পরিচ্ছেদঃ ১১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ফাই (বিনাযুদ্ধে প্রাপ্ত শত্রুদের সম্পদ)-এর বর্ণনা

৪০৫৭-[৩] ’আওফ ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট যখনই কোনো ’ফাই’-এর ধন-সম্পদ আসতো, তখন তিনি অবিলম্বে সেদিনই তা বণ্টন করে দিতেন। অবশ্য বণ্টনের মধ্যে এ নিয়ম-নীতি অবলম্বন করতেন যে, যার পরিবার-পরিজন আছে তাকে দু’ভাগ এবং অবিবাহিতের জন্য একভাগ দিতেন। একদিন আমাকে ডেকে ’ফাই’-এর দু’ভাগ দিলেন। কেননা আমি বিবাহিত ছিলাম। আমার পরে ’আম্মার ইবনু ইয়াসির (রাঃ)-কে ডেকে তাকে দেয়া হলো একভাগ (কারণ তিনি ছিলেন অবিবাহিত)। (আবূ দাঊদ)[1]

عَن عوفِ بْنِ مَالِكٍ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا أَتَاهُ الْفَيْءُ قَسَمَهُ فِي يَوْمِهِ فَأَعْطَى الْآهِلَ حَظَّيْنِ وَأَعْطَى الْأَعْزَبَ حَظًّا فَدُعِيتُ فَأَعْطَانِي حَظَّيْنِ وَكَانَ لِي أَهْلٌ ثُمَّ دُعِيَ بَعْدِي عَمَّارُ بْنُ يَاسِرٍ فَأُعْطِيَ حَظًّا وَاحِدًا. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

عن عوف بن مالك ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان اذا اتاه الفيء قسمه في يومه فاعطى الاهل حظين واعطى الاعزب حظا فدعيت فاعطاني حظين وكان لي اهل ثم دعي بعدي عمار بن ياسر فاعطي حظا واحدا رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: (أَنَّ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ كَانَ إِذَا أَتَاهُ الْفَيْءُ قَسَمَه فِىْ يَوْمِه) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অভ্যাস এই ছিল যে, যখন তাঁর নিকট ‘ফাই-এর মাল আসতো তিনি তা সেদিনই বণ্টন করতেন। অর্থাৎ ‘ফাই’ এর মাল থেকে নিজ পরিবারের জন্য খরচের পরিমাণ মাল রাখার পর অবশিষ্ট মাল সাথে সাথেই বণ্টন করতেন বিলম্ব না করে।

(فَأَعْطٰى الْاٰهِلَ حَظَّيْنِ) পরিবারওয়ালাকে দু’ বণ্টন দিতেন। اٰهِلٌ ঐ ব্যক্তিকে বলা হয় যিনি বিবাহিত অর্থাৎ পরিবার আছে। ইমাম শাওকানী নায়লুল আওত্বারে বলেনঃ অত্র হাদীস প্রমাণ করে যে, বায়তুল মাল থেকে ভাতা দেয়ার ক্ষেত্রে গ্রহীতার পরিবারের লোক সংখ্যার বিষয়টি খেয়াল রাখা প্রয়োজন। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৯৫১)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আউফ ইবনু মালিক (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد) 19. Jihad

পরিচ্ছেদঃ ১১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ফাই (বিনাযুদ্ধে প্রাপ্ত শত্রুদের সম্পদ)-এর বর্ণনা

৪০৫৮-[৪] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখেছি, তাঁর কাছে ’ফাই’-এর ধন-সম্পদ আসলে সর্বপ্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত গোলামদেরকে দিতেন। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوَّلُ مَا جَاءَهُ شيءٌ بدَأَ بالمحرَّرينَ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ابن عمر قال رايت رسول الله صلى الله عليه وسلم اول ما جاءه شيء بدا بالمحررين رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: (بَدَأَ بِالْمُحَرَّرِيْنَ) ‘ফাই’ বণ্টনের ক্ষেত্রে মুহাররার দ্বারা শুরু করতেন। খত্ত্বাবী (রহঃ) বলেনঃ মুহাররার দ্বারা উদ্দেশ্য মুক্ত গোলাম। কারো কারো মতে তারা হলো মুকাতাব। অর্থাৎ যাদের মুক্ত করার জন্য তাদের মনীবগণ তাদের সাথে নির্দিষ্ট পরিমাণের অর্থ প্রদানের চুক্তি করেছেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

কাযী শাওকানী বলেনঃ অত্র হাদীস প্রমাণ করে যে, ‘ফাই’ এর মাল বণ্টনের ক্ষেত্রে মুক্ত গোলাম বা মুকাতাবদের অগ্রাধিকার দেয়া মুস্তাহাব। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৯৪৯)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد) 19. Jihad

পরিচ্ছেদঃ ১১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ফাই (বিনাযুদ্ধে প্রাপ্ত শত্রুদের সম্পদ)-এর বর্ণনা

৪০৫৯-[৫] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট (’ফাই’ হতে) মুক্তা জাতীয় মূল্যবান রঙিন পাথরভর্তি একটি থলি আসলো, যা তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্বাধীনা ও মুক্তকৃতা বাঁদীদের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, আমার পিতা [আবূ বকর (রাঃ)]-ও তাঁর খিলাফাতকালে স্বাধীনা ও গোলামের মাঝে বণ্টন করে দিতেন। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عَائِشَةَ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَتَى بطبية فِيهَا خَرَزٌ فَقَسَمَهَا لِلْحُرَّةِ وَالْأَمَةِ قَالَتْ عَائِشَةُ: كَانَ أَبِي يَقْسِمُ لِلْحُرِّ وَالْعَبْدِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

وعن عاىشة ان النبي صلى الله عليه وسلم اتى بطبية فيها خرز فقسمها للحرة والامة قالت عاىشة كان ابي يقسم للحر والعبد رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: (أَتٰى بِطَبْيَةٍ فِيْهَا خَرَزٌ) তার নিকট হরিণের পশমী চামড়ার ছোট থলে নিয়ে আসা হলো যাতে পুতি বা মুক্তার দানা ছিল।

(فَقَسَمَهَا لِلْحُرَّةِ وَالْأَمَةِ) তিনি তা আযাদ ও দাসীদের মাধ্যমে বণ্টন করলেন। অর্থাৎ তখন যারা তার নিকট উপস্থিত ছিল। আযাদ বা দাসী তাদের মাঝে তা বণ্টন করলেন।

(كَانَ أَبِىْ يَقْسِمُ لِلْحُرِّ وَالْعَبْدِ) আমার বাবাও তা আযাদ দাসদের মধ্যে বন্টন করতেন। দাস-দাসী বলতে উদ্দেশ্য মুক্ত গোলাম অথবা মুকাতাব গোলাম উদ্দেশ্য। কেননা পূর্ণাঙ্গ দাসদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব তাদের মনীবদের ওপর। বায়তুল মালের উপর তাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নয়। (মিরকাতুল মাফাতীহ, ‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৯৫০)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد) 19. Jihad

পরিচ্ছেদঃ ১১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ফাই (বিনাযুদ্ধে প্রাপ্ত শত্রুদের সম্পদ)-এর বর্ণনা

৪০৬০-[৬] মালিক ইবনু আওস ইবনুল হাদাসান হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন ’উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ) ’ফাই’ সম্পর্কে আলোচনাকালে বললেনঃ এ ’ফাই’-এর মধ্যে আমার অধিকার তোমাদের চেয়ে বেশি নয় এবং তোমাদের কেউই অন্য কারো চেয়ে বেশি হকদার নয়। তবে আমরা সকলেই আল্লাহর কিতাব ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বণ্টন নিয়ম-নীতি অনুযায়ী আমাদের স্ব-স্ব মর্যাদায় পার্থক্য রয়েছে। সুতরাং কোনো ব্যক্তি (ইসলাম গ্রহণ আগে হওয়ায়) প্রথম সারির প্রবীণ মুসলিম। আবার কেউ আছে অনেক জিহাদে তার শ্রম-সাধনা ও কুরবানীর অবদান রয়েছে। আবার কেউ এমনও আছে যার পরিবার-পরিজনের লোক সংখ্যা বেশি। আর এমন লোকও আছে যার প্রাপ্তির তুলনায় প্রয়োজন অত্যধিক। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن مالكِ بن أوسِ بن الحدَثانِ قَالَ: ذكر عمر بن الْخطاب يَوْمًا الْفَيْءَ فَقَالَ: مَا أَنَا أَحَقُّ بِهَذَا الْفَيْءِ مِنْكُمْ وَمَا أَحَدٌ مِنَّا بِأَحَقَّ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا أَنَّا عَلَى مَنَازِلِنَا مِنْ كِتَابِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَقَسْمِ رَسُولِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَالرَّجُلُ وَقِدَمُهُ وَالرَّجُلُ وَبَلَاؤُهُ وَالرَّجُلُ وَعِيَالُهُ وَالرَّجُلُ وَحَاجَتُهُ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

وعن مالك بن اوس بن الحدثان قال ذكر عمر بن الخطاب يوما الفيء فقال ما انا احق بهذا الفيء منكم وما احد منا باحق به من احد الا انا على منازلنا من كتاب الله عز وجل وقسم رسوله صلى الله عليه وسلم فالرجل وقدمه والرجل وبلاوه والرجل وعياله والرجل وحاجته رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: (مَا أَنَا أَحَقُّ بِهٰذَا الْفَيْءِ مِنْكُمْ) ‘ফাই’ এর মালে আমি তোমাদের চাইতে অধিক হকদার নই। অর্থাৎ আমি খলীফাহ্ হওয়া সত্ত্বেও ‘ফাই’ এর মালের প্রাপ্যের ক্ষেত্রে আমার হক তোমাদের মতই। আমি রসূলের মতো ব্যক্তিগতভাবে আমার পরিবারের জন্য তা থেকে কিছু ব্যয় করার অধিকার রাখি না। যেমনটি রসূলের অধিকার ছিল।

(إِلَّا أَنَّا عَلٰى مَنَازِلِنَا مِنْ كِتَابِ اللّٰهِ) আমরা সবাই আল্লাহর কিতাবে বর্ণিত স্তর অনুযায়ী ওটাতে অধিকার রাখি। আর তা হলো দরিদ্র মুহাজির, দরিদ্র আনসার, অতঃপর সকল মুসলিম। তূরিবিশতী বলেনঃ ‘উমার -এর অভিমত এই যে, ‘ফাই’ এর মালে খুমুস অর্থাৎ পঞ্চমাংশত নেই। বরং ‘ফাই’ এর সম্পূর্ণ মালই বায়তুল মালের। আর তা মুসলিমদের কল্যাণ অনুসারে ব্যয় করা হবে। তবে মুসলিমদের মর্যাদা অনুযায়ী ওটাতে অধিকারে তারতম্য রয়েছে।

(فَالرَّجُلُ وَقِدَمُه) অতএব কোনো ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণে অগ্রবর্তী হলে তার অধিকার অগ্রবর্তীর কারণে।

(وَالرَّجُلُ وَبَلَاؤُه) কোনো ব্যক্তি ইসলামের জন্য তার শ্রম দেয়া ও প্রচেষ্টায় অগ্রগামীতার কারণে তার অধিকার।

(وَالرَّجُلُ وَعِيَالُه) কোনো ব্যক্তির তার পরিবারের লোক সংখ্যার অধিকারের কারণে তার হক এবং (وَالرَّجُلُ وَحَاجَتُه) কোনো ব্যক্তির প্রয়োজন অনুসারে বায়তুল মালে তথা খায়বারের মালে তার হক রয়েছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৯৪৮)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد) 19. Jihad

পরিচ্ছেদঃ ১১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ফাই (বিনাযুদ্ধে প্রাপ্ত শত্রুদের সম্পদ)-এর বর্ণনা

৪০৬১-[৭] উক্ত রাবী (মালিক ইবনু আওস ইবনুল হাদাসান) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন ’উমার (রাঃ) إِنَّما الصَّدَقاتُ للفقراءِ অর্থাৎ- ’’নিশ্চয় সাদাকা গরীব ও মিসকীনের জন্য’’ শেষ পর্যন্ত পাঠ করে বললেনঃ যাকাত কেবলমাত্র এ আয়াতে বর্ণিত খাতসমূহের জন্যই সুনির্ধারিত। অতঃপর وَاعْلَمُوْا أَنَّ مَا غَنِمْتُمْ مِنْ شَيْءٍ অর্থাৎ- ’নিশ্চয় গনীমাত যা তোমরা অর্জন কর’ শেষ পর্যন্ত এ আয়াতটি পাঠ করে বললেনঃ গনীমাতের খুমুস তথা এক-পঞ্চমাংশত, যা এ আয়াতের মধ্যে উল্লেখ রয়েছে, এটা কেবলমাত্র নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটাত্মীয়দেরই প্রাপ্য অধিকার। তারপর তিনি পাঠ করলেনمَا أَفَاءَ اللهُ عَلٰى رَسُوْلِه অর্থাৎ- ’এবং যা আল্লাহ তা’আলা তোমাদের বিনা যুদ্ধে দান করেন’ শেষ পর্যন্ত। অতঃপর পাঠ করলেন وَالَّذِيْنَ جَاؤُوْا مِنْ بَعْدِهِمْ অর্থা- ’এবং যারা পরে এসেছে’ শেষ পর্যন্ত। এ আয়াতগুলো শুধুমাত্র মুসলিমদের অধিকারভুক্ত করা হয়েছে। অতএব আমি যদি বেঁচে থাকি তাহলে ’সার্বি হিম্ইয়ার’ নামক দূরবর্তী স্থানে যে রাখাল বসবাস করে, তার কাছেও তার ন্যায্য প্রাপ্য অংশ পৌঁছে যাবে। অথচ এ সম্পদ অর্জন করতে তার কপালের ঘাম ঝরাতে হবে না। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]

وَعَنْهُ قَالَ: قَرَأَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنهُ: (إِنَّما الصَّدَقاتُ للفقراءِ والمساكينِ)
حَتَّى بَلَغَ (عَلِيمٌ حَكِيمٌ)
فَقَالَ: هَذِهِ لِهَؤُلَاءِ. ثُمَّ قَرَأَ (وَاعْلَمُوا أَنَّ مَا غَنِمْتُمْ مِنْ شيءٍ فإنَّ للَّهِ خُمُسَه وللرَّسولِ)
حَتَّى بلغَ (وابنِ السَّبِيلِ)
ثُمَّ قَالَ: هَذِهِ لِهَؤُلَاءِ. ثُمَّ قَرَأَ (مَا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِنْ أَهْلِ الْقرى)
حَتَّى بلغَ (للفقراءِ)
ثمَّ قرأَ (والذينَ جاؤوا منْ بعدِهِم)
ثُمَّ قَالَ: هَذِهِ اسْتَوْعَبَتِ الْمُسْلِمِينَ عَامَّةً فَلَئِنْ عِشْتُ فَلَيَأْتِيَنَّ الرَّاعِيَ وَهُوَ بِسَرْوِ حِمْيَرَ نَصِيبُهُ مِنْهَا لَمْ يَعْرَقْ فِيهَا جَبِينُهُ. رَوَاهُ فِي شرح السّنة

وعنه قال قرا عمر بن الخطاب رضي الله عنه انما الصدقات للفقراء والمساكينحتى بلغ عليم حكيمفقال هذه لهولاء ثم قرا واعلموا ان ما غنمتم من شيء فان لله خمسه وللرسولحتى بلغ وابن السبيلثم قال هذه لهولاء ثم قرا ما افاء الله على رسوله من اهل القرىحتى بلغ للفقراءثم قرا والذين جاووا من بعدهمثم قال هذه استوعبت المسلمين عامة فلىن عشت فلياتين الراعي وهو بسرو حمير نصيبه منها لم يعرق فيها جبينه رواه في شرح السنة

ব্যাখ্যা: ‘উমার (রাঃ)-এর মতানুসারে যাকাত ও ‘উশূরের মাল বণ্টিত হবে কুরআনে বর্ণিত আট শ্রেণীর মধ্যে তাতে অন্য কারো অধিকার নেই। আর গনীমাতের মাল এক-পঞ্চমাংশত বায়তুল মালের তথা আল্লাহর রসূলের জন্য। তিনি তা ব্যয় করবেন তার ইচ্ছানুযায়ী। তারপর খলীফাগণ ব্যয় করবে মুসলিমদের কল্যাণে। আর ‘ফাই’ এর মাল পুরাটাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হক। তিনি তাঁর ইচ্ছানুযায়ী তা ব্যয় করবেন। অতঃপর খলীফাগণ তা ব্যয় করবে মুসলিমদের কল্যাণে। তাতে খুমুস বা এক-পঞ্চমাংশত নেই। এটাই সকল ‘উলামাগণের অভিমত। তবে ইমাম শাফি‘ঈ-এর মতে তার এক-পঞ্চমাংশত বায়তুল মালের আর বাকী চার অংশ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য নির্ধারিত। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد) 19. Jihad

পরিচ্ছেদঃ ১১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ফাই (বিনাযুদ্ধে প্রাপ্ত শত্রুদের সম্পদ)-এর বর্ণনা

৪০৬২-[৮] উক্ত রাবী (মালিক ইবনু আওস ইবনুল হাদাসান) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (’আলী ও ’আব্বাস (রাঃ)-এর মধ্যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর [মীরাস] পরিত্যক্ত সম্পদ নিয়ে বিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে ’উমার -এর নিকট তার মীমাংসা জানতে চাইলে) ’উমার এভাবে দলীল পেশ করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট তাঁর ব্যক্তিগত তিনটি ভূখণ্ড ছিল, তা হলো- বানী নাযীর (হতে প্রাপ্ত ভূমি), খায়বার ও ফাদাক। তবে বানী নাযীর-এর ভূমির আয় হতে নিজের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যয়-নির্বাহ করতেন। আর ’ফাদাক’ ভূমির আয় মেহমান মুসাফিরদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। কিন্তু খায়বারের আয়কে তিনভাগে ভাগ করে নিয়েছিলেন- দু’ভাগ মুসলিম জনসাধারণের জন্য এবং একভাগ নিজের পরিবার-পরিজনের খোরপোষে খরচ করতেন। এরপরও পরিবারের খরচ মিটিয়ে যদি কিছু অবশিষ্ট থাকত তা দরিদ্র মুহাজিরীনদের মাঝে বিতরণ করে দিতেন। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعنهُ قَالَ: كانَ فِيمَا احتجَّ فيهِ عُمَرُ أَنْ قَالَ: كَانَتْ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثُ صَفَايَا بَنُو النَّضِيرِ وخيبرُ وفَدَكُ فَأَمَّا بَنُو النَّضِيرِ فَكَانَتْ حَبْسًا لِنَوَائِبِهِ وَأَمَّا فَدَكُ فَكَانَتْ حَبْسًا لِأَبْنَاءِ السَّبِيلِ وَأَمَّا خَيْبَرُ فَجَزَّأَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثَةٌ أَجزَاء: جزأين بينَ المسلمينَ وجزءً نَفَقَةً لِأَهْلِهِ فَمَا فَضُلَ عَنْ نَفَقَةِ أَهْلِهِ جَعَلَهُ بَيْنَ فُقَرَاءِ الْمُهَاجِرِينَ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

وعنه قال كان فيما احتج فيه عمر ان قال كانت لرسول الله صلى الله عليه وسلم ثلاث صفايا بنو النضير وخيبر وفدك فاما بنو النضير فكانت حبسا لنواىبه واما فدك فكانت حبسا لابناء السبيل واما خيبر فجزاها رسول الله صلى الله عليه وسلم ثلاثة اجزاء جزاين بين المسلمين وجزء نفقة لاهله فما فضل عن نفقة اهله جعله بين فقراء المهاجرين رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: (كَانَتْ لِرَسُوْلِ اللّٰهِ ﷺ ثَلَاثُ صَفَايَا) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য তিনটি বস্তু নির্ধারিত ছিল।

খত্ত্বাবী (রহঃ) বলেনঃ الصَّفِيُّ সেই বস্তু, গনীমাতের মাল বণ্টন করার পূর্বে ইমাম তা থেকে যা নিজের জন্য নিয়ে থাকে যেমন দাস-দাসী, ঘোড়া, তরবারি ইত্যাদি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গনীমাতের মাল এক-পঞ্চমাংশত নির্ধারিত থাকা সত্ত্বেও তা বণ্টনের পূর্বে তিনি তা থেকে তার ইচ্ছানুযায়ী কোনো কিছু নির্বাচন করতে পারতেন তার নিজের জন্য। এটা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য খাস ছিল। তার পরবর্তীতে কোনো ইমামের জন্য তা বৈধ নয়।

(فَأَمَّا بَنُو النَّضِيْرِ فَكَانَتْ حَبْسًا لِنَوَائِبِه) বানূ নাযীর থেকে অর্জিত মাল তার প্রয়োজন মিটানোর জন্য নির্দিষ্টভাবে আবদ্ধ ছিল। অর্থাৎ মেহমান, প্রতিনিধি দল অস্ত্র ও পশু ক্রয়ের নিমিত্তে তা আবদ্ধ ছিল।

(وَأَمَّا فَدَكُ فَكَانَتْ حَبْسًا لِأَبْنَاءِ السَّبِيْلِ) ফাদাকের মাল ছিল পথিকদের জন্য। অর্থাৎ ফাদাক থেকে অর্জিত মাল পথিকদের প্রয়োজন মিটানোর জন্য নির্দিষ্টভাবে গচ্ছিত ছিল।

(جُزْئَيْنِ بَيْنَ الْمُسْلِمِيْنَ وَجُزْءً نَفَقَةً لِأَهْلِه) খায়বারের মালের দু’ অংশ ছিল মুসলিমদের জন্য আর এক অংশ ছিল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরিবারের খরচ মিটানোর জন্য। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারের মালকে তিন ভাগে ভাগ করার কারণ এই যে, খায়বার অঞ্চলে অনেক গ্রাম ছিল, তার কিছু অংশ বলপূর্বক অর্থাৎ যুদ্ধ করে বিজয় করা হয়। যাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য ছিল এক-পঞ্চমাংশত। আর কিছু বিনাযুদ্ধে সন্ধির মাধ্যমে বিজিত ছিল। আর তা ছিল ফাই যা রসূলের জন্য খাস। অতএব ন্যায়সঙ্গত বণ্টনের দাবী অনুযায়ী তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সমস্ত মালকে তিন ভাগ করেন। এক ভাগ তাঁর নিজের জন্য। আর দু’ ভাগ মুসলিম বাহিনীর জন্য। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৯৬৫)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد) 19. Jihad
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে