পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৫২-[৪১] আবূ সাঈদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সা.)  থেকে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: কোন জান্নাতী লোক সত্তরটি গদিতে (সিংহাসনে) হেলান দিয়ে বসবে। এটা শুধু তার একই স্থান থাকবে। অতঃপর একজন মহিলা (হুর) এসে তার কাঁধে চাপড় মারবে, তখন সে ঐ মহিলার দিকে দৃষ্টি দেবে, তার চেহারার উজ্জ্বলতা আয়নার চেয়ে বেশি স্বচ্ছ হবে এবং তার গায়ে রক্ষিত মামুলি মুক্তার আলো পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের মধ্যবর্তী স্থানকে আলোকিত করে ফেলবে। মহিলাটি উক্ত পুরুষটিকে সালাম করবে, সে সালামের জবাব দিয়ে প্রশ্ন করবে, তুমি কে? মহিলাটি উত্তরে বলবে, আমি ’অতিরিক্ত সেবকদের অন্তর্ভুক্ত। তার পরনে বিভিন্ন রঙের সত্তরটি কাপড় থাকবে এবং তার ভিতর দিয়েই তার পায়ের নলার মজ্জা দেখা যাবে। আর তার মাথায় এমন মুকুট হবে, যার নিম্নমানের মুক্তার আলো পূর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্তের মধ্যবর্তী স্থান আলোকিত করে দেবে। (আহমাদ)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ الرَّجُلَ فِي الْجَنَّةِ لَيَتَّكِئُ فِي الْجَنَّةِ سَبْعِينَ مَسْنَدًا قَبْلَ أَنْ يَتَحَوَّلَ ثُمَّ تَأْتِيهِ امْرَأَةٌ فَتَضْرِبُ عَلَى مَنْكِبِهِ فَيَنْظُرُ وَجْهَهُ فِي خَدِّهَا أَصْفَى مِنَ الْمِرْآةِ وَإِنَّ أَدْنَى لُؤْلُؤَةٍ عَلَيْهَا تُضِيءُ مَا بينَ المشرقِ والمغربِ فتسلِّمُ عَلَيْهِ فيردُّ السلامَ وَيَسْأَلُهَا: مَنْ أَنْتِ؟ فَتَقُولُ: أَنَا مِنَ الْمَزِيدِ وَإِنَّهُ لَيَكُونُ عَلَيْهَا سَبْعُونَ ثَوْبًا فَيَنْفُذُهَا بَصَرُهُ حَتَّى يَرَى مُخَّ سَاقِهَا مِنْ وَرَاءِ ذَلِكَ وإِنَّ عَلَيْهَا من التيجان أَن أدنىلؤلؤة مِنْهَا لَتُضِيءُ مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ . رَوَاهُ أَحْمد

حسن ، رواہ احمد (3 / 75 ح 11738) و ابن حبان فی صحیحہ (الاحسان : 7354 / 7397 و سندہ حسن) ۔
(ضَعِيف)

عن أبي سعيد عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: إن الرجل في الجنة ليتكئ في الجنة سبعين مسندا قبل أن يتحول ثم تأتيه امرأة فتضرب على منكبه فينظر وجهه في خدها أصفى من المرآة وإن أدنى لؤلؤة عليها تضيء ما بين المشرق والمغرب فتسلم عليه فيرد السلام ويسألها: من أنت؟ فتقول: أنا من المزيد وإنه ليكون عليها سبعون ثوبا فينفذها بصره حتى يرى مخ ساقها من وراء ذلك وإن عليها من التيجان أن أدنىلؤلؤة منها لتضيء ما بين المشرق والمغرب . رواه أحمد

ব্যাখ্যা: (لَيَتَّكِئُ فِي الْجَنَّةِ سَبْعِينَ مَسْنَدً) জান্নাতী ব্যক্তি জান্নাতে সত্তরটি সোফার সেটে হেলান দিবে। প্রত্যেকটি সোফার সেট অনন্য হবে একটি অন্যটির সাথে মিশবে না।
এক একটির রং, উচ্চতা, বসার আরাম ইত্যাদির বিবেচনায় অন্যটির থেকে ভিন্নতর হবে। আর এটিই আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, (وَّ فُرُشٍ مَّرۡفُوۡعَۃٍ) “আর উঁচু উঁচু বিছানায়” (সূরাহ আল ওয়াকি'আহ্ ৫৬ : ৩৪)। এ আয়াতও প্রমাণ করে যে, জান্নাতীদের বিছানা, আরাম করার আসবাবপত্র অনেক বেশি হবে। এই সমস্ত আসবাবপত্রের ধরণ ও সৌন্দর্য ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্ন হবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৫৩-[৪২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন নবী (সা.) কথাবার্তা বলছিলেন। এ সময় তাঁর কাছে একজন গ্রাম্য বেদুইন উপস্থিত ছিল। তিনি (সা.) বললেন, জান্নাতবাসী এক লোক সেখানে কৃষিকাজ করার জন্য তার প্রভুর কাছে অনুমতি চাবে। তখন আল্লাহ তা’আলা তাকে বলবেন, তোমার চাহিদা মতো সবই কি পাচ্ছ না? লোকটি বলল, হ্যা, তবে আমি কৃষিকাজ ভালোবাসি। অতঃপর সে বীজ বপন করবে এবং চক্ষুর পলকে তা উদ্গত হবে, পোক্ত হবে এবং ফসল কাটা হবে। এমনকি পাহাড়ের সমান স্তুপ হয়ে যাবে। তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, হে আদম সন্তান নিয়ে যাও, কোন কিছুতেই তোমার তৃপ্তি হয় না। তখন গ্রাম্য বেদুইন লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর শপথ! দেখবেন, সে হয়তো কোন কুরায়শী অথবা আনসার গোত্রীয় লোক হবে। কেননা তারাই কৃষিকাজ করে থাকে। আর আমরা তো কৃষিকাজ করি না। রাসূলুল্লাহ (সা.) তার কথা শুনে হেসে দিলেন। (বুখারী)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَتَحَدَّثُ - وَعِنْدَهُ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ -: إِنَّ رَجُلًا مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ اسْتَأْذَنَ رَبَّهُ فِي الزَّرْعِ. فَقَالَ لَهُ: أَلَسْتَ فِيمَا شِئْتَ؟ قَالَ: بَلَى وَلَكِنْ أُحِبُّ أَنْ أَزْرَعَ فَبَذَرَ فَبَادَرَ الطَّرْفَ نَبَاتُهُ وَاسْتِوَاؤُهُ وَاسْتِحْصَادُهُ فَكَانَ أَمْثَالَ الْجِبَالِ. فَيَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى: دُونَكَ يَا ابْن آدم فَإِنَّهُ يُشْبِعُكَ شَيْءٌ . فَقَالَ الْأَعْرَابِيُّ: وَاللَّهِ لَا تَجِدُهُ إِلَّا قُرَشِيًّا أَوْ أَنْصَارِيًّا فَإِنَّهُمْ أَصْحَابُ زَرْعٍ وَأَمَّا نَحْنُ فَلَسْنَا بِأَصْحَابِ زَرْعٍ فَضَحِكَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ

رواہ البخاری (2348) ۔
(صَحِيح)

وعن أبي هريرة أن النبي صلى الله عليه وسلم كان يتحدث - وعنده رجل من أهل البادية -: إن رجلا من أهل الجنة استأذن ربه في الزرع. فقال له: ألست فيما شئت؟ قال: بلى ولكن أحب أن أزرع فبذر فبادر الطرف نباته واستواؤه واستحصاده فكان أمثال الجبال. فيقول الله تعالى: دونك يا ابن آدم فإنه يشبعك شيء . فقال الأعرابي: والله لا تجده إلا قرشيا أو أنصاريا فإنهم أصحاب زرع وأما نحن فلسنا بأصحاب زرع فضحك رسول الله صلى الله عليه وسلم. رواه البخاري

ব্যাখ্যা: (رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْبَادِيَةِ) অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন, তখন তাঁর পাশে একজন বেদুইন ব্যক্তি বসা ছিল। যিনি মরুতে বাস করেন।
(أَلَسْتَ فِيمَا شِئْتَ؟) আল্লাহ তা'আলা জান্নাতী লোকটিকে সম্বোধন করে বললেন, হে আমার বান্দা! তুমি যে জান্নাতে আছ তাতে কি সকল প্রকারের নাজ-নিআমাত নেই? এখানে তো খাদ্য-পানিয় ও সব ধরনের চাওয়া-পাওয়া বিদ্যমান। এখানে কৃষি উৎপন্ন শষ্যাদিও বিদ্যমান আছে। অতএব তুমি যা চাইবে তাই পাইবে।
(دُونَكَ يَا ابْن آدم) আল্লাহ তা'আলা বলবেন, হে আদম সন্তান! গ্রহণ কর যা তোমার মন চায়। এখানে সবকিছুই আছে। এটা সব কিছু পাওয়ার স্থান।
(فَإِنَّهُ يُشْبِعُكَ شَيْءٌ) অর্থাৎ জান্নাতে এত সব জিনিস থাকতেও তুমি কৃষি করতে চাচ্ছ। তাহলে কি কোন জিনিস দ্বারাই তুমি তৃপ্তি লাভ করবে না?
(فَقَالَ الْأَعْرَابِيُّ: وَاللَّهِ لَا تَجِدُهُ إِلَّا قُرَشِيًّا أَوْ أَنْصَارِيًّا) বেদুইন লোকটি অবাক হয়ে বলল, জান্নাতে গিয়েও কৃষিকাজ করতে চাইবে? তাহলে এই স্বভাবের লোক কেবল কুরায়শের ও আনসারীদের মধ্য থেকেই হবে। এখানে বেদুইন লোকটি কুরায়শ বলতে মক্কাবাসী ও আনসারী বলতে মদীনাবাসীদেরকে বুঝিয়েছে। কেননা মক্কাহ্ ও মদীনাবাসী কৃষিকাজ করে থাকে। (ফাতহুল বারী হা. ২৩৪৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৫৪-[৪৩] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে জিজ্ঞেস করল, জান্নাতবাসীগণ কি ঘুমাবে? তিনি বললেন, নিদ্রা তো মৃত্যুর সহোদর। আর জান্নাতবাসী মরবে না (অতএব তাদের কোন নিদ্রা নেই)। (বায়হাকী’র শু’আবূল ঈমান)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: سَأَلَ رَجُلٌ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَيَنَامُ أَهْلُ الْجَنَّةِ؟ قَالَ: «النَّوْمُ أَخُو الْمَوْتِ وَلَا يَمُوتُ أَهْلُ الجنةِ» . رواهُ البيهقيُّ فِي «شعب الْإِيمَان»

اسنادہ ضعیف ، رواہ البیھقی فی شعب الایمان (4745 ، نسخۃ محققۃ : 4416) * سفیان الثوری مدلس و عنعن و لحدیثہ شواھد ضعیفۃ و مرسلۃ فی الصحیحۃ للالبانی (1087) و معناہ صحیح

وعن جابر قال: سأل رجل رسول الله صلى الله عليه وسلم: أينام أهل الجنة؟ قال: «النوم أخو الموت ولا يموت أهل الجنة» . رواه البيهقي في «شعب الإيمان»

ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে যখন প্রশ্ন করা হলো যে, জান্নাতীরা কি ঘুমাবে? তখন রাসূল (সা.) দলীলে বুরহানী দ্বারা উত্তর দিয়েছেন। আর সরাসরি “না” দ্বারা উত্তর না দিয়ে এভাবে উত্তর দেয়ায় আত্মার প্রশান্তি এবং ঈমানের দৃঢ়তা আসে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৩ পর্যন্ত, সর্বমোট ৩ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে