পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে বদ্দু‘আ না করা

৩৬২৫-[১] ’উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তির নাম ছিল ’আবদুল্লাহ, কিন্তু তাকে ’হিমার’ (গাধা) উপাধিতে ডাকা হতো। সে (অবোধের ন্যায় কথাবার্তা বলে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হাসাতো। একদিন মদ্যপায়ীর জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ওপর দণ্ড প্রয়োগ করেছিলেন। এরপর আবার একদিন তাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আনা হলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে চাবুক মারার নির্দেশ করলেন। তখন এক ব্যক্তি বলে উঠল, হে আল্লাহ! তার ওপর তোমার অভিসম্পাত বর্ষিত হোক। কতবারই না তাকে এ অপরাধে আনা হলো? এমতাবস্থায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাকে অভিশাপ দিও না। আল্লাহর শপথ! আমি তার সম্পর্কে জানি যে, সে আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে ভালোবাসে। (বুখারী)[1]

بَابُ مَالَا يُدْعٰى عَلَى الْمَحْدُوْدِ

عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أنَّ رجلا اسمُه عبدُ اللَّهِ يُلَقَّبُ حمارا كَانَ يُضْحِكُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ جَلَدَهُ فِي الشَّرَابِ فَأُتِيَ بِهِ يَوْمًا فَأَمَرَ بِهِ فَجُلِدَ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ: اللَّهُمَّ الْعَنْهُ مَا أَكْثَرَ مَا يُؤْتَى بِهِ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تلعنوه فو الله مَا عَلِمْتُ أَنَّهُ يُحِبُّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

عن عمر بن الخطاب رضي الله عنه ان رجلا اسمه عبد الله يلقب حمارا كان يضحك النبي صلى الله عليه وسلم وكان النبي صلى الله عليه وسلم قد جلده في الشراب فاتي به يوما فامر به فجلد فقال رجل من القوم اللهم العنه ما اكثر ما يوتى به فقال النبي صلى الله عليه وسلم لا تلعنوه فو الله ما علمت انه يحب الله ورسوله رواه البخاري

ব্যাখ্যা: প্রথমটি তার নাম, দ্বিতীয়টি তার উপাধি। (كَانَ يُضْحِكُ النَّبِىَّ ﷺ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে হাসাতেন তবে তার উপস্থিতিতে অথবা এমন কাজ করতেন যাতে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসতেন।

আবূ ‘ইয়ায হিশাম বিন সা‘দ, তিনি যায়দ বিন আসলাম-এর সানাদে বলেন যে, এক ব্যক্তি তাকে গাধা নামে উপাধি দেয়া হতো তিনি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ঘি এবং মধুর কোটা বা থলে উপহার দিতেন আর যখন ঘি বা মধুর মালিক এসে তাকে তাগাদা দিতো (মূল্যের জন্য) তিনি তখন তাকে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে নিয়ে আসতেন এবং বলতেন একে তার মূল্য দিয়ে দিন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু হাসতেন, অতঃপর বলতেন তাকে দাও।

তিনি আল্লাহর রসূলকে ভালোবাসতেন। যখনই তিনি মদীনাতে প্রবেশ করতেন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য কিছু ক্রয় করে নিয়ে এসে বলতেন। এটা আপনার জন্য হাদিয়া। যখন দোকানদার এসে মূল্য চাইতো তখন তিনি বলতেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি মূল্যটি দিয়ে দিন জবাবে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন : তুমি কি আমাকে এটা হাদিয়া হিসেবে প্রদান করনি? তখন লোকটি বলতেন আমার কাছে তো তেমন কিছুই নেই। তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসতেন আর আদেশ দিতেন দোকানদারকে মূল্য দিতে। (ফাতহুল বারী ১২শ খন্ড, হাঃ ৬৭৮০)

হাদীসের শিক্ষা:

* উপাধি নামে ডাকা বৈধ।

* পাপ কাজ করা সত্ত্বেও পাপীর অন্তরে আল্লাহ এবং রসূলের ভালোবাসা বিদ্যমান থাকে।

* মদ্যপান বার বার করলে দণ্ড হিসেবে হত্যা করা যাবে না। ইবনু ‘আব্দুল বার বলেন, লোকটিকে পঞ্চাশ বারের অধিক মদ্যপানের অপরাধে নিয়ে আসা হয়েছিল।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৭: দণ্ডবিধি (كتاب الحدود) 17. Prescribed Punishments

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে বদ্দু‘আ না করা

৩৬২৬-[২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন জনৈক ব্যক্তিকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আনা হলো, যে মদ পান করেছিল। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তোমরা তাকে প্রহার করো। রাবী বলেনঃ তখন আমাদের মাঝে কেউ হাত দ্বারা, কেউ জুতার দ্বারা, আবার কেউ বা কাপড় (পেঁচিয়ে লাঠির মতো বানিয়ে তা) দ্বারা আঘাত করল। অতঃপর লোকটি যখন চলে গেল, তখন এক ব্যক্তি বলে উঠল, আল্লাহ তোমাকে লাঞ্ছিত করুক। তখন এটা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এরূপ বলো না। তার ওপর শায়ত্বনকে সাহায্য করো না। (বুখারী)[1]

بَابُ مَالَا يُدْعٰى عَلَى الْمَحْدُوْدِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: أَتَى النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِرَجُلٍ قَدْ شَرِبَ الْخَمْرَ فَقَالَ: «اضْرِبُوهُ» فَمِنَّا الضَّارِبُ بِيَدِهِ وَالضَّارِبُ بِنَعْلِهِ وَالضَّارِبُ بِثَوْبِهِ فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ بَعْضُ الْقَوْمِ: أَخْزَاكَ اللَّهُ قَالَ: «لَا تَقُولُوا هَكَذَا لَا تُعِينُوا عَلَيْهِ الشَّيْطَانَ» . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ

وعن ابي هريرة قال اتى النبي صلى الله عليه وسلم برجل قد شرب الخمر فقال اضربوه فمنا الضارب بيده والضارب بنعله والضارب بثوبه فلما انصرف قال بعض القوم اخزاك الله قال لا تقولوا هكذا لا تعينوا عليه الشيطان رواه البخاري

ব্যাখ্যা: (لَا تَقُوْلُوْا هٰكَذَا لَا تُعِيْنُوْا عَلَيْهِ الشَّيْطَانَ) তোমরা তাকে এরূপ বলো না, তার প্রতি শায়ত্বনকে সাহায্য করো না। অন্য বর্ণনায় এসেছে, لَا تَكُونُوا عَوْنَ الشَّيْطَانِ عَلٰى أَخِيكُمْ তোমরা তোমাদের ভাইয়ের বিরুদ্ধে শায়ত্বনের সাহায্যকারী হয়ো না।

আর তাদের সাহায্য শায়ত্বনকে করার অর্থ হলো শায়ত্বন চায় তার পাপকাজ তাকে সৌন্দর্যম--ত করুক আর তা পাপীকে লাঞ্ছিত এর মাধ্যমে অর্জিত হয় আর যখন লোকেরা পাপীকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করে এতে শায়ত্বনের উদ্দেশ্য সফল হয়। আর আবূ দাঊদে অতিরিক্ত হিসেবে এসেছে, وَلٰكِنْ قُولُوا اللّٰهُمَّ اغْفِرْ لَهُ اللّٰهُمَّ ارْحَمْهُ বরং তোমরা বলো, হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা করো এবং তার প্রতি দয়া কর। (ফাতহুল বারী ১২শ খন্ড, হাঃ ৬৭৭৭)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৭: দণ্ডবিধি (كتاب الحدود) 17. Prescribed Punishments
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২ পর্যন্ত, সর্বমোট ২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে