পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দণ্ডবিধির ব্যাপারে সুপারিশ

৩৬১১-[২] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তির সুপারিশ আল্লাহ তা’আলার দণ্ডবিধিতে প্রতিবন্ধক হয়, সে যেন আল্লাহ তা’আলার সাথে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলো। আর যে ব্যক্তি স্বজ্ঞানে কোনো অন্যায় বা অপকর্মের পক্ষে বিবাদে লিপ্ত হলো, সে তা বর্জন না করা পর্যন্ত আল্লাহ তা’আলার ক্রোধ ও অসন্তুষ্টির মধ্যে পড়ে রইল। আর যে ব্যক্তি কোনো মু’মিনের ব্যাপারে এমন মিথ্যারোপ রটাল, অথচ তার মধ্যে দোষ-ত্রুটি নেই। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত সে যা রটিয়েছিল তার থেকে (তওবা্ করে) মুক্ত ও পবিত্র না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তা’আলা তাকে জাহান্নামীদের দূষিত রক্ত ও পুঁজের মধ্যে অবস্থান করাবেন। (আহমাদ ও আবূ দাঊদ)[1]

আর বায়হাক্বী-এর শু’আবুল ঈমান-এর এক বর্ণনাতে আছে, যে ব্যক্তি এমন কোনো ঝগড়া-বিবাদের মধ্যে সহায়ক হলো। অথচ তার এতটুকুও জানা নেই যে, তা ন্যায়সঙ্গত বা অন্যায় কিনা। এমতাবস্থায় সে তা পরিহার না করা পর্যন্ত আল্লাহ তা’আলার অসন্তুষ্টির মধ্যে বিদ্যমান থাকবে।

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم يَقُول: «مَنْ حَالَتْ شَفَاعَتُهُ دُونَ حَدٍّ مِنْ حُدُودِ اللَّهِ فَقَدَ ضَادَّ اللَّهَ وَمَنْ خَاصَمَ فِي بَاطِلٍ وَهُوَ يَعْلَمُهُ لَمْ يَزَلْ فِي سُخْطِ اله تَعَالَى حَتَّى يَنْزِعَ وَمَنْ قَالَ فِي مُؤْمِنٍ مَا لَيْسَ فِيهِ أَسْكَنَهُ اللَّهُ رَدْغَةَ الْخَبَالِ حَتَّى يَخْرُجَ مِمَّا قَالَ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُد وَفِي روايةٍ للبيهقيِّ فِي شعبِ الْإِيمَان «مَنْ أَعانَ على خُصُومَةً لَا يَدْرِي أَحَقٌّ أَمْ بَاطِلٌ فَهُوَ فِي سَخطِ اللَّهِ حَتَّى ينْزع»

عن عبد الله بن عمر قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول من حالت شفاعته دون حد من حدود الله فقد ضاد الله ومن خاصم في باطل وهو يعلمه لم يزل في سخط اله تعالى حتى ينزع ومن قال في مومن ما ليس فيه اسكنه الله ردغة الخبال حتى يخرج مما قال رواه احمد وابو داود وفي رواية للبيهقي في شعب الايمان من اعان على خصومة لا يدري احق ام باطل فهو في سخط الله حتى ينزع

ব্যাখ্যা: প্রশাসকের নিকট পৌঁছার পর দণ্ডবিধির সুপারিশের মাধ্যমে দণ্ডবিধির কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়।

মুল্লা ‘আলী কারী বলেনঃ আল্লাহ যা আদেশ করেন তারা তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে দণ্ডবিধি বাস্তবায়ন না করার সুপাররিশের মাধ্যমে।

(وَمَنْ خَاصَمَ فِىْ بَاطِلٍ) আর যে লোক জেনে শুনে বাতিল বা অন্যায় সমর্থনে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়, সে জানে এটা বাতিল বা সে জানে সে সত্যের বিরুদ্ধে ঝগড়া করে।

(حَتّٰى يَخْرُجَ مِمَّا قَالَ) কাযী বলেনঃ আল্লাহর নিকট তাওবার মাধ্যমে বের হয়ে আসা। আর যে বিষয়ে কথা বলেছে তা থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিবে।

আশরাফ বলেনঃ আল্লাহ রক্ত পুঁজের মধ্যে অবস্থান করাবেন ঐ পাপের শাস্তি শেষ না হওয়া পর্যন্ত। আর তা শেষ হলে সেখান থেকে বের করে আনবেন।

আর কাযী ‘ইয়ায বলেনঃ এটা হলো গীবাতের জন্য। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৩৫৯৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৭: দণ্ডবিধি (كتاب الحدود) 17. Prescribed Punishments

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দণ্ডবিধির ব্যাপারে সুপারিশ

৩৬১২-[৩] আবূ উমাইয়্যাহ্ আল মাখযূমী (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এক চোরকে আনা হলো। সে সুস্পষ্টভাবে চুরির স্বীকারোক্তি দিলো; কিন্তু তার নিকট চুরির কোনো জিনিস পাওয়া গেল না। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার ধারণা যে, তুমি চুরি করনি। তবুও সে বলল, হ্যাঁ, আমি চুরি করেছি। এমতাবস্থায় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উক্ত কথাটি দুই কি তিনবার পুনরাবৃত্তি করলেন। কিন্তু সে প্রত্যেকবারই চুরি করার কথা স্বীকার করল। সুতরাং তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নির্দেশ দিলেন, ফলে তার হাত কাটা হলো। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট তাকে উপস্থিত করা হলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও এবং তওবা্ করো। সে বলল, আমি আল্লাহর নিকট মাফ চাচ্ছি এবং তওবা্ করছি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনবার বললেনঃ হে আল্লাহ! তার তওবা্ কবুল করো। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ্, দারিমী)[1]

গ্রন্থকার (রহঃ) বলেন : উপরোল্লিখিত চারটি কিতাবের মতো জামি’উল উসূল, শু’আবুল ঈমান ও মা’আলিমুস্ সুনান-এর মধ্যেও আমি এ হাদীসটি আবূ উমাইয়্যাহ্ হতে বর্ণিত পেয়েছি।

وَعَنْ أَبِي أُمَيَّةَ الْمَخْزُومِيِّ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَتَى بِلِصٍّ قَدِ اعْتَرَفَ اعْتِرَافًا وَلَمْ يُوجَدْ مَعَهُ مَتَاعٌ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا أَخَالُكَ سَرَقْتَ» . قَالَ: بَلَى فَأَعَادَ عَلَيْهِ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا كُلَّ ذَلِكَ يَعْتَرِفُ فَأَمَرَ بِهِ فَقُطِعَ وَجِيءَ بِهِ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اسْتَغْفِرِ اللَّهَ وَتُبْ إِلَيْهِ» فَقَالَ: أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اللَّهُمَّ تُبْ عليهِ» ثَلَاثًا. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ هَكَذَا وجدتُ فِي الْأُصُول الْأَرْبَعَة وجامع الْأُصُول وَشُعَبُ الْإِيمَانِ وَمَعَالِمُ السُّنَنِ عَنْ أَبِي أُمَيَّةَ

وعن ابي امية المخزومي ان النبي صلى الله عليه وسلم اتى بلص قد اعترف اعترافا ولم يوجد معه متاع فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم ما اخالك سرقت قال بلى فاعاد عليه مرتين او ثلاثا كل ذلك يعترف فامر به فقطع وجيء به فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم استغفر الله وتب اليه فقال استغفر الله واتوب اليه فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم اللهم تب عليه ثلاثا رواه ابو داود والنساىي وابن ماجه والدارمي هكذا وجدت في الاصول الاربعة وجامع الاصول وشعب الايمان ومعالم السنن عن ابي امية

ব্যাখ্যা: (مَا أَخَالُكَ سَرَقْتَ) আমার ধারণা মতে তুমি চুরি করনি।

শাওকানী (রহঃ) বলেনঃ হাদীসে দলীল প্রমাণিত হয় যে, হাদ্দ প্রয়োগকৃত ব্যক্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থনার তলব করা এবং তার জন্য দু‘আ করা তাওবার মাধ্যমে। তার ক্ষমা প্রার্থনার পর আরো সাব্যস্ত হয় তাকে সে বিষয় স্মরণ করিয়ে দেয়া যাতে তার হাদ্দ মাওকূফ হয়ে যায় (যেমন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার ধারণা তুমি চুরি করনি)। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৩৭২)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৭: দণ্ডবিধি (كتاب الحدود) 17. Prescribed Punishments

পরিচ্ছেদঃ ২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দণ্ডবিধির ব্যাপারে সুপারিশ

৩৬১৩-[৪] কিন্তু মাসাবীহ-এর মূল গ্রন্থে বর্ণনাকারীর নাম আবূ রিমসাহ্ বলা হয়েছে, অর্থাৎ- ء (হামযাহ্) ও ي (ইয়া)-এর পরিবর্তে ر (রা) ও ث (সা) রয়েছে।[1]

وَفِي نُسَخِ الْمَصَابِيحِ عَنْ أَبِي رِمْثَةَ بِالرَّاءِ والثاء الْمُثَلَّثَة بدل الْهمزَة وَالْيَاء

وفي نسخ المصابيح عن ابي رمثة بالراء والثاء المثلثة بدل الهمزة والياء

হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৭: দণ্ডবিধি (كتاب الحدود) 17. Prescribed Punishments
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৩ পর্যন্ত, সর্বমোট ৩ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে