পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দানের মর্যাদা ও কৃপণতার পরিণাম

১৮৬৯-[১১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দানশীল ব্যক্তি আল্লাহর নিকটবর্তী, জান্নাতের নিকটবর্তী, জনগণের নিকটবর্তী (সকলের কাছেই দানশীল ব্যক্তি প্রিয়) এবং জাহান্নাম থেকে দূরবর্তী। কিন্তু কৃপণ ব্যক্তি (যে অর্জিত ধনের হক আদায় করে না) সে আল্লাহর থেকে দূরে, জান্নাত হতে দূরে, জনগণ থেকে দূরে এবং জাহান্নামের নিকটবর্তী। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলার নিকট আবিদ কৃপণ অপেক্ষা জাহিল দাতা অধিক প্রিয়। (তিরমিযী)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «السَّخِيُّ قَرِيبٌ مِنَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِنَ الْجَنَّةِ قَرِيبٌ مِنَ النَّاسِ بَعِيدٌ مِنَ النَّارِ. وَالْبَخِيلُ بَعِيدٌ مِنَ اللَّهِ بَعِيدٌ مِنَ الْجَنَّةِ بَعِيدٌ مِنَ النَّاسِ قَرِيبٌ مِنَ النَّارِ. وَلَجَاهِلٌ سَخِيٌّ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ مِنْ عَابِدٍ بَخِيلٍ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «السخي قريب من الله قريب من الجنة قريب من الناس بعيد من النار. والبخيل بعيد من الله بعيد من الجنة بعيد من الناس قريب من النار. ولجاهل سخي أحب إلى الله من عابد بخيل» . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: হাদীসের শব্দ (سخى) দানকারীর অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ দান করার কারণে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের মাধ্যমে দানকারী জান্নাত লাভ করতে সক্ষম হয়। আর (بخيل) অর্থাৎ কৃপণ এখানে ঐ ব্যক্তিকে বলা হয়েছেঃ যাকাত আদায়কারী হলো (سخى) আর যে তা আদায় করে না সে হলো কৃপণ।

হাদীসের শেষাংশে ‘জাহিল’ শব্দ দ্বারা উদ্দেশ্য যে ‘আবিদ এর বিপরীত। অর্থাৎ যে ব্যক্তি ফরযসমুহ যথারীতি আদায় করে কিন্তু নফল ‘ইবাদাত তেমন একটি করে না অথচ সে দানকারী এই ব্যক্তি আল্লাহর নিকট ঐ ব্যক্তি থেকে উত্তম যে নফল ‘ইবাদাতকারী বটে কিন্তু সে অত্যন্ত কৃপণ।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দানের মর্যাদা ও কৃপণতার পরিণাম

১৮৭০-[১২] আবূ সা’ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সুস্থ অবস্থায় আল্লাহর পথে কোন ব্যক্তির এক দিরহাম ব্যয় মৃত্যুর সময়ে একশত দিরহাম ব্যয় অপেক্ষা উত্তম। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَأَنْ يَتَصَدَّقَ الْمَرْءُ فِي حَيَاتِهِ بِدِرْهَمٍ خَيْرٌ لَهُ مِنْ أَنْ يَتَصَدَّقَ بِمِائَةٍ عِنْدِ مَوته» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن أبي سعيد الخدري رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لأن يتصدق المرء في حياته بدرهم خير له من أن يتصدق بمائة عند موته» . رواه أبو داود

ব্যাখ্যা: হাদীসের ভাষা এক দিরহাম এবং একশত দিরহাম দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে কম এবং বেশি। অর্থাৎ স্বাভাবিক জীবনে সামান্য দান করা, যখন শায়ত্বন (শয়তান) মানুষকে দরিদ্র হয়ে যাওয়ার ভীতিপ্রদর্শন করে এবং খরচ করতে মন কষ্ট পায় এটা অনেক উত্তম মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে অনেক দান করার চেয়েও।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দানের মর্যাদা ও কৃপণতার পরিণাম

১৮৭১-[১৩] আবুদ্ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মৃত্যুর দুয়ারে এসে দান সদাক্বাহ্ (সাদাকা) অথবা গোলাম আযাদ করে তার দৃষ্টান্ত ঐ ব্যক্তির মতো, যে কাউকে পেট ভরা অবস্থায় (তুহফা, হাদিয়্যাহ্, খাবার) দান করে। (তিরমিযী, নাসায়ী, দারিমী; ইমাম তিরমিযী এ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।)[1]

وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَثَلُ الَّذِي يَتَصَدَّقُ عِنْدَ مَوْتِهِ أَوْ يُعْتِقُ كَالَّذِي يُهْدِي إِذَا شَبِعَ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالنَّسَائِيُّ والدارمي وَالتِّرْمِذِيّ وَصحح

وعن أبي الدرداء رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «مثل الذي يتصدق عند موته أو يعتق كالذي يهدي إذا شبع» . رواه أحمد والنسائي والدارمي والترمذي وصحح

ব্যাখ্যা: আল্লামা ত্বীবী বলেছেন, সময়মত দান না করে অসময় অর্থাৎ বিলম্বে দান করার দৃষ্টান্ত হলো ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে খাওয়ার সময় নিজকে প্রাধান্য দিয়ে একাকী খায়, অন্য কাউকে সঙ্গে নেয় না, অতঃপর তার পেট যখন ভর্তি হয়ে যায় আর খেতে পারে না তখন অন্যকে দিয়ে দেয়। অথচ প্রশংশিত হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যে নিজের উপর অন্যকে অধিক ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন, অর্থাৎ ‘‘তাঁরা (আনসারগণ) অভাবগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও নিজেদের উপরে তাঁদেরকে (মুহাজিরগণকে) প্রাধান্য দেয়।’’ (সূরাহ্ আল হাশর- ৫৯ : ৯)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দানের মর্যাদা ও কৃপণতার পরিণাম

১৮৭২-[১৪] আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মু’মিনের মধ্যে দু’টি স্বভাব একত্রে জমা হতে পারে না, কৃপণতা এবং অসদাচরণ। (তিরমিযী)[1]

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: خصلتان لَا تجتمعان فِي مُؤْمِنٍ: الْبُخْلُ وَسُوءُ الْخُلُقِ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ

وعن أبي سعيد قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: خصلتان لا تجتمعان في مؤمن: البخل وسوء الخلق . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: প্রকৃত মু’মিনের জন্য এটা প্রযোজ্য নয় যে, এক সাথে তার ভিতরে এ ধরনের দু’টো জিনিস থাকবে (কৃপণতা ও খারাপ চরিত্র)। আল্লামা তুবরিশতী বলেছেন, একই সঙ্গে এ ধরনের দু’টো অভ্যাস পরিপূর্ণভাবে থাকা বাঞ্চনীয় নয়। আর যদিও থাকে তার প্রতি তার সম্মতি থাকা ঠিক হবে না। অর্থাৎ কোন সময় যদিও সে কৃপণতা করে আবার সময়ে সে তা থেকে মুক্ত থাকে, অনুরূপ কোন সময় তার দ্বারা খারাপ কিছু ঘটে গেলে পরক্ষণে তা থেকে আবার বিরত থাকে এবং অনুশোচিত হয়।

এ সম্পর্কে অন্য হাদীসে বলা হয়েছে, যে কোন ব্যক্তির মাঝে কৃপণতা এবং ঈমান একত্রিত হয় না। অথবা কৃপণতা এমন এক চরিত্র যা দিয়েই মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে আর এর স্থান হলো মানুষের অন্তর। সুতরাং কিছুটা হলেও মানুষের মাঝে এ ধরনের চরিত্র বিদ্যমান থাকবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, অর্থাৎ ‘‘এবং মনের মধ্যে কৃপণতার প্রলোভন বিদ্যমান আছে।’’ (সূরাহ্ আন্ নিসা ৪ : ১২৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দানের মর্যাদা ও কৃপণতার পরিণাম

১৮৭৩-[১৫] আবূ বকর সিদ্দীক্ব (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেঃ ধোঁকাবাজ, কৃপণ এবং দান করে খোঁটা দানকারী জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। (তিরমিযী)[1]

وَعَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ خِبٌّ وَلَا بَخِيلٌ وَلَا منان» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن أبي بكر الصديق رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لا يدخل الجنة خب ولا بخيل ولا منان» . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, হাদীসে উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গ যে সকল কারণে জান্নাতে যেতে পারবে না এরা হচ্ছেঃ যতক্ষণ পর্যন্ত তারা ঐ সকল কারণসমূহ থেকে পবিত্র না হবে ততক্ষণ তারা জান্নাতে যেতে পারবে না। আর সেই পবিত্র হওয়া তাওবার মাধ্যমে দুনিয়াতেই হতে পারে অথবা শাস্তি ভোগ করার দ্বারাও হতে পারে অথবা ক্ষমার বদৌলতেও হতে পারে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, অর্থাৎ ‘‘আর তাদের অন্তরে যা কিছু ঈর্ষা ও বিদ্বেষ রয়েছে আমি দূর করে দেব।’’ (সূরাহ্ আল আ‘রাফ ৭ : ৪৩)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দানের মর্যাদা ও কৃপণতার পরিণাম

১৮৭৪-[১৬] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষের মধ্যে যেসব স্বভাব পাওয়া যায় তার মধ্যে দু’টো স্বভাব সবচেয়ে গর্হিত। একটি হলো চিত্ত অস্থিরকারী কৃপণতা, আর দ্বিতীয়টি হলো ভীতিকর কাপুরুষতা। (আবূ দাঊদ)[1]

আর আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসটি (لَا يَجْتَمِعُ الشُّحُّ وَالْإِيمَانُ) জিহাদ অধ্যায়ে আমরা বর্ণনা করব।

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «شَرُّ مَا فِي الرَّجُلِ شُحٌّ هَالِعٌ وَجُبْنٌ خَالِعٌ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
وَسَنَذْكُرُ حَدِيثَ أَبِي هُرَيْرَةَ: «لَا يَجْتَمِعُ الشُّحُّ وَالْإِيمَانُ» فِي كِتَابِ الْجِهَاد إِن شَاءَ الله تَعَالَى

وعن أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «شر ما في الرجل شح هالع وجبن خالع» . رواه أبو داود وسنذكر حديث أبي هريرة: «لا يجتمع الشح والإيمان» في كتاب الجهاد إن شاء الله تعالى

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৬: যাকাত (كتاب الزكاة) 6. Zakat
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে