الأذكار بين السجدتين দুই সাজদার মধ্যে পঠিতব্য দু'আ ও যিকরসমূহ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই বৈঠকে বলতেনঃ

১।

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَاجْبُرْنِي وَاهْدِنِي وَعَافِنِي وَارْزُقْنِي

অপর বর্ণনায় اللهم শব্দের পরিবর্তে رب শব্দ এসেছে।

অর্থঃ হে আল্লাহ তুমি আমাকে ক্ষমা কর, দয়া কর, ক্ষতি পূরণ কর, মর্যাদা বৃদ্ধি করা, হিদায়াত দাও, নিরাপত্তা ও জীবিকা দান কর।[1]

২। কখনও তিনি বলতেনঃ

رَبِّ اغْفِرْ لِي اِغْفِرْ لِي

অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমাকে ক্ষমা কর, আমাকে ক্ষমা করা।[2] উপরোক্ত দুটি দুআ তিনি রাত্রিকালীন নফল ছালাতে পাঠ করতেন।[3] অতঃপর তিনি তাকবীর বলে দ্বিতীয় সাজদা করতেন।[4] তিনি এ বিষয়ে ছালাতে ক্ৰটিকারীকে পূর্বের বক্তব্যের ন্যায় ধীরস্থিরতার জন্য নির্দেশ দিয়ে বলেনঃ

ثم تقول : الله اکبر ثم تسجد حتی تطمئن مفاصلك، ثم افعل ذلك في صلاتك كلها

অতঃপর তুমি ‘আল্লাহু আকবার" বলবে, অতঃপর এমনভাবে সাজদা করবে যাতে তোমার জোড়াগুলো স্থির হয়ে যায়। অতঃপর পুরো ছালাতে তুমি এমনটি করবে।[5]

کان صلی الله علیه وسلم یرفع یدیه مع هذا التکبیر احیانا

তিনি কখনও এই তাকবীরের সময় হস্তদ্বয় উত্তোলন করতেন।[6]

তিনি এই সাজদাকে প্রথম সাজদার ন্যায় সম্পাদন করতেন, অতঃপর তাকবীর বলে স্বীয় মস্তক উত্তোলন করতেন।[7] এ বিষয়ে তিনি ছালাতে ক্ৰটিকারীকে দ্বিতীয় সাজদার নির্দেশ দান পূর্বক বলেনঃ

ثم یرفع رأسه فیکبر، وقال له: ثم اصنع ذلك في كل ركعة وسجدة) فإذا فعلت ذلك فقد تمت صلاتك ، وإن أنقصت منه شيئا، أنقصت من صلاتك

অতঃপর স্বীয় মস্তক উত্তোলন পূর্বক ‘আল্লাহ আকবার’ বলতেন[8] এবং তাকে এও বলেন- অতঃপর প্রত্যেক রাকাআত ও সাজদায় এমনটি করবে। আর তুমি যখন এসব করবে। তখন তোমার ছালাত পূর্ণ হবে। যদি এতে ত্রুটি কর তবে যে পরিমাণ ত্রুটি করবে। সেই পরিমাণেই ছালাত ত্রুটিপূর্ণ থেকে যাবে।[9]

তিনি এই ক্ষেত্রে কখনো কখনো হস্তদ্বয় উত্তোলন করতেন।[10]

[1] আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, হাকিম এবং তিনি একে ছহীহ বলেছেন ও যাহাবী তাতে ঐকমত্য পোষণ করেছেন।

[2] হাসান সনদে ইবনু মাজাহ, ইমাম আহমাদ এই দুআ গ্রহণ করেন। ইসহাক ইবনু রা-হাওয়াইহ বলেনঃ ইচ্ছা করলে এ দু'আ তিনবার বলবে অথবা ইচ্ছা করলে اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي বলবে, কেননা দুই সাজদার মধ্যখানে দুটি দু'আই নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে উল্লেখ হয়েছে, যেমন রয়েছে- ‘মাসা-ইলুল ইমাম আহমদ ও ইসহাক বিন রা-হাওয়াইহ’ এর গ্রন্থে ইসহাক আল-মারওয়াযীর বর্ণনা মতে। (পৃষ্ঠা ১৯)

[3] এটি ফরয ছালাতে পড়া রীতি বিরুদ্ধ নয়। যেহেতু ফরয এবং নফলের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই, এ মতই পোষণ করেন ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক। তারা মনে করেন যে, এটা ফরয এবং নফল উভয় ছালাতেই বৈধ যেমন ইমাম তিরমিযী উদ্ধৃত করেন, ইমাম ত্বাহাবীও ‘মুশকিলুল আ-ছা-র’ গ্রন্থে এর বৈধতা স্বীকার করেন। বিশুদ্ধ চিন্তা-বিবেচনাও এ কথার সমর্থন করে কেননা ছালাতে এমন কোন স্থান নেই যেখানে যিকর পাঠ করা যায় না। অতএব এখানেও তাই হওয়া উচিত। ব্যাপারটি অতি স্পষ্ট।

[4] বুখারী ও মুসলিম।

[5] আবু দাউদ, হাকিম, তিনি একে ছহীহ বলেছেন ও যাহাবী তাতে ঐকমত্য পোষণ করেছেন, অতিরিক্ত অংশ বুখারী ও মুসলিমের।

[6] দুটি ছহীহ সনদে আবু উওয়ানাহ ও আবু দাউদ, এই হস্ত উত্তোলন সম্পর্কে আহমাদ এবং মালিক ও শাফিঈ উভয়জন থেকে বর্ণিত এক বর্ণনায় সমর্থনা করেছেন।

[7] বুখারী ও মুসলিম।

[8] আবু দাউদ, হাকিম, তিনি একে ছহীহ বলেছেন ও যাহাবী তাতে ঐকমত্য পোষণ করেন।

[9] আহমাদ, তিরমিযী, তিনি একে ছহীহ বলেছেন।

[10] দুটি ছহীহ সনদে আবু আওয়ানা ও আবু দাউদ, এই হস্ত উত্তোলন সম্পর্কে আহমাদ এবং মালিক ও শাফিঈ উভয়জন এক বর্ণনায় সমর্থন দেন।