পরিচ্ছেদঃ দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা

মহান আল্লাহ বলেন,

وَلَمَّا رَأى الْمُؤْمِنُونَ الأَحْزَابَ قَالُوْا هَذَا مَا وَعَدَنَا اللهُ وَرَسُولُهُ وَصَدَقَ اللهُ وَرَسُولُهُ وَمَا زَادَهُمْ إِلاَّ إِيمَاناً وَتَسْلِيماً

অর্থাৎ, বিশ্বাসীরা যখন শত্রুবাহিনীকে দেখল তখন ওরা বলে উঠল, আল্লাহ ও তাঁর রসূল তো আমাদেরকে এই প্রতিশ্রুতিই দিয়েছেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূল সত্যই বলেছিলেন। এতে তো তাদের বিশ্বাস ও আনুগত্যই বৃদ্ধি পেল। (সূরা আহযাব ২২ আয়াত) তিনি অন্যত্রে বলেন,

الَّذِينَ قَالَ لَهُمُ النَّاسُ إِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُوا لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ إِيمَاناً وَقَالُوْا حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ فَانْقَلَبُوا بِنِعْمَةٍ مِنَ اللهِ وَفَضْلٍ لَمْ يَمْسَسْهُمْ سُوءٌ وَاتَّبَعُوا رِضْوَانَ اللهِ وَاللهُ ذُو فَضْلٍ عَظِيمٍ

অর্থাৎ, যাদেরকে লোকেরা বলেছিল যে, তোমাদের বিরুদ্ধে লোক জমায়েত হয়েছে। সুতরাং তোমরা তাদেরকে ভয় কর। কিন্তু এ (কথা) তাদের বিশ্বাস দৃঢ়তর করেছিল এবং তারা বলেছিল, আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি উত্তম কর্মবিধায়ক। তারপর তারা আল্লাহর নিয়ামত ও অনুগ্রহসহ ফিরে এসেছিল, কোন অনিষ্ট তাদেরকে স্পর্শ করেনি এবং আল্লাহ যাতে সন্তুষ্ট হয় তারা তারই অনুসরণ করেছিল। আর আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল। (সূরা আলে ইমরান ১৭৩-১৭৪ আয়াত)

তিনি আরো বলেন,

وَتَوَكَّلْ عَلَى الْحَيِّ الَّذِي لا يَمُوتُ

অর্থাৎ, তুমি তাঁর উপর নির্ভর কর যিনি চিরঞ্জীব, যাঁর মৃত্যু নেই। (সূরা ফুরক্বান ৫৮ আয়াত)

وَعَلَى اللهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ

অর্থাৎ, মু’মিনদের উচিত, কেবল আল্লাহর উপরই নির্ভর করা। (সূরা ইব্রাহীম ১১ আয়াত) তিনি আরো বলেন,

فَإِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى الله

অর্থাৎ, তুমি কোন সংকল্প গ্রহণ করলে আল্লাহর প্রতি নির্ভর কর। (নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর উপর নির্ভরশীলদেরকে ভালবাসেন।) (সূরা আলে ইমরান ১৫৯ আয়াত)। তিনি আল্লাহ বলেন,

وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللهِ فَهُوَ حَسْبُهُ

অর্থাৎ, যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর নির্ভর করবে তার জন্য তিনিই যথেষ্ট হবেন। (সূরা ত্বালাক ৩)

إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَاناً وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ

অর্থাৎ, বিশ্বাসী (মু’মিন) তো তারাই যাদের হৃদয় আল্লাহকে স্মরণ করার সময় ভীত হয় এবং যখন তাঁর আয়াত তাদের নিকট পাঠ করা হয়, তখন তা তাদের বিশ্বাস (ঈমান) বৃদ্ধি করে এবং তারা তাদের প্রতিপালকের উপরই ভরসা রাখে।

(একীন (দৃঢ়প্রত্যয়) ও তাওয়াক্কুল (আল্লাহর উপর ভরসা)র গুরুত্ব সম্বন্ধে আরো অনেক আয়াত রয়েছে। এ মর্মের হাদীসসমূহ নিম্নরূপ)


(১৯৬) ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার কাছে সকল উম্মত পেশ করা হল। আমি দেখলাম, কোন নবীর সাথে কতিপয় (৩ থেকে ৭ জন অনুসারী) লোক রয়েছে। কোন নবীর সাথে এক অথবা দুইজন লোক রয়েছে। কোন নবীকে দেখলাম তাঁর সাথে কেউ নেই। ইতোমধ্যে বিরাট একটি জামাআত আমার সামনে পেশ করা হল। আমি মনে করলাম, এটিই আমার উম্মত। কিন্তু আমাকে বলা হল যে, ’এটি হল মূসা ও তাঁর উম্মতের জামাআত। কিন্তু আপনি অন্য দিগন্তে তাকান।’ অতঃপর তাকাতেই আরও একটি বিরাট জামাআত দেখতে পেলাম। আমাকে বলা হল যে, ’এটি হল আপনার উম্মত। আর তাদের সঙ্গে রয়েছে এমন ৭০ হাজার লোক, যারা হিসাব ও আযাব ছাড়াই জান্নাতে প্রবেশ করবে।

এ কথা বলে তিনি উঠে নিজ গৃহে প্রবেশ করলেন। এদিকে লোকেরা ঐ জান্নাতী লোকদের ব্যাপারে বিভিন্ন আলোচনা শুরু করে দিল, যারা বিনা হিসাব ও আযাবে জান্নাত প্রবেশ করবে। কেউ কেউ বলল, ’সম্ভবতঃ ঐ লোকেরা হল তারা, যারা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবা।’ কিছু লোক বলল, ’বরং সম্ভবতঃ ওরা হল তারা, যারা ইসলামে জন্মগ্রহণ করেছে এবং আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করেনি।’ আরো অনেকে অনেক কিছু বলল। কিছু পরে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিকট বের হয়ে এসে বললেন, তোমরা কী ব্যাপারে আলোচনা করছ? তারা ব্যাপার খুলে বললে তিনি বললেন, ওরা হল তারা, যারা ঝাড়ফুঁক করে না, (একথাটি বুখারীতে নেই। তাছাড়া জিবরীল (আ.) ঝাড়ফুঁক করেছেন, ঝাড়ফুঁক করেছেন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। পক্ষান্তরে অন্য বর্ণনায় উক্ত কথার স্থলে ’দাগায় না’ কথা এসেছে।) ঝাড়ফুঁক করায় না এবং কোন জিনিসকে অশুভ লক্ষণ মনে করে না, বরং তারা কেবল আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখে।

এ কথা শুনে উক্কাশাহ ইবনে মিহসান উঠে দাঁড়ালেন এবং বললেন, ’(হে আল্লাহর রসূল!) আপনি আমার জন্য দু’আ করুন, যেন আল্লাহ আমাকে তাদের দলভুক্ত ক’রে দেন!’ তিনি বললেন, তুমি তাদের মধ্যে একজন। অতঃপর আর এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে বলল, ’আপনি আমার জন্যও দু’আ করুন, যেন আল্লাহ আমাকেও তাদের দলভুক্ত করে দেন।’ তিনি বললেন, উক্কাশাহ (এ ব্যাপারে) তোমার অগ্রগমন করেছে।

عَن ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ عُرِضَتْ عَلَيَّ الأُمَمُ فَرَأيْتُ النَّبيَّ ومَعَهُ الرُّهَيطُ وَالنَّبِيَّ وَمَعَهُ الرَّجُلُ وَالرَّجُلانِ وَالنبيَّ لَيْسَ مَعَهُ أَحَدٌ إِذْ رُفِعَ لي سَوَادٌ عَظيمٌ فَظَنَنْتُ أَنَّهُمْ أُمَّتِي فقيلَ لِي : هَذَا مُوسَى وَقَومُهُ ولكنِ انْظُرْ إِلَى الأُفُقِ فَنَظَرتُ فَإِذا سَوادٌ عَظِيمٌ فقيلَ لي : انْظُرْ إِلَى الأفُقِ الآخَرِ فَإِذَا سَوَادٌ عَظيمٌ فقيلَ لِي : هذِهِ أُمَّتُكَ وَمَعَهُمْ سَبْعُونَ ألفاً يَدْخُلُونَ الجَنَّةَ بِغَيرِ حِسَابٍ ولا عَذَابٍ ثُمَّ نَهَضَ فَدخَلَ مَنْزِلَهُ فَخَاضَ النَّاسُ في أُولئكَ الَّذِينَ يَدْخُلُونَ الجَنَّةَ بِغَيْرِ حِسَابٍ ولا عَذَابٍ فَقَالَ بَعْضُهُمْ : فَلَعَلَّهُمْ الَّذينَ صَحِبوا رسولَ الله ﷺ وَقالَ بعْضُهُمْ : فَلَعَلَّهُمْ الَّذِينَ وُلِدُوا في الإِسْلامِ فَلَمْ يُشْرِكُوا بِالله شَيئاً - وذَكَرُوا أشيَاءَ - فَخَرجَ عَلَيْهِمْ رَسُولُ الله ﷺ فَقَالَ مَا الَّذِي تَخُوضُونَ فِيهِ ؟ فَأَخْبَرُوهُ فقالَ هُمُ الَّذِينَ لاَ يَرْقُونَ وَلا يَسْتَرقُونَ وَلا يَتَطَيَّرُونَ وعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوكَّلُون فقامَ عُكَّاشَةُ ابنُ محصنٍ فَقَالَ : ادْعُ الله أنْ يَجْعَلني مِنْهُمْ فَقَالَ أنْتَ مِنْهُمْ ثُمَّ قَامَ رَجُلٌ آخَرُ فَقَالَ : ادْعُ اللهَ أنْ يَجْعَلنِي مِنْهُمْ فَقَالَ سَبَقَكَ بِهَا عُكَّاشَةُ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

عن ابن عباس رضي الله عنهما قال قال رسول الله ﷺ عرضت علي الامم فرايت النبي ومعه الرهيط والنبي ومعه الرجل والرجلان والنبي ليس معه احد اذ رفع لي سواد عظيم فظننت انهم امتي فقيل لي هذا موسى وقومه ولكن انظر الى الافق فنظرت فاذا سواد عظيم فقيل لي انظر الى الافق الاخر فاذا سواد عظيم فقيل لي هذه امتك ومعهم سبعون الفا يدخلون الجنة بغير حساب ولا عذاب ثم نهض فدخل منزله فخاض الناس في اولىك الذين يدخلون الجنة بغير حساب ولا عذاب فقال بعضهم فلعلهم الذين صحبوا رسول الله ﷺ وقال بعضهم فلعلهم الذين ولدوا في الاسلام فلم يشركوا بالله شيىا وذكروا اشياء فخرج عليهم رسول الله ﷺ فقال ما الذي تخوضون فيه فاخبروه فقال هم الذين لا يرقون ولا يسترقون ولا يتطيرون وعلى ربهم يتوكلون فقام عكاشة ابن محصن فقال ادع الله ان يجعلني منهم فقال انت منهم ثم قام رجل اخر فقال ادع الله ان يجعلني منهم فقال سبقك بها عكاشة متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা

(১৯৭) ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, ’আল্লাহুম্মা লাকা আসলামতু অবিকা আ-মানতু অআলাইকা তাওয়াক্কালতু অইলাইকা আনাবতু অবিকা খা-স্বামতু। আল্লাহুম্মা আউযু বিইয্‌যাতিকা লা ইলা-হা ইল্লা আন্তা আন তুযিল্লানী, আন্তাল হাইয়্যুল্লাযী লা য়্যামূত, অলজিন্নু অলইন্‌সু য়্যামূতূন।’ অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমি নিজকে তোমার নিকট সমর্পণ করলাম, তোমার প্রতি ঈমান আনলাম, তোমারই উপর ভরসা করলাম। হে আল্লাহ! তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করলাম, তোমারই ক্ষমতায় (শত্রুর বিরুদ্ধে) বিবাদ করলাম। হে আল্লাহ! তোমার ইযযতের অসীলায় আমি আশ্রয় চাচ্ছি—তুমি ছাড়া কেউ (সত্য) উপাস্য নেই—তুমি আমাকে পথভ্রষ্ট করো না। তুমি সেই চিরঞ্জীব, যে কখনো মরবে না এবং দানব ও মানবজাতি মৃত্যুবরণ করবে।

عَن ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا أيضاً : أنَّ رَسُولَ الله ﷺ كَانَ يَقُولُ اَللّٰهُمَّ لَكَ أَسْلَمْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْكَ أنَبْتُ وَبِكَ خَاصَمْتُ اَللّٰهُمَّ أعُوذُ بعزَّتِكَ لاَ إلهَ إلاَّ أَنْتَ أنْ تُضِلَّنيأَنْتَ الحَيُّ الَّذِي لاَ يَمُوتُ وَالجِنُّ والإنْسُ يَمُوتُونَ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ وهذا لفظ مسلم واختصره البخاري

عن ابن عباس رضي الله عنهما ايضا ان رسول الله ﷺ كان يقول اللهم لك اسلمت وبك امنت وعليك توكلت واليك انبت وبك خاصمت اللهم اعوذ بعزتك لا اله الا انت ان تضلنيانت الحي الذي لا يموت والجن والانس يموتون متفق عليه وهذا لفظ مسلم واختصره البخاري

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা

(১৯৮) ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতেই বর্ণিত, তিনি বলেন যে, ’হাসবুনাল্লাহু অনি’মাল অকীল’ কথাটি ইব্রাহীম (আঃ) তখন বলেছিলেন, যখন তাঁকে আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটি তখন বলেছিলেন যখন লোকেরা বলেছিল যে, ’(কাফের) লোকেরা তোমাদের মুকাবিলার জন্য সমবেত হয়েছে; ফলে তোমরা তাদেরকে ভয় কর।’ কিন্তু এ কথা তাদের ঈমানকে বাড়িয়ে দিল এবং তারা বলল, হাসবুনাল্লাহ্ অনি’মাল অকীল। অর্থাৎ, আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই উত্তম কর্মবিধায়ক।

অন্য এক বর্ণনায় ইবনে আব্বাস বলেন, আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার সময় ইব্রাহীম (আঃ) এর শেষ কথা ছিল, হাসবিয়াল্লাহ্ অনি’মাল অকীল।

عَن ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا أيضاً قَالَ : حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الوَكِيلُ قَالَهَا إِبرَاهيمُ ﷺ حِينَ أُلقِيَ في النَّارِ وَقَالَها مُحَمَّدٌ ﷺ حِينَ قَالُوْا إنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعوا لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ إيْماناً وَقَالُوْا : حَسْبُنَا اللهُ وَنعْمَ الوَكيلُ رواه البخاري وفي رواية لَهُ عَن ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ الله عَنهُما قَالَ : كَانَ آخِرَ قَولِ إبْرَاهِيمَ ﷺ حِينَ أُلْقِيَ في النَّارِ : حَسْبِي اللهُ وَنِعْمَ الوَكِيلُ

عن ابن عباس رضي الله عنهما ايضا قال حسبنا الله ونعم الوكيل قالها ابراهيم ﷺ حين القي في النار وقالها محمد ﷺ حين قالوا ان الناس قد جمعوا لكم فاخشوهم فزادهم ايمانا وقالوا حسبنا الله ونعم الوكيل رواه البخاري وفي رواية له عن ابن عباس رضي الله عنهما قال كان اخر قول ابراهيم ﷺ حين القي في النار حسبي الله ونعم الوكيل

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা

(১৯৯) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জান্নাতে এমন লোক প্রবেশ করবে, যাদের অন্তর হবে পাখীর অন্তরের মত।

(কারো নিকট এর অর্থ হল এই যে, তারা পাখীর মত আল্লাহর উপর নির্ভরশীল হবে। আর অনেকের নিকট এর অর্থ এই যে, (পাখীর অন্তরের মত) তাদের অন্তর নরম হবে।)

عَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ يَدْخُلُ الجَنَّةَ أَقْوامٌ أَفْئِدَتُهُمْ مِثلُ أَفْئِدَةِ الطَّيرِ رواه مسلم

عن ابي هريرة عن النبي ﷺ قال يدخل الجنة اقوام افىدتهم مثل افىدة الطير رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা

(২০০) জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে নাজ্দের (বর্তমানে রিয়ায অঞ্চল) দিকে জিহাদে রওনা হলেন। যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (বাড়ী) ফিরতে লাগলেন, তখন তিনিও তাঁর সঙ্গে ফিরলেন। (রাস্তায়) প্রচুর কাঁটাগাছ ভরা এক উপত্যকায় তাঁদের দুপুরের বিশ্রাম নেওয়ার সময় হল। সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (বিশ্রামের জন্য) নেমে পড়লেন এবং (সাহাবীগণও) গাছের ছায়ার খোঁজে তাঁরা বিক্ষিপ্ত হয়ে গেলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি বাবলার গাছের নীচে অবতরণ করলেন এবং তাতে স্বীয় তরবারি ঝুলিয়ে দিলেন, আর আমরা অল্পক্ষণের জন্য ঘুমিয়ে গেলাম।

অতঃপর হঠাৎ (আমরা শুনলাম যে,) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে ডাকছেন। সেখানে দেখলাম যে, একজন বেদুঈন তাঁর কাছে রয়েছে। তিনি বললেন, আমার ঘুমের অবস্থায় এই ব্যক্তি আমার তরবারি খুলে আমার উপর ধরে আছে। অতঃপর আমি যখন জাগলাম, তখন তরবারিখানি তার হাতে খুলা অবস্থায় দেখলাম। (তারপর) সে আমাকে বলল, ’আমা হতে তোমাকে (আজ) কে বাঁচাবে?’ আমি বললাম, ’আল্লাহ!’ এ কথা আমি তিনবার বললাম। তিনি তাকে কোন শাস্তি দিলেন না। অতঃপর তিনি বসে গেলেন। (অথবা সে বসে গেল।)

অন্য এক বর্ণনায় আছে জাবের (রাঃ) বলেন যে, আমরা ’যাতুর রিক্বা’তে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। অতঃপর (ফিরার সময়) যখন আমরা ঘন ছায়াবিশিষ্ট একটি গাছের কাছে এলাম, তখন তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য ছেড়ে দিলাম। (তিনি বিশ্রাম করতে লাগলেন।) ইতিমধ্যে একজন মুশরিক এল। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তরবারি গাছে ঝুলানো ছিল। তারপর সে তা (খাপ থেকে) বের করে বলল, ’তুমি আমাকে ভয় করছ?’ তিনি বললেন, না। সে বলল, ’তোমাকে আমার হাত থেকে কে বাঁচাবে?’ তিনি বললেন, আল্লাহ।

আবূ বকর ইসমাঈলীর ’সহীহ’ গ্রন্থের বর্ণনায় আছে, সে বলল, ’আমার হাত থেকে তোমাকে কে বাঁচাবে?’ তিনি বললেন, আল্লাহ। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর তার হাত থেকে তরবারিটি পড়ে গেল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তরবারিখানি তুলে নিয়ে বললেন, (এবার) তোমাকে আমার হাত থেকে কে বাঁচাবে? সে বলল, ’তুমি উত্তম তরবারিধারক হয়ে যাও।’ অতঃপর তিনি বললেন, তুমি কি সাক্ষ্য দিচ্ছ যে, আল্লাহ ছাড়া কেউ (সত্য) উপাস্য নেই এবং আমি আল্লাহর রসূল? সে বলল, ’না। কিন্তু আমি তোমার কাছে অঙ্গীকার করছি যে, তোমার বিরুদ্ধে কখনো লড়বো না। আর আমি সেই সম্প্রদায়েরও সাথ দেবো না, যারা তোমার বিরুদ্ধে লড়বে।’ সুতরাং তিনি তার পথ ছেড়ে দিলেন। অতঃপর সে তার সঙ্গীদের নিকট এসে বলল, ’আমি তোমাদের নিকটে সর্বোত্তম মানুষের কাছ থেকে এলাম।’

عَن جَابِرٍ أَنَّهُ غَزَا مَعَ النَّبِيِّ ﷺ قِبلَ نَجْدٍ فَلَمَّا قَفَلَ رَسُولُ الله ﷺ قَفَلَ معَهُمْ فَأَدْرَكَتْهُمُ القَائِلَةُ في وَادٍ كثير العِضَاه فَنَزَلَ رَسُول الله ﷺ وَتَفَرَّقَ النَّاسُ يَسْتَظِلُّونَ بالشَّجَرِ وَنَزَلَ رَسُولُ اللهِ ﷺ تَحتَ سَمُرَة فَعَلَّقَ بِهَا سَيفَهُ وَنِمْنَا نَوْمَةً فَإِذَا رسولُ الله ﷺ يَدْعونَا وَإِذَا عَندَهُ أعْرَابِيٌّ فَقَالَ إنَّ هَذَا اخْتَرَطَ عَلَيَّ سَيفِي وَأنَا نَائمٌ فَاسْتَيقَظْتُ وَهُوَ في يَدِهِ صَلتاً قَالَ : مَنْ يَمْنَعُكَ مِنِّي ؟ قُلْتُ : الله - ثلاثاً وَلَمْ يُعاقِبْهُ وَجَلَسَ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
وفي رواية قَالَ جَابِرٍ : كُنَّا مَعَ رَسُولِ الله ﷺ بذَاتِ الرِّقَاعِ فَإِذَا أَتَيْنَا عَلَى شَجَرَةٍ ظَلِيلَةٍ تَرَكْنَاهَا لِرَسُولِ الله ﷺ فجاء رَجُلٌ مِنَ المُشْركينَ وَسَيفُ رَسُول الله ﷺ معَلَّقٌ بالشَّجَرَةِ فَاخْتَرطَهُ فَقَالَ: تَخَافُنِي ؟ قَالَ لاَ فَقَالَ : فَمَنْ يَمْنَعُكَ مِنِّي ؟ قَالَ الله
وَفي رِوَايَةِ أبي بَكْرٍ الإسمَاعِيلِي في صَحِيحِه قَالَ : مَنْ يَمْنَعُكَ مِنِّي ؟ قَالَ اللهُ قَالَ : فَسَقَطَ السيفُ مِنْ يَدهِ فَأخَذَ رسولُ الله ﷺ السَّيْفَ فَقَالَ مَنْ يَمْنَعُكَ مني ؟ فَقَالَ : كُنْ خَيرَ آخِذٍ فَقَالَ تَشْهَدُ أنْ لا إلهَ إلاَّ الله وَأَنِّي رَسُول الله ؟ قَالَ : لاَ وَلَكنِّي أُعَاهِدُكَ أنْ لا أُقَاتِلَكَ وَلاَ أَكُونَ مَعَ قَومٍ يُقَاتِلُونَكَ فَخَلَّى سَبيلَهُ فَأَتَى أصْحَابَهُ فَقَالَ : جئتُكُمْ مِنْ عَند خَيْرِ النَّاسِ

عن جابر انه غزا مع النبي ﷺ قبل نجد فلما قفل رسول الله ﷺ قفل معهم فادركتهم القاىلة في واد كثير العضاه فنزل رسول الله ﷺ وتفرق الناس يستظلون بالشجر ونزل رسول الله ﷺ تحت سمرة فعلق بها سيفه ونمنا نومة فاذا رسول الله ﷺ يدعونا واذا عنده اعرابي فقال ان هذا اخترط علي سيفي وانا ناىم فاستيقظت وهو في يده صلتا قال من يمنعك مني قلت الله ثلاثا ولم يعاقبه وجلس متفق عليه وفي رواية قال جابر كنا مع رسول الله ﷺ بذات الرقاع فاذا اتينا على شجرة ظليلة تركناها لرسول الله ﷺ فجاء رجل من المشركين وسيف رسول الله ﷺ معلق بالشجرة فاخترطه فقال تخافني قال لا فقال فمن يمنعك مني قال الله وفي رواية ابي بكر الاسماعيلي في صحيحه قال من يمنعك مني قال الله قال فسقط السيف من يده فاخذ رسول الله ﷺ السيف فقال من يمنعك مني فقال كن خير اخذ فقال تشهد ان لا اله الا الله واني رسول الله قال لا ولكني اعاهدك ان لا اقاتلك ولا اكون مع قوم يقاتلونك فخلى سبيله فاتى اصحابه فقال جىتكم من عند خير الناس

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা

(২০১) উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি যথাযোগ্য ভরসা রাখ, তবে তিনি তোমাদেরকে সেই মত রুযী দান করবেন যেমন পাখীদেরকে দান করে থাকেন। তারা সকালে ক্ষুধার্ত হয়ে (বাসা থেকে) বের হয় এবং সন্ধ্যায় উদর পূর্ণ ক’রে (বাসায়) ফিরে।

عَن عُمَرَ قَالَ : سَمِعتُ رَسُولَ الله ﷺ يَقُولُ لَوْ أَنَّكُمْ تَتَوَكَّلُونَ عَلَى اللهِ حَقَّ تَوَكُّلِهِ لَرَزَقَكُمْ كَمَا يَرْزُقُ الطَّيْرَ تَغْدُو خِمَاصاً وَتَرُوحُ بِطَاناً رواه الترمذي وَقالَ حديث حسن

عن عمر قال سمعت رسول الله ﷺ يقول لو انكم تتوكلون على الله حق توكله لرزقكم كما يرزق الطير تغدو خماصا وتروح بطانا رواه الترمذي وقال حديث حسن

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা

(২০২) বারা ইবনে আযেব (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হে অমুক! তুমি যখন বিছানায় শোবে, তখন (এই দু’আ) পড়, যার অর্থঃ

হে আল্লাহ! আমি আমার আত্মা তোমাকে সঁপে দিলাম, আমার চেহারা তোমার দিকে ফিরিয়ে দিলাম, আমার ব্যাপার তোমাকে সঁপে দিলাম এবং আমার পিঠ তোমার দিকে লাগিয়ে দিলাম; তোমার (জান্নাতের) আগ্রহে ও (জাহান্নামের) ভয়ে। তুমি ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল ও পরিত্রাণস্থল নেই। আমি সেই কিতাবের প্রতি ঈমান আনলাম যেটি তুমি অবতীর্ণ করেছ এবং সেই রসূলের প্রতি যাঁকে তুমি পাঠিয়েছ।

(অবশেষে তিনি বলেন,) অতঃপর তুমি যদি সেই রাতে মৃত্যুবরণ কর, তাহলে তুমি ইসলামের উপর মৃত্যুবরণ করবে। আর যদি তুমি সকালে ওঠ তবে, তুমি (এর) উপকার পাবে।’’

বারা ইবনে আযেব থেকেই বুখারী ও মুসলিমের অন্য বর্ণনায় আছে, তিনি বলেন যে, আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যখন তুমি (রাতে শোবার জন্য) বিছানায় যাবে, তখন তুমি নামাযের মত ওযূ কর। তারপর ডানপাশে শুয়ে যাও এবং (উপরোক্ত দু’আ) পড়। পুনরায় তিনি বললেন, তুমি উপরোক্ত দু’আটি তোমার শেষ কথা কর। (অর্থাৎ, এই দু’আ পড়ার পর অন্য দু’আ পড়বে না বা কোন কথা বলবে না)।

عَنْ أَبيْ عُمَارَةَ البَرَاءِ بنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يَا فُلانُ إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ فَقُل : اَللّٰهُمَّ أسْلَمتُ نَفْسي إلَيْكَ وَوَجَّهتُ وَجْهِي إلَيْكَ وَفَوَّضتُ أَمْري إلَيْكَ وَأَلجأْتُ ظَهري إلَيْكَ رَغبَةً وَرَهبَةً إلَيْكَ لا مَلْجَأ وَلاَ مَنْجَا مِنْكَ إلاَّ إلَيْكَ آمنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أنْزَلْتَ وَنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ فَإِنَّكَ إِنْ مِتَّ مِنْ لَيلَتِكَ مِتَّ عَلَى الفِطْرَةِ وَإِنْ أصْبَحْتَ أَصَبْتَ خَيراً مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
وفي رواية في الصحيحين عَن البراءِ قَالَ : قَالَ لِي رَسُول الله ﷺإِذَا أَتَيْتَ مَضْجِعَكَ فَتَوَضَّأْ وُضُوءَكَ للصَّلاةِ ثُمَّ اضْطَجعْ عَلَى شِقِّكَ الأَيمَنِ وَقُلْ وذَكَرَ نَحْوَهُ ثُمَّ قَالَ : وَاجْعَلْهُنَّ آخِرَ مَا تَقُولُ

عن ابي عمارة البراء بن عازب رضي الله عنهما قال قال رسول الله ﷺ يا فلان اذا اويت الى فراشك فقل اللهم اسلمت نفسي اليك ووجهت وجهي اليك وفوضت امري اليك والجات ظهري اليك رغبة ورهبة اليك لا ملجا ولا منجا منك الا اليك امنت بكتابك الذي انزلت ونبيك الذي ارسلت فانك ان مت من ليلتك مت على الفطرة وان اصبحت اصبت خيرا متفق عليه وفي رواية في الصحيحين عن البراء قال قال لي رسول الله ﷺاذا اتيت مضجعك فتوضا وضوءك للصلاة ثم اضطجع على شقك الايمن وقل وذكر نحوه ثم قال واجعلهن اخر ما تقول

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা

(২০৩) আবূ বকর (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি মুশরিকদের পায়ের দিকে তাকালাম যখন আমরা (সওর) গুহায় (লুকিয়ে) ছিলাম এবং তারা আমাদের মাথার উপরে ছিল। অতঃপর আমি বললাম, ’হে আল্লাহর রসূল! যদি তাদের মধ্যে কেউ তার পায়ের নীচে তাকায়, তবে সে আমাদেরকে দেখে ফেলবে।’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আবূ বকর! সে দু’জন সম্পর্কে তোমার কী ধারণা, যাদের তৃতীয়জন আল্লাহ।

عَنْ أَبيْ بَكْرٍ الصِّدِّيقِ قَالَ : نَظَرتُ إِلَى أَقْدَامِ المُشْرِكينَ وَنَحنُ في الغَارِ وَهُمْ عَلَى رُؤُوسِنا فَقُلتُ : يَا رَسُولَ الله لَوْ أَنَّ أَحَدَهُمْ نَظَرَ تَحْتَ قَدَمَيهِ لأَبْصَرَنَا فَقَالَ مَا ظَنُّكَ يَا أَبا بَكرٍ بِاثنَيْنِ اللهُ ثَالِثُهُمَا مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

عن ابي بكر الصديق قال نظرت الى اقدام المشركين ونحن في الغار وهم على رووسنا فقلت يا رسول الله لو ان احدهم نظر تحت قدميه لابصرنا فقال ما ظنك يا ابا بكر باثنين الله ثالثهما متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা

(২০৪) উম্মে সালামা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বাড়ি থেকে বের হতেন, তখন (এই দু’আ) বলতেন—যার অর্থ, আল্লাহর নাম নিয়ে (বের হলাম), আমি আল্লাহর উপর ভরসা করলাম। হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি, আমি ভ্রষ্ট হই বা আমাকে ভ্রষ্ট করা হয়, আমার পদস্খলন হয় বা পদস্খলন করানো হয়, আমি অত্যাচারী হই অথবা অত্যাচারিত হই অথবা আমি মূর্খামি করি অথবা আমার প্রতি মূর্খামি করা হয়—এসব থেকে।

عَن أمِّ سَلَمَةَ رَضِي الله عَنها : أَنَّ النَّبيّ ﷺ كَانَ إِذَا خَرَجَ مِنْ بَيتِهِ قَالَ بِسْمِ اللهِ تَوَكَّلتُ عَلَى اللهِ اَللّٰهُمَّ إِنِّي أعُوذُ بِكَ أنْ أضِلَّ أَوْ أُضَلَّ أَوْ أَزِلَّ أَوْ أُزَلَّ أَوْ أظْلِمَ أَوْ أُظْلَمَ أَوْ أجْهَلَ أَوْ يُجْهَلَ عَلَيَّ

عن ام سلمة رضي الله عنها ان النبي ﷺ كان اذا خرج من بيته قال بسم الله توكلت على الله اللهم اني اعوذ بك ان اضل او اضل او ازل او ازل او اظلم او اظلم او اجهل او يجهل علي

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ উম্মু সালামাহ (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা

(২০৫) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি স্বীয় গৃহ থেকে বের হওয়ার সময় বলে, ’বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, অলা হাওলা অলা ক্বুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’ (অর্থাৎ, আল্লাহর উপর ভরসা করলাম। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া পাপ থেকে ফিরা এবং পুণ্য করা সম্ভব নয়।) তাকে বলা হয়, ’তোমাকে সঠিক পথ দেওয়া হল, তোমাকে যথেষ্টতা দান করা হল এবং তোমাকে বাঁচিয়ে নেওয়া হল।’ আর শয়তান তার নিকট থেকে দূরে সরে যায়।

তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। আবূ দাউদ এই শব্দগুলি বাড়তি বর্ণনা করেছেন, ’’ফলে শয়তান অন্য শয়তানকে বলে যে, ’ঐ ব্যক্তির উপর তোমার কিরূপে কর্তৃত্ব চলবে, যাকে সঠিক পথ প্রদর্শন করা হয়েছে, যাকে যথেষ্টতা দান করা হয়েছে এবং যাকে (সকল অমঙ্গল) থেকে বাঁচানো হয়েছে?’

عَن أنس قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ قَالَ يَعَني : إِذَا خَرَجَ مِنْ بَيتِهِ : بِسمِ اللهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ وَلا حَولَ وَلا قُوَّةَ إلاَّ باللهِ يُقالُ لَهُ : هُدِيتَ وَكُفِيتَ وَوُقِيتَ وَتَنَحَّى عَنهُ الشَّيطَانُ رواه أبو داود والترمذي والنسائي وغيرهم وَقالَ الترمذي حديث حسن زاد أبو داود فَيَقُولُ يَعَني : اَلشَّيْطَانُ لِشَيْطَانٍ آخَر : كَيفَ لَكَ بِرجلٍ قَدْ هُدِيَ وَكُفِيَ وَوُقِيَ ؟

عن انس قال قال رسول الله ﷺ من قال يعني اذا خرج من بيته بسم الله توكلت على الله ولا حول ولا قوة الا بالله يقال له هديت وكفيت ووقيت وتنحى عنه الشيطان رواه ابو داود والترمذي والنساىي وغيرهم وقال الترمذي حديث حسن زاد ابو داود فيقول يعني الشيطان لشيطان اخر كيف لك برجل قد هدي وكفي ووقي

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা

(২০৬) আনাস (রাঃ) বলেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে দুই ভাই ছিল। তাদের মধ্যে একজন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে (দ্বীন শিক্ষার জন্য) আসত এবং আর একজন হাতের কোন কাজ করে উপার্জন করত। অতঃপর উপার্জনশীল (ভাইটা) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তার (শিক্ষার্থী) ভাইয়ের (কাজ না করার) অভিযোগ করল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সম্ভবতঃ তোমাকে তার কারণেই রুযী দেওয়া হচ্ছে।

وَعَن أَنَسٍ قَالَ : كَانَ أَخَوانِ عَلَى عَهدِ النَّبيّ ﷺ وَكَانَ أحَدُهُمَا يَأتِي النَّبيَّ ﷺ وَالآخَرُ يَحْتَرِفُ فَشَكَا المُحْتَرِفُ أخَاهُ لِلنَّبي ﷺ فَقَالَ لَعَلَّكَ تُرْزَقُ بِهِ رواه الترمذي بإسناد صحيحٍ عَلَى شرطِ مسلم

وعن انس قال كان اخوان على عهد النبي ﷺ وكان احدهما ياتي النبي ﷺ والاخر يحترف فشكا المحترف اخاه للنبي ﷺ فقال لعلك ترزق به رواه الترمذي باسناد صحيح على شرط مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা

(২০৭) আনাস বিন মালিক (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি (আল্লাহর উপর নির্ভর করার ধরন প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করে) বলল, ’হে আল্লাহর রসূল! আমি উট বেঁধে আল্লাহর উপর নির্ভর করব, নাকি উট ছেড়ে দিয়ে?’ উত্তরে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বরং তুমি উট বেঁধে আল্লাহর উপর ভরসা কর।

عَن أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ يَقُولُ: قَالَ رَجُلٌ : يَا رَسُولَ اللهِ أَعْقِلُهَا وَأَتَوَكَّلُ أَوْ أُطْلِقُهَا وَأَتَوَكَّلُ ؟ قَالَ اعْقِلْهَا وَتَوَكَّلْ

عن انس بن مالك يقول قال رجل يا رسول الله اعقلها واتوكل او اطلقها واتوكل قال اعقلها وتوكل

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা

(২০৮) আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যার অভাব আসে, সে যদি তা মানুষের কাছে (পূরণের কথা) জানায়, তাহলে তার অভাব দূর হয় না। কিন্তু যার অভাব আসে, সে যদি তা আল্লাহর কাছে (পূরণের কথা) জানায়, তাহলে তিনি বিলম্বে অথবা অবিলম্বে তার অভাব দূর করে দেন।

عَن عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ مَنْ نَزَلَتْ بِهِ فَاقَةٌ فَأَنْزَلَهَا بِالنَّاسِ لَمْ تُسَدَّ فَاقَتَهُ وَمَنْ نَزَلَتْ بِهِ فَاقَةٌ فَأَنْزَلَهَا بِالله فَيُوشِكُ الله لَهُ بِرِزْقٍ عَاجِلٍ أَوْ آجِلٍ

عن عبد الله بن مسعود قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم من نزلت به فاقة فانزلها بالناس لم تسد فاقته ومن نزلت به فاقة فانزلها بالله فيوشك الله له برزق عاجل او اجل

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা

(২০৯) বদর যুদ্ধের দিন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এক দু’আ ছিল,

اَللّٰهُمَّ أَنْجِزْ لِى مَا وَعَدْتَنِى اَللّٰهُمَّ آتِ مَا وَعَدْتَنِى اَللّٰهُمَّ إِنْ تَهْلِكْ هَذِهِ الْعِصَابَةُ مِنْ أَهْلِ الإِسْلاَمِ لاَ تُعْبَدْ فِى الأَرْضِ

’’আল্লাহ! তুমি আমাকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে তা পূরণ কর। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে যার অঙ্গীকার দিয়েছিলে তা প্রদান কর। হে আল্লাহ! আহলে ইসলামের এই জামাআতকে যদি তুমি ধ্বংস করে দাও তাহলে পৃথিবীতে আর তোমার ইবাদত হবে না।

اَللّٰهُمَّ أَنْجِزْ لِى مَا وَعَدْتَنِى اَللّٰهُمَّ آتِ مَا وَعَدْتَنِى اَللّٰهُمَّ إِنْ تَهْلِكْ هَذِهِ الْعِصَابَةُ مِنْ أَهْلِ الإِسْلاَمِ لاَ تُعْبَدْ فِى الأَرْضِ

اللهم انجز لى ما وعدتنى اللهم ات ما وعدتنى اللهم ان تهلك هذه العصابة من اهل الاسلام لا تعبد فى الارض

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা

(২১০) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা কুষ্ঠরোগ হতে দূরে থেকো; যেমন বাঘ হতে দূরে পলায়ন কর।

عَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ وَفِرَّ مِنْ الْمَجْذُومِ كَمَا تَفِرُّ مِنَ الْأَسَدِ

عن ابي هريرة يقول قال رسول الله ﷺ وفر من المجذوم كما تفر من الاسد

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী

পরিচ্ছেদঃ দৃঢ়-প্রত্যয় ও (আল্লাহর প্রতি) ভরসা

(২১১) আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, চর্মরোগাক্রান্ত উটের মালিক যেন সুস্থ উট দলে তার উট না নিয়ে যায়।

عَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ ﷺ لَا يُورِدَنَّ مُمْرِضٌ عَلَى مُصِحٍّ

عن ابي هريرة قال قال النبي ﷺ لا يوردن ممرض على مصح

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ১৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে