পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - আশা আকাঙ্ক্ষা ও উদ্বেগ প্রসঙ্গ

৫২৮১-[১৪] ’আমর ইবনু শু’আয়ব (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। নাবী (সা.) বলেছেন: এ উম্মতের কল্যাণের সূচনা হলো (আল্লাহর ওপর) ইয়াক্বীন বা বিশ্বাস এবং (দুনিয়া) বিমুখতা অবলম্বন করা। আর অনিষ্টতার মূল হলো কৃপণতা ও লোভ-লালসা। (বায়হাকী)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ - (بَاب الأمل والحرص)

عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَوَّلُ صَلَاحِ هَذِهِ الْأُمَّةِ الْيَقِينُ وَالزُّهْدُ وَأَوَّلُ فَسَادِهَا الْبُخْلُ وَالْأَمَلُ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي «شعب الْإِيمَان»

سندہ ضعیف ، رواہ البیھقی فی شعب الایمان (10844 ، نسخۃ محققۃ : 10350) * فیہ ابو عبد الرحمن السلمی ضعیف جدًا و عبداللہ بن لھیعۃ مدلس و عنعن ان صح السند الیہ و للحدیث لون آخر عند احمد (الزھد ص 10 ص 51) و سندہ ضعیف لانقطاعہ ۔

عن عمرو بن شعيب عن ابيه عن جده ان النبي صلى الله عليه وسلم قال اول صلاح هذه الامة اليقين والزهد واول فسادها البخل والامل رواه البيهقي في شعب الايمانسندہ ضعیف رواہ البیھقی فی شعب الایمان 10844 نسخۃ محققۃ 10350 فیہ ابو عبد الرحمن السلمی ضعیف جدا و عبداللہ بن لھیعۃ مدلس و عنعن ان صح السند الیہ و للحدیث لون اخر عند احمد الزھد ص 10 ص 51 و سندہ ضعیف لانقطاعہ ۔

ব্যাখ্যা : ইয়াক্বীন বা বিশ্বাস হলো এ উম্মাতের প্রথম মানবীয় কল্যাণ, এটা পরকালীন পরিণতি বিষয়ক এবং সংসারত্যাগ বা দুনিয়াবিরাগী বিষয়ক সূচক চিহ্ন। পক্ষান্তরে উম্মতের প্রথম ফাসাদ বা বিপর্যয় সূচক চিহ্ন হলো কৃপণতা এবং দুনিয়ার প্রতি দুর্বার আকাঙ্ক্ষা ও অসীম লোভ লালসা।
হাদীসের শব্দ (الْأَمَلُ) “আকাঙ্ক্ষা’, ‘আশা’ এ শব্দের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ‘আল্লামাহ্ মুল্লা ‘আলী আল কারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন : (فَالْأَمَلُ إِنَّمَا هُوَ الْغَفْلَةُ عَنْ سُرْعَةِ الْقِيَا مَةِ الصُّغْرٰى وَالْكُبْرٰى) “দুনিয়ার আশা আকাঙ্ক্ষা হলো দ্রুত কিয়ামত অনুষ্ঠিত হওয়া থেকে অর্থাৎ তার ছোট-বড় সকল লক্ষণ থেকে অমনোযোগী ও বেপরোয়া হয়ে থাকা।” আর (بُخْيلُ) “কৃপণতার উৎস স্থল হলো (حُبُّ الدُّنْيَا) দুনিয়াপ্রীতি। এর সহায়ক কথা বলেছেন হাসান বসরী (রহিমাহুল্লাহ), তিনি বলেছেন: (صَلَاحُ الدِّينِ الْوَرَعُ وَفَسَادُهُ الطَّمَعُ) দীনের কল্যাণ হলো তাক্বওয়া ও আল্লাহভীতি আর তার বিপর্যয় বা ধ্বংস হলো লোভ-লালসা। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; আল কাশিফ ১০ম খণ্ড, ৩৩২৫ পৃ.)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - আশা আকাঙ্ক্ষা ও উদ্বেগ প্রসঙ্গ

৫২৮২-[১৫] সুফইয়ান আস্ সাওরী (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন : খসখসে মোটা পোশাক পরিধান করা এবং স্বাদবিহীন খাদ্য খাওয়া পরহেজগারি নয়; বরং প্রকৃত পরহেজগারি হলো দুনিয়ার প্রতি মোহকে খাটো রাখা। (শারহুস্ সুন্নাহ্)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ - (بَاب الأمل والحرص)

وَعَنْ سُفْيَانَ الثَّوْرِيِّ قَالَ: لَيْسَ الزُّهْدُ فِي الدُّنْيَا بِلُبْسِ الْغَلِيظِ وَالْخَشِنِ وَأَكْلِ الْجَشِبِ إِنَّمَا الزُّهْدُ فِي الدُّنْيَا قِصَرُ الْأَمَلِ. رَوَاهُ فِي «شرح السّنة»

اسنادہ ضعیف ، رواہ البغوی فی شرح السنۃ (14 / 286 بدون سند ولم اجد مسندًا) ۔
(ضَعِيف)

وعن سفيان الثوري قال ليس الزهد في الدنيا بلبس الغليظ والخشن واكل الجشب انما الزهد في الدنيا قصر الامل رواه في شرح السنةاسنادہ ضعیف رواہ البغوی فی شرح السنۃ 14 286 بدون سند ولم اجد مسندا ۔ضعيف

ব্যাখ্যা : (الزُّهْدُ فِي الدُّنْيَا) হলো দুনিয়াবিরাগী হওয়া, এটা ইসলামের প্রশংসনীয় গুণাবলির একটি অন্যতম গুণ। এটাকে আমরা পরহেজগারি বলতে পারি। এ গুণ আত্মিক বিষয়, এতে লৌকিকতা বা প্রদর্শনীর কিছু নেই। কিছু মানুষ নিজের দরবেশী প্রকাশের জন্য মোটা এবং অমসৃণ কাপড় পরিধান করে থাকে, সুস্বাদু তরকারী বর্জন করে শুকনো মোটা রুটি খেয়ে জীবন নির্বাহ করে থাকে। অত্র হাদীসে তাদের কথাই বলা হয়েছে যে, এটা দুনিয়াবিরাগী বা পরহেজগারি নয়, বরং পরহেজগারি হলো (قِصَرُ الْأَمَلِ) দুনিয়ার মোহকে খাটো রাখা। হাদীসে উল্লেখিত বাক্য : (إِنَّمَا الزُّهْدُ فِي الدُّنْيَا قِصَرُ الْأَمَلِ) “নিশ্চয় দুনিয়াবিরাগী বা পরহেজগারি হলো দুনিয়ার মোহকে খাটো রাখা” এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মুল্লা ‘আলী আল ক্বারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, (أَيِ: اقْتِصَارُالْأَمَلِ وَالِاسْتِعْدَادُلِلْأَ جَلِ بَالْمُسَارَعَةِ إِلَىالتَّوْبَةِ وَالْعِلْمِ وَالْعَماَلِ، وَحَاصِلُهٗ أَنَّ الزُّهُدَ الْحَقِيَّ هُوَ مَا يَكُونُ فِي الْحَالِ الْقَلْبِيِّ مِنْ عُزُوفِ النَّفْسِ عَنِ الدُّنْيَا وَمَيْلِهَا إِلَى الْعُقُبٰى.) অর্থাৎ, দুনিয়ার আশা-আকাঙ্ক্ষা ও মোহকে খাটো করে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হওয়া এবং সে লক্ষে “ইলম, আমল ও তওবার জন্য দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাওয়া। অতএব সারকথা হলো প্রকৃত দুনিয়াবিরাগী ও পরহেজগারি অন্তরের বিষয় বা অবস্থা যা স্বীয় কলব বা অন্তরকে দুনিয়ার মোহ-মায়া হতে পবিত্র রাখে এবং আখিরাতের দিকে ঝুকিয়ে দেয়। (মিরকাতুল মাফাতীহ; আল কাশিফ ১০ম খণ্ড, ৩৩২৬ পৃ.)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ সুফিয়ান সাওরী (রহঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - আশা আকাঙ্ক্ষা ও উদ্বেগ প্রসঙ্গ

৫২৮৩-[১৬] যায়দ ইবনুল হুসায়ন (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন: আমি ইমাম মালিক (রহিমাহুল্লাহ)-কে বলতে শুনেছি। একদিন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, দুনিয়াতে “যুহদ” বা পরহেজগারি কাকে বলে? উত্তরে তিনি বলেন, হালাল উপার্জন এবং আকাঙ্ক্ষা ছোট করা। (বায়হাকী’র শুআবুল ঈমান)

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ - (بَاب الأمل والحرص)

وَعَنْ زَيْدِ بْنِ الْحُسَيْنِ قَالَ: سَمِعْتُ مَالِكًا وَسُئِلَ أَيُّ شَيْءٍ الزُّهْدُ فِي الدُّنْيَا؟ قَالَ: طِيبُ الْكَسْبِ وَقِصَرُ الْأَمَلِ. رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي «شعب الْإِيمَان»

اسنادہ ضعیف ، رواہ البیھقی فی شعب الایمان (10779 ، نسخۃ محققۃ : 10293) * زید بن الحسین مجھول : لم اجد من وثقہ ۔
(ضَعِيف)

وعن زيد بن الحسين قال سمعت مالكا وسىل اي شيء الزهد في الدنيا قال طيب الكسب وقصر الامل رواه البيهقي في شعب الايماناسنادہ ضعیف رواہ البیھقی فی شعب الایمان 10779 نسخۃ محققۃ 10293 زید بن الحسین مجھول لم اجد من وثقہ ۔ضعيف

ব্যাখ্যা : পূর্বের হাদীসের ব্যাখ্যায় (الزُّهْدُ فِي الدُّنْيَا) দুনিয়া বিরাগীকে পরহেজগার অর্থে প্রকাশ করা হয়েছে। পরহেজগারির মেরুদণ্ড হলো হালাল রুযী, যার রুযী হালাল নয় সে কষ্মিনকালেও পরহেজগারিতার উপর দাঁড়াতে পারবে না।
অতএব পবিত্র এবং হালাল উপার্জন বা খাদ্য এবং পানীয় তাকে উপকারী ‘ইলম ও নেক আমলের ওয়ারিস বানিয়ে দিবে। আল্লাহ তা'আলা তার রসূলকে বলেছেন, “তোমরা পবিত্র বস্তু খাও এবং নেক আ'মাল কর।” (সূরা আল মু'মিন ৪০: ৫১)।

অতএব এ হাদীসে হালাল রুযীকে (الزُّهْدُ فِي الدُّنْيَا) এর প্রথম উপাদান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। দ্বিতীয়টি হলো- দুনিয়ার আকাঙ্ক্ষা বা কামনা-বাসনাকে খাটো করা। এটা মানুষকে দ্রুত মৃত্যু এসে যাওয়ার ভয়ে অধিক আমলে উদ্বুদ্ধ করে এবং পরকালের পুরস্কার প্রাপ্তিতে আগ্রহান্বিত করে।
‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, প্রকৃত (الزُّهْدُ فِي الدُّنْيَا) হলো হালাল খাদ্য গ্রহণ, হালাল বস্ত্র পরিধান, স্বল্প রুযীতেই পরিতুষ্ট থাকা এবং দুনিয়ার আশা-আকাঙ্ক্ষাকে খাটো করে রাখা। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; আল কাশিফ ১০ম খণ্ড, ৩৩২৬ পৃ.)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৩ পর্যন্ত, সর্বমোট ৩ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে