আল্লাহর বিধান সংশোধন করা ও কর্তৃত্ব লাভ করতে চাওয়া

আল্লাহ তা‘আলার উপর আধিপত্য বিস্তার করতে চাওয়া। যেমন পূর্বের আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।

ব্যাখ্যা: আল্লাহর উপর প্রভাব বিস্তার করতে চাওয়া। অর্থাৎ পরামর্শ দিতে চাওয়া। আল্লাহ তা‘আলা এ প্রসঙ্গে বলেন,

لَوْلا نُزِّلَ عَلَيْهِ الْقُرْآنُ جُمْلَةً وَاحِدَةً

তার উপর পুরো কুরআন একসাথে নাযিল হলো না কেন? (সূরা যূখরূফ ২৫:৩২)।

তারা আল্লাহ তা‘আলাকে পরামর্শ দিতে চায় আর বলে, আল্লাহ তা‘আলা কেন পৃথকভাবে কুরআন নাযিল করেন, তিনি একত্রে কুরআন নাযিল করেননি কেন? জাহিলরা যা বুঝে না এবং যে বিষয়ে তাদের জ্ঞান নেই সে ব্যাপারে তারা হস্তক্ষেপ করতে চায়। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা পৃথকভাবে কুরআন নাযিলের তাৎপর্য বর্ণনা করেন। তিনি বলেন,

(كَذَلِكَ لِنُثَبِّتَ بِهِ فُؤَادَكَ وَرَتَّلْنَاهُ تَرْتِيلاً وَلا يَأْتُونَكَ بِمَثَلٍ إِلَّا جِئْنَاكَ بِالْحَقِّ وَأَحْسَنَ تَفْسِيراً) [الفرقان:33]

আর তারা তোমার কাছে যে কোন বিষয়ই নিয়ে আসুক না কেন, আমি এর সঠিক সমাধান ও সুন্দর ব্যাখ্যা তোমাকে কাছে নিয়ে এসেছি (সূরা যূখরূফ ২৫:৩২)। তিনি আরো বলেন,

(وَقُرْآناً فَرَقْنَاهُ لِتَقْرَأَهُ عَلَى النَّاسِ عَلَى مُكْثٍ وَنَزَّلْنَاهُ تَنْزِيلاً) [الإسراء:106]

আর কুরআন নাযিল করেছি কিছু কিছু করে, যেন তুমি তা মানুষের কাছে পাঠ করতে পার ধীরে ধীরে এবং আমি তা নাযিল করেছি পর্যায়ক্রমে (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:১০৬)।

সময়োপযুগি আমলের সহজতার জন্যও তিনি কুরআন ধীরে ধীরে নাযিল করেন। যদি তিনি কুরআন একত্রে নাযিল করতেন তাহলে মানুষ আমল করতে অপারগ হতো। অনুরূপভাবে বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি একটু একটু করে কুরআন নাযিল করেছেন। প্রত্যেক আকস্মিক ঘটনা অথবা কোন প্রেক্ষাপটে হুকুম বর্ণনার জন্য কুরআন পর্যায়ক্রমে নাযিল হয়েছে। এটাই পৃথকভাবে কুরআন নাযিলের তাৎপর্য। যুগে যুগে এরূপ অবান্তর পরামর্শের লোক বিদ্যমান রয়েছে। তারা বিধানের মূল রচনায় হস্তক্ষেপ করতে চায়। আল্লাহ ও তার রসূলের উপর অবান্তর প্রস্তাবনা তুলে ধরে বলে, যদি বিধানের মূল রচনা এরূপ হতো, যদি হাদীছ এরূপ এরূপ হতো। এ ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لا تُقَدِّمُوا بَيْنَ يَدَيِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ) [الحجرات: 1]

হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সামনে অগ্রবতী হয়ো না (সূরা হুজরাত ৪৯:১)।

তোমরা আল্লাহ ও তার রসূলের উপর প্রস্তাবনা দিবে না। বরং তোমাদের উপর আবশ্যক হলো আল্লাহর উপর ঈমান আনা এবং তিনি যা নাযিল করেছেন পরামর্শ ও প্রস্তাবনা ছাড়াই তদনুযায়ী আমল করা।