রমযান মাসের ৩০ আসর চতুর্থ আসর শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ) ১ টি

এসব নফল সালাতের অন্যতম হচ্ছে:

কিছু সুন্নাত সালাত, যা ফরয সালাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। যেমন, ফজরের ফরয সালাতের পূর্বে দু’রাকাত, যোহরের ফরযের পূর্বে চার রাকাত ও পরে দু’রাকাত। মাগরিবের ফরযের পর দু’রাকাত ও এশার ফরযের পর দু’রাকাত।
আর এসব (ফরয ছাড়া অন্যসব) নফল সালাতের অন্যতম হলো সালাতুল লাইল (রাতের সালাত বা তাহাজ্জুদ)

* যা আদায়কারীদের প্রশংসা করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿ وَٱلَّذِينَ يَبِيتُونَ لِرَبِّهِمۡ سُجَّدٗا وَقِيَٰمٗا ٦٤ ﴾ [الفرقان: ٦4]

‘আর যারা তাদের রবের জন্য সিজদারত ও দণ্ডায়মান হয়ে রাত্রি যাপন করে।’ (সূরা আল-ফুরকান, আয়াত: ৬৩)

* আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেছেন:

﴿ تَتَجَافَىٰ جُنُوبُهُمۡ عَنِ ٱلۡمَضَاجِعِ يَدۡعُونَ رَبَّهُمۡ خَوۡفٗا وَطَمَعٗا وَمِمَّا رَزَقۡنَٰهُمۡ يُنفِقُونَ ١٦ فَلَا تَعۡلَمُ نَفۡسٞ مَّآ أُخۡفِيَ لَهُم مِّن قُرَّةِ أَعۡيُنٖ جَزَآءَۢ بِمَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ١٧ ﴾ [السجدة: ١٦، ١٧]

‘তাদের পার্শ্বদেশ বিছানা থেকে আলাদা হয়। তারা ভয় ও আশা নিয়ে তাদের রবকে ডাকে। আর আমি তাদেরকে যে রিযক দান করেছি, তা থেকে তারা ব্যয় করে। অতঃপর কোনো ব্যক্তি জানে না তাদের জন্য চোখ জুড়ানো কী জিনিস লুকিয়ে রাখা হয়েছে, তারা যা করত, তার বিনিময়স্বরূপ।’ (সূরা আস-সাজদাহ, আয়াত: ১৬-১৭)

* রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

« وَأَفْضَلُ الصَّلَاةِ، بَعْدَ الْفَرِيضَةِ، صَلَاةُ اللَّيْلِ»

‘ফরয সালাতের পর অধিক ফযীলতপূর্ণ হল রাতের সালাত।’[1]

* রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যত্র বলেন:

«يَا أَيُّهَا النَّاسُ، أَفْشُوا السَّلَامَ، وَأَطْعِمُوا الطَّعَامَ، وَصِلُوا الْأَرْحَامَ، وَصَلُّوا وَالنَّاسُ نِيَامٌ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ بِسَلَامٍ»

‘হে লোক সকল! সালামের প্রসার ঘটাও, গরীব-দুঃখীদের খাদ্য দান কর, আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখ, রাতে যখন মানুষ ঘুমিয়ে থাকে, তখন সালাত আদায় কত, তাহলে নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’[2]

সালাতুল বিতর; যা সালাতুল লাইল তা রাত্রির সালাতের একটি অংশ। যার সর্বনিম্ন পরিমাণ এক রাকাত। আর সর্বোচ্চ এগারো রাকাত।

অতএব কেবল এক রাকাত বিতরও পড়া যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

« مَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوتِرَ بِوَاحِدَةٍ فَلْيَفْعَلْ»

‘যে বিতর সালাত এক রাকাত আদায় করতে যায়, সে যেন এক রাকাত আদায় করে।’[3]

বিতর সালাত তিন রাকাতও পড়া যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

« وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوتِرَ بِثَلَاثٍ فَلْيَفْعَلْ »

‘যে তিন রাকাত বিতর পড়তে চায় সে যেন তিন রাকাত পড়ে।’[4]

তবে কেউ যদি এক সালামে বিতর সালাত শেষ করতে চায়, তাও পারবে। কারণ;

* ত্বহাবী রহিমাহুল্লাহ বর্ণনা করেছেন:

أنَّ عُمر بنَ الخطاب رضي الله عنه أوتر بِثَلَاثَ رَكَعَاتٍ , لَمْ يُسَلِّمْ إِلَّا فِي آخِرِهِنَّ

‘উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তিন রাকাত বিতর পড়েছেন ও সর্বশেষে সালাম ফিরিয়েছেন।’[5]

অবশ্য কেউ যদি দু’রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে তৃতীয় রাকাত পড়তে চায়, তবে তাও পারবে। কেননা;

* বুখারী নাফে‘ থেকে বর্ণনা করেন:

أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ يُسَلِّمُ بَيْنَ الرَّكْعَةِ وَالرَّكْعَتَيْنِ فِي الْوِتْرِ حَتَّى يَأْمُرَ بِبَعْضِ حَاجَتِهِ.

‘আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা তিন রাকাত বিতর সালাতের দু’রাকাত আদায়ের পর সালাম ফিরিয়েছেন। এমনকি তিনি প্রয়োজনে কোনো নির্দেশও দিতেন।’[6]

তেমনি পাঁচ রাকাত বিতর সালাতও আদায় করা যায়, তবে এসব রাকাত একত্রে আদায় করবে, সর্বশেষ বৈঠকেই শুধু বসতে হবে এবং সালাম ফিরানো যাবে।

* কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

« فَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يُوتِرَ بِخَمْسٍ فَلْيَفْعَلْ»

‘যে বিতর পাঁচ রাকাত আদায় করতে চায়, সে যেন পাঁচ রাকাত আদায় করে।’[7]

* অনুরূপভাবে ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ ثَلَاثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً، يُوتِرُ مِنْ ذَلِكَ بِخَمْسٍ، لَا يَجْلِسُ فِي شَيْءٍ إِلَّا فِي آخِرِهَا» .

‘‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে তেরো রাকাত সালাত আদায় করতেন; তন্মধ্য হতে পাঁচ রাকাত বিতর আদায় করতেন, যার শেষেই শুধু তিনি বৈঠক করতেন।’[8]

তেমনি পাঁচ রাকাতের ন্যায় একত্রে সাত রাকাত বিতরও আদায় করা যাবে।

* যেমন উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন,

«كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُوتِرُ بِسَبْعٍ وَبِخَمْسٍ لَا يَفْصِلُ بَيْنَهُنَّ بِسَلَامٍ وَلَا بِكَلَامٍ»

‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও সাত রাকাত আবার কখনও পাঁচ রাকাত বিতর সালাত আদায় করতেন। তাতে সালাম-কালামের মাধ্যমে বিরতি দিতেন না।’[9]

তেমনি নয় রাকাত বিতরও একত্রে আদায় করা যাবে; তন্মধ্যে অষ্টম রাকাতে বসবে, সেখানে তাশাহহুদ ও দো‘আ পড়বে কিন্তু সালাম না ফিরিয়েই নবম রাকাতের জন্য দাঁড়াবে, তারপর নবম রাকাত পড়ার পর বসে তাশাহহুদ ও দো‘আ করে সালাম ফিরাবে।

* যেমন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার হাদীসে রয়েছে:

«وَكان يُصَلِّي تِسْعَ رَكَعَاتٍ لَا يَجْلِسُ فِيهَا إِلَّا فِي الثَّامِنَةِ، فَيَذْكُرُ اللهَ وَيَحْمَدُهُ وَيَدْعُوهُ، ثُمَّ يَنْهَضُ وَلَا يُسَلِّمُ، ثُمَّ يَقُومُ فَيُصَلِّي التَّاسِعَةَ، ثُمَّ يَقْعُدُ فَيَذْكُرُ اللهَ وَيَحْمَدُهُ وَيَدْعُوهُ، ثُمَّ يُسَلِّمُ تَسْلِيمًا يُسْمِعُنَا»

‘তিনি নয় রাকাত সালাত আদায় করতেন, অষ্টম রাকাতে বসতেন এবং আল্লাহর যিকির, প্রশংসা ও দো‘আ করতেন তথা তাশাহহুদ পড়তেন। অতঃপর উঠতেন এবং সালাম না ফিরিয়েই দাঁড়িয়ে যেতেন। এরপর নবম রাকাত আদায় করতেন, এরপর বসতেন এবং আল্লাহর যিকির, প্রশংসা ও দো‘আ তথা তাশাহহুদ পড়ে আমাদের শুনিয়ে সালাম ফেরাতেন।’[10]

অনুরূপভাবে এগার রাকাত সালাতও আদায় করা যাবে। এমতাবস্থায় ইচ্ছা করলে প্রতি দু’রাকাতে সালাম ফিরানো যাবে আর সবশেষে এক রাকাতের মাধ্যমে বিতর আদায় করা যাবে।

* যেমন ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, তিনি বলেন:

«كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي، مَا بَيْنَ أَنْ يَفْرُغَ مِنْ صَلَاةِ الْعِشَاءِ إِلَى الْفَجْرِ، إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً، يُسَلِّمُ فِي كُلِّ اثْنَتَيْنِ، وَيُوتِرُ بِوَاحِدَةٍ »

‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইশা ও ফজরের সালাতের মধ্যবর্তী সময়ে এগার রাকাত সালাত আদায় করতেন, যার প্রতি দু’রাকাতে সালাম ফিরাতেন। তিনি সর্বশেষে এক রাকাতের মাধ্যমে বিতর আদায় করতেন।’[11]

অথবা ইচ্ছা করলে প্রথমে চার রাকাত, তারপর চার রাকাত আদায় করতেন এবং শেষে তিন রাকাত সালাত আদায় করতেন। কারণ:

* ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كان النبي صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ، فَلاَ تَسْأَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُولِهِنَّ، ثُمَّ يُصَلِّي أَرْبَعًا، فَلاَ تَسْأَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُولِهِنَّ، ثُمَّ يُصَلِّي ثَلاَثًا»

‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম চার রাকাত সালাত আদায় করতেন, তা কত সুন্দর ও দীর্ঘ করতেন, তা কত সুন্দর ও দীর্ঘ ছিল, সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো না। তারপর পুনরায় চার রাকাত সালাত আদায় করতেন, তা কত সুন্দর ও দীর্ঘ করতেন, তা কত সুন্দর ও দীর্ঘ ছিল, সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো না। অতঃপর তিনি তিন রাকাত সালাত আদায় করতেন।’[12]

* হাম্বলী ও শাফেয়ী ফকীহগণ বলেন, এক তাশাহহুদে এগার রাকাত বিতর অথবা দু’ তাশাহহুদে বিতর আদায় করা জায়েয, যার শেষ তাশাহহুদের পূর্বের রাকাতেও একটি তাশাহহুদ হবে।

তবে রমযানে সালাতুল লাইলের স্বতন্ত্র কিছু বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদা রয়েছে। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

«مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ»

‘যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সঙ্গে ও ছাওয়াবের আশায় রাত জেগে সালাত আদায় করবে, তার পূর্বের সকল (সগীরা) গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।[13]

এখানে ‘ঈমানের সঙ্গে’ অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি ঈমান রেখে এবং তার পক্ষ হতে যে সাওয়াব রাখা হয়েছে তাতে বিশ্বাস রেখে।

আর ‘ছাওয়াবের আশায়’ অর্থাৎ কেবল নেকীর আশায় করা হবে, লোক দেখানো, সুনাম অর্জন, সম্পদ বা সম্মান লাভের আশায় না হওয়া।

বস্তুত ‘কিয়ামে রমযান’ এটি রমযানের রাত্রিতে সালাতে দাঁড়ানোকে বুঝায়; চাই সেটা প্রথম রাতে হোক বা শেষ রাতে। সুতরাং বুঝা গেল যে,

তারাবীর সালাতও ক্বিয়ামে রমযানের অন্তর্ভুক্ত। তাই উচিত হলো, তারাবীর সালাতকে গুরুত্ব দেয়া এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাওয়াব ও প্রতিদানের আশা ও আগ্রহ প্রকাশ করা। এ সালাতুত্ তারাবীহ তো হাতেগোনা কয়েকটি রাত্রি মাত্র। সুযোগ চলে যাওয়ার পূর্বেই বুদ্ধিমান ঈমানদার ব্যক্তি এ সুযোগ গ্রহণ করবে।

তারাবীহ শব্দের অর্থ বিশ্রাম করা। তারাবীহকে এজন্য তারাবীহ বলা হয়; কারণ লোকেরা এ সালাত বহু দীর্ঘায়িত করে আদায় করত। তাই যখনই চার রাকাত সালাত শেষ করত তখনই তারা একটু আরাম বা বিশ্রাম করে নিত।
সর্বপ্রথম আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে (নববীতে) তারাবীহর সালাত সুন্নত হিসেবে চালু করেন। তারপর উম্মতের ওপর ফরয হয়ে যাবার আশংকায় তিনি এ সালাত ছেড়ে দেন।

* বুখারী ও মুসলিমে রয়েছে:

عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ المُؤْمِنِينَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى ذَاتَ لَيْلَةٍ فِي المَسْجِدِ، فَصَلَّى بِصَلاَتِهِ نَاسٌ، ثُمَّ صَلَّى مِنَ القَابِلَةِ، فَكَثُرَ النَّاسُ، ثُمَّ اجْتَمَعُوا مِنَ اللَّيْلَةِ الثَّالِثَةِ أَوِ الرَّابِعَةِ، فَلَمْ يَخْرُجْ إِلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمَّا أَصْبَحَ قَالَ: «قَدْ رَأَيْتُ الَّذِي صَنَعْتُمْ وَلَمْ يَمْنَعْنِي مِنَ الخُرُوجِ إِلَيْكُمْ إِلَّا أَنِّي خَشِيتُ أَنْ تُفْرَضَ عَلَيْكُمْ وَذَلِكَ فِي رَمَضَانَ»

‘আম্মুল মু’মিনীন ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো এক রাতে মসজিদে সালাত আদায় করলেন, লোকজনও তার সঙ্গে সালাত আদায় করল। পরবর্তী রাতেও তিনি সালাত আদায় করলেন, তাতে লোকজন আরো বৃদ্ধি পেল। তৃতীয় কিংবা চতুর্থ রাতে অনেক লোকের সমাগম হল। কিন্তু সে রাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত হলেন না। সকালে তিনি বললেন, তোমরা যা করেছ, তা আমি দেখেছি। কিন্তু তোমাদের ওপর এ সালাত ফরয হয়ে যাওয়ার ভয়ে আমি উপস্থিত হইনি। ‘বর্ণনাকারী বলেন, ঘটনাটি রমযান মাসে ঘটেছিল।’[14]

হাদীসে আরো বর্ণিত আছে:

عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ: صُمْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمْ يُصَلِّ بِنَا، حَتَّى بَقِيَ سَبْعٌ مِنَ الشَّهْرِ، فَقَامَ بِنَا حَتَّى ذَهَبَ ثُلُثُ اللَّيْلِ، ثُمَّ لَمْ يَقُمْ بِنَا فِي السَّادِسَةِ، وَقَامَ بِنَا فِي الخَامِسَةِ، حَتَّى ذَهَبَ شَطْرُ اللَّيْلِ، فَقُلْنَا لَهُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، لَوْ نَفَّلْتَنَا بَقِيَّةَ لَيْلَتِنَا هَذِهِ؟ فَقَالَ: «إِنَّهُ مَنْ قَامَ مَعَ الإِمَامِ حَتَّى يَنْصَرِفَ كُتِبَ لَهُ قِيَامُ لَيْلَةٍ»

‘আবূ যর গিফারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সিয়াম পালন করছিলাম। (এর মধ্যে) রমযানের সাতদিন বাকি থাকার পূর্ব পর্যন্ত (প্রথম ২৩ দিন) তিনি আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করেন নি। বাকি সাতদিনের প্রথম রাতের এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত তিনি আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। তারপর ষষ্ঠ রাতে আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন না। পঞ্চম রাতের অর্ধাংশ পর্যন্ত পুনরায় আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। আমরা বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাকি রাতে যদি আমাদের নিয়ে নফল সালাত আদায় করতেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন, নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত সালাত আদায় করবে, তার আমলনামায় সারারাত সালাত আদায়ের সাওয়াব লেখা হবে।’[15]

[1] মুসলিম: ১১৬৫।

[2] আহমাদ ৫/৪১৫; তিরমিযী ২৪৫৮; হাকিম: ৩/১৩, ৪/১৬০; এবং সহীহ বলে উল্লেখ করেছেন আর যাহাবী তা সমর্থন করেছেন।

[3] আবূ দাউদ: ১৪২২; নাসায়ী: ১৭১২।

[4] আবূ দাউদ: ১৪২২; নাসায়ী: ১৭১২।

[5] ত্বহাবী: ১৭৪২।

[6] বুখারী: ৯৯১।

[7] আবূ দাউদ: ১৪২২; নাসায়ী: ১৭১২।

[8] মুসলিম: ৭৩৭।

[9] আহমদ: ৬/৩২১, নং ২৬৪৮৬; নাসায়ী: ১৭১৫; ইবনে মাজাহ্‌ ১১৯২।

[10] মুসলিম: ৭৪৬; আহমদ: ৬/৯১, ১৬৩।

[11] মুসলিম: ৭৩৬; আবু দাউদ: ১৩৩৬; নাসাঈ ২/৩০; আহমদ: ৬/২১৫, ২৪৮।

[12] বুখারী: ৩৫৬৯; মুসলিম: ৭৩৮।

[13] বুখারী: ৩৭; মুসলিম: ৭৫৯

[14] বুখারী: ১১২৯; মুসলিম: ৭৬১।

[15] তিরমিযী: ৮০৬; ইবন মাজাহ্‌: ১৩৭৫; চার সুনান কিতাবেই সহীহ সনদে সংকলিত হয়েছে।