প্রকৃত পক্ষে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাসমূহ হচ্ছে মুসলিম উম্মাহ ও জাতির প্রাণকেন্দ্র। তারই হাতে রয়েছে মুসলিম উম্মাহ ও জাতির শক্তি বৃদ্ধির চাবিকাঠি। তারাই জাতিকে সঠিক সংস্কার ও পরিশোধনের দিক নির্দেশনা দিতে পারে। জ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রকৃতি এবং ইলমে অহীর দিক নির্দেশনার সাথে সমন্বয় সাধন করতে পারে। তবে তাদের এ সংস্কার এবং তা‘লীম-তরবিয়তের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সংগঠন আর প্রতিষ্ঠান-নির্ভর হলে চলবে না। প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী সংস্কার ও পরিশোধন করতে পারবে না। কারণ, সংগঠন এবং প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের নিজেদের উপকার ও অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য আধুনিক বিশ্বের অনুকরণ করে থাকে। তাদের স্বার্থ পরিপন্থী কোনো কিছু করতে তারা রাজি হয় না। তারা জাতির অনুসরণ করে মাত্র। তবে তার মানে এ নয় যে, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানসমূহকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ছেড়ে দিতে হবে। বরং সংস্কার-পরিশোধন ও তা‘লীম-তরবিয়তের ক্ষেত্রে সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে গৌণ ভূমিকায় রাখতে হবে। বর্তমান প্রচার মাধ্যম এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াগুলো তাই প্রমাণ করে। সেখানে রয়েছে বিশেষ ধরনের সভ্যতা-সংস্কৃতি, তা‘লীম-তরবিয়ত। তারা কোনো সময়ই ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতি এবং ইসলামী তা‘লীম-তরবিয়তের বেলায় উৎসাহ প্রদান করে না। তবে তার মানে এ নয় যে, প্রচার মাধ্যম এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াগুলোকে পরিত্যাগ করব; বরং আধুনিক প্রচার মাধ্যম এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলো মুসলিম উম্মাহ ও জাতির শিক্ষাবিদ, সংস্কৃতিবিদ, গবেষক এবং চিন্তাবিদদের জন্য সংস্কার পরিশোধন এবং তা‘লীম-তরবিয়তের বিরাট একটি উপকরণ হতে পারে। যার মাধ্যমে তারা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনসমূহের জন্য বিশেষ ক্ষেত্র তৈরি করে দিতে পারে।

এর মাধ্যমে যদিও সকল সংগঠন এবং প্রতিষ্ঠানসমূহকে একই ধারাবাহিকতায় বা ঐক্যের মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। তদুপরি সার্বিকভাবে তাদের সামনে একটি দিক নির্দেশনা তুলে ধরতে পারবে। যেভাবে দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন মূসা আলাইহিস সালাম ও তার ভাই হারুন আলাইহিস সালাম আরব জাতিকে।

যদিও আমাদের পক্ষে বর্তমান আধুনিক প্রচার মাধ্যম এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া ও অত্যাধুনিক যন্ত্র সরঞ্জামাদির যুগকে মূসা আলাইহিস সালাম ও হারুন আলাইহিস সালামের যুগের সেই অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়; তদুপরি আমাদেরকে তথা মুসলিম উম্মাহ ও জাতিকে ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতি, মূল্যবোধ এবং ইসলামী তা‘লীম-তরবিয়ত প্রতিষ্ঠার জন্য পশ্চিমা সভ্যতা, সংস্কৃতি, তা‘লীম-তরবিয়ত ও শিক্ষা-দীক্ষাসহ প্রতিটি বিষয়ে প্রতিটি দিকের মোকাবেলা করতে হবে। প্রতিষ্ঠান এবং সংগঠনের নেতৃত্বে মুসলিম উম্মাহ ও জাতির সংস্কার ও পরিশোধন করতে হবে। গোটা সমাজ তথা পৃথিবীর অবস্থার পরিবর্তন সাধন করতে হবে। পশ্চিমা সভ্যতা-সংস্কৃতিসহ সকল প্রকার আগ্রাসনের মোকাবেলা করে মুসলিম উম্মাহ ও জাতির সংস্কার ও পরিশোধন করে গোটা সমাজ ও পৃথিবীর অবস্থা পরিবর্তন করার জন্য প্রয়োজন এমন প্রজন্মের, যাদেরকে তাদের আত্মাই তাদের কাজ কর্মে প্রেরণা প্রদান করবে। তাদের স্বভাবই (فطرة) সংস্কার ও পরিশোধনের প্রতি অনুপ্রেরণা যোগাবে। তারাই মুসলিম উম্মাহ ও জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মের তা‘লীম-তরবিয়তের ব্যবস্থা করবে। তারাই তাদের সর্বশক্তি দিয়ে মুসলিম উম্মাহ ও জাতির জাগরণের কাজ চালিয়ে যাবে। সমকালীন সকল প্রতিবন্ধকতার মোকাবেলা করবে।

দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে