আসুন পিছনে গিয়ে একটু দেখে নিই কীভাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একজন সাহাবী জীবন যাপন করতেন। আলী ইবনে আবু তালেব (রাঃ) যিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কন্যা ফাতেমা (রাঃ)-কে বিয়ে করেছিলেন (তিনি) একদিন ভোরে তার স্ত্রীকে নিয়ে জেগে উঠলেন এবং খাবার তালাশ করলেন। কিন্তু তাদের নিম্নমানের ঘরে কোন কিছু পাওয়া গেল না। শীতকালের কোন এক কন্‌কনে ঠাণ্ডা দিনে এ ঘটনা ঘটেছিল। তাই আলী (রাঃ) কিছু গরম কাপড় পরে বেরিয়ে গেলেন। তিনি নগরীর চারিধারে (কাজ) তালাশ করলেন কিন্তু পেলেন না এবং অবশেষে তার এক ইহুদীর কথা মনে পড়ল, যার একটি বাগান ছিল।

আলী (রাঃ) যখন বাগানে পৌঁছলেন তখন ইহুদী বলল, “হে আরবী লোক, এসে আমাকে খেজুর পেড়ে দাও, একটি বড় বালতি পুরিয়ে দিলে তোমাকে একটি খেজুর দিব।” তাই তিনি দীর্ঘ সময় যতক্ষণ না তার হাতে ও শরীরে ব্যথা হতে লাগল ততক্ষণ কঠোর পরিশ্রম করলেন। তিনি যে সামান্য কয়টি খেজুর উপার্জন করেছিলেন তা নিয়ে তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সাথে করে খাওয়ার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট চলে গেলেন। যে ক'টি বেঁচে গিয়েছিল তিনি ও ফাতেমা (রাঃ) সে ক’টিকে বাকী দিনের জন্য রেখে দিলেন। এই ছিল তাদের জীবন। তবুও বস্তুবাদী মানসিকতা সম্পন্ন লোকের নিকট যা বিপরীত মনে হতে পারে তা হল- তাদের ঘর-বাড়ি আলোতে ও সুখে ভরা ছিল।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যে মহান মূলনীতি অবতীর্ণ হয়েছে, তাতে তাদের অন্তর ভরপুর ছিল। তাদের অন্তরের আধ্যাত্মিক আলোতে তারা সত্যকে উপলব্ধি করে তা গ্রহণ করেছেন এবং একই সাথে তারা মিথ্যাকে চিনে তা বর্জন ও প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা সত্যের পথে কাজ করেছেন এবং মিথ্যার পথ থেকে বহু দূরে সরে গেছেন। তারা বস্তুর যথার্থ মূল্য বুঝতে পেরেছিলেন। হামানের মত লোকের সুখ কোথায়? সে তো এখনও অভিশপ্ত।

“(এটাতো) বৃষ্টির পরে উৎপন্ন ফসলের মত, যা কৃষককে মোহিত করে, পরে শুকিয়ে যায় তখন তুমি এটাকে হলুদ দেখতে পাও, তারপর তা খড়কুটো হয়ে যায়।” (৫৭-সূরা আল হাদীদঃ আয়াত-২০)

সত্যিকার সুখ ছিল বিলাল (রাঃ)-এর, আম্মার (রাঃ)-এর ও সালমান (রাঃ)-এর। বিলাল (রাঃ) ছিলেন সত্যের আহবায়ক, সালমান (রাঃ) ছিলেন সত্যবাদী ও আম্মার (রাঃ) ছিলেন দায়িত্ব পালনে বিশ্বস্ত।