পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৩০-[১৯] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ তা’আলা সমস্ত সৃষ্টিজীবকে কিসের দ্বারা তৈরি করেছেন? তিনি (সা.) বললেন, পানি দ্বারা। আবার প্রশ্ন করলাম, জান্নাতের নির্মাণ কিসের দ্বারা? তিনি (সা.) বললেন, একটি ইট স্বর্ণের এবং একটি ইট রৌপ্যের। তার খামির বা মসল্লা হলো সুগন্ধময় কস্তুরী এবং তার কঙ্কর মণি-মুক্তা আর জাফরানের মাটি। যে লোক তাতে প্রবেশ করবে সে সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে থাকবে, কখনো হতাশা বা দুশ্চিন্তায় পতিত হবে না। সেখানে চিরস্থায়ী থাকবে, কখনো মৃত্যুবরণ করবে না, তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ ময়লা-পুরানা হবে না এবং তাদের। যৌবনও শেষ হবে না। (আহমাদ, তিরমিযী, দারিমী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مِمَّ خُلِقَ الْخَلْقُ؟ قَالَ: «مِنَ الْمَاءِ» . قُلْنَا: الْجَنَّةُ مَا بِنَاؤُهَا؟ قَالَ: «لَبِنَةٌ مِنْ ذَهَبٍ وَلَبِنَةٌ مِنْ فِضَّةٍ وَمِلَاطُهَا الْمِسْكُ الْأَذْفَرُ وَحَصْبَاؤُهَا اللُّؤْلُؤُ وَالْيَاقُوتُ وَتُرْبَتُهَا الزَّعْفَرَانُ مَنْ يَدْخُلُهَا يَنْعَمُ وَلَا يَبْأَسُ وَيَخْلُدُ وَلَا يَمُوتُ وَلَا يَبْلَى ثِيَابُهُمْ وَلَا يَفْنَى شَبَابُهُمْ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيّ والدارمي

سندہ ضعیف ، رواہ احمد (2 / 305 ح 8030) و الترمذی (2526 و ضعفہ) و الدارمی (2 / 333 ح 2824) * زیاد الطائی لم یثبت سماعہ من ابی ھریرۃ رضی اللہ عنہ و لبعض الحدیث شاھد عند الترمذی (3598) و سندہ حسن


عن أبي هريرة قال: قلت: يا رسول الله مم خلق الخلق؟ قال: «من الماء» . قلنا: الجنة ما بناؤها؟ قال: «لبنة من ذهب ولبنة من فضة وملاطها المسك الأذفر وحصباؤها اللؤلؤ والياقوت وتربتها الزعفران من يدخلها ينعم ولا يبأس ويخلد ولا يموت ولا يبلى ثيابهم ولا يفنى شبابهم» . رواه أحمد والترمذي والدارمي

ব্যাখ্যা: (مِمَّ خُلِقَ الْخَلْقُ؟) আল্লাহর রাসূল (সা.) -কে জিজ্ঞেস করা হলো যে, সকল মানুষকে কি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে? তিনি (সা.) বললেন, পানি থেকে।
প্রকৃতপক্ষে তিনি (সা.) কুরআন আয়াতের আলোকে তা বলেছেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন, (وَ جَعَلۡنَا مِنَ الۡمَآءِ کُلَّ شَیۡءٍ حَیٍّ...) “আর প্রাণসম্পন্ন সব কিছু পানি থেকে সৃষ্টি করেছি...”- (সূরাহ আল আম্বিয়া ২১ : ৩০)।
অন্যত্র তিনি বলেছেন, (وَ اللّٰهُ خَلَقَ کُلَّ دَآبَّۃٍ مِّنۡ مَّآءٍ...) “আল্লাহ সকল প্রাণীকে পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন”- (সূরা আন্ নূর ২৪ : ৪৫)। এর মূল কারণ হলো পানি হলো একটি মৌলিক উপাদান এবং মানব জীবনের অন্যতম একটি অংশ যা ছাড়া মানুষের জীবন-যাপন একেবারেই দুষ্কর হয়ে যায়। আর এখানে পানি দ্বারা সাধারণ পানিকে বুঝানো হয়নি, বরং এই পানি দ্বারা বিশেষ এক প্রকার পানি (বীর্য)-কে বুঝানো হয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে এই পানি সাধারণ পানি থেকে তৈরি হয় সেটা কিভাবে? উত্তর: আমরা যে সকল শাকসবজী ও ফল-ফলাদি খাই তা মূলত পানির মাধ্যমে উৎপন্ন হয়, এরপর তা আমরা খাওয়ার পর বীর্য তৈরি হয়, আল্লাহর রসূলের সংক্ষিপ্ত কথার সারাংশ এটাই। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী হা. ২৫০৬)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৩১-[২০] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জান্নাতের সকল গাছেরই কাণ্ড হবে স্বর্ণের। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا فِي الْجَنَّةِ شَجَرَةٌ إِلَّا وساقُها من ذهب» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (2525 وقال : غریب حسن)

وعنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ما في الجنة شجرة إلا وساقها من ذهب» . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: জান্নাতের সকল গাছের কাণ্ড স্বর্ণেরই হবে। অবশ্য ঐ সকল গাছের ডালসমূহ ও  শাখাপ্রশাখাসমূহ বিভিন্ন প্রকারের হবে। কোনটি স্বর্ণের হবে, কোনটি রূপার হবে, আবার কোনটির শাখা ইয়াকূত পাথরে মতি প্রভৃতি হবে আর প্রতিটি শাখা বিভিন্ন ধরনের ফলে সুসজ্জিত এবং তাতে নানা ধরনের ফলফলাদি ঝুলে থাকবে। তা ছাড়াও জান্নাতের সকল গাছের নিচ দিয়ে পানির ঝরনা প্রবাহিত হবে। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা, ২৫২৫)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৩২-[২১] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: জান্নাতের একশতটি স্তর আছে, প্রত্যেক দুই স্তরের মধ্যে একশত বছরের দূরত্ব। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি হাসান গরীব]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ فِي الْجَنَّةِ مِائَةَ دَرَجَةٍ مَا بَيْنَ كُلِّ دَرَجَتَيْنِ مِائَةُ عَامٍ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ

صحیح ، رواہ الترمذی (2529) ۔
(صَحِيح)

وعنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إن في الجنة مائة درجة ما بين كل درجتين مائة عام» . رواه الترمذي وقال: هذا حديث حسن غريب

ব্যাখ্যা: মুহাদ্দিগণ বলেন, এখানে স্তর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো উঁচু স্তর বা মর্যাদা আর আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীন কুরআনে উল্লেখ করেছেন, (...دَرَجٰتٌ عِنۡدَ رَبِّهِمۡ...) “..তাদের জন্য তাদের রবের নিকট উঁচু মর্যাদা রয়েছে...”- (সূরা আল আনফাল ৮ : ৪)।
আর এই মর্যাদা প্রতিটি মু'মিন তাদের ‘আমল অনুপাতে লাভ করবে। যেমনিভাবে, জাহান্নামীরাও জাহান্নামের বিভিন্ন স্তর লাভ করবে তাদের পাপাচার ও কুফরীর কারণে। আর এটার প্রতি আল্লাহ কুরআনে ইঙ্গিত করেছেন, (اِنَّ الۡمُنٰفِقِیۡنَ فِی الدَّرۡکِ الۡاَسۡفَلِ مِنَ النَّارِ...) “আর মুনাফিকরা জাহান্নামের সবচেয়ে নিচু স্তরে প্রবেশ করবে”- (সূরা আন্ নিসা ৪ : ১৪৫)। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী হা. ২৫২৯)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৩৩-[২২] আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: জান্নাতের একশত স্তর আছে। যদি বিশ্বের লোক একত্রিত হয়ে তার একটিতে (স্তরে) একত্রিত হয় তবুও তা সকলের জন্য যথেষ্ট হবে। ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি গরীব।

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ فِي الْجَنَّةِ مِائَةَ دَرَجَةٍ لَوْ أَنَّ الْعَالَمِينَ اجْتَمَعُوا فِي إِحْدَاهُنَّ لَوَسِعَتْهُمْ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2532) * ابن لھیعۃ مدلس و عنعن و حدث بہ قبل اختلاطہ و باقی السند حسن لذاتہ ۔
(ضَعِيف)

وعن أبي سعيد قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إن في الجنة مائة درجة لو أن العالمين اجتمعوا في إحداهن لوسعتهم» . رواه الترمذي وقال: هذا حديث غريب

ব্যাখ্যা: জান্নাতে এমন একশত স্তর রয়েছে যদি পুরো পৃথিবীবাসী একত্রিত হয়ে তার একটিতে প্রবেশ করে তাহলে একটিতেই তাদের সংকুলান হয়ে যাবে। অতএব এ থেকে বুঝা যায়, যদি জান্নাতের একটি স্তর এত সুবিশাল হয় তাহলে জান্নাত কত সুবিশাল যা আমরা কল্পনাও করতে পারব না। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা, ২৫৩২)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৩৪-[২৩] উক্ত রাবী [আবূ সাঈদ (রাঃ)] নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। আল্লাহ তা’আলার বাণী (وَّ فُرُشٍ مَّرۡفُوۡعَۃٍ) “সুউচ্চ বিছানা”- (সূরাহ্ আল ওয়াকি’আহ্ ৫৬ : ৩৪)-এর সম্পর্কে বলেছেন, ঐ সমস্ত বিছানার উচ্চতা আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী দূরত্বের সমপরিমাণ অর্থাৎ পাঁচশত বছরের পথ। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি গরীব]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي قَوْلِهِ تَعَالَى (وفُرُشٍ مرفوعةٍ) قَالَ: «ارْتِفَاعُهَا لَكَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ مَسِيرَةَ خَمْسِمِائَةِ سَنَةً» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ

حسن ، رواہ الترمذی (2540) [و ابن حبان (الاحسان : 7362 / 7405) بسند حسن عن عمرو بن الحارث عن دراج ،،، بہ] ۔
(ضَعِيف)

وعنه عن النبي صلى الله عليه وسلم في قوله تعالى (وفرش مرفوعة) قال: «ارتفاعها لكما بين السماء والأرض مسيرة خمسمائة سنة» . رواه الترمذي وقال: هذا حديث غريب

ব্যাখ্যা: আল্লাহর বাণী, (وَّ فُرُشٍ مَّرۡفُوۡعَۃٍ) “আর উঁচু উঁচু বিছানায়”- (সূরাহ্ আল ওয়াকি'আহ্ ৫৬ : ৩৪) সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ঐ সকল বিছানার উচ্চতা আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী ব্যবধানের পরিমাণ হবে অর্থাৎ পাচঁশত বছরের পথ হবে। ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, কতিপয় আহলুল ‘ইলমের ব্যাখ্যা করেছেন যে, ঐ সকল বিছানার উচ্চতা ও পরিমাপ আকাশ ও জমিনের মধ্যবর্তী ব্যবধানের ন্যায়। কেউ কেউ বলেছেন, জান্নাতের বিছানো সুউচ্চ বিছানাসমূহের উচ্চতা হবে আকাশ ও জমিনের মধ্যবর্তী ব্যবধানের ন্যায়।
ইমাম তূরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) জান্নাতের স্তরসমূহে সুউচ্চ বিছানার উচ্চতা হবে জান্নাতের দুই স্তরের মধ্যবর্তী ব্যবধানের ন্যায়। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ২৫৪০)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৩৫-[২৪] উক্ত রাবী [আবূ সা’ঈদ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যে দলটি জান্নাতে প্রবেশ করবে, তাদের চেহারা পূর্ণিমার চাঁদের মতো আলোকিত হবে। আর দ্বিতীয় দলটির চেহারা হবে আকাশের সর্বাধিক উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো ঝকঝকে। তথায় প্রত্যেক লোকের জন্য দু’ দু’ জন করে স্ত্রী থাকবে, যাদের প্রত্যেক স্ত্রীর পরিধানে সত্তর জোড়া কাপড় থাকবে, যাদের পায়ের নলার মজ্জা কাপড়ের উপর দিয়ে দেখা যাবে। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ أَوَّلَ زُمْرَةٍ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ضَوْءُ وُجُوهِهِمْ عَلَى مِثْلِ ضَوْءِ القمرِ ليلةَ البدْرِ وَالزُّمْرَةُ الثَّانِيَةُ عَلَى مِثْلِ أَحْسَنِ كَوْكَبٍ دُرِّيٍّ فِي السَّمَاءِ لِكُلِّ رَجُلٍ مِنْهُمْ زَوْجَتَانِ عَلَى كُلِّ زَوْجَةٍ سَبْعُونَ حُلَّةً يُرَى مُخُّ سَاقِهَا من وَرَائِهَا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

صحیح ، رواہ الترمذی (2535 وقال : حسن صحیح)

وعنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إن أول زمرة يدخلون الجنة يوم القيامة ضوء وجوههم على مثل ضوء القمر ليلة البدر والزمرة الثانية على مثل أحسن كوكب دري في السماء لكل رجل منهم زوجتان على كل زوجة سبعون حلة يرى مخ ساقها من ورائها» . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: জান্নাতে যে দলটি সর্বপ্রথম প্রবেশ করবে তারা হবেন নবীগণ। পূর্ণিমার রাতের চাঁদের মতো তাদের চেহারাগুলো সমুজ্জ্বল হবে, এরপর দ্বিতীয় যে দল প্রবেশ করবে তারা হবেন আল্লাহর ওয়ালী ও সৎব্যক্তিগণ, তাদের চেহারা আকাশের সর্বাধিক উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো সমুজ্জ্বল হবে।

(كُلِّ رَجُلٍ مِنْهُمْ زَوْجَتَانِ) জান্নাতবাসী প্রত্যেকের দু’জন করে স্ত্রী থাকবে, তাদের পরিধানে সত্তর জোড়া কাপড় থাকবে। যাদের পায়ের নলার মজ্জা কাপড়ের উপর থেকে দেখা যাবে। মুহাদ্দিসগণ বলেন, উপরোক্ত হাদীসে জান্নাতী স্ত্রীদের অপরূপ সৌন্দর্যের কথা আলোচনা করা হয়েছে। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ২৫৩৫)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৩৬-[২৫] আনাস (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: জান্নাতী মুমিনদেরকে এত এত সহবাসের শক্তি প্রদান করা হবে। প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! এক লোক এত শক্তি রাখবে কি? তিনি (সা.) বললেন, প্রত্যেক লোককে একশত পুরুষের শক্তি দান করা হবে। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «يُعْطَى الْمُؤْمِنُ فِي الْجَنَّةِ قُوَّةَ كَذَا وَكَذَا مِنَ الْجِمَاعِ» . قِيلَ: يَا رَسُولَ الله أَو يُطيق ذَلِكَ؟ قَالَ: «يُعْطَى قُوَّةَ مِائَةٍ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ

سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2536 وقال : صحیح غریب) * قتادۃ عنعن و للحدیث شواھد ضعیفۃ عند البزار (کشف الاستار 4 / 198 ح 3526) و البیھقی (البعث و النشور : 403) وغیرھما

وعن أنس عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «يعطى المؤمن في الجنة قوة كذا وكذا من الجماع» . قيل: يا رسول الله أو يطيق ذلك؟ قال: «يعطى قوة مائة» . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: মুহাদ্দিসগণ বলেন, জান্নাতী একজন পুরুষকে বিশ ত্রিশ কিংবা তার চেয়ে বেশি স্ত্রীর সাথে সহবাস করার ক্ষমতা প্রদান করা হবে। কেউ কেউ বলেছেন, বিশ, ত্রিশ, চল্লিশ কিংবা একশত বা তার চেয়ে বেশি স্ত্রী সাথে সহবাস করার ক্ষমতা দেয়া হবে। কারণ আল্লাহর রাসূলকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, একজন পুরুষ কি এত স্ত্রীর সাথে সহবাস করতে পারবে? উত্তরে তিনি (সা.) বলেছেন, একজন পুরুষকে একশতজন পুরুষের শক্তি দেয়া হবে। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ২৫৩৬)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৩৭-[২৬] সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: যদি জান্নাতের বস্তু সামগ্রী থেকে নখ অপেক্ষা একটি ক্ষুদ্র জিনিসও দুনিয়াতে প্রকাশ হয়ে পড়ে, তবে আসমান ও জমিনের সমগ্র পার্শ্ব-প্রান্ত সুসজ্জিত হয়ে যাবে। আর যদি জান্নাতের কোন এক লোক দুনিয়ার দিকে উঁকি মারে এবং তার (হাতের) কঙ্কন প্রকাশ পায়, তবে তার আলো সূর্যের আলোকে এমনভাবে বিলীন করে দেবে, যেমন সূর্যের আলো তারকার আলোকে বিলীন করে দেয়। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি গরীব]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَوْ أَنَّ مَا يُقِلُّ ظُفُرٌ مِمَّا فِي الْجَنَّةِ بَدَا لَتَزَخْرَفَتْ لَهُ مَا بَيْنَ خَوَافِقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَلَوْ أَنَّ رَجُلًا مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ اطَّلَعَ فَبَدَا أَسَاوِرُهُ لَطَمَسَ ضَوْؤُهُ ضَوْءَ الشَّمْسِ كَمَا تَطْمِسُ الشَّمْسُ ضَوْءَ النُّجُومِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ

حسن ، رواہ الترمذی (2538)

وعن سعد بن أبي وقاص عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «لو أن ما يقل ظفر مما في الجنة بدا لتزخرفت له ما بين خوافق السماوات والأرض ولو أن رجلا من أهل الجنة اطلع فبدا أساوره لطمس ضوؤه ضوء الشمس كما تطمس الشمس ضوء النجوم» . رواه الترمذي وقال: هذا حديث غريب

ব্যাখ্যা: মুহাদ্দিসগণ বলেন, উক্ত হাদীসে জান্নাতের আসবাবপত্র ও সামগ্রীর মান-মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন বলা হয়েছে জান্নাতের নখের সমপরিমাণ কোন বস্তু যদি দুনিয়াতে প্রকাশ পায় তাহলে আকাশ ও জমিনের পূর্ব ও পশ্চিম দিগন্ত সুসজ্জিত হয়ে যাবে। আর যদি জান্নাতবাসী একজন ব্যক্তির হাতের বালা দুনিয়াতে প্রকাশ পায় তাহলে তা সূর্যের কিরণকে ম্লান করে দিবে যেমনিভাবে সূর্য তারকারাজির কিরণকে ম্লান করে দেয়। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ হা. ৫৩৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৩৮-[২৭] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: জান্নাতবাসী কেশবিহীন (পশমবিহীন) ও দাড়িবিহীন হবেন, তাদের চক্ষু সুরমায়িত হবে, তাদের যৌবন কোন দিনই হারাবে না এবং তাদের কাপড়চোপড়ও পুরনো হবে না। (তিরমিযী ও দারিমী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَهْلُ الْجَنَّةِ جُرْدٌ مُرْدٌ كَحْلَى لَا يَفْنَى شَبَابُهُمْ وَلَا تَبْلَى ثِيَابهمْ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ والدارمي

حسن ، رواہ الترمذی (2539 وقال : غغریب) و الدارمی (2 / 335 ح 2829)

وعن أبي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أهل الجنة جرد مرد كحلى لا يفنى شبابهم ولا تبلى ثيابهم» . رواه الترمذي والدارمي

ব্যাখ্যা: মুহাদ্দিসগণ বলেন, উপরোক্ত হাদীসের জান্নাতবাসীদের কিছু বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হয়েছে।
১. (جُرْدٌ) বলা হয় ঐ ব্যক্তিকে যার শরীরে কোন প্রকারের লোম বা পশম নেই। অর্থাৎ জান্নাতবাসীরা পশমবিহীন হবে।
২. (مُرْدٌ) বলা হয় ঐ সকল বালকদেরকে যার দাড়ি নেই। অর্থাৎ জান্নাতবাসীরা দাড়িবিহীন হবে।
৩. (كَحْلَى) ঐ ব্যক্তিকে বলা হয় যার চক্ষুর পলকের গোড়া জন্মগতভাবে কালো থাকে অর্থাৎ জান্নাতবাসীদের চক্ষু সুরমা লাগানো ব্যক্তির মতো হবে।
৪. (لَا يَفْنَى شَبَابُهُمْ) অর্থাৎ জান্নাতবাসীরা চিরকুমার হবে তাদের যৌবন কখনো শেষ হবে না। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৩৯-[২৮] মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সা.) বলেছেন: জান্নাতবাসীগণ কেশবিহীন (লোম বা পশমহীন), দাড়িবিহীন ও সুরমায়িত চক্ষুবিশিষ্ট ত্রিশ বা তেত্রিশ বছর বয়সীর মতো প্রবেশ করবে। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «يَدْخُلُ أَهْلُ الْجَنَّةِ الْجَنَّةَ جُرْدًا مُرْدًا مُكَحَّلِينَ أَبْنَاءَ ثَلَاثِينَ - أَوْ ثلاثٍ وَثَلَاثِينَ - سنة» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2545 وقال : حسن غریب) * قتادۃ مدلس و عنعن فاسند ضعیف و للحدیث شواھد ضعیفۃ عند احمد (2 / 295 ، 343 ، 415) وغیرہ ، و انظر الحدیث السابق [و النھایۃ بتحقیقی (1019)]

وعن معاذ بن جبل أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «يدخل أهل الجنة الجنة جردا مردا مكحلين أبناء ثلاثين - أو ثلاث وثلاثين - سنة» . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: ত্রিশ বা তেত্রিশ বছরের বয়স পূর্ণাঙ্গ যৌবন ও শক্তি সামর্থ্যে ভরপুর হয়ে থাকে। এজন্য জান্নাতী পুরুষকে এ বয়স প্রদান করেই জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। প্রকাশ থাকে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) ত্রিশ-তেত্রিশ দুই সংখ্যার কোন একটি নির্দিষ্ট করে বলেছেন কিন্তু বর্ণনাকারী সংশয় প্রকাশ করে দু’টিই বলেছেন, তার স্মরণে না থাকার কারণে। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী হা. ২৫৪৬)।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৪০-[২৯] আসমা বিনতু আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) - কে বলতে শুনেছি এবং যখন তাঁর সামনে সিদরাতুল মুনতাহা’র আলোচনা করা হলো, তিনি বললেন, তার শাখার ছায়ায় দ্রুতগামী বাহন একশত বছর ভ্রমণ করতে পারলে অথবা বলেছেন, একশত বাহন তার ছায়ায় আশ্রয় নিতে পারবে। এ দু বাক্যের মধ্যে নবী (সা.)- কোন বাক্যটি বলেছেন তাতে বর্ণনাকারীর সন্দেহ রয়েছে তা সোনার পতঙ্গ দ্বারা বেষ্টিত থাকবে। তার ফল মটকার মতো বিশাল আকারের হবে। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি গরীব]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَن أَسمَاء بنت أبي بكر قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَذُكِرَ لَهُ سِدْرَةُ الْمُنْتَهَى قَالَ: «يَسِيرُ الرَّاكِبُ فِي ظِلِّ الْفَنَنِ مِنْهَا مِائَةَ سَنَةٍ أَوْ يَسْتَظِلُّ بِظِلِّهَا مِائَةُ رَاكِبٍ - شَكَّ الرَّاوِي - فِيهَا فَرَاشُ الذَّهَبِ كَأَنَّ ثَمَرَهَا الْقِلَالُ» رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ

اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (2541) * محمد بن اسحاق بن یسار مدلس و صرح بالسماع عند ھناد بن السری فی الزھد (1 / 98 ح 115) ۔
(صَحِيح)

وعن أسماء بنت أبي بكر قالت: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم وذكر له سدرة المنتهى قال: «يسير الراكب في ظل الفنن منها مائة سنة أو يستظل بظلها مائة راكب - شك الراوي - فيها فراش الذهب كأن ثمرها القلال» رواه الترمذي وقال: هذا حديث غريب

 ব্যাখ্যা: (سِدْرَةُ الْمُنْتَهَى) ‘সিদরাতুল মুনতাহা যা সপ্তাকাশে ‘আরশের ডানপ্রান্তে অবস্থিত কুলগাছ। ঐ বৃক্ষকে ‘সিদরাতুল মুনতাহা' এজন্য বলা হয় যে, এটি আরশের এমন প্রান্তে অবস্থিত যার পর কারো যাওয়া অনুমতি নেই। এমনকি মালায়িকার (ফেরেশতাদের) যাওয়াও অনুমতি নেই। জিবরীল আলায়হিস সালাম-এর শেষ গন্তব্যও এ পর্যন্ত, এর বেশি তিনিও সামনে যেতে পারেন না। কেবল রাসূলুল্লাহ (সা.) - মি'রাজের রজনীতে এ বৃক্ষ অতিক্রম করে সামনে গিয়েছিলেন।
(فِيهَا فَرَاشُ الذَّهَبِ) তা সোনার পতঙ্গ দ্বারা বেষ্টিত থাকবে। মুহাদ্দিসগণ এর ব্যাখ্যায় বলেন, হয়তো নূরের তৈরি মালাক (ফেরেশতা) উক্ত বৃক্ষের উপরে থাকবে ফলে তাদের ডানাসমূহ এরূপ চমকাবে ও ঝলমল করবে। আবার কেউ কেউ বলেছেন, উক্ত বৃক্ষের উপর সোনার তৈরি পতঙ্গ এদিক সেদিক লাফালাফি করবে।
আবার কেউ কেউ বলেছেন, এর ব্যাখ্যা কুরআনের ঐ আয়াতটি যা আল্লাহ বলেছেন:
(اِذۡ یَغۡشَی السِّدۡرَۃَ مَا یَغۡشٰی) “যখন বৃক্ষটি যা দ্বারা আচ্ছাদিত হবার তা দ্বারা আচ্ছাদিত হবে”- (সূরাহ্ আন্ নাজম ৫৩ : ১৬); এর ব্যাখ্যায় কেউ কেউ বলেছেন, একদল মালাক উক্ত গাছকে আচ্ছাদিত করে আল্লাহর ‘ইবাদতে নিয়োজিত থাকবে। (ফাতহুল বারী হা. ২৫৪১)।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৪১-[৩০] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে প্রশ্ন করা হলো, কাওসার কি? তিনি (সা.) বললেন, তা জান্নাতে অবস্থিত একটি নহর, যা আল্লাহ তা’আলা আমাকে দান করেছেন। তার পানি দুধ তুলনায় অধিক সাদা এবং মধুর চেয়ে মিষ্টি। তাতে এমন কিছু পাখি থাকবে, যাদের ঘাঢ় উটের গর্দানের মতো (লম্বা-লম্বা)। ’উমার (রাঃ) বলে উঠলেন, ঐ সমস্ত পাখিগুলো নিশ্চয় খুব মোটাতাজা হবে। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, সে সমস্ত পাখিগুলো ভক্ষণকারীগণ তাদের চেয়েও হৃষ্টপুষ্ট হবে। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ماالكوثر؟ قَالَ: «ذَاكَ نَهْرٌ أَعْطَانِيهِ اللَّهُ يَعْنِي فِي الْجَنَّةِ أَشَدُّ بَيَاضًا مِنَ اللَّبَنِ وَأَحْلَى مِنَ الْعَسَلِ فِيهِ طَيْرٌ أَعْنَاقُهَا كَأَعْنَاقِ الْجُزُرِ» قَالَ عُمَرُ: إِنَّ هَذِهِ لَنَاعِمَةٌ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «أَكَلَتُهَا أَنْعَمُ مِنْهَا» رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

اسنادہ صحیح ، رواہ الترمذی (2542 وقال : حسن) ۔
(حسن)

وعن أنس قال سئل رسول الله صلى الله عليه وسلم ماالكوثر؟ قال: «ذاك نهر أعطانيه الله يعني في الجنة أشد بياضا من اللبن وأحلى من العسل فيه طير أعناقها كأعناق الجزر» قال عمر: إن هذه لناعمة قال رسول الله صلى الله عليه وسلم «أكلتها أنعم منها» رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: (ماالكوثر؟) মুহাদ্দিসগণ বলেন, (كوثر) এমন একটি নদী যা আল্লাহ তা'আলা কিয়ামতের দিন বিশেষভাবে রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে দান করবেন। সহীহ মুসলিম-এর বর্ণনায় এসেছে, আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর নিকটে বসছিলাম, এরপর তিনি (সা.) মাথা উঠিয়ে মুচকি হাসলেন। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, আপনাকে কিসে হাসালো? তিনি (সা.) বলেন, এই মাত্র আমার ওপর একটি সূরাহ্ অবতীর্ণ হলো। এরপর তিনি (সা.) তিলাওয়াত করতে শুরু করলেন,
(اِنَّاۤ اَعۡطَیۡنٰکَ الۡکَوۡثَرَ) “আমি তোমাকে বিশেষ কল্যাণ ‘হাওযে কাওসার’ও দান করেছি (যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত)”- (সূরাহ্ আল কাওসার ১০৮ : ১)।

এরপর তিনি (সা.) বলেন, তোমরা কি জানো ‘কাওসার’ কি? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভালো জানেন। তখন তিনি (সা.) বলেন, সেটা এমন এক নদী আল্লাহ তা'আলা আমাকে দান করবেন। আর এটা সেই হাওয যার নিকটে এসে আমার উম্মত ভিড় করবে। ইমাম হাকিম (রহিমাহুল্লাহ) মারফু সূত্রে বর্ণনা করেছেন, আনাস (রাঃ) থেকে যে, সেটা এমন এক নদী আল্লাহ তা'আলা আমাকে জান্নাতে দান করবেন। তার মাটি হবে মিশক আম্বরের চেয়ে সুগন্ধিময়, দুধের চেয়ে সাদা এবং তাঁর পানি হবে মধুর চেয়ে সুমিষ্ট।

(طَيْرٌ أَعْنَاقُهَا كَأَعْنَاقِ الْجُزُرِ) তাতে এক প্রকার পাখি থাকবে যেগুলোর ঘাড় হবে উটের ঘাড়ের ন্যায় অর্থাৎ ঐ নদীর চতুষ্পর্শ্বে উক্ত পাখিগুলো বিচরণ করবে। সেগুলো দেখে ঐ পরিবেশকে মনোমুগ্ধকর মনে হবে। আর সেই পাখিগুলো খুবই হৃষ্টপুষ্ট হবে। আর ঐ পাখিগুলো যারা খাবে তারা আরো অনেক হৃষ্টপুষ্ট হবে। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা, ২৫৪২)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৪২-[৩১] বুরয়দাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন জনৈক লোক প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসূল! জান্নাতে ঘোড়া পাওয়া যাবে কি? তিনি (সা.) বললেন, যদি আল্লাহ তা’আলা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করান আর তুমি ঘোড়ায় সওয়ার হবার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ কর, তখন তোমাকে লাল বর্ণের মুক্তার ঘোড়ায় আরোহণ করানো হবে এবং তুমি জান্নাতের যেখানে যাওয়ার ইচ্ছা করবে ঘোড়া তোমাকে দ্রুত উড়িয়ে সেখানে নিয়ে যাবে। আর এক লোক প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসূল! জান্নাতে উট পাওয়া যাবে কি? বর্ণনাকারী বলেন, তিনি পূর্বের লোককে যেভাবে উত্তর দিয়েছেন, এ লোককে সেভাবে উত্তর না দিয়ে বললেন, যদি আল্লাহ তা’আলা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করান, তবে তুমি সে সকল জিনিস পাবে, যা কিছু তোমার মনে চাবে এবং তোমার চোখ জুড়াবে। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَن بُريدةَ أَنَّ رَجُلًا قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ فِي الْجَنَّةِ مِنْ خَيْلٍ؟ قَالَ: «إِنِ اللَّهُ أَدْخَلَكَ الْجَنَّةَ فَلَا تَشَاءُ أَنْ تُحْمَلَ فِيهَا عَلَى فَرَسٍ مِنْ يَاقُوتَةٍ حَمْرَاءَ يَطِيرُ بِكَ فِي الْجَنَّةِ حَيْثُ شِئْتَ إِلَّا فَعَلْتَ» وَسَأَلَهُ رجل فَقَالَ: يارسول الله هَل فِي الجنةِ من إِبلٍ؟ قَالَ: فَلَمْ يَقُلْ لَهُ مَا قَالَ لِصَاحِبِهِ. فَقَالَ: «إِنْ يُدْخِلْكَ اللَّهُ الْجَنَّةَ يَكُنْ لَكَ فِيهَا مَا اشْتَهَتْ نَفْسُكَ وَلَذَّتْ عَيْنُكَ» رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2543) * المسعودی صدوق اختلط ولم یثبت تحدیثہ بہ قبل اختلاطہ و للحدیث شواھد ضعیفۃ و الحدیث الآتی یغنی عنہ

وعن بريدة أن رجلا قال: يا رسول الله هل في الجنة من خيل؟ قال: «إن الله أدخلك الجنة فلا تشاء أن تحمل فيها على فرس من ياقوتة حمراء يطير بك في الجنة حيث شئت إلا فعلت» وسأله رجل فقال: يارسول الله هل في الجنة من إبل؟ قال: فلم يقل له ما قال لصاحبه. فقال: «إن يدخلك الله الجنة يكن لك فيها ما اشتهت نفسك ولذت عينك» رواه الترمذي

হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৪৩-[৩২] আবূ আইয়ুব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন এক বেদুঈন নবী (সা.) -এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি ঘোড়াকে খুব বেশি ভালোবাসি, জান্নাতে ঘোড়া আছে কি? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, যদি তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়, তবে তোমাকে মুক্তার তৈরি এমন একটি ঘোড়া দেয়া হবে যার দুটি ডানা রয়েছে, তোমাকে তার উপরে আরোহণ করানো হবে। অতঃপর তুমি যেখানে যেতে চাবে, তা উড়িয়ে তোমাকে সেখানে নিয়ে যাবে।

[তিরমিযী; তিনি (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এ হাদীসটির সূত্র নির্ভরযোগ্য নয়। এতে বর্ণনাকারী আবূ সাওরাহ্-কে হাদীস বর্ণনায় দুর্বল গণ্য করা হয়। ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) আরো বলেছেন, আমি মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল বুখারী (রহিমাহুল্লাহ)-কে বলতে শুনেছি, আবূ সাওরাহ্ ’মুনকারুল হাদীস’। তিনি মুনকার হাদীস বর্ণনা করেন।]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَنْ أَبِي أَيُّوبَ قَالَ أَتَى النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُحِبُّ الْخَيْلَ أَفِي الْجَنَّةِ خَيْلٌ؟ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنْ أُدْخِلْتَ الْجَنَّةَ أُتِيتَ بِفَرَسٍ مِنْ يَاقُوتَةٍ لَهُ جَنَاحَانِ فَحُمِلْتَ عَلَيْهِ ثُمَّ طَارَ بِكَ حَيْثُ شِئْتَ» رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ. وَقَالَ هَذَا حَدِيثٌ لَيْسَ بِالْقَوِيِّ وَأَبُو سَوْرَةَ الرَّاوِي يُضَعَّفُ فِي الْحَدِيثِ وَسَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ يَقُولُ: أَبُو سَوْرَةَ هَذَا مُنكر الحَدِيث يروي مَنَاكِير

حسن ، رواہ الترمذی (2544) * و للحدیث شاھد عند البیھقی فی البعث و النشور (439) و سندہ حسن لذاتہ ۔
(صَحِيح)

وعن أبي أيوب قال أتى النبي صلى الله عليه وسلم أعرابي فقال: يا رسول الله إني أحب الخيل أفي الجنة خيل؟ قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إن أدخلت الجنة أتيت بفرس من ياقوتة له جناحان فحملت عليه ثم طار بك حيث شئت» رواه الترمذي. وقال هذا حديث ليس بالقوي وأبو سورة الراوي يضعف في الحديث وسمعت محمد بن إسماعيل يقول: أبو سورة هذا منكر الحديث يروي مناكير

ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীসে জান্নাতে মানুষ প্রবেশ করার পর যা চাইবে, তাই পাবে- এটা বলা হয়েছে। ইমাম কাযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, উক্ত হাদীসের উদ্দেশ্য হলো মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করার পর তাদের মনের চাহিদা অনুপাতে যা চাইবে তাই সেখানে পাবে। যদি কেউ চায় ঘোড়ায় আরোহণ করতে তাহলে তাকে ঘোড়ায় আরোহণ করানো হবে। যদি কেউ চায় মণি-মুক্তার ঘোড়ায় আরোহণ করতে তাহলে তাকে অনুরূপ আকৃতির ঘোড়ায় আরোহণ করানো হবে। মোটকথা জান্নাতবাসীরা তাদের মনের চাহিদা অনুপাতে যা চাইবে তাই তারা সেখানে বিদ্যমান পাবে। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী হা. ২৫৪৪)।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৪৪-[৩৩] বুরয়দাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: জান্নাতাবাসীদের একশত বিশ কাতার হবে। তন্মধ্যে আশি কাতার হবে এই উম্মতের আর অবশিষ্ট চল্লিশ কাতার হবে অন্যান্য উম্মতের। (তিরমিযী, দারিমী ও বায়হাকী’র “কিতাবুল বাসি ওয়ান্ নুশূর”)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَنْ بُرَيْدَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَهْلُ الْجَنَّةِ عِشْرُونَ وَمِائَةُ صَفٍّ ثَمَانُونَ مِنْهَا مِنْ هَذِهِ الْأُمَّةِ وَأَرْبَعُونَ مِنْ سَائِرِ الْأُمَمِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَالدَّارِمِيُّ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي كتاب الْبَعْث والنشور

حسن ، رواہ الترمذی (2546 وقال : حسن) و الدارمی (2 / 337 ح 2838) و البیھقی فی البعث و النشور (لم اجدہ) [و صححہ ابن حبان (الموارد : 2639) و الحاکم علی شرط مسلم (2 / 81 ۔ 82) و وافقہ الذھبی] ۔
(صَحِيح)

وعن بريدة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أهل الجنة عشرون ومائة صف ثمانون منها من هذه الأمة وأربعون من سائر الأمم» . رواه الترمذي والدارمي والبيهقي في كتاب البعث والنشور

ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীসে এই উম্মাতের সংখ্যার আধিক্যতা বুঝানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, জান্নাতবাসীরা একশত বিশ কাতার হবে। এর মাঝে উম্মতে মুহাম্মাদী আশি কাতার, আর অন্যান্য জাতি ৪০ কাতার। ইমাম ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আল্লাহর রাসূল (সা.) -এর উক্ত হাদীস এবং তার থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেছেন, আমি আশা করি তোমরা জান্নাতের এক-চতুর্থাংশ হবে। এরপরে তিনি (সা.) আবার বলেছেন যে, আমি আশা করি তোমরা জান্নাতের এক-তৃতীয়াংশ হবে। এরপর তিনি (সা.) বলেছেন, আমি আশা করি তোমরা জান্নাতের অর্ধেক হবে। এই হাদীসের মাঝে কি সমাধান হবে?
ইমাম ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) উক্ত দুই হাদীসের সমাধানে বলেন, সম্ভবত ঐ আশি কাতারই সংখ্যার দিক থেকে চল্লিশ কাতারের সমান হবে। আর (ثلث)(ربع) এরপর যে বলা হয়েছে, (نِصْفَ أَهْلُ الْجَنَّةِ) তোমরা জান্নাতের অর্ধেক হবে, এটা আল্লাহর রাসূল (সা.) -এর সম্মানার্থে বৃদ্ধি করা হয়েছে।
শায়খ আবদুল হক (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, রাসূল -এর বাণী, (أَنْ تَكُونُوانِصْفَ أَهْلِ الْجَنَّثِ) এটা পূর্বের বাণীর সাথে সাংঘর্ষিক নয়। কারণ তিনি (সা.) প্রথমে আশা করেছেন যে, তোমরা জান্নাতের (ثلث) বা (ربع) হবে। এটা ছিল শুধুমাত্র তাঁর আশা। এরপর বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে অতিরিক্ততার সংবাদ দেয়া হয়েছে। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা, ২৫৪৬)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৪৫-[৩৪] সালিম তাঁর পিতা [ইবনু উমার (রাঃ)] হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আমার উম্মাত জান্নাতের যে দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে, তার প্রশস্ততা হবে উত্তম অশ্বারোহীর তিনদিন অথবা তিন বছরের পথের দূরত্ব। এছাড়াও দরজা অতিক্রমের সময় এত ভিড় হবে যে, ধাক্কার চোটে তাদের কাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হবে।

[তিরমিযী; আর তিনি বলেছেন, হাদীসটি য’ঈফ। তিনি আরো বলেন, আমি মুহাম্মাদ ইবনু ইসমাঈল বুখারী (রহিমাহুল্লাহ)-কে অত্র হাদীস সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি হাদীসটি সম্পর্কে অবগত নন বলে ব্যক্ত করেছেন এবং বলেছেন, অধস্তন রাবী ইয়াখলুদ ইবনু আবূ বা মুনকার হাদীস বর্ণনা করেন।]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَن سَالم عَنْ أَبِيهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَابُ أُمَّتِي الَّذِينَ يَدْخُلُونَ مِنْهُ الْجَنَّةَ عَرْضُهُ مَسِيرَةُ الرَّاكِبِ الْمُجَوِّدِ ثَلَاثًا ثُمَّ إِنَّهُمْ لَيُضْغَطُونَ عَلَيْهِ حَتَّى تَكَادُ مَنَاكِبُهُمْ تَزُولُ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ هَذَا حَدِيثٌ ضَعِيفٌ وَسَأَلْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيلَ عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَلَمْ يَعْرِفْهُ وَقَالَ: خَالِد بن أبي بكر يروي الْمَنَاكِير

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2548) * خالد بن ابی بکر : فیہ لین وعد الذھبی ھذا الحدیث من مناکیرہ ۔
(ضَعِيف)

وعن سالم عن أبيه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «باب أمتي الذين يدخلون منه الجنة عرضه مسيرة الراكب المجود ثلاثا ثم إنهم ليضغطون عليه حتى تكاد مناكبهم تزول» . رواه الترمذي وقال هذا حديث ضعيف وسألت محمد بن إسماعيل عن هذا الحديث فلم يعرفه وقال: خالد بن أبي بكر يروي المناكير

ব্যাখ্যা: মুহাদ্দিসগণ বলেন: উক্ত হাদীসে জান্নাতের দরজার দুই পার্শ্বের যে চৌকাঠ রয়েছে এবং উভয় চৌকাঠের মাঝে যে প্রশস্ততা রয়েছে তার দূরত্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যে, তা উত্তম অশ্বারোহীর তিন দিন বা তিন বছরের পথের দূরত্বের মতো হবে। অন্য এক রিওয়ায়াতে এসেছে, উভয় পার্শ্বের দূরত্ব হবে মক্কাহ ও হাজার শহরের দূরত্বের ন্যায়। কেউ কেউ বলেছেন, এর দ্বারা আধিক্যতা বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ অনেক প্রশস্ত হবে এবং এক সাথে অনেক মানুষ প্রবেশ করতে পারবে। আবার কেউ কেউ বলেছেন, এর দ্বারা জান্নাতবাসীরা যে তাদের মর্যাদা অনুপাতে বিভিন্ন দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে তা বুঝানো হয়েছে। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ২৫৪৮)।


হাদিসের মানঃ মুনকার (সহীহ হাদীসের বিপরীত)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৪৬-[৩৫] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: জান্নাতে একটি বাজার রয়েছে, সেখানে ক্রয়বিক্রয় নেই, বরং তাতে নারী-পুরুষদের আকৃতিসমূহ থাকবে। অতএব যখনই কেউ কোন আকৃতিকে পছন্দ করবে, তখন সে সেই আকৃতিতে প্রবেশ করবে।

[ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি গরীব।]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِن فِي الْجَنَّةِ لَسُوقًا مَا فِيهَا شِرًى وَلَا بَيْعٌ إِلَّا الصُّوَرَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ فَإِذَا اشْتَهَى الرَّجُلُ صُورَةً دَخَلَ فِيهَا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2550) * فیہ عبد الرحمن بن اسحاق الکوفی ضعیف (تقدم : 5597) ۔
(ضَعِيفٌ)

وعن علي رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إن في الجنة لسوقا ما فيها شرى ولا بيع إلا الصور من الرجال والنساء فإذا اشتهى الرجل صورة دخل فيها» . رواه الترمذي وقال: هذا حديث غريب

ব্যাখ্যা: উক্ত বাজার মূলত সৌন্দর্য ও কামনিয়তা দ্বারা সজ্জিত হওয়ার এবং সুন্দর হতে সুন্দর আকার আকৃতিতে রূপান্তরিত হওয়ার এক মিলনকেন্দ্র হবে। সেখানে চতুর্দিকে মনোরম ও মনোমুগ্ধকর আকার আকৃতি উপস্থিত থাকবে। আর জান্নাতবাসী নারী-পুরুষদের যে কেউ উক্ত আকার-আকৃতি হতে যেটি পছন্দ করবে তাতে রূপান্তরিত হতে পারবে। ইমাম ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এর দ্বারা দু’টি উদ্দেশ্য হতে পারে:
১) জান্নাতবাসীদের নিকট বিভিন্ন প্রকার মনোমুগ্ধকর ও মনোরম আকার-আকৃতি পেশ করা হবে প্রত্যেকেই তাদের ইচ্ছা মতো সেটিতে রূপান্তরিত হতে পারবে।
২) জান্নাতে ঐ বাজারে বিভিন্ন আকৃতির মনোরম ও মনোমুগ্ধকর সাজ-সজ্জা থাকবে যা সাধারণত মানুষ গ্রহণ করে থাকে যেমন স্বর্ণ অলংকার, সোনার মালা ও সোনার টুপি ইত্যাদি। জান্নাতবাসীরা তাদের ইচ্ছা অনুপাতে সেগুলো দ্বারা সাজ-সজ্জা করবে। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী হা, ২৫৫০)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৪৭-[৩৬] সা’ঈদ ইবনু মুসাইয়াব (রহ.) হতে বর্ণিত। একদিন তিনি আবূ হুরায়রাহ (রাঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করলেন। তখন আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কাছে আমি এ দু’আ করি, আমাকে ও তোমাকে তিনি যেন জান্নাতের বাজারে একত্রিত করেন। তখন সা’ঈদ (রাঃ) বললেন, সেখানে কি বাজারও আছে? তিনি উত্তরে বললেন, হ্যা, আমাকে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: জান্নাতবাসীগণ যখন জান্নাতে প্রবেশ করবে, তখন তারা নিজ নিজ ’আমালের মান অনুযায়ী স্থান লাভ করবে। অতঃপর দুনিয়ার দিনগুলোর হিসাব ও পরিমাণ অনুযায়ী সপ্তাহের জুমু’আর দিন তাদেরকে একটি বিশেষ অনুমতি প্রদান করা হবে, আর তা হলো তারা তাদের প্রভুর সাক্ষাৎ লাভ করবে। সেদিন আল্লাহ তা’আলা তাঁর ’আরশকে জনসম্মুখে করে দেবেন এবং জান্নাতবাসীদের সামনে জান্নাতের বৃহৎ বাগান একটি বাগানে আত্মপ্রকাশ করবেন এবং জান্নাতবাসীদের জন্য তাদের মান ও মর্যাদা অনুপাতে নূরের, মণি-মুক্তার, মতি এবং সোনা-রোপার মিম্বার স্থাপন করা হবে। তাদের মধ্যে সাধারণ মর্যাদাবান ব্যক্তি- অথচ জান্নাতীদের মধ্যে কেউ হীন হবে না- কাফুর কস্তুরীর টিলার উপর বসবে। এ সমস্ত টিলায় বসা লোকেরা কুরসী বা আসনে বসা ওই লোকেদেরকে নিজেদের অপেক্ষা অধিক মর্যাদা লাভকারী বলে ধারণা করবে না। (অর্থাৎ প্রত্যেক জান্নাতী স্বীয় স্থানে সন্তুষ্ট থাকবে)

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) বলেন, আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি আমাদের প্রভুকে দেখতে পাব? তিনি (সা.) বললেন, হ্যা, দেখতে পাবে। আচ্ছা বল দেখি, সূর্য এবং পূর্ণিমার রাতে চাঁদ দেখতে তোমাদের কোন প্রকারের সন্দেহ হয়? আমরা বললাম, না। কোন সন্দেহ হয় না। রাসূল (সা.) বললেন, ঐভাবে তোমাদের রবকে দেখতে তোমাদের কোন রকমের সন্দেহ হবে না এবং উক্ত বৈঠকে এমন কোন লোক অবশিষ্ট থাকবে না, যার সাথে আল্লাহ তা’আলা সরাসরি কথা বলবেন না। এমনকি আল্লাহ তা’আলা উপস্থিত এক লোককে বলবেন, হে অমুকের পুত্র অমুক! তোমার কি স্মরণ আছে যে, অমুক দিন তুমি এ কথাটি বলেছিলে? মোটকথা, দুনিয়াতে সে যে সকল অন্যায় করেছিল তার কিছু কিছু তাকে আল্লাহ তা’আলা স্মরণ করিয়ে দেবেন। তখন সে বলবে, হে আমার প্রভু! তুমি কি আমাকে ক্ষমা করে দাওনি? আল্লাহ তা’আলা বলবেন, হ্যাঁ, নিশ্চয়। আমার ক্ষমার বদৌলতেই তুমি আজ এ মর্যাদার অধিকারী হয়েছ।
ফলকথা, তারা এ অবস্থায় থাকতেই একখণ্ড মেঘ এসে তাদেরকে ওপর থেকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে এবং তা তাদের ওপর এমন সুগন্ধি বর্ষণ করবে যে, ঐ রকম সুগন্ধি তারা আর কখনো পায়নি। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা বলেন, তোমরা উঠ এবং তার দিকে চল, যা আমি তোমাদের সম্মান বৃদ্ধির জন্য তৈরি করে রেখেছি। আর তোমাদের মনে যা যা চায় তা থেকে নিয়ে নাও। অতঃপর আমরা এমন একটি বাজারে আসব, যাকে ফেরেশতাগণ বেষ্টন করে রেখেছেন। তাতে এমন সকল জিনিস রক্ষিত থাকবে, যা মানব চক্ষু কখনো দেখতে পারেনি, তার সংবাদ কানে শুনতে পাইনি, এমনকি মানুষের হৃদয়ও কল্পনা করতে পারেনি। অতএব আমাদেরকে সেই বাজার থেকে এমন সব কিছু দেয়া হবে যা আমরা পছন্দ করব, অথচ উক্ত বাজারে কোন জিনিসই ক্রয়-বিক্রয় হবে না, বরং সেখানে জান্নাতীগণ একজন অন্যজনের সাথে সাক্ষাৎ করবে। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: সেই বাজারে একজন উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন লোক একজন সাধারণ ধরনের লোকের সাথে সাক্ষাৎ করবে, অবশ্য জান্নাতীদের মধ্যে কেউ হীন নয়। তখন সে তার পোশাক-পরিচ্ছদ দেখে আশ্চর্যান্বিত হবে কিন্তু তার কথা শেষ হতে না হতেই সে অনুধাবন করবে যে, তার পোশাক তার চেয়ে আরো উত্তম হয়ে গেছে। আর এটা এজন্য যে, জান্নাতে কোন লোকের অনুতপ্ত ও দুশ্চিন্তায় পতিত হওয়ার সুযোগ থাকবে না।

অতঃপর (উক্ত বাজার ও পরস্পরে দেখা-সাক্ষাৎ করে) আমরা নিজ নিজ বাসস্থানের দিকে ফিরে যাব। এ সময় আমাদের স্ত্রীগণ আমাদের সাথে সাক্ষাৎ করে বলবে, মারহাবা, খোশ আমদেদ! মূলত যখন তোমরা আমাদের কাছ থেকে পৃথক হয়েছিলে, সে অবস্থা অপেক্ষা এখন তোমরা আরো অধিক সুন্দর চেহারা ও সৌন্দর্যমণ্ডিত হয়ে আমাদের কাছে ফিরে এসেছ। তখন আমরা বলব, আজ আমরা আমাদের মহাপরাক্রশালী প্রভুর সাথে বসার সৌভাগ্য লাভ করেছি। কাজেই এ মর্যাদার অধিকারী হয়ে প্রত্যাবর্তন করা আমাদের জন্য যথার্থ উপযোগী হয়েছে এবং এমন হওয়াই উচিত ছিল।

[তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ; আর ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন হাদীসটি গরীব]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَن سعيد بن الْمسيب أَنه لقيَ أَبَا هريرةَ فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: أَسْأَلُ اللَّهَ أَنْ يَجْمَعَ بَيْنِي وَبَيْنَكَ فِي سُوقِ الْجَنَّةِ. فَقَالَ سَعِيدٌ: أَفِيهَا سُوقٌ؟ قَالَ: نَعَمْ أَخْبَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ أَهْلَ الْجَنَّةِ إِذَا دَخَلُوهَا نَزَلُوا فِيهَا بِفَضْلِ أَعْمَالِهِمْ ثُمَّ يُؤْذَنُ لَهُمْ فِي مِقْدَارِ يَوْمِ الْجُمُعَةِ مِنْ أَيَّامِ الدُّنْيَا فَيَزُورُونَ رَبَّهُمْ وَيَبْرُزُ لَهُمْ عَرْشُهُ وَيَتَبَدَّى لَهُم فِي روضةٍ من رياضِ الجنَّة فَيُوضَع لَهُم مَنَابِر من نور ومنابرمن لُؤْلُؤٍ وَمَنَابِرُ مِنْ يَاقُوتٍ وَمَنَابِرُ مِنْ زَبَرْجَدٍ وَمَنَابِرُ مِنْ ذَهَبٍ وَمَنَابِرُ مِنْ فِضَّةٍ وَيَجْلِسُ أَدْنَاهُم - وَمَا فيهم دنيٌّ - عَلَى كُثْبَانِ الْمِسْكِ وَالْكَافُورِ مَا يَرَوْنَ أَنَّ أَصْحَابَ الْكَرَاسِيِّ بِأَفْضَلَ مِنْهُمْ مَجْلِسًا» . قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَهَلْ نَرَى رَبَّنَا؟ قَالَ: «نَعَمْ هَلْ تَتَمَارَوْنَ فِي رُؤْيَةِ الشَّمْسِ وَالْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ؟» قُلْنَا: لَا. قَالَ: كَذَلِكَ لَا تَتَمَارَوْنَ فِي رُؤْيَةِ رَبِّكُمْ وَلَا يَبْقَى فِي ذَلِكَ الْمَجْلِسِ رَجُلٌ إِلَّا حَاضَرَهُ اللَّهُ مُحَاضَرَةً حَتَّى يَقُولَ لِلرَّجُلِ مِنْهُمْ: يَا فلَان ابْن فلَان أَتَذكر يَوْم قلت كَذَا وَكَذَا؟ فيذكِّره بِبَعْض غدارته فِي الدُّنْيَا. فَيَقُولُ: يَا رَبِّ أَفَلَمْ تَغْفِرْ لِي؟ فَيَقُولُ: بَلَى فَبِسِعَةِ مَغْفِرَتِي بَلَغْتَ مَنْزِلَتَكَ هَذِهِ. فَبَيْنَا هُمْ عَلَى ذَلِكَ غَشِيتْهُمْ سَحَابَةٌ مِنْ فَوْقِهِمْ فَأَمْطَرَتْ عَلَيْهِمْ طِيبًا لَمْ يَجِدُوا مِثْلَ رِيحِهِ شَيْئًا قَطُّ وَيَقُولُ رَبُّنَا: قُومُوا إِلَى مَا أَعْدَدْتُ لَكُمْ مِنَ الْكَرَامَةِ فَخُذُوا مَا اشْتَهَيْتُمْ فَنَأْتِي سُوقًا قَدْ حَفَّتْ بِهِ الْمَلَائِكَةُ فِيهَا مَا لَمْ تَنْظُرِ الْعُيُونُ إِلَى مِثْلِهِ وَلَمْ تَسْمَعِ الْآذَانُ وَلَمْ يَخْطُرْ عَلَى الْقُلُوبِ فَيُحْمَلُ لَنَا مَا اشْتَهَيْنَا لَيْسَ يُبَاعُ فِيهَا وَلَا يُشْتَرَى وَفِي ذَلِكَ السُّوقِ يَلْقَى أَهْلُ الْجَنَّةِ بَعْضُهُمْ بَعْضًا . قَالَ: فَيُقْبِلُ الرَّجُلُ ذُو الْمَنْزِلَةِ الْمُرْتَفِعَةِ فَيَلْقَى مَنْ هُوَ دُونَهُ - وَمَا فيهم دنيٌّ - فيروعُه مَا يرى عَلَيْهِ من اللباسِ فِيمَا يَنْقَضِي آخِرُ حَدِيثِهِ حَتَّى يَتَخَيَّلَ عَلَيْهِ مَا هُوَ أحسن مِنْهُ وَذَلِكَ أَنَّهُ لَا يَنْبَغِي لِأَحَدٍ أَنْ يَحْزَنَ فِيهَا ثُمَّ نَنْصَرِفُ إِلَى مَنَازِلِنَا فَيَتَلَقَّانَا أَزْوَاجُنَا فَيَقُلْنَ: مَرْحَبًا وَأَهْلًا لَقَدْ جِئْتَ وَإِنَّ بِكَ مِنَ الْجَمَالِ أَفْضَلَ مِمَّا فَارَقْتَنَا عَلَيْهِ فَيَقُولُ: إِنَّا جَالَسْنَا الْيَوْمَ رَبَّنَا الْجَبَّارَ وَيَحِقُّنَا أَنْ نَنْقَلِبَ بِمِثْلِ مَا انْقَلَبْنَا . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيث غَرِيب

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2549) و ابن ماجہ (4336) * ھشام بن عمار صدوق اختلط ، ولم یثبت بانہ حدث بھذا الحدیث قبل اختلاطہ ۔
(ضَعِيف)

وعن سعيد بن المسيب أنه لقي أبا هريرة فقال أبو هريرة: أسأل الله أن يجمع بيني وبينك في سوق الجنة. فقال سعيد: أفيها سوق؟ قال: نعم أخبرني رسول الله صلى الله عليه وسلم: «إن أهل الجنة إذا دخلوها نزلوا فيها بفضل أعمالهم ثم يؤذن لهم في مقدار يوم الجمعة من أيام الدنيا فيزورون ربهم ويبرز لهم عرشه ويتبدى لهم في روضة من رياض الجنة فيوضع لهم منابر من نور ومنابرمن لؤلؤ ومنابر من ياقوت ومنابر من زبرجد ومنابر من ذهب ومنابر من فضة ويجلس أدناهم - وما فيهم دني - على كثبان المسك والكافور ما يرون أن أصحاب الكراسي بأفضل منهم مجلسا» . قال أبو هريرة: قلت: يا رسول الله وهل نرى ربنا؟ قال: «نعم هل تتمارون في رؤية الشمس والقمر ليلة البدر؟» قلنا: لا. قال: كذلك لا تتمارون في رؤية ربكم ولا يبقى في ذلك المجلس رجل إلا حاضره الله محاضرة حتى يقول للرجل منهم: يا فلان ابن فلان أتذكر يوم قلت كذا وكذا؟ فيذكره ببعض غدارته في الدنيا. فيقول: يا رب أفلم تغفر لي؟ فيقول: بلى فبسعة مغفرتي بلغت منزلتك هذه. فبينا هم على ذلك غشيتهم سحابة من فوقهم فأمطرت عليهم طيبا لم يجدوا مثل ريحه شيئا قط ويقول ربنا: قوموا إلى ما أعددت لكم من الكرامة فخذوا ما اشتهيتم فنأتي سوقا قد حفت به الملائكة فيها ما لم تنظر العيون إلى مثله ولم تسمع الآذان ولم يخطر على القلوب فيحمل لنا ما اشتهينا ليس يباع فيها ولا يشترى وفي ذلك السوق يلقى أهل الجنة بعضهم بعضا . قال: فيقبل الرجل ذو المنزلة المرتفعة فيلقى من هو دونه - وما فيهم دني - فيروعه ما يرى عليه من اللباس فيما ينقضي آخر حديثه حتى يتخيل عليه ما هو أحسن منه وذلك أنه لا ينبغي لأحد أن يحزن فيها ثم ننصرف إلى منازلنا فيتلقانا أزواجنا فيقلن: مرحبا وأهلا لقد جئت وإن بك من الجمال أفضل مما فارقتنا عليه فيقول: إنا جالسنا اليوم ربنا الجبار ويحقنا أن ننقلب بمثل ما انقلبنا . رواه الترمذي وابن ماجه وقال الترمذي: هذا حديث غريب

ব্যাখ্যা: (أَسْأَلُ اللَّهَ أَنْ يَجْمَعَ) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) সা'ঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব (রহিমাহুল্লাহ)-কে বলেন, আল্লাহর রাব্বুল আলামীন যেন আমাকে ও তোমাকে জান্নাতের বাজারে একত্রিত করেন। আসলে জান্নাতে প্রতি সপ্তাহে একদিন সকলের মিলন হবে সেটাকেই জান্নাতের বাজার বলা হয়েছে উক্ত হাদীসে। উক্ত বাজারে মনোমুগ্ধকর অনেক আকার-আকৃতি থাকবে যে কেউ তার মনের চাহিদা অনুপাতে তাতে রূপান্তরিত হতে পারবে। জান্নাতবাসীরা তাদের ‘আমল অনুপাতে সেই বাজারে উপস্থিত হবে। প্রতি জুমু'আর দিন একবার করে অনুমতি পাবে। প্রত্যেকের জন্য আসন থাকবে। তাদের ‘আমল অনুপাতে কারো জন্য মণি-মুক্তার আসন থাকবে। কারো জন্য ইয়াকূত ও পান্না পাথরের এবং কারো জন্য স্বর্ণ ও রূপার। জান্নাতবাসীদের সর্বনিম্ন ব্যক্তি মিশক আম্বারের আসনে বসবে।
(هَلْ نَرَى رَبَّنَا) জান্নাতে মু'মিনরা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে দেখতে পাবে কোন প্রকার কষ্ট-ক্লেশ ছাড়া। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সকলের সামনে উপস্থিত হয়ে জান্নাতবাসীদের সাথে সরাসরি কথা বললেন এবং তাদেরকে দেয়া বিভিন্ন নি'আমাতের কথা স্মরণ করিয়ে দিবেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ হা. ৫৬৪৭, তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ২৫৪৯)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৪৮-[৩৭] আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: নিম্নমানের জান্নাতবাসীর জন্য আশি হাজার সেবক এবং বাহাত্তর জন স্ত্রী হবে, তার জন্য গম্বুজ আকৃতির ছাউনি স্থাপন করা হবে, যা মণি-মুক্তা, হীরা ও ইয়াকুত দ্বারা তৈরি। উক্ত ছাউনির প্রশস্ততা হবে জাবিয়াহ্ থেকে সন্‌’আ পর্যন্ত মধ্যবর্তী দূরত্বের পরিমাণ। উক্ত সূত্রে আরো বর্ণিত হয়েছে, তিনি (সা.) বলেছেন: ছোট বয়সে কিংবা বৃদ্ধ বয়সে যে কোন জান্নাতী লোক (দুনিয়াতে) মারা যাবে, সে জান্নাতে ত্রিশ বছর বয়সী (যুবক) হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং বয়স (-এর আকৃতি) কখনো বৃদ্ধি পাবে না। জাহান্নামবাসীরাও ঐ রকম (৩০ বছর বয়সী) হবে।
উক্ত সূত্রে অপর এক বর্ণনায় আছে, রাসূল (সা.) বলেছেন, জান্নাতবাসীদের মাথায় এমন মুকুট রাখা হবে, যার সাধারণ মুক্তা দুনিয়ার পূর্বপ্রান্ত থেকে পশ্চিমপ্রান্ত পর্যন্ত আলোকিত করবে।
অত্র সনদে অপর এক বর্ণনায় আছে (সহীহ লিগায়রিহী), জান্নাতে সন্তান কামনা করবে, তখন গর্ভ, প্রসব এবং তার বয়স চাহিদা অনুযায়ী মুহুর্তের মধ্যে সংঘটিত হয়। জান্নাতে যখনই সন্তানের আকাঙ্ক্ষা করবে, তখনই সে সন্তান পাবে, তবে কেউই আশা করবে না। (এ কথাটি ইসহাক-এর)

ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি আরো বলেছেন, হাদীসটি গরীব; ইবনু মাজাহ চতুর্থটি আর দারিমী কেবলমাত্র শেষাংশটি বর্ণনা করেছেন।

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَدْنَى أَهْلِ الْجَنَّةِ الَّذِي لَهُ ثَمَانُونَ أَلْفَ خَادِمٍ وَاثْنَتَانِ وَسَبْعُونَ زَوْجَةً وَتُنْصَبُ لَهُ قُبَّةٌ مِنْ لُؤْلُؤٍ وَزَبَرْجَدٍ وَيَاقُوتٍ كَمَا بَيْنَ الْجَابِيَةِ إِلَى صَنْعَاءَ» وَبِهَذَا الْإِسْنَاد قَالَ (ضَعِيف) : «وَمَنْ مَاتَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ مِنْ صَغِيرٍ أَوْ كَبِيرٍ يُرَدُّونَ بَنِي ثَلَاثِينَ فِي الْجَنَّةِ لَا يَزِيدُونَ عَلَيْهَا أَبَدًا وَكَذَلِكَ أَهْلُ النَّارِ» وَبِهَذَا الْإِسْنَاد قَالَ (ضَعِيف) : «إِنَّ عليهمُ التيجانَ أَدْنَى لُؤْلُؤَةٍ مِنْهَا لَتُضِيءُ مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ والمغربِ» وَبِهَذَا الإِسناد قَالَ (صَحِيح لغيره) : «الْمُؤْمِنُ إِذَا اشْتَهَى الْوَلَدَ فِي الْجَنَّةِ كَانَ حَمْلُهُ وَوَضْعُهُ وَسِنُّهُ فِي سَاعَةٍ كَمَا يُشْتَهَى» وَقَالَ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ فِي هَذَا الْحَدِيثِ: إِذَا اشْتَهَى الْمُؤْمِنُ فِي الْجَنَّةِ الْوَلَدَ كَانَ فِي سَاعَة وَلَكِن لَا يَشْتَهِي (قَول اسحاق لَيْسَ من الحَدِيث) رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيث غَرِيب. روى ابْن مَاجَه الرَّابِعَة والدارمي الْأَخِيرَة

حسن ، رواہ الترمذی (1 / 2562) * قلت : و رواہ عبداللہ بن وھب : اخبرنی عمرو بن الحارث بہ (ابن حبان ، الاحسان : 7358 / 7401) و سندہ حسن ۔ ۔ ۔ حسن ، رواہ الترمذی (2 / 2562)و ابن ابی داود کما فی النھایۃ فی الفتن و الملاحم (2 / 132 ح 1203 و سندہ حسن) * قلت : رواہ ابن وھب : اخبرنا عمرو بن الحارث بہ ۔۔۔ حسن ، رواہ الترمذی (3 / 2563) و ابن حبان (الاحسان : 7354 / 7397 و سندہ حسن) * قلت : رواہ ابن وھب : أخبرنی عمرو بن الحارث بہ ۔ 0 حدیث ’’ المومن اذا اشتھی ‘‘ الخ سندہ حسن ، رواہ الترمذی (2563 وقال : حسن غریب) و ابن ماجہ (4328) والدارمی (2 / 337 ح 2837) ۔
(ضَعِيف)

وعن أبي سعيد قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أدنى أهل الجنة الذي له ثمانون ألف خادم واثنتان وسبعون زوجة وتنصب له قبة من لؤلؤ وزبرجد وياقوت كما بين الجابية إلى صنعاء» وبهذا الإسناد قال (ضعيف) : «ومن مات من أهل الجنة من صغير أو كبير يردون بني ثلاثين في الجنة لا يزيدون عليها أبدا وكذلك أهل النار» وبهذا الإسناد قال (ضعيف) : «إن عليهم التيجان أدنى لؤلؤة منها لتضيء ما بين المشرق والمغرب» وبهذا الإسناد قال (صحيح لغيره) : «المؤمن إذا اشتهى الولد في الجنة كان حمله ووضعه وسنه في ساعة كما يشتهى» وقال إسحاق بن إبراهيم في هذا الحديث: إذا اشتهى المؤمن في الجنة الولد كان في ساعة ولكن لا يشتهي (قول اسحاق ليس من الحديث) رواه الترمذي وقال: هذا حديث غريب. روى ابن ماجه الرابعة والدارمي الأخيرة

ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীসে বলা হয়েছে সর্বনিম্ন জান্নাতী ব্যক্তির জন্য আশি হাজার খাদেম ও বাহাত্তরজন স্ত্রী হবে হুরদের মধ্য থেকে এবং তাদের জন্য মণিমুক্তা, হীরা ও ইয়াকুত পাথরের গোলাকৃতির ছাউনি স্থাপন করা হবে। তাতে তারা বসে আনন্দ প্রকাশ করবে। অনেকে বলেছেন, উপরোক্ত সংখ্যা দ্বারা আধিক্যতা বুঝানো হয়েছে।
(مَنْ مَاتَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ مِنْ صَغِيرٍ) অর্থাৎ জান্নাতবাসী কেউ দুনিয়াতে ছোট অবস্থায় মারা গেলে সে জান্নাতে ত্রিশ বছর বয়সী যুবক হয়ে প্রবেশ করবে। উক্ত বয়স কখনো দুনিয়ার মতো বৃদ্ধি পাবে না। মোটকথা জান্নাতবাসীরা চিরকাল উক্ত বয়সেই থাকবে, বার্ধক্য কখনো তাদেরকে স্পর্শ করবে না।
(كَذَلِكَ أَهْلُ النَّارِ) জাহান্নামবাসীরাও অনুরূপ ত্রিশ বছর বয়সী হবে অর্থাৎ যেভাবে জান্নাতবাসীরা ত্রিশ বছর বয়সী হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে দুনিয়াতে তারা যেই বয়সেই মৃত্যুবরণ করুক না কেন? অনুরূপভাবে জাহান্নামবাসীরাও ত্রিশ বছর বয়সী হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে এবং তারা চিরকাল সেখানে বসবাস করবে।
ত্রিশ বছর নির্ধারণের কারণ: যাতে করে জান্নাতবাসীরা পরিপূর্ণরূপে আরাম-আয়েশ ভোগ করতে পারে এবং জাহান্নামবাসীরা পরিপূর্ণরূপে ‘আযাব ভোগ করতে পারে। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ৫৬৪৮)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জান্নাত ও জান্নাতবাসীদের বিবরণ

৫৬৪৯-[৩৮] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: জান্নাতের হুরগণ এক জায়গায় সমবেত হয়ে উঁচুস্বরে এমন সুন্দর লহরীতে গাইবে, সৃষ্ট জীব সেই ধরনের লহরী কখনো শুনতে পায়নি। তারা বলবে, আমরা চিরদিন থাকব, কখনো ধ্বংস হব না। আমরা সর্বদা সুখে-সানন্দে থাকব, কখনো দুঃখ ও দুশ্চিন্তায় পতিত হব না। আমরা সদা খুশি থাকব কখনো নাখোশ হব না। অতএব তাকে ধন্যবাদ, যার জন্য আমরা এবং আমাদের জন্য যিনি। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب صفةالجنة وَأَهْلهَا)

وَعَنْ عَلِيٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ فِي الْجَنَّةِ لَمُجْتَمَعًا لِلْحُورِ الْعِينِ يَرْفَعْنَ بِأَصْوَاتٍ لَمْ تَسْمَعِ الْخَلَائِقُ مِثْلَهَا يَقُلْنَ: نَحْنُ الْخَالِدَاتُ فَلَا نَبِيدُ وَنَحْنُ النَّاعِمَاتُ فَلَا نَبْأَسُ وَنَحْنُ الرَّاضِيَاتُ فَلَا نَسْخَطُ طُوبَى لِمَنْ كانَ لنا وَكُنَّا لَهُ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2564 ، 2550) * عبد الرحمن بن اسحاق الکوفی ضعیف ۔
(ضَعِيف)

وعن علي قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: إن في الجنة لمجتمعا للحور العين يرفعن بأصوات لم تسمع الخلائق مثلها يقلن: نحن الخالدات فلا نبيد ونحن الناعمات فلا نبأس ونحن الراضيات فلا نسخط طوبى لمن كان لنا وكنا له . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: জান্নাতে হুরদের জন্য একটি মিলনকেন্দ্র হবে, সেখানে হুরেরা বিভিন্ন প্রকার কবিতা আবৃত্তি করবে সুরভিত কণ্ঠে, উঁচু আওয়াজে যা মানুষ কখনো শুনেনি। তারা বলবে,
(نَحْنُ الْخَالِدَاتُ فَلَا نَبِيدُ) আমরা চিরদিন থাকব কখনো ধ্বংস হব না। (وَنَحْنُ النَّاعِمَاتُ فَلَا نَبْأَسُ) আমাদের সর্বদা মুখে আনন্দ থাকবে কখনো দুঃখ ও দুশ্চিন্তায় পতিত হব না। (وَنَحْنُ الرَّاضِيَاتُ فَلَا نَسْخَطُ) আমরা সর্বদা সন্তুষ্ট থাকব কখনো নাখোশ হব না। (طُوبَى لِمَنْ كانَ لنا وَكُنَّا لَهُ) অতএব সুসংবাদ তাকে যার জন্য আমরা এবং আমাদের জন্য যিনি।
অন্য এক রিওয়ায়াতে এসেছে, সাহাবীরা বলেন, আমরা বললাম, হে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)! সেই গানটি কি হবে? তিনি বলেন, তা হবে আল্লাহর তাসবীহ ও প্রশংসা এবং তার পবিত্রতা বর্ণনা করা। (তুহফাতুল আহওয়াযী হা. ৫৬৪৯)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৮: সৃষ্টির সূচনা ও কিয়ামতের বিভিন্ন অবস্থা (كتاب أَحْوَال الْقِيَامَة وبدء الْخلق)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২০ পর্যন্ত, সর্বমোট ২২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 পরের পাতা »