও অসন্তুষ্টি প্রকাশ করছি।

এরপর তিনি তরবারি নিয়ে অগ্রসর হলেন। ইত্যবসরে সা’দ ইবনে মুআযের সাথে তাঁর দেখা হলে তিনি (আনাস ইবনে নাযর) তাঁকে বললেন, হে সা’দ, তুমি কোথায় পালাচ্ছ? আমি তো উহুদের অপর প্রান্ত থেকে জান্নাতের সুবাস-সুগন্ধি পাচ্ছি। এরপর তিনি গিয়ে যুদ্ধ করলেন এবং শাহাদত বরণ করলেন। তাঁর দেহে এত ক্ষতের চিহ্ন ছিলো যে, তাঁকে চেনা যাচ্ছিলো না। অবশেষে তাঁর বোন তাঁর দেহের তিল-চিহ্ন ও আঙ্গুল দেখে তাঁকে চিনতে পারলো। তাঁর দেহে আশিরও বেশী বর্শা, তির ও তরবারির আঘাতের চিহ্ন ছিলো।

عَن أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُ أَنَّ عَمَّهُ غَابَ عَن بَدْرٍ فَقَالَ غِبْتُ عَن أَوَّلِ قِتَالِ النَّبِيِّ ﷺ لَئِنْ أَشْهَدَنِي اللهُ مَعَ النَّبِيِّ ﷺ لَيَرَيَنَّ اللهُ مَا أُجِدُّ فَلَقِيَ يَوْمَ أُحُدٍ فَهُزِمَ النَّاسُ فَقَالَ اَللّٰهُمَّ إِنِّي أَعْتَذِرُ إِلَيْكَ مِمَّا صَنَعَ هَؤُلَاءِ يَعَني الْمُسْلِمِينَ وَأَبْرَأُ إِلَيْكَ مِمَّا جَاءَ بِهِ الْمُشْرِكُونَ فَتَقَدَّمَ بِسَيْفِهِ فَلَقِيَ سَعْدَ بْنَ مُعَاذٍ فَقَالَ أَيْنَ يَا سَعْدُ إِنِّي أَجِدُ رِيحَ الْجَنَّةِ دُونَ أُحُدٍ فَمَضَى فَقُتِلَ فَمَا عُرِفَ حَتَّى عَرَفَتْهُ أُخْتُهُ بِشَامَةٍ أَوْ بِبَنَانِهِ وَبِهِ بِضْعٌ وَثَمَانُونَ مِنْ طَعَنةٍ وَضَرْبَةٍ وَرَمْيَةٍ بِسَهْمٍ

عن انس رضي الله عنه ان عمه غاب عن بدر فقال غبت عن اول قتال النبي ﷺ لىن اشهدني الله مع النبي ﷺ ليرين الله ما اجد فلقي يوم احد فهزم الناس فقال اللهم اني اعتذر اليك مما صنع هولاء يعني المسلمين وابرا اليك مما جاء به المشركون فتقدم بسيفه فلقي سعد بن معاذ فقال اين يا سعد اني اجد ريح الجنة دون احد فمضى فقتل فما عرف حتى عرفته اخته بشامة او ببنانه وبه بضع وثمانون من طعنة وضربة ورمية بسهم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৪ পর্যন্ত, সর্বমোট ৪ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে