পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা

৪০২৮-[৪৪] ’আবদুর রহমান ইবনু ’আওফ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বদর যুদ্ধের দিন সৈনিকদের কাতারে দাঁড়িয়ে আমার ডানে-বামে তাকিয়ে দেখি যে, আমি দু’জন কমবয়সী আনসার যুবকের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছি। তখন আমি মনে মনে এ আকাঙ্ক্ষা পোষণ করলামঃ আহা! কতই না উত্তম হত, যদি আমি এ দু’জনের চেয়ে বীর যোদ্ধার মাঝখানে দাঁড়াতাম। এমন সময় তাদের একজন আমাকে খোঁচা মেরে বলল, চাচাজান! আপনি কি আবূ জাহালকে চিনেন? আমি বললামঃ হ্যাঁ, চিনি, তবে বৎস! তাকে তোমার কি প্রয়োজন? সে বলল, আমি শুনেছি সে না-কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে গালি দেয়। আল্লাহর কসম! আমি যদি তাকে দেখতে পাই, তবে আমাদের মধ্যে (তথা আমার ও আবূ জাহাল-এর মধ্যে) একজনের নির্ধারিত মৃত্যু না ঘটা পর্যন্ত আমরা উভয়ে পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন হব না।

’আবদুর রহমান বলেনঃ তার এ কথা শুনে আমি অত্যন্ত আশ্চর্যান্বিত হলাম। ঠিক এমনি সময়ে অপর তরুণটিও আমাকে অনুরূপ খোঁচা মেরে একই কথার পুনরাবৃত্তি করল। আমাদের কথা-বার্তা শেষ না হতেই হঠাৎ দেখতে পেলাম আবূ জাহাল লোকেদের মাঝে ঘুরাফেরা করছে। তখন আমি তরুণদেরকে বললামঃ তোমরা উভয়ে যার ব্যাপারে আমার কাছে জানতে চাচ্ছ, ঐ হলো সে ব্যক্তি। আমার কথা শুনামাত্রই তারা উভয়ে তলোয়ার হাতে দ্রুতবেগে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে হত্যা করে ফেলল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ছুটে এসে ঘটনাটি তাঁকে জানাল। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের মধ্যে কে তাকে হত্যা করেছ? তারা উভয়েই বললঃ আমিই তাকে হত্যা করেছি।

এবার তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেনঃ আচ্ছা! তাকে হত্যা করার পর তোমরা কি স্বীয় তলোয়ার মুছে ফেলেছ? তারা বলল, না। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের তলোয়ার দেখে বললেনঃ তোমরা উভয়েই তাকে হত্যা করেছ। এই বলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘোষণা দিলেন, তার (আবূ জাহাল-এর) পরিত্যক্ত মালের অধিকারী হবে মু’আয ইবনু ’আমর ইবনুল জামূহ। এ তরুণদ্বয় ছিলেন মু’আয ইবনু ’আমর ইবনুল জামূহ ও মু’আয ইবনু ’আফরা (রাঃ)। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ قَالَ: إِنِّي وَاقِفٌ فِي الصَّفِّ يَوْمَ بَدْرٍ فَنَظَرْتُ عَنْ يَمِينِي وَعَنْ شِمَالِي فَإِذَا بِغُلَامَيْنِ مِنَ الْأَنْصَارِ حَدِيثَة أسنانها فتمنيت أَنْ أَكُونَ بَيْنَ أَضْلَعَ مِنْهُمَا فَغَمَزَنِي أَحَدُهُمَا فَقَالَ: يَا عَمِّ هَلْ تَعْرِفُ أَبَا جَهْلٍ؟ قُلْتُ: نَعَمْ فَمَا حَاجَتُكَ إِلَيْهِ يَا ابْنَ أَخِي؟ قَالَ: أُخْبِرْتُ أَنَّهُ يَسُبُّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَئِنْ رَأَيْتُهُ لَا يُفَارِقُ سَوَادِي سَوَادَهُ حَتَّى يَمُوتَ الْأَعْجَلُ مِنَّا فَتَعَجَّبْتُ لِذَلِكَ قَالَ: وَغَمَزَنِي الْآخَرُ فَقَالَ لِي مِثْلَهَا فَلَمْ أَنْشَبْ أَنْ نَظَرْتُ إِلَى أَبِي جَهْلٍ يَجُولُ فِي النَّاسِ فَقُلْتُ: أَلَا تَرَيَانِ؟ هَذَا صَاحِبُكُمَا الَّذِي تَسْأَلَانِي عَنْهُ قَالَ: فابتدراه بسيفهما فَضَرَبَاهُ حَتَّى قَتَلَاهُ ثُمَّ انْصَرَفَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فأخبراهُ فَقَالَ: «أَيُّكُمَا قَتَلَهُ؟» فَقَالَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا: أَنَا قَتله فَقَالَ: «هلْ مسحتُما سيفَيكما؟» فَقَالَا: لَا فَنَظَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى السَّيْفَيْنِ فَقَالَ: «كِلَاكُمَا قَتَلَهُ» . وَقَضَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِسَلَبِهِ لِمُعَاذِ بن عَمْرِو بن الْجَمُوحِ وَالرَّجُلَانِ: مُعَاذُ بْنُ عَمْرِو بْنِ الْجَمُوحِ ومعاذ بن عفراء

عن عبد الرحمن بن عوف قال اني واقف في الصف يوم بدر فنظرت عن يميني وعن شمالي فاذا بغلامين من الانصار حديثة اسنانها فتمنيت ان اكون بين اضلع منهما فغمزني احدهما فقال يا عم هل تعرف ابا جهل قلت نعم فما حاجتك اليه يا ابن اخي قال اخبرت انه يسب رسول الله صلى الله عليه وسلم والذي نفسي بيده لىن رايته لا يفارق سوادي سواده حتى يموت الاعجل منا فتعجبت لذلك قال وغمزني الاخر فقال لي مثلها فلم انشب ان نظرت الى ابي جهل يجول في الناس فقلت الا تريان هذا صاحبكما الذي تسالاني عنه قال فابتدراه بسيفهما فضرباه حتى قتلاه ثم انصرفا الى رسول الله صلى الله عليه وسلم فاخبراه فقال ايكما قتله فقال كل واحد منهما انا قتله فقال هل مسحتما سيفيكما فقالا لا فنظر رسول الله صلى الله عليه وسلم الى السيفين فقال كلاكما قتله وقضى رسول الله صلى الله عليه وسلم بسلبه لمعاذ بن عمرو بن الجموح والرجلان معاذ بن عمرو بن الجموح ومعاذ بن عفراء

ব্যাখ্যা: আবূ জাহাল-কে হত্যায় তিনজন অংশগ্রহণ করেন। তারা হলেন, মা‘আয ও মু‘আওয়ায এবং ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ জাহাল-এর পরিত্যক্ত সম্পদ মা‘আযকে প্রদান করেন। কেননা তিনিই সর্বাগ্রে আবূ জাহলকে তরবারি মেরে ঘায়েল করেন। পরে মু‘আওয়াযও তার সাথে অংশ নেন, অর্থাৎ তরবারি মারেন। এবং উভয়ে মিলে তাকে ধরাশয়ী করে ফেলেন। কিন্তু তখনও জান বের হয়নি এমন সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আবূ জাহাল-এর খবর কে আনতে পারে? তখন ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ দৌড়ে গিয়ে দেখেন সে অচেতন হয়ে পড়ে আছে, তখনই তিনি লাফ দিয়ে গিয়ে তার বুকের উপর বসে দেহ থেকে মস্তক বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। তারা দু’জনই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে তাকে হত্যার দাবী করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়কেই বলেন, তোমরা দু’জনই হত্যা করেছ। অগ্রগামিতা এবং ভূমিকা একজনের চেয়ে অন্য জনের বেশি হওয়া এবং সাওয়াব কম বেশি সত্ত্বেও রসূলুল্লাহ তাদের উৎসাহিত করা এবং মনঃতৃপ্তি বা অন্তরে প্রশান্তিদানের জন্য বলেছেন, তোমরা দু’জনই হত্যা করেছ। এরা দু’জন মাতৃশরীক বৈপিত্রেয় ভাই ছিলেন, তাদের মা ছিলেন আফরা, এ জন্য কোনো কোনো সময়, বলা হয় আফরার দুই পুত্র।

এ হাদীস থেকে শিক্ষা হলো বয়সে ছোট এবং শারীরিকভাবে দুর্বল ব্যক্তিকে তুচ্ছ জ্ঞান করতে নেই, কারণ তার দ্বারাও বড় বড় কাজ সংঘটিত হতে পারে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد) 19. Jihad

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা

৪০২৯-[৪৫] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের শেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আবূ জাহাল-এর অবস্থাটি আমাদেরকে কে জানাতে পারবে? এ ঘোষণা শুনামাত্রই ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) চলে গেলেন এবং গিয়ে দেখলেন যে, ’আফরা-এর দু’ পুত্র তাকে এমনভাবে আঘাত করেছে যে, সে নিস্তেজ অবস্থায় পড়ে আছে। (আনাস (রাঃ) বলেন) অতঃপর ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) তার দাঁড়ি টেনে ধরে বললেনঃ তুমিই কি আবূ জাহাল? আবূ জাহাল বলল, তোমরা এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছ, এতে আনন্দোল্লাস বা কৃতিত্বের কী আছে?

অন্য এক সূত্রে বর্ণিত আছে, আবূ জাহাল (আক্ষেপ ও অনুশোচনা ভরে) বলল, আমাকে যদি চাষীর ছেলেরা ব্যতীত অন্য কেউ হত্যা করত (তবে সান্তবনা পেতাম)। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ بَدْرٍ: «مَنْ يَنْظُرُ لَنَا مَا صَنَعَ أَبُو جَهْلٍ؟» فَانْطَلَقَ ابْنُ مَسْعُودٍ فَوَجَدَهُ قَدْ ضَرَبَهُ ابْنَا عَفْرَاءَ حَتَّى بَرَدَ قَالَ: فَأَخَذَ بِلِحْيَتِهِ فَقَالَ: أَنْتَ أَبُو جَهْلٍ فَقَالَ: وَهَلْ فَوْقَ رَجُلٍ قَتَلْتُمُوهُ. وَفِي رِوَايَةٍ: قَالَ: فَلَوْ غَيْرُ أَكَّارٍ قتلني

وعن انس قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم يوم بدر من ينظر لنا ما صنع ابو جهل فانطلق ابن مسعود فوجده قد ضربه ابنا عفراء حتى برد قال فاخذ بلحيته فقال انت ابو جهل فقال وهل فوق رجل قتلتموه وفي رواية قال فلو غير اكار قتلني

ব্যাখ্যা: আবূ জাহাল-এর হত্যা কাহিনী বিস্তারিতভাবে হাদীসের বিধৃত হয়েছে। পুনরায় তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা নিঃপ্রয়োজন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ আবূ জাহাল-এর বুকের উপর বসে দাঁড়ি ধরে জিজ্ঞেস করলেন, তুই কি আবূ জাহল? তখন সে আক্ষেপ করে বলল, (فَلَوْ غَيْرُ أَكَّارٍ قَتَلَنِىْ) হায়! আমাকে চাষীরা ব্যতীত অন্যরা যদি হত্যা করত!

أَكَّارٍ শব্দের অর্থ কৃষক বা চাষী। মদীনার আনসারগণ সাধারণত কৃষিজীবী ছিলেন; আর মক্কার লোকেরা ছিল ব্যবসায়ী। সেই হেতু মক্কার লোকেরা মদীনার লোকদের তাচ্ছিল্যের নজরে দেখতো। আবূ জাহলের দুঃখ হলো মক্কার কোনো লোক তাকে হত্যা না করে মদীনার চাষীর ছেলেরা তাকে হত্যা করলো। মৃত্যুকালে এটা ছিল তার ভীষণ অনুতাপ ও আক্ষেপ! (মিরকাতুল মাফাতীহ; শারহে মুসলিম ১২শ খন্ড, হাঃ ১৮০০)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد) 19. Jihad

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা

৪০৩০-[৪৬] সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্‌কাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদল লোককে (হুনায়ন যুদ্ধের গনীমাত) বণ্টন করছিলেন, আর সেখানে আমি বসা ছিলাম। কিন্তু তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের মধ্যে এমন একজনকে (জুআইল-কে) দিলেন না। অথচ আমার অনুমান, সে লোকটিই ছিল তাদের মধ্যে সর্বোত্তম ও যোগ্য ব্যক্তি। আমি দাঁড়িয়ে বললামঃ (হে আল্লাহর রসূল!) আপনি অমুককে এই মাল থেকে বঞ্চিত করার কারণ কি? আল্লাহর কসম! আমি তো তাকে মু’মিন হিসেবেই জানি। উত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বরং মুসলিম (বলো)। এভাবে সা’দ কথাটি তিনবার পুনরাবৃত্তি করলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-ও তিনবার তাকে অনুরূপ উত্তর দিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ (শুনো!) আমি অবশ্যই ব্যক্তি বিশেষকে দান করি, যদিও অন্য লোক আমার নিকট অধিক প্রিয় হয়ে থাকে। এ আশঙ্কায় এরূপ করি, যেন আল্লাহ তা’আলা তাকে উপুড় করে জাহান্নামের আগুনে দগ্ধ না করে ফেলেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

বুখারী ও মুসলিম-এর অপর বর্ণনাতে আছে- ইমাম যুহরী (রহঃ) বলেছেনঃ আমরা মনে করি ’ইসলাম’ হলো মুখে কালিমাহ্ উচ্চারণের মাধ্যমে স্বীকৃতি দেয়া, আর ’ঈমান’ হলো নেক ’আমল (বাস্তবায়ন) করা।

وَعَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ قَالَ: أَعْطَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَهْطًا وَأَنَا جَالِسٌ فَتَرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مِنْهُم رَجُلًا وَهُوَ أَعْجَبُهُمْ إِلَيَّ فَقُمْتُ فَقُلْتُ: مَا لَكَ عَنْ فُلَانٍ؟ وَاللَّهِ إِنِّي لَأُرَاهُ مُؤْمِنًا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أوْ مُسلما» ذكرَ سَعْدٌ ثَلَاثًا وَأَجَابَهُ بِمِثْلِ ذَلِكَ ثُمَّ قَالَ: «إِنِّي لَأُعْطِي الرَّجُلَ وَغَيْرُهُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْهُ خَشْيَةَ أَنْ يُكَبَّ فِي النَّارِ عَلَى وَجْهِهِ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ. وَفِي رِوَايَةٍ لَهُمَا: قَالَ الزُّهْرِيُّ: فترى: أَن الْإِسْلَام الْكَلِمَة وَالْإِيمَان الْعَمَل الصَّالح

وعن سعد بن ابي وقاص قال اعطى رسول الله صلى الله عليه وسلم رهطا وانا جالس فترك رسول الله صلى الله عليه وسلم منهم رجلا وهو اعجبهم الي فقمت فقلت ما لك عن فلان والله اني لاراه مومنا فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم او مسلما ذكر سعد ثلاثا واجابه بمثل ذلك ثم قال اني لاعطي الرجل وغيره احب الي منه خشية ان يكب في النار على وجهه متفق عليه وفي رواية لهما قال الزهري فترى ان الاسلام الكلمة والايمان العمل الصالح

ব্যাখ্যা: সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস যে সাহাবী সম্পর্কে মু‘মিন হওয়ার সাক্ষ্য দান করেন, তার নাম হলো জুআয়ল ইবনু আমির আয্ যুমায়রী।

ঈমানের সম্পর্ক হবে অন্তরের সাথে আর ইসলামের সম্পর্ক হলো বাহ্যিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এর সাথে অর্থাৎ আ‘মাল বিল আরকানের সাথে। কলব বা অন্তরের বিশ্বাস হলো অদৃশ্য বস্তু; এর ‘ইলম একমাত্র আল্লাহর নিকটই রয়েছে। সুতরাং মানুষ সেই বিষয়ে জানতে পারে না এবং তার উপর হুকুমও লাগাতে পারে না। তার বাহ্যিক অবস্থা বা কর্মকা--র ভিত্তিতে মুসলিম বলাই শ্রেয়। পবিত্র কুরআনুল কারীমেও এর ভিত্তি রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ ‘‘মরুবাসীরা বলে, আমরা ঈমান এনেছি বা বিশ্বাস স্থাপন করেছি, (আপনি তাদের) বলুন, তোমরা বিশ্বাস স্থাপন করনি; বরং বলো, আমরা ইসলাম গ্রহণ করেছি অর্থাৎ বশ্যতা স্বীকার করেছি।’’ (সূরা আল হুজুরাত ৪৯ : ১৪)

দ্বিতীয় আরেকটি বিষয় হলো : মু’মিনের সাক্ষ্য দান সত্ত্বেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের দান করলেন না, তার কারণ হলো যেহেতু তাদের ঈমান মযবুত, সুতরাং তাদের কিছু না দিলেও তারা ঈমান থেকে বিচ্যুত হবে না অথবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর কোনো অভিযোগ তুলবে না। পক্ষান্তরে যাদের দান করেছেন তাদের অন্তরে ঈমানের প্রতি ভালোবাসা ও মহববত গাঢ় ও দৃঢ় করার জন্য করেছেন। আর তারা যাতে ঈমান ও ইসলামের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে কুফরীতে ফিরে না যায় বরং ঈমানের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد) 19. Jihad

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা

৪০৩১-[৪৭] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদর যুদ্ধের দিন দাঁড়িয়ে বললেনঃ ’উসমান (ইবনু ’আফফান) আল্লাহ ও তাঁর রসূল-এর উদ্দেশে বের হয়েছে, সুতরাং তার পক্ষ হতে আমি বায়’আত করছি। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জন্যও এ গনীমাতের একাংশ রেখেছেন। অথচ বদর যুদ্ধে অনুপস্থিত আর কাউকে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গনীমাতের ভাগ দেননি। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَامَ يَعْنِي يَوْمَ بَدْرٍ فَقَالَ: «إِنَّ عُثْمَانَ انْطَلَقَ فِي حَاجَةِ اللَّهِ وَحَاجَةِ رَسُولِهِ وَإِنِّي أُبَايِعُ لَهُ» فَضَرَبَ لَهُ رسولُ الله بِسَهْمٍ وَلَمْ يَضْرِبْ بِشَيْءٍ لِأَحَدٍ غَابَ غَيْرَهُ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ابن عمر ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قام يعني يوم بدر فقال ان عثمان انطلق في حاجة الله وحاجة رسوله واني ابايع له فضرب له رسول الله بسهم ولم يضرب بشيء لاحد غاب غيره رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: ‘উসমান ছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্যা রুকাইয়্যার স্বামী।  বদর যুদ্ধের সময় নাবী নন্দীনী রুকাইয়্যাহ্ ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার সেবা-শুশ্রুষার এমন কোনো লোক ছিল না যাকে রেখে ‘উসমান যুদ্ধে যোগদান করবেন। এ অবস্থা দেখে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই তাকে যুদ্ধে যাওয়া থেকে বারণ করেন। যুদ্ধের জন্য সবাই যখন রসূলুল্লাহর হাতে হাত রেখে বায়‘আত করতে লাগলেন তখন আল্লাহর নাবী নিজের ডান হাতকে বাম হাতের মধ্যে রেখে বললেন, এটা ‘উসমান-এর বায়‘আত।

‘উসমান যেহেতু আল্লাহর রসূলের হুকুম পালন করেছেন, সুতরাং তার বাড়ীতে অবস্থানও আল্লাহর রাস্তায় বলে বিবেচনা করা হয়েছে। আর বদরের গনীমাতে তাকে অংশ দান করা হয়েছে। এটা তার একান্ত বিশেষত্বের কারণে করা হয়েছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد) 19. Jihad

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা

৪০৩২-[৪৮] রাফি’ ইবনু খাদীজ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গনীমাতের মাল বণ্টনে দশটি বকরী একটি উটের সমপরিমাণ গণ্য করতেন। (নাসায়ী)[1]

وَعَن رافعِ بن خديجٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَجْعَلُ فِي قَسْمِ الْمَغَانِمِ عَشْرًا مِنَ الشّاءِ بِبَعِير. رَوَاهُ النَّسَائِيّ

وعن رافع بن خديج قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يجعل في قسم المغانم عشرا من الشاء ببعير رواه النساىي

ব্যাখ্যা: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গনীমাতের মাল বণ্টনে একটি উট দশটি বকরীর সমান ধরে বণ্টন করতেন। এটা মূল্যের বিবেচনায় না গোশতের বিবেচনায় তা উল্লেখ নেই। কুরবানীর ক্ষেত্রেও এমনটি বলা হয়েছে, সেই ভিত্তিতে কেউ কেউ গোশতের বিবেচনায় এই সমতার কথা উল্লেখ করেছেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد) 19. Jihad

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা

৪০৩৩-[৪৯] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক নবী জিহাদে যাওয়ার প্রাক্কালে গোত্রের লোকেদের উদ্দেশে এ নির্দেশ দিলেন, যে সদ্য বিয়ে করেছে কিন্তু এখনও বাসর শয্যা যাপন করেনি, বরং সে বাসর যাপনের প্রত্যাশী, সে যেন আমার সাথে জিহাদে না যায়। আর ঐ ব্যক্তিও যেন আমার সাথে না যায়, যে ঘরের ভিত্তি স্থাপন করেছে, কিন্তু এখনও ছাদ উঠায়নি। আর এমন ব্যক্তিও যাবে না, যে বকরী বা উষ্ট্রী ক্রয় করেছে তার বাচ্চা প্রসবের অপেক্ষায় আছে। অতঃপর তিনি জিহাদে বের হয়ে যখন (প্রতিপক্ষ) জনপদের নিকটবর্তী হলেন, তখন ’আসর সালাতের সময় হলো অথবা সালাতের সময় প্রায় শেষ হয়ে এলো।

এমতাবস্থায় তিনি সূর্যকে লক্ষ্য করে বললেনঃ ’তুমি নির্দেশপ্রাপ্ত’ আর ’আমি নির্দেশিত’- এই বলে তিনি দু’আ করলেনঃ হে আল্লাহ! তুমি তাকে (সূর্যকে) আমাদের জন্য থামিয়ে দাও। অতঃপর আল্লাহর হুকুমে বিজয় লাভ হওয়া পর্যন্ত সূর্যের গতি স্থগিত হয়ে গেল। অতঃপর গনীমাতের মালসমূহ এক জায়গায় স্তূপ করলেন। আর তা জ্বালাবার জন্য আগুন এসেও তাকে গ্রাস করল না। তখন তিনি বললেনঃ নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে কেউ খিয়ানাত করেছ। সুতরাং তোমাদের মধ্যকার প্রত্যেক গোত্রের একজন করে আমার সাথে শপথ করতে হবে। ফলে শপথ করতে গিয়ে জনৈক ব্যক্তির হাত নবীর হাতের সাথে জড়িয়ে গেল। অতঃপর নবী বললেনঃ অবশ্যই তোমার গোত্রের কেউ খিয়ানাত করেছে। পরিশেষে তারা গাভীর মাথার মতো স্বর্ণের একটি মাথা এনে স্তূপের মধ্যে রাখল। আর তখনই আগুন এসে সমস্ত মালগুলো গ্রাস করে ফেলল।

অপর এক বর্ণনায় রয়েছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ আমাদের পূর্বে কোনো উম্মাতের জন্য গনীমাতের মাল ভোগ করা হালাল ছিল না। আল্লাহ তা’আলা আমাদের জন্য গনীমাত হালাল করে দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি আমাদের দুর্বলতা ও অক্ষমতা দেখেই আমাদের জন্য তা ভোগ করা হালাল করে দিয়েছেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: غَزَا نَبِيٌّ مِنَ الْأَنْبِيَاءِ فَقَالَ لِقَوْمِهِ: لَا يَتْبَعُنِي رَجُلٌ مَلَكَ بُضْعَ امْرَأَةٍ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يَبْنِيَ بِهَا وَلَمَّا يَبْنِ بِهَا وَلَا أَحَدٌ بَنَى بُيُوتًا وَلَمْ يَرْفَعْ سُقُوفَهَا وَلَا رَجُلٌ اشْتَرَى غَنَمًا أَوْ خَلِفَاتٍ وَهُوَ يَنْتَظِرُ وِلَادَهَا فَغَزَا فَدَنَا مِنَ الْقَرْيَةِ صَلَاةَ الْعَصْرِ أَوْ قَرِيبًا مِنْ ذَلِكَ فَقَالَ لِلشَّمْسِ: إِنَّكِ مَأْمُورَةٌ وَأَنَا مَأْمُورٌ اللَّهُمَّ احْبِسْهَا عَلَيْنَا فَحُبِسَتْ حَتَّى فَتَحَ اللَّهُ عَلَيْهِ فَجَمَعَ الْغَنَائِمَ فَجَاءَتْ يَعْنِي النَّارَ لِتَأْكُلَهَا فَلَمْ تَطْعَمْهَا فَقَالَ: إِنَّ فِيكُمْ غُلُولًا فَلْيُبَايِعْنِي مِنْ كُلِّ قَبِيلَةٍ رَجُلٌ فَلَزِقَتْ يدُ رجلٍ بيدِه فَقَالَ: فيكُم الغُلولُ فجاؤوا بِرَأْسٍ مِثْلِ رَأْسِ بَقَرَةٍ مِنَ الذَّهَبِ فَوَضَعَهَا فَجَاءَتِ النَّارُ فَأَكَلَتْهَا . زَادَ فِي رِوَايَةٍ: «فَلَمْ تَحِلَّ الْغَنَائِمُ لِأَحَدٍ قَبْلَنَا ثُمَّ أَحَلَّ اللَّهُ لَنَا الْغَنَائِمَ رَأَى ضَعْفَنَا وَعَجْزَنَا فَأَحَلَّهَا لَنَا»

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم غزا نبي من الانبياء فقال لقومه لا يتبعني رجل ملك بضع امراة وهو يريد ان يبني بها ولما يبن بها ولا احد بنى بيوتا ولم يرفع سقوفها ولا رجل اشترى غنما او خلفات وهو ينتظر ولادها فغزا فدنا من القرية صلاة العصر او قريبا من ذلك فقال للشمس انك مامورة وانا مامور اللهم احبسها علينا فحبست حتى فتح الله عليه فجمع الغناىم فجاءت يعني النار لتاكلها فلم تطعمها فقال ان فيكم غلولا فليبايعني من كل قبيلة رجل فلزقت يد رجل بيده فقال فيكم الغلول فجاووا براس مثل راس بقرة من الذهب فوضعها فجاءت النار فاكلتها زاد في رواية فلم تحل الغناىم لاحد قبلنا ثم احل الله لنا الغناىم راى ضعفنا وعجزنا فاحلها لنا

ব্যাখ্যা: যে নাবী এই জিহাদে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি হলেন মূসা (আঃ)-এর খাদিম বা সাথী ইউসা ইবনু নূন।

বাসরহীন নব বিবাহিত, বসতহীন নব ভবন নির্মাতা প্রভৃতি ব্যক্তিদের যুদ্ধে না নেয়ার কারণ তারা স্বতস্ফূর্তভাবে এবং দৃঢ়চিত্তে যুদ্ধ করতে পারবে না, ফলে যে কল্যাণ ছিল তা তিরোহিত হবে।

ইমাম নববী (রহঃ) বলেনঃ গুরুত্বপূর্ণ কার্যের দায়িত্বভার দাম্পত্য সম্পর্ক থেকে মুক্ত দৃঢ় ব্যক্তির হাতেই দেয়া উচিত। যাদের চিত্ত ঘর-বাড়ী ও স্ত্রী-পুত্রের সাথে গভীরভাবে সম্পৃক্ত তাদের যুদ্ধ চেতনা দুর্বল, তাই তিনি তাদের যুদ্ধে যাওয়ার জন্য অনুমতি প্রদান করেননি।

সূর্যের গতি থেমে যাওয়া একটি অলৌকিক ঘটনা। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্যও দু’বার সূর্য থেমে গিয়েছিল।

পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, পূর্ব জাতির জন্য গনীমাতের সম্পদ ব্যবহার বৈধ ছিল না। আকাশ থেকে আগুন এসে ওটা জ্বালিয়ে দিতো। এতে বুঝা যেতো তাদের এটি কবুল হয়েছে। আর যদি ওটা থেকে আত্মসাৎ করা হতো তবে আগুন আসতো না। তখন অনুসন্ধান করে যে নিয়েছে সে নিজে ওটা জমা দিলে অথবা তার নিকট থেকে ফিরিয়ে এনে গনীমাতের অন্যান্য মালের সাথে জমা করলে আগুন এসে তা জ্বালিয়ে দিতো। (মিরকাতুল মাফাতীহ; শারহে মুসলিম ১২শ খন্ড, হাঃ ১৭৪৭)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد) 19. Jihad

পরিচ্ছেদঃ ৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - গনীমাতের সম্পদ বণ্টন এবং তা আত্মসাৎ করা

৪০৩৪-[৫০] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’উমার(রাঃ) আমাকে বলেছেন যে, খায়বার যুদ্ধের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কয়েকজন সাহাবী এসে নিহত মুসলিমদের বর্ণনা করতে গিয়ে বললেন, অমুক অমুক শহীদ হয়েছে। পরিশেষে তারা আরো একজন সম্পর্কেও বললেন, অমুকও শহীদ হয়েছে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কক্ষনো না। গনীমাতের মাল হতে একটি কম্বল অথবা বলেছেন একটি জুববা খিয়ানাতের দায়ে আমি তাকে জাহান্নামের আগুনে দগ্ধ হতে দেখছি। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে ইবনুল খত্ত্বাব! যাও, লোকেদেরকে তিনবার ঘোষণা শুনিয়ে দাও, মু’মিন ছাড়া কেউ জান্নাতে যাবে না। ’উমার বলেনঃ আমিও এ ঘোষণা তিনবার প্রচার করলাম যে, মু’মিন ছাড়া কেউ জান্নাতের অধিকারী হবে না (জান্নাতে প্রবেশ করবে না)। (মুসলিম)[1]

وَعَن ابْن عَبَّاس قَالَ: حَدثنِي عمر قَالَ: لَمَّا كَانَ يَوْمَ خَيْبَرَ أَقْبَلَ نَفَرٌ مِنْ صَحَابَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالُوا: فُلَانٌ شَهِيدٌ وَفُلَانٌ شَهِيدٌ حَتَّى مَرُّوا عَلَى رَجُلٍ فَقَالُوا: فُلَانٌ شَهِيدٌ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كَلَّا إِنِّي رَأَيْتُهُ فِي النَّارِ فِي بُرْدَةٍ غَلَّهَا أَوْ عَبَاءَةٍ» ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَا ابْنَ الْخَطَّابِ اذْهَبْ فَنَادِ فِي النَّاسِ: أَنَّهُ لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلَّا الْمُؤْمِنُونَ ثَلَاثًا قَالَ: فَخَرَجْتُ فَنَادَيْتُ: أَلَا إِنَّهُ لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلَّا الْمُؤْمِنُونَ ثَلَاثًا. رَوَاهُ مُسلم

وعن ابن عباس قال حدثني عمر قال لما كان يوم خيبر اقبل نفر من صحابة النبي صلى الله عليه وسلم فقالوا فلان شهيد وفلان شهيد حتى مروا على رجل فقالوا فلان شهيد فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم كلا اني رايته في النار في بردة غلها او عباءة ثم قال رسول الله صلى الله عليه وسلم يا ابن الخطاب اذهب فناد في الناس انه لا يدخل الجنة الا المومنون ثلاثا قال فخرجت فناديت الا انه لا يدخل الجنة الا المومنون ثلاثا رواه مسلم

ব্যাখ্যা: এ হাদীসের ব্যাখ্যাও পূর্বে অতিবাহিত হয়েছে। গনীমাতের একখানা চাদর অথবা জুববা খিয়ানাতের কারণে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করে শহীদ হওয়ার পরও জাহান্নামে যেতে হয়েছে।

আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথাও ঘোষণা দিতে বলেন, ‘‘মু’মিন ছাড়া জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’’ এখানে মু’মিন বলতে আদনা (ন্যূনতম) মু’মিনও একবার জান্নাতে যাবেই, আর প্রথম পর্যায়েই জান্নাতে প্রবেশের জন্য কামিল মু’মিন হতে হবে।

ইবনুল মালিক (রহঃ) বলেনঃ পরিভাষায় মু’মিন হলো যিনি মুহাম্মাদের প্রতি এবং তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যা নিয়ে এসেছেন তার প্রতি ঈমান আনা বা বিশ্বাস স্থাপন করা। যে গনীমাতের সম্পদ আত্মসাৎ করলো সে যেন তার আনিত বিধানকে বিশ্বাস করলো না। নাবী ধমকী হিসেবে তাদের মু‘মিন বলেননি। (মিরকাতুল মাফাতীহ; তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৫৭৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد) 19. Jihad
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৭ পর্যন্ত, সর্বমোট ৭ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে