কুরআন ও হাদীছের আলোকে হজ্জ, উমরাহ ও মদীনা যিয়ারত প্রথম অধ্যায় শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ) ১ টি

মুসাফিরের জন্য সুন্নাত হলো, চার রাক‘আত বিশিষ্ট সলাতগুলি কসর করে দুই রাক‘আত আদায় করা।

কারণ, সহীহ বুখারী ও মুসলিমে ইবনু উমার (রা.) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সা.)-এর সফর সঙ্গী হয়েছি, তিনি (চার রাক‘আত বিশিষ্ট সলাতগুলি) কখনও দুই রাক‘আতের বেশী পড়তেন না। আবূ বাকর, উমার ও উসমান (রা.) ও তাই করতেন।

মা আয়িশাহ (রা.) হতে আরো বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, সর্ব প্রথম সলাত দুই দুই রাক‘আত ফরয করা হয়। অতঃপর নাবী (সা.) মদীনায় হিজরাত করলে সেখানে চার চার রাক‘আত ফরয করা হয়, তবে সফরের সলাত আগের মতই (দুই দুই রাকাআত) বহাল রাখা হয়।[1]

তাই মুসাফিরের জন্য সুন্নাত হচ্ছে চার রাক‘আত বিশিষ্ট সলাতগুলি কসর করে দুই রাক‘আত আদায় করা। আর এর সময় হচ্ছে মুসাফিরের নিজ শহর থেকে বের হয়ে বাড়ি ফিরে আসা পর্যন্ত। তার এই সফরের সময়সীমা দীর্ঘ হোক কিংবা অল্প হোক।

আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত যে নাবী (সা.) মাক্কায় উনিশদিন পর্যন্ত অবস্থান করেছিলেন যাতে তিনি চার রাক‘আত বিশিষ্ট সলাতগুলি কসর করে দুই রাক‘আত আদায় করেছিলেন।[2]

তবে কোন মুসাফির যদি এমন ইমামের পিছনে সলাত আদায় করে যে চার রাক‘আত পড়েন, সে ইমামকে সলাতের শুরু থেকে কিংবা সলাতের মধ্যে যে অবস্থায় পাবে, সর্বাবস্থায় মুসাফির মুকতাদীকেও চার রাক‘আত পড়া আবশ্যক।

কেননা নাবী (সা.) বলেছেন:

(إِنَّمَا جُعِلَ الْإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ فَلَا تَخْتَلِفُوا عَلَيْه)

ইমাম এ জন্য বানানো হয়েছে যেন তাঁর অনুসরণ করা হয়, সুতরাং তাঁর বিরোধিতা করবে না।[3] নাবী (সা.) আরো বলেন:

(فَمَا أَدْرَكْتُمْ فَصَلُّوا وَمَا فَاتَكُمْ فَأَتِمُّوا)

যতটা ইমামের সঙ্গে পেলে তা আদায় কর আর যা ছুটে যায় তা পুরো করে নাও।[4]

প্রখ্যাত সাহাবী আব্দুল্লাহ্ বিন আব্বাস (রা.)-কে জিজ্ঞেস করা হয় যে, মুসাফির একা সলাত আদায় করলে দু‘রাকাআত পড়ে, আর যদি কোন মুক্বীম ইমামের পিছনে সলাত আদায় করে তবে চার রাক‘আত পড়ে এর কারণ কি? তখন তিনি উত্তরে বলেন, ইহাই হচ্ছে রসূল (সা.) এর সুন্নাত।

আর আব্দুল্লাহ বিন উমার (রা.) সফরে যখন ইমামের পিছনে সলাত আদায় করতেন তখন চার রাক‘আত পড়তেন। আর যখন একা সলাত আদায় করতেন তখন চার রাক‘আত বিশিষ্ট সলাতগুলি কসর করে দুই রাক‘আত সলাত আদায় করতেন।[5]

[1]. সহীহ বুখারী ১০৯০

[2]. সহীহ বুখারী ১০৮০

[3]. সহীহ বুখারী ৩৭৮ ও সহীহ মুসলিম ৪১১

[4]. সহীহ বুখারী ৬৩৬ ও সহীহ মুসলিম ৬০২

[5]. সহীহ মুসলিম ৬৯৪।