পরিচ্ছেদঃ ৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - লায়লাতুল কদর

নামকরণ:

লায়লাতুল কদর-এর নামকরণ নিয়ে ’উলামাগণের মাঝে মতপার্থক্য বিদ্যমান। তবে গ্রহণযোগ্য ও বাস্তবসম্মত মত হলো, এ রাতের নামلَيْلَةِ الْقَدْرِ (লায়লাতুল কদর) রাখা হয়েছে তার সম্মান ও মর্যাদার কারণে। আর القدر শব্দের অর্থ التعظيم বা সম্মান বা মর্যাদাবান। যেমন আল্লাহ তা’আলার বাণী,

وَمَا قَدَرُوا اللهَ حَقَّ قَدْرِه অর্থাৎ- ’’তারা আল্লাহ তা’আলাকে যথাযথ সম্মান করেনি।’’ (সূরা আল আন্’আম ৬: ৯১)

এর অর্থ হলো, নিশ্চয়ই এ রাতে কুরআন অবতীর্ণ হওয়ায় তা সম্মানের অধিকারী হয়েছে। আর তার গুণ বর্ণনা করা হয়েছে যে, এ রাত হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। অথবা এ রাতে মালায়িকাহ্ (ফেরেশতা) (ফেরেশতাগণ) অবতীর্ণ হয় বিধায় এটি সম্মানী। অথবা এ রাতে রহমত, বারাকাত ও ক্ষমা অবতীর্ণ হয়, অথবা এ রাত ’ইবাদাতের মাধ্যমে জাগরণ করা হয়। বিবিধ কারণে তা সম্মানী।

লায়লাতুল কদর নির্ধারণ:

এ রাত নির্ধারণে ’উলামাগণের অধিকতর মতপার্থক্য রয়েছে।

’আল্লামা হাফেয আসকালানী (রহঃ) ফাতহুল বারীতে ৪০টির বেশি মতামত উল্লেখ করেছেন। আর এ সকল মতামতগুলো একে অপরের পরিপূরক। তবে সর্বপ্রসিদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য মতের ক্ষেত্রে ’আল্লামা আবূ সওর আল মুযানী, ইবনু খুযায়মাহ্ এবং মাযহাবীদের একদল ’উলামাগণ বলেন, নিশ্চয়ই তা রমাযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে হবে, এবং তা স্থানান্তরিত হবে, অর্থাৎ- কখনো তা ২১তম রাতে যেতে পারে, আবার কখনো ২৫শে কখনো ২৭শে এবং কখনো ২৯শে রাতে যেতে পারে। আর ’আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসটি তার উপরই প্রমাণ করে। এটাই সর্বগ্রাহ্য ও প্রাধান্য মত।

হাফেয আসকালানী (রহঃ) এ সংক্রান্ত মতামতগুলো উল্লেখ করার পর বলেন, এ সকল মতের মধ্যে প্রাধান্য ও অগ্রগণ্য মত হলো: নিশ্চয়ই তা শেষ দশকের বেজোড় রাতে হবে।

ইমাম বুখারী (রহঃ) ’আয়িশাহ্ (রাঃ) ও অন্যান্যদের বর্ণিত হাদীসের মাধ্যমে অধ্যায় বেঁধেছেন যে, (باب تحري ليلة القدر في الوتر من العشر الأواخر) অর্থাৎ- অধ্যায়: লায়লাতুল কদরের রাত (রমাযানের) শেষ দশকের বেজোড় রাতে অনুসন্ধান করা।

’আল্লামা আসকালানী (রহঃ) বলেন, (ইমাম বুখারীর) এ অধ্যায়ে এদিকে ইঙ্গিত রয়েছে যে, লায়লাতুল কদর রমাযানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, এর পর তা শেষ দশকে নির্ধারিত, অতঃপর তা বেজোড় রাতগুলোতে, তবে তা কোন রাতে তা নির্ধারিত নয়।

এ রাত গোপন করার হিকমাত:

লায়লাতুল কদরের রাতকে গোপন করার হিকমাত প্রসঙ্গে ’উলামাগণ বলেন, এটি গোপন রাখা হয়েছে এ কারণে যে, যাতে এ রাত অনুসন্ধানের জন্য ইজতিহাদ বা প্রচেষ্টা করা যায়। এর বিপরীতে যদি তা নির্দিষ্ট করে দেয়া হত তাহলে মানুষ শুধু ওই নির্ধারিত রাতটির মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকত। (আল্লাহ ভালো জানেন)


২০৮৩-[১] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কদর রজনীকে রমাযান (রমজান) মাসের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতে অনুসন্ধান করো। (বুখারী)[1]

بَابُ لَيْلَةِ الْقَدْرِ

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تَحَرَّوْا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِي الْوِتْرِ مِنَ الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ من رَمَضَان» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن عائشة رضي الله عنها قالت: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «تحروا ليلة القدر في الوتر من العشر الأواخر من رمضان» . رواه البخاري

ব্যাখ্যা: অপর বর্ণনায় রয়েছে الْتَمِسُو (সন্ধান কর) উভয়টির অর্থ হলো অনুসন্ধান করা, ইচ্ছা করা। তবে (تَحَرَّوْا) শব্দটি কঠোর চেষ্টা ও গবেষণায় অগ্রগামী।

এখানে দলীল রয়েছে যে, ‘‘লায়লাতুল কদর’’টা রমাযানেই সীমাবদ্ধ, অতঃপর তার শেষ দশকে। তারপর শেষ দশকের বেজোড় রাতে নির্ধারিত হয়, তবে তা কোন্ রাতে নির্ধারিত নয়, আর এ বিষয়ে বর্ণনা অতিবাহিত হয়েছে, এটাই অগ্রগণ্য মত।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم) 7. Fasting

পরিচ্ছেদঃ ৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - লায়লাতুল কদর

২০৮৪-[২] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথীদের কয়েক ব্যক্তিকে লায়লাতুল কদর (রমাযান (রমজান) মাসের) শেষ সাতদিনে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি দেখছি তোমাদের সকলের স্বপ্ন শেষ সাত রাতের ব্যাপারে এক। তাই তোমাদের যে ব্যক্তি কদর রজনী পেতে চাও সে যেন (রমাযান (রমজান) মাসের) শেষ সাত রাতে তা খুঁজে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ لَيْلَةِ الْقَدْرِ

وَعَن ابْن عمر قَالَ: أَنَّ رَجُلًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُرُوا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِي الْمَنَامِ فِي السَّبْعِ الْأَوَاخِرِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَرَى رُؤْيَاكُمْ قَدْ تَوَاطَأَتْ فِي السَّبْعِ الْأَوَاخِرِ فَمَنْ كَانَ مُتَحَرِّيهَا فَلْيَتَحَرَّهَا فِي السَّبْعِ الْأَوَاخِر»

وعن ابن عمر قال: أن رجلا من أصحاب النبي صلى الله عليه وسلم أروا ليلة القدر في المنام في السبع الأواخر فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أرى رؤياكم قد تواطأت في السبع الأواخر فمن كان متحريها فليتحرها في السبع الأواخر»

ব্যাখ্যা: (فَلْيَتَحَرَّهَا فِى السَّبْعِ الْأَوَاخِرِ) এখানে (سَبْعِ الْأَوَاخِرِ) দ্বারা উদ্দেশ্য হলোঃ মাসের শেষ, অর্থাৎ- উল্লেখিত سبع টা মাসের শেষ বুঝায়। অতএব তা শুরু হবে ২৪ তারিখ হতে, যদি মাস ৩০ দিনে হয়। (উল্লেখ্য যে, ‘আরাবী মাসের হিসাব রাত আগে আসে। সুতরাং এখানে ২৪ তারিখ রাত হলোঃ ২৩ তারিখের পরবর্তী রাত।) আর سبع দ্বারা ২০ এর পরবর্তী দিনগুলোও হতে পারে।

ইমাম বুখারী (রহঃ) কিতাবুত্ তা‘বির-এ বিশুদ্ধ সানাদে বর্ণিত রয়েছে। নিশ্চয়ই মানুষেরা লায়লাতুল কদর দেখেছিল শেষ সাতে এবং কতক মানুষ তা দেখেছিল শেষ দশে। অতঃপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা তা খোঁজ কর মাসের শেষ রাতগুলোত।

হাফেয আসকালানী (রহঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উভয় দলের দেখার ঐকমত্যের দিকে লক্ষ্য করেছেন, অতঃপর এ নির্দেশ দিয়েছেন এবং তিনি আত্ তা‘বির-এ বলেন, এককভাবে سبع বা সাত সংখ্যাটি عَشْرِ বা দশ সংখ্যার অন্তর্ভুক্ত। যখন একদল দেখল নিশ্চয়ই তা দশের মধ্যে আবার আর একদল দেখল, তা শেষ সাতে। যাতে তারা সাতের উপর ঐকমত্য হয়, সেজন্য নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয় দলকেই লায়লাতুল কদর শেষ সাতে অনুসন্ধান করার নির্দেশ দিয়েছেন (অর্থাৎ- ২৩ তারিখ দিবাগত রাত হতে শুরু হবে)।

মুসনাদে আহমাদ-এর বর্ণনায় সালিম (রাঃ) হতে বর্ণিত রয়েছে যে, এক লোক লায়লাতুল কদর দেখল ২৭শে রাতে অথবা অনুরূপ অনুরূপ। অতঃপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা লায়লাতুল কদর অনুসন্ধান কর অবশিষ্ট দশের বেজোড় রাতে আর মুসলিমে ইবনু ‘উমার  হতে বর্ণিত রয়েছে, যে ব্যক্তি লায়লাতুল কদর সন্ধান করতে চায় সে যেন শেষ দশকের বেজোড় রাতে সন্ধান করে এবং তিনি ৭ এবং ১০ এর বর্ণনা দ্বয়ের মাঝে সমন্বয় করেছেন যে, ১০ শব্দটি সীমাবদ্ধতার জন্য অথবা দু’ বছরের দু’টি বিষয়ের সংখ্যার উপর প্রমাণ করবে। কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লায়লাতুল কদর সম্পর্কে জানতেন যে, তা শেষ দশকেই হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم) 7. Fasting

পরিচ্ছেদঃ ৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - লায়লাতুল কদর

২০৮৫-[৩] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা লায়লাতুল কদরকে রমাযান (রমজান) মাসের শেষ দশকে সন্ধান করো। লায়লাতুল কদর হলো নবম রাতে (অর্থাৎ- একুশতম রাতে), বাকী দিন হলো সপ্তম রাতে (সেটা হলো তেইশতম রাত), আর অবশিষ্ট থাকল পঞ্চম রাত (আর তা হলো পঁচিশতম) রাত। (বুখারী)[1]

بَابُ لَيْلَةِ الْقَدْرِ

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: الْتَمِسُوهَا فِي الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ: فِي تَاسِعَةٍ تَبْقَى فِي سَابِعَةٍ تَبْقَى فِي خَامِسَةٍ تَبْقَى. رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن ابن عباس أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: التمسوها في العشر الأواخر من رمضان ليلة القدر: في تاسعة تبقى في سابعة تبقى في خامسة تبقى. رواه البخاري

ব্যাখ্যা: ‘আল্লামা আল কারী (রহঃ) বলেন যে, তার কথা (تَبْقٰى) অবশিষ্ট থাকবে, অর্থাৎ- ২০ এর পর তা অবশিষ্ট থাকবে। আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম تَاسِعَةٍ বা ৯ম দ্বারা ২৯ তারিখ, ৭ম দ্বারা ২৭ ও পঞ্চম দ্বারা ২৫ তারিখ উদ্দেশ্য নিয়েছেন। এর সমর্থনে সহীহ মুসলিম ও আবূ দাঊদ-এর বর্ণনায় আবী আন্ নাযরাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, তোমরা তা (লায়লাতুল কদর) অনুসন্ধান কর ৯ম, ৭ম, ৫ম রাতে।

আমি (আবূ আন্ নাযরাহ্) বললাম, নিশ্চয়ই আপনারা সংখ্যার ব্যাপারটি আমাদের চেয়ে বেশি জানেন। তিনি (আবূ সা‘ঈদ) বললেন, হ্যাঁ, আমরা তা জানার বেশি হকদার। আমি বললাম ৯ম, ৭ম, ৫ম কি? জবাবে তিনি বললেন, যখন ২১ তারিখ অতিবাহিত হবে, অতঃপর যে রাতটি ২২ তারিখের সাথে সাথে মিলিত, তা হলো ৯ম। আর যখন ২৩ তারিখ অতিবাহিত হবে, অতঃপর দিবাগত রাত হলো ৭ম, অতঃপর যখন ২৫ তারিখ অতিবাহিত হবে, অতঃপর তার সাথে সংশিস্নষ্ট রাত হলো ৫ম। এই বিশুদ্ধ হাদীসগুলোর ভিন্নতাই প্রমাণ করে যে, লায়লাতুল কদর রাতটা (শেষের দশকের) বেজোড় রাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم) 7. Fasting

পরিচ্ছেদঃ ৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - লায়লাতুল কদর

২০৮৬-[৪] আবূ সা’ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযানের প্রথম দশ দিনে ইতিকাফ করেছেন। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি তুর্কী ছোট তাঁবুতে ইতিকাফ করেছেন মধ্যের দশ দিন। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর মাথা (তাঁবুর বাইরে) বের করে বলেছেন, আমি ’কদর রজনী’ সন্ধান করার জন্য প্রথম দশ দিনে ইতিকাফ করেছি। তারপর করেছি মাঝের দশ দিনে। তারপর আমার কাছে তিনি এসেছেন। মালাক (ফেরেশতা) আমাকে বলেছেন, ’লায়লাতুল কদর’ রমাযানের শেষ দশ দিনে। অতএব যে আমার সাথে ’ইতিকাফ’ করতে চায় সে যেন শেষ দশ দিনে করে। আমাকে স্বপ্নে ’কদর রজনী’ নির্দিষ্ট করে দেখিয়েছেন। তারপর তা আমাকে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে (অর্থাৎ- জিবরীল (আঃ) আমাকে বললেন, অমুক রাতে শবে কদর। তারপর তা কোন্ রাত আমি ভুলে গিয়েছি)।

(স্বপ্নে) নিজেকে দেখলাম যে, আমি এর ভোরে (অর্থাৎ- লায়লাতুল কদরের ভোরে) কাদামাটিতে সিজদা্ করছি। যেহেতু আমি ভুলে গিয়েছি সেটা কোন্ রাত ছিল। তাই এ রাতকে (রমাযানের) শেষ দশ দিনের মধ্যে সন্ধান করো। তাছাড়াও লায়লাতুল কদরকে বেজোড় রাতে অর্থাৎ- শেষ দশের বেজোড় রাতে সন্ধান করো। বর্ণনাকারী বলেন, (যে রাতে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে দেখেছিলেন) সে রাতে বৃষ্টি হয়েছিল। মসজিদের ছাদ খেজুরের ডালপাতার হওয়ায় একুশতম রাতের সকালে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কপালে পানি ও মাটির চিহ্ন ছিল। (এ হাদীস বর্ণনার ব্যাপারে অর্থের দিক দিয়ে বুখারী ও মুসলিম একমত। অবশ্য এ পর্যন্ত বর্ণনার শব্দগুলো ইমাম মুসলিম উদ্ধৃত করেছেন। আর রিওয়ায়াতের বাকী শব্দগুলো উদ্ধৃত করেছেন ইমাম বুখারী।)[1]

بَابُ لَيْلَةِ الْقَدْرِ

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اعْتَكَفَ الْعَشْرَ الْأَوَّلَ مِنْ رَمَضَانَ ثُمَّ اعْتَكَفَ الْعَشْرَ الْأَوْسَطَ فِي قُبَّةٍ تُرْكِيَّةٍ ثُمَّ أَطْلَعَ رَأسه. فَقَالَ: «إِنِّي اعتكفت الْعشْر الأول ألتمس هَذِه اللَّيْلَة ثمَّ اعتكفت الْعَشْرَ الْأَوْسَطَ ثُمَّ أُتِيتُ فَقِيلَ لِي إِنَّهَا فِي الْعشْر الْأَوَاخِر فَمن اعْتَكَفْ مَعِي فَلْيَعْتَكِفِ الْعَشْرَ الْأَوَاخِرَ فَقَدْ أُرِيتُ هَذِهِ اللَّيْلَةَ ثُمَّ أُنْسِيتُهَا وَقَدْ رَأَيْتُنِي أَسْجُدُ فِي مَاءٍ وَطِينٍ مِنْ صَبِيحَتِهَا فَالْتَمِسُوهَا فِي الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ وَالْتَمِسُوهَا فِي كُلِّ وِتْرٍ» . قَالَ: فَمَطَرَتِ السَّمَاءُ تِلْكَ اللَّيْلَةَ وَكَانَ الْمَسْجِدُ عَلَى عَرِيشٍ فَوَكَفَ الْمَسْجِدُ فَبَصُرَتْ عَيْنَايَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلَى جَبْهَتِهِ أَثَرُ المَاء والطين وَالْمَاء مِنْ صَبِيحَةِ إِحْدَى وَعِشْرِينَ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ فِي الْمَعْنَى وَاللَّفْظُ لِمُسْلِمٍ إِلَى قَوْلِهِ: فَقِيلَ لِي: إِنَّهَا فِي الْعشْر الْأَوَاخِر . وَالْبَاقِي للْبُخَارِيّ

وعن أبي سعيد الخدري رضي الله عنهم أن رسول الله صلى الله عليه وسلم اعتكف العشر الأول من رمضان ثم اعتكف العشر الأوسط في قبة تركية ثم أطلع رأسه. فقال: «إني اعتكفت العشر الأول ألتمس هذه الليلة ثم اعتكفت العشر الأوسط ثم أتيت فقيل لي إنها في العشر الأواخر فمن اعتكف معي فليعتكف العشر الأواخر فقد أريت هذه الليلة ثم أنسيتها وقد رأيتني أسجد في ماء وطين من صبيحتها فالتمسوها في العشر الأواخر والتمسوها في كل وتر» . قال: فمطرت السماء تلك الليلة وكان المسجد على عريش فوكف المسجد فبصرت عيناي رسول الله صلى الله عليه وسلم وعلى جبهته أثر الماء والطين والماء من صبيحة إحدى وعشرين. متفق عليه في المعنى واللفظ لمسلم إلى قوله: فقيل لي: إنها في العشر الأواخر . والباقي للبخاري

ব্যাখ্যা: নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা, অর্থাৎ- শেষ দশকে বেজোড় রাতে সন্ধান কর। তার প্রথম রাত হলো ২১ তারিখ, আর সর্বশেষ হলো ২৯ তারিখ। তবে জোড় রাত নয়।

আলোচ্য হাদীসে নিশ্চয়ই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে যা দেখেছিলেন, তার ব্যাখ্যা এমনও হতে পারে যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অনুরূপ জাগ্রতাবস্থায় দেখতেন। আর এ হাদীস দ্বারা যারা মনে করেন যে, লায়লাতুল কদর সর্বদাই ২১শে রাতে হবে তারা দলীল গ্রহণ করেছেন। তবে এ হাদীসে তাদের কোন দলীল নেই। কেননা এটি উক্ত বছরের জন্য প্রযোজ্য।

বার বার এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে যে, নিশ্চয়ই তা স্থানান্তরিত হবে। অর্থাৎ- তা ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ তারিখেও হতে পারে। বছরের ভিন্নতায় শেষ দশকের বিভিন্ন রাতে তা হতে পারে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم) 7. Fasting

পরিচ্ছেদঃ ৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - লায়লাতুল কদর

২০৮৭-[৫] যে রিওয়ায়াতটি ’আবদুল্লাহ ইবনু উনায়স (রাঃ) হতে বর্ণিত, সে বর্ণনা ’২১তম রাতের সকালের’ স্থলে ’২৩তম রাতের সকালে’ শব্দটি আছে। (মুসলিম)[1]

بَابُ لَيْلَةِ الْقَدْرِ

وَفِي رِوَايَةِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أُنَيْسٍ قَالَ: «لَيْلَة ثَلَاث وَعشْرين» . رَوَاهُ مُسلم

وفي رواية عبد الله بن أنيس قال: «ليلة ثلاث وعشرين» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: ‘আবদুল্লাহ বিন উনায়স হতে আবূ সা‘ঈদ-এর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত রয়েছে, সেখানে ২১শে রাতের পরিবর্তে ২৩ রাতের কথা উল্লেখ রয়েছে। তার শব্দে মুসলিমে রয়েছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, লায়লাতুল কদর আমাকে দেখানো হয়েছিল, অতঃপর তা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে এবং ঐ দিনে সকালে দেখানো হয়েছে যে, আমি পানি ও কাদা মাটিতে সিজদা্ দিয়েছি। তিনি বলেন, অতঃপর ২৩ রাতে আমাদের ওপর বৃষ্টি হয়েছিল। অতঃপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাথে সালাত আদায় করলেন এবং ফিরে গেলেন। আর পানি ও কাদা মাটির চিহ্ন কপালে ও নাকে লেগে ছিল। ‘আবদুল্লাহ বিন উনায়স বলেন, এ দিনটি ছিল ২৩শে রাত, এখানে স্পষ্টই বুঝা যায় যে, ‘আবদুল্লাহ বিন উনায়স ও আবূ সা‘ঈদ (রাঃ)-এর হাদীসের মাঝে রাত নির্ধারণে বৈপরীত্য রয়েছে। কারো মতে আবূ সা‘ঈদ-এর হাদীসে মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি হওয়ায় তা প্রাধান্যযোগ্য। এ হাদীস থেকে যারা দলীল গ্রহণ করেছেন তারা বলেন, লায়লাতুল কদর রাতটা ২৩তম রাতে হবে। তবে সর্বোপরি কথা হল, নিশ্চয়ই তা ঐ বছরের জন্য খাস ছিল। কিন্তু ‘আবদুল্লাহ বিন উনায়স এবং তার মতের অনুসারী ও তাবি‘ঈনগণ এটা ‘আমভাবে প্রতি বছরের উপর ধরে নিয়েছেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم) 7. Fasting

পরিচ্ছেদঃ ৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - লায়লাতুল কদর

২০৮৮-[৬] যির ইবনু হুবায়শ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উবাই ইবনু কা’বকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনার (দীনী) ভাই ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ বলেন, যে ব্যক্তি গোটা বছর ’ইবাদাত করার জন্য রাত জাগরণ করবে, সে ’কদর রজনী’ পাবে। উবাই ইবনু কা’ব বললেন, আল্লাহ তা’আলা ইবনু মাস’ঊদ এর ওপর রহম করুন। তিনি এ কথাটা এজন্য বলেছেন, যেন মানুষ ভরসা করে বসে না থাকে। নতুবা তিনি তো জানেন যে, ’কদর’ রমাযান (রমজান) মাসেই আসে। আর রমাযান (রমজান) মাসের শেষ দশ দিনের এক রাতে কদর রজনী হয়। সে রাতটা সাতাশতম রাত। এদিকে উবাই ইবনু কা’ব কসম করেছেন এবং ’ইনশা-আল্ল-হ’ বলা ছাড়াই বলেছেন, ’নিঃসন্দেহে কদর রাত (রমাযানের) সাতাশতম রাত’। আমি আরয করলাম, হে আবূল মুনযির (উবাই-এর ডাক নাম)! কিসের ভিত্তিতে আপনি এ কথা বলেছেন? তিনি বললেন, ঐ আলামাত ও আয়াতের ভিত্তিতে, যা আমাদেরকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন। (তিনি বলেছেন), ঐ রাতের সকালে সূর্য উদয় হবে, কিন্তু এতে কিরণ বা আলো থাকবে না। (মুসলিম)[1]

بَابُ لَيْلَةِ الْقَدْرِ

وَعَنْ زِرِّ بْنِ حُبَيْشٍ قَالَ: سَأَلْتُ أُبَيَّ بْنَ كَعْبٍ فَقُلْتُ إِنَّ أَخَاكَ ابْنَ مَسْعُودٍ يَقُولُ: مَنْ يَقُمِ الْحَوْلَ يُصِبْ لَيْلَةَ الْقَدْرِ. فَقَالَ C أَرَادَ أَنْ لَا يَتَّكِلَ النَّاسُ أَمَا إِنَّهُ قَدْ عَلِمَ أَنَّهَا فِي رَمَضَانَ وَأَنَّهَا فِي الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ وَأَنَّهَا لَيْلَةُ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ ثُمَّ حَلَفَ لَا يَسْتَثْنِي أَنَّهَا لَيْلَةُ سَبْعٍ وَعِشْرِينَ. فَقُلْتُ: بِأَيِّ شَيْءٍ تَقُولُ ذَلِكَ يَا أَبَا الْمُنْذِرِ؟ قَالَ: بِالْعَلَامَةِ أَوْ بِالْآيَةِ الَّتِي أَخْبَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّهَا تَطْلُعُ يَوْمَئِذٍ لَا شُعَاعَ لَهَا. رَوَاهُ مُسْلِمٌ

وعن زر بن حبيش قال: سألت أبي بن كعب فقلت إن أخاك ابن مسعود يقول: من يقم الحول يصب ليلة القدر. فقال C أراد أن لا يتكل الناس أما إنه قد علم أنها في رمضان وأنها في العشر الأواخر وأنها ليلة سبع وعشرين ثم حلف لا يستثني أنها ليلة سبع وعشرين. فقلت: بأي شيء تقول ذلك يا أبا المنذر؟ قال: بالعلامة أو بالآية التي أخبرنا رسول الله صلى الله عليه وسلم إنها تطلع يومئذ لا شعاع لها. رواه مسلم

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে (شُعَاعَ لَهَا)-এর شُعَاعٌ শব্দটি এটি শিন অক্ষরে পেশ যোগে। ভাষাবিদগণ বলেন, সূর্য উদিত হওয়ার রশির মতো সূর্যের যে কিরণ দেখা যায় তা-ই। হাফেয আসকালানী (রহঃ) বলেন, যে লায়লাতুল কদর পাবে তার আলাদা কোন নিদর্শন প্রকাশ পাবে কি-না, এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। কেউ বলেছেন যে, লায়লাতুল কদর পাবে সে সব কিছুকে সিজদা্ অবস্থায় দেখতে পাবে। কেউ বলেন, সকল স্থানে এমনকি ঘোর অন্ধকারেও আলো দেখতে পাবে। কেউ বলেন, সালাম ফিরালে তাকে সম্বোধন করে মালায়িকাহ’র (ফেরেশতাগণকে) শুনতে পাবে। কেউ বলেন যে, লায়লাতুল কদর পাবে, তার দু‘আ কবূল হওয়াই তার নিদর্শন। তবে ‘আল্লামা ত্ববারী (রহঃ) বলেনঃ এসবের কোনটিও আবশ্যকীয় নয় এবং লায়লাতুল কদর অর্জন হওয়ার ক্ষেত্রে কোন কিছু দেখা বা শোনা শর্ত নয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم) 7. Fasting

পরিচ্ছেদঃ ৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - লায়লাতুল কদর

২০৮৯-[৭] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযান (রমজান) মাসের শেষ দশ দিনে যত ’ইবাদাত বন্দেগী (মুজাহাদাহ্) করতেন এতো আর কোন মাসে করতেন না। (মুসলিম)[1]

بَابُ لَيْلَةِ الْقَدْرِ

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَجْتَهِدُ فِي الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ مَا لَا يَجْتَهِدُ فِي غَيره. رَوَاهُ مُسلم

وعن عائشة رضي الله عنها قالت: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يجتهد في العشر الأواخر ما لا يجتهد في غيره. رواه مسلم

ব্যাখ্যা: ‘আল্লামা আল কারী (রহঃ) বলেন, নিশ্চয়ই সে অধিক আনুগত্য ও ‘ইবাদাতের ক্ষেত্রে প্রচেষ্টা করবে, অর্থাৎ- সকল ভালো কাজ পুণ্যের কাজ ও ‘ইবাদাত পরিপূর্ণরূপে পালন করবে।

(مَا لَا يَجْتَهِدُ فِىْ غَيْرِه) অর্থাৎ- শেষের দশক ছাড়াও এখানে দলীল রয়েছে যে, ‘ইবাদাতের কঠোর প্রচেষ্টা করা, রমাযানের শেষ দশকের রাতগুলোতে কিয়াম করার উপর উৎসাহিত করা মুস্তাহাব। এতে শেষ ‘আমলের সৌন্দর্য ও তা উত্তম হওয়ার ইঙ্গিত রয়েছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم) 7. Fasting

পরিচ্ছেদঃ ৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - লায়লাতুল কদর

২০৯০-[৮] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাযানের শেষ দশ দিন এলে ’ইবাদাতের জন্য জোর প্রস্তুতি নিতেন। রাত জেগে থাকতেন, নিজের পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ لَيْلَةِ الْقَدْرِ

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا دَخَلَ الْعَشْرُ شَدَّ مِئْزَرَهُ وَأَحْيَا ليله وَأَيْقَظَ أَهله

وعن عائشة رضي الله عنها قالت: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا دخل العشر شد مئزره وأحيا ليله وأيقظ أهله

ব্যাখ্যা: এখানে( شَدَّ مِئْزَرَه) এর অর্থ ‘উলামাগণের মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে। তবে বিশুদ্ধ মত হলো, ‘ইবাদাতের মাধ্যমে ব্যস্ততার জন্য নারীদের থেকে দূরে থাকাই (شَدَّ مِئْزَرَه) এর উদ্দেশ্য। আর সালাফে সলিহীন ও পূর্ববর্তী ইমামগণ তার বিশ্লেষণ করেন এবং আস্ সাওরী তার প্রতি নিশ্চিত সমর্থন দিয়েছেন এবং কবীর কাব্য দ্বারা দলীল দিয়েছেন।

قوم إذا حاربوا شدوا مآزرهم عن النساء ولو باتت بأطهار.

অর্থাৎ- যখন কোন সম্প্রদায় যুদ্ধ করে, তাদের কোমর নারীদের থেকে শক্তভাবে বাঁধবে, যদিও রমণী পবিত্রতায় রাত যাপন করে।

আর নিশ্চয়ই এটি রমাযানের শেষের জন্য খাসকরণ ‘ইবাদাতের সময় বের করা তাতে সহজ, অতঃপর তাতে ‘ইবাদাতের ইজতিহাদ করা যায়, কারণ তা শেষের ‘আমল, আর শেষের ‘আমলই উত্তম। তিরমিযীর বর্ণনায় উম্মু সালামাহ্ হতে বর্ণিত, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পরিবার হতে যে কিয়াম করতে সক্ষম, তাকে কিয়াম ছাড়া রাখতেন না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم) 7. Fasting
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৮ পর্যন্ত, সর্বমোট ৮ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে