পরিচ্ছেদঃ ৬২. যখন শত্রুদের কোনো ব্যক্তি মুসলিমের সম্পদ লাভ করে

২৫৪৩. ইমরান ইবন হুসায়ন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আযবা উটনীটি ছিল বনূ ’আকীলের’ জনৈক ব্যক্তির। একবার সে ব্যক্তিকে বন্দী করা হলো এবং আযবাকে পাকড়াও করা হলো। অত:পর পরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে আসলেন। সে ছিলো বন্দী অবস্থায়।

তখন সে বলেঃ হে মুহাম্মদ! তুমি আমাকে এবং হাজীদের কাফিলার আগে গমনকারী (এ উট)-কে কেন পাকড়াও করলে? অথচ আমি তো ইসলাম গ্রহণ করেছি।

তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ “যখন তোমার ব্যাপারটি তোমার অধিকারে ছিলো, তখন যদি তুমি এ কথাটি বলতে, তাহলে তুমি পূর্ণ কামিয়াব ও সফলকাম হতে।”

অত:পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ “আমি তোমাকে তোমাদের মিত্র (গোত্র ছাকীফ)-এর অপরাধের কারণে গ্রেফতার করেছি।”

(এর কয়েকদিন পূর্বে) সাকীফ গোত্রের লোকেরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দু’জন সাহাবীকে বন্দী করে নিয়ে গিয়েছিল। আর এ সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর গাধার পিঠে চড়ে আসলেন এবং তাঁর গায়ে একটি চাদর জড়ানো ছিলো। এমন সময় সে (লোকটি) বলে উঠলো, হে মুহাম্মদ! আমি ক্ষুধার্ত। আমাকে খাবার দিন! আমি পিপাসার্ত, আমাকে পান করতে দিন!

(জবাবে) তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ “এটাই হলো তোমার প্রয়োজন ও চাহিদা!”

পরে এক সময় (যে দু’জন মুসলিম বনী সাকীফের হাতে বন্দী হয়েছিল সেই) দু’জন লোকের বিনিময়ে এ ব্যক্তিকে ছেড়ে দিলেন। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আযবাকে বাহন হিসেবে রেখে দেন।

অত:পর একবার মুশরিকরা মদীনার উপকণ্ঠে হামলা চালিয়ে আযবা উটনীকে (চুরি করে) নিয়ে যায়। তারা ফিরে যাওয়ার সময় একজন মুসলিম নারীকে বন্দী করে নিয়ে যায়।

যখন তারা (কোথাও) অবতরণ করতো, তখন তাদের উটগুলিকে (রাতের বেলায়) তাদের আশপাশে - আবূ মুহাম্মদ বলেন, এরপর তিনি (বর্ণনাকারী) একটি বাক্য উচ্চারণ করল’[1]- (অর্থাৎ বিশ্রামের জন্য ছেড়ে রাখত)। এরপর তারা এক রাতে ঘুমিয়ে থাকার সময় সে মহিলা উঠে দাঁড়ায় (যাতে পালিয়ে যেতে পারে)। কিন্তু সে কোন উটের (কাছে গিয়ে) গায়ে হাত রাখলেই সে শোরগোল বাধিয়ে দিতে লাগলো। অবশেষে সে মহিলা আযবা উটনীর কাছে আসলো। (প্রকৃতপক্ষে) সে মহিলা একটি অনুগত এবং প্রশিক্ষিত (অভিজ্ঞ) উটের নিকটেই আসলো। তখন সে তার উপর সওয়ার হয়ে মদীনা অভিমুখে যাত্রা করলো এবং এরূপ মানত করলো যে, যদি আল্লাহ্ তাকে নাজাত দেন, তবে সে এটি (আযবা উটনী)-কে কুরবানী করবে।তিনি (রাবী) বলেন, অতঃপর সে মহিলা যখন মদীনায় পৌছলো, তখন সে উটনীটিকে চেনা গেলো; ফলে লোকেরা বলতে লাগলো যে, ’(এটি তো) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উটনী। তখন তারা সেটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট নিয়ে এলো। এবং মহিলাটি তার মানত সম্পর্কে তাঁকে জানালো। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ “উটনীটিকে তুমি কতই না মন্দ প্রতিদান দিতে চেয়েছ! – কিংবা তুমি একে কতই না অসম্মান করলে! আল্লাহ্ তা’আলা কি এজন্য একে নাজাত দিয়েছেন যে, তুমি এটিকে কুরবানী করবে? জেনে রাখ, আল্লাহর নাফরমানীমুলক বিষয়ে এবং বনূ আদম যার মালিক নয়, এমন বিষয়েও যে মানত করা হয়, তা পূরণ করার প্রয়োজন নেই।”[2]

بَاب إِذَا أَحْرَزَ الْعَدُوُّ مِنْ مَالِ الْمُسْلِمِينَ

أَخْبَرَنَا أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ أَبِي قِلَابَةَ عَنْ أَبِي الْمُهَلَّبِ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ قَالَ كَانَتْ الْعَضْبَاءُ لِرَجُلٍ مِنْ بَنِي عُقَيْلٍ فَأُسِرَ وَأُخِذَتْ الْعَضْبَاءُ فَمَرَّ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ فِي وَثَاقٍ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ عَلَى مَا تَأْخُذُونِي وَتَأْخُذُونَ سَابِقَةَ الْحَاجِّ وَقَدْ أَسْلَمْتُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَوْ قُلْتَهَا وَأَنْتَ تَمْلِكُ أَمْرَكَ أَفْلَحْتَ كُلَّ الْفَلَاحِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَأْخُذُكَ بِجَرِيرَةِ حُلَفَائِكَ وَكَانَتْ ثَقِيفٌ قَدْ أَسَرُوا رَجُلَيْنِ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى حِمَارٍ عَلَيْهِ قَطِيفَةٌ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ إِنِّي جَائِعٌ فَأَطْعِمْنِي وَظَمْآنُ فَاسْقِنِي فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَذِهِ حَاجَتُكَ ثُمَّ إِنَّ الرَّجُلَ فُدِيَ بِرَجُلَيْنِ فَحَبَسَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْعَضْبَاءَ لِرَحْلِهِ وَكَانَتْ مِنْ سَوَابِقِ الْحَاجِّ ثُمَّ إِنَّ الْمُشْرِكِينَ أَغَارُوا عَلَى سَرْحِ الْمَدِينَةِ فَذَهَبُوا بِهِ فِيهَا الْعَضْبَاءُ وَأَسَرُوا امْرَأَةً مِنْ الْمُسْلِمِينَ وَكَانُوا إِذَا نَزَلُوا قَالَ أَبُو مُحَمَّد ثُمَّ ذَكَرَ كَلِمَةً إِبِلُهُمْ فِي أَفْنِيَتِهِمْ فَلَمَّا كَانَ ذَاتَ لَيْلَةٍ قَامَتْ الْمَرْأَةُ وَقَدْ نُوِّمُوا فَجَعَلَتْ لَا تَضَعُ يَدَيْهَا عَلَى بَعِيرٍ إِلَّا رَغَا حَتَّى أَتَتْ الْعَضْبَاءَ فَأَتَتْ عَلَى نَاقَةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَلُولٍ مُجَرَّسَةٍ فَرَكِبَتْهَا ثُمَّ تَوَجَّهَتْ قِبَلَ الْمَدِينَةِ وَنَذَرَتْ لَئِنْ اللَّهُ نَجَّاهَا لَتَنْحَرَنَّهَا قَالَ فَلَمَّا قَدِمَتْ عُرِفَتْ النَّاقَةُ فَقِيلَ نَاقَةُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَتَوْا بِهَا النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَخْبَرَتْ الْمَرْأَةُ بِنَذْرِهَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِئْسَمَا جَزَيْتِهَا أَوْ بِئْسَمَا جَزَتْهَا إِنْ اللَّهُ نَجَّاهَا لَتَنْحَرَنَّهَا لَا وَفَاءَ لِنَذْرٍ فِي مَعْصِيَةِ اللَّهِ وَلَا فِيمَا لَا يَمْلِكُ ابْنُ آدَمَ

اخبرنا ابو نعيم حدثنا حماد بن زيد عن ايوب عن ابي قلابة عن ابي المهلب عن عمران بن حصين قال كانت العضباء لرجل من بني عقيل فاسر واخذت العضباء فمر عليه رسول الله صلى الله عليه وسلم وهو في وثاق فقال يا محمد على ما تاخذوني وتاخذون سابقة الحاج وقد اسلمت فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم لو قلتها وانت تملك امرك افلحت كل الفلاح فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم ناخذك بجريرة حلفاىك وكانت ثقيف قد اسروا رجلين من اصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم وجاء رسول الله صلى الله عليه وسلم على حمار عليه قطيفة فقال يا محمد اني جاىع فاطعمني وظمان فاسقني فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم هذه حاجتك ثم ان الرجل فدي برجلين فحبس رسول الله صلى الله عليه وسلم العضباء لرحله وكانت من سوابق الحاج ثم ان المشركين اغاروا على سرح المدينة فذهبوا به فيها العضباء واسروا امراة من المسلمين وكانوا اذا نزلوا قال ابو محمد ثم ذكر كلمة ابلهم في افنيتهم فلما كان ذات ليلة قامت المراة وقد نوموا فجعلت لا تضع يديها على بعير الا رغا حتى اتت العضباء فاتت على ناقة رسول الله صلى الله عليه وسلم ذلول مجرسة فركبتها ثم توجهت قبل المدينة ونذرت لىن الله نجاها لتنحرنها قال فلما قدمت عرفت الناقة فقيل ناقة رسول الله صلى الله عليه وسلم فاتوا بها النبي صلى الله عليه وسلم واخبرت المراة بنذرها فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم بىسما جزيتها او بىسما جزتها ان الله نجاها لتنحرنها لا وفاء لنذر في معصية الله ولا فيما لا يملك ابن ادم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সুনান আদ-দারেমী (হাদিসবিডি)
১৭. যুদ্ধাভিযান অধ্যায় (كتاب السير)