পরিচ্ছেদ: গুনাহ ও পাপ বর্জনের উপকারিতা

রাব্বুল ‘আলামীন মহান আল্লাহর প্রবিত্রতা বর্ণনা করছি। গুনাহ ও পাপাচার বর্জনে দুনিয়াতে ব্যক্তির পুরুষত্ব কায়েম হয়, মান-সম্মান রক্ষা হয়, প্রভাব-প্রতিপত্তি হেফাযত হয়, যে সম্পদ আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ লাভের ভিত্তি করেছেন সে সম্পদ রক্ষা হয়, সৃষ্টির ভালোবাসা লাভ হয়, তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক সৃষ্টি হয়, জীবিকা নির্বাহ প্রতিষ্ঠিত হয়, শরীরের প্রশান্তি অর্জন হয়, অন্তরের খোরাক লাভ হয়, মনের পবিত্রতা অর্জন হয়, ক্বলবের সুখ-শান্তি ও প্রশস্ততা অর্জিত হয়, লাঞ্ছনা-বঞ্চনা ভোগের পরিবর্তে সম্মান অর্জিত হয়, অন্তরের আলো রক্ষা হয় যা গুনার অন্ধকারকে নিভিয়ে দেয়, ফাসিক ও পাপাচারীরা যে সব সংকীর্ণতা ও কঠিনতা ভোগ করে তা থেকে রক্ষা হয়, তার রিযিক এমনভাবে সহজ হয়ে যায় যা সে কল্পনা করতে পারে না, পাপ ও অন্যায়কারীদের যেসব বালা-মুসিবত ও কঠিনতা হয় তা তার জন্য সহজ হয়ে যায়, তার জন্য আল্লাহর আনুগত্য করতে সহজ হয়, ইলম অর্জন সহজ হয়, মানুষের মাঝে সে উত্তম প্রশংসা লাভ করে, তার জন্য অধিকহারে দো‘আ বৃদ্ধি পায়, সে যা অর্জন করে তা উপভোগ করে, মানুষের অন্তরে তার ব্যাপারে ভয়-ভীতির সৃষ্টি হয়, যখন সে অত্যাচারীত ও যুলুমের স্বীকার হয় তখন সে সাহায্যপ্রাপ্ত হয় এবং বিজয়ী হয়, কোনো কুৎসাকারী তার কুৎসা রটনা করলে তা থেকে তার মান-সম্মান রক্ষা হয় ও তার থেকে তা প্রতিহত করা হয়, দ্রুত তার দু‘আ কবুল করা হয়, তার ও আল্লাহর মাঝে দূরত্ব দূরীভূত হয়, ফিরিশতাদের নৈকট্য লাভ হয়, মানব ও জীন শয়তান থেকে দূরে থাকে, তার সেবা ও প্রয়োজন মিটানোর জন্য মানুষ প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়, তার ভালোবাসা ও সান্নিধ্য লাভের জন্য সবাই কাছে আসে, তার মৃত্যুর ভীতি থাকে না; বরং মৃত্যুতে সে আনন্দিত হয়, কেননা সে মৃত্যুর পরে তার রবের কাছে গমন করছে, তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করবে এবং প্রত্যাবর্তন তো তাঁরই কাছে, দুনিয়া তার কাছে তুচ্ছ মনে হয় এবং আখিরাত অনেক বড় মনে হয়, বিশাল সম্রাজ্য লাভ ও মহাসফলতা প্রাপ্তি তার আগ্রহ-উদ্দপনা, আনুগত্যের স্বাদ আস্বাদন করে, ঈমানের স্বাদ পায়, আরশ বহনকারী ও এর আশেপাশে অবস্থানরত ফিরিশতাদের দো‘আপ্রাপ্ত হয়, তার কৃতকর্ম লেখার কাজে নিয়োজিত ফিরিশতাদ্বয় তার কাজে খুশি হয় এবং সর্বদা তার জন্য দো‘আ করে, তার জ্ঞান-বুদ্ধি, বুঝশক্তি, ঈমান ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি পায়, আল্লাহর ভালোবাসাপ্রাপ্ত হয়, তাঁর সমীপে সে এগিয়ে যায়, তাঁর কাছে তাওবা করতে আনন্দবোধ করে। সে এমনভাবে মহাপ্রতিদানপ্রাপ্ত হয়ে আনন্দিত হবে যে গুনাহ করার আনন্দের তার তুলনাই হয় না।

এগুলো হলো দুনিয়াতে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার কিছু প্রতিদান ও প্রভাব। আর সে যখন মারা যাবে তখন ফিরিশতারা তাকে তার রবের পক্ষ থেকে জান্নাতের সুসংবাদ দিবে, তারা বলবে, তার কোনো ভয় নেই এবং চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তাকে দুনিয়ার জেলখানা ও সংকীর্ণতা থেকে আখিরাতে জান্নাতের বাগানে নিয়ে যাবে এবং সেখানে কিয়ামত সংঘটিত হওয়া পর্যন্ত থাকবে। কিয়ামতের দিন যখন মানুষ প্রচণ্ড গরম ও ঘামে হাবুডুবু খাবে তখন সে আরশের ছায়ায় থাকবে। আল্লাহর কাছ থেকে ফিরে এসে সে ডান হাতে আমলনামা পাবে এবং আল্লাহর প্রিয় মুত্তাকি ও সফলকাম ব্যক্তিদের সাথে থাকবে। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿ذَٰلِكَ فَضۡلُ ٱللَّهِ يُؤۡتِيهِ مَن يَشَآءُۚ وَٱللَّهُ ذُو ٱلۡفَضۡلِ ٱلۡعَظِيمِ٤﴾ [الحديد: 21، والجمعة: ٤]

“এটা আল্লাহর অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তিনি তা দান করেন। আর আল্লাহ মহা অনুগ্রহের অধিকারী।” [সূরা আল-হাদীদ, আয়াত: ২১ এবং সূরা আল-জুমু‘আ, আয়াত: ৪]

দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে