পরিচ্ছেদঃ ৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - সাবধানতা অবলম্বনে শাস্তি প্রদান

التَّعْزِيْزِ হলো হাদ্দ ব্যতীত শিক্ষা দেয়া বা সতর্ক করা। ইবনু হুমাম বলেন : এটা কুরআন দ্বারা প্রমাণিত, আল্লাহ বলেনঃ

وَاضْرِبُوهُنَّ فَإِنْ أَطْعَنْكُمْ فَلَا تَبْغُوا عَلَيْهِنَّ سَبِيلًا

’’এবং তাদেরকে প্রহার করো যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায় তবে আর তাদের জন্য অন্য কোনো পথ অনুসন্ধান করো না’’- (সূরা আন্ নিসা ৪ : ৩৪)। আয়াতে স্ত্রীদেরকে শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়ার জন্য প্রহারের আদেশ দিয়েছেন আল্লাহ তা’আলা।

’কাফী’তে রয়েছে,لَا تَرْفَعْ عَصَاكَ عَنْ أَهْلِكَ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তুমি তোমার পরিবার থেকে তোমার লাঠিকে উঠিয়ে রাখবে না।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন, আল্লাহ ঐ ব্যক্তির ওপর রহম করুন যখনই তার পরিবার তাকে দেখে তার ঘারে লাঠি ঝুলালো।

আর এ সংক্রান্ত সবচেয়ে শক্তিশালী হাদীস হলো فَاضْرِبُوهُمْ عَلٰى تَرْكِهَا بِعَشْرٍ فِي الصِّبْيَانِ তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে তাদের বয়স যখন দশ বছর, এমতাবস্থায় যদি তারা সালাত ছেড়ে দেয়। এটা সুস্পষ্ট দলীল- সতর্কতামূলক শাস্তি প্রদান করা বৈধ। সাহাবীরাও এ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছেন। আর তাম্রম্নতাশী সারাখসী থেকে উল্লেখ করে বলেন, সতর্কতামূলক শাস্তিতে কোনো সীমানা নেই বরং বিচারক যা ভালো মনে করেন তা করবেন। মূলতঃ উদ্দেশ্য হলো ধমকানো।

মানুষও বিভিন্ন মানের তাদের মধ্যে কাউকে উপদেশের মাধ্যমে সতর্ক করবে, আবার কারো ক্ষেত্রে চর থাপ্পড়, আবার কারো ক্ষেত্রে কয়েদ করে রাখা। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


৩৬৩০-[১] আবূ বুরদাহ্ ইবনু নাইয়্যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলার নির্ধারিত দণ্ড ব্যতীত অন্য কোনো অপরাধে দশ চাবুকের বেশি কার্যকর করা বৈধ হবে না। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ التَّعْزِيْزِ

عَن أبي بردة بن ينار عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يُجْلَدُ فَوْقَ عَشْرِ جَلَدَاتٍ إِلَّا فِي حد من حُدُود الله»

عن ابي بردة بن ينار عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لا يجلد فوق عشر جلدات الا في حد من حدود الله

ব্যাখ্যা: ‘উলামারা মতানৈক্য করেছেন সতর্কতামূলক শাস্তি প্রদানে দশ বেত্রাঘাতে সীমাবদ্ধ হবে না বেশী হবে।

আহমাদ বিন হাম্বল এবং আশহাব আল মালিকী বলেনঃ দশ বেত্রাঘাতের বেশী বৈধ না। আর জুমহূর সাহাবী, তাবি‘ঈ এবং তাদের পরবর্তী ‘উলামারা দশের বেশী বেত্রাঘাত করা বৈধ সাব্যস্ত করেছেন।

এরপরে তারা মতানৈক্য করেছেন মালিক ও তার সাথীরা এবং আবূ ইউসুফ মুহাম্মাদ। আর আবূ সাওর ও ত্বহাবী বলেন, নির্ধারিত কোনো সীমারেখা নেই বরং তা ইমামের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল। তিনি ইচ্ছা করলে বাড়াতে পারেন। দণ্ডবিধির সমান তারা বলেন। ‘উমার তিনি তার আংটি খোদাইকারীকে একশত বেত্রাঘাত করেছিলেন।

আবূ হানীফাহ্ বলেনঃ চল্লিশের উপর যেন না পৌঁছে। ইবনু আবূ লায়লা বলেনঃ পঁচাত্তর।

শাফি‘ঈ ও তার সাথীরা বলেনঃ সর্বনিম্ন দণ্ডবিধির সীমানা পর্যন্ত না পৌঁছে, সুতরাং দাসের ক্ষেত্রে যেন বিশ এবং স্বাধীনের ক্ষেত্রে চল্লিশ না হয়। জুমহূর সাহাবী উপরোক্ত হাদীসের জবাবে বলেন, হাদীসটি রহিত তথা মানসূখ এবং তারা দলীল হিসেবে গ্রহণ করেন সাহাবীরা দশের অধিক দণ্ড প্রয়োগ করেছেন। আর মালিক-এর অনুসারীরা তা’বীল করে বলেন, বিষয়টি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যামানায় খাস ছিল। কেননা তাদের সে সময়ে স্বল্প দণ্ডে অপরাধীদের জন্য যথেষ্ট ছিল। তবে এ ব্যাখ্যাটি দুর্বল। আল্লাহই বেশী ভালো জানেন। (শারহে মুসলিম ১১শ খন্ড, হাঃ ১৭০৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৭: দণ্ডবিধি (كتاب الحدود) 17. Prescribed Punishments