হজ উমরা ও যিয়ারত পরিশিষ্ট ইসলামহাউজ.কম ২৪ টি

হজের রুকন তথা ফরযসমূহ

১. ইহরাম তথা হজ শুরু করার নিয়ত করা।

২. আরাফায় অবস্থান।

৩. তাওয়াফে যিয়ারত বা তাওয়াফে ইফাযা।

৪. অধিকাংশ শরীয়তবিদের মতে সাফা ও মারওয়ায় সাঈ করা। (ইমাম আবু হানিফা রহ. এটাকে ওয়াজিব বলেছেন।)

(এসব রুকনের কোন একটি ছেড়ে দিলেও হজ হবে না।)

হজের ওয়াজিবসমূহ

১. মীকাত অতিক্রম করার আগে ইহরাম বাধাঁ।

২. আরাফার ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করা।

৩. মুযদালিফায় রাত যাপন।

৪. কঙ্কর নিক্ষেপ করা।

৫. মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট করা।

৬. আইয়ামে তাশরীকের রাতসমূহ মিনায় যাপন।

৭. বিদায়ী তাওয়াফ করা।

এসব ওয়াজিবের কোন একটি ছেড়ে দিলে, দম অর্থাৎ পশু যবেহ করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।)

উমরার রুকন বা ফরযসমূহ

ইহরাম তথা উমরা শুরু করার নিয়ত করা।

বাইতুল্লাহ্‌র তাওয়াফ করা।

সাফা ও মারওয়ায় সাঈ করা।

উমরার ওয়াজিবসমূহ

১. মীকাত থেকে ইহরাম বাঁধা।

২. মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট করা।

৩. আবূ হানীফা রহ.-এর মতে সাফা-মারওয়ায় সাঈ করা।

ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজসমূহ

১. মাথার চুল কাট-ছাঁট বা পুরোপুরি মুণ্ডন করা।

২. হাত বা পায়ের নখ কর্তন বা উপড়ে ফেলা।

৩. ইহরাম বাঁধার পর শরীর, কাপড় কিংবা এ দু’টির সাথে সম্পৃক্ত অন্য কিছুতে সুগন্ধি জাতীয় কিছু ব্যবহার করা।

৪. বিবাহ করা, বিবাহ দেয়া বা বিবাহের প্রস্তাব পাঠানো।

৫. ইহরাম অবস্থায় সহবাস করা।

৬. ইহরাম অবস্থায় কামোত্তেজনাসহ স্বামী-স্ত্রীর মেলামেশা।

৭. ইহরাম অবস্থায় শিকার করা।

৮. মাথা আবৃত করা। (পুরুষদের জন্য)

৯. পুরো শরীর ঢেকে নেয়ার মত পোশাক কিংবা পাজামার মত অর্ধাঙ্গ ঢাকে এমন পোশাক পরিধান করা। যেমন জামা বা পাজামা পরিধান করা। (পুরুষদের জন্য)

১০. হাত মোজা ব্যবহার করা। (মহিলাদের জন্য)

১১. নেকাব পরা। (মহিলাদের জন্য)

৮ যিলহজের পূর্বে তামাত্তু হজ পালনকারীর করণীয়

১. মীকাত থেকে বা মীকাত অতিক্রম করার আগে ইহরাম বাঁধা। উমরা আদায়ের নিয়ত করে মুখে বলা, لَبَّيْكَ عُمْرَةً (লাব্বাইকা উমরাতান)। বায়তুল্লাহ্‌র তাওয়াফ শুরু করার আগ পর্যন্ত সাধ্যমত তালবিয়া পাঠ করতে থাকা।

২. বায়তুল্লাহে পৌঁছে উমরার তাওয়াফ সম্পাদন করা।

৩. উমরার সাঈ সম্পাদন করা।

৪. মাথার চুল ছোট করা অথবা মাথা মুণ্ডন করা। তবে এ উমরার ক্ষেত্রে ছোট করাই উত্তম। এরপর গোসল করে পরিচ্ছন্ন হয়ে স্বাভাবিক কাপড় পরে নেয়া। অন্য কোন উমরা না করে ৮ যিলহজ পর্যন্ত হজের ইহরামের অপেক্ষায় থাকা। এ সময়ে নফল তওয়াফ, কুরআন তিলাওয়াত, জামাতের সাথে সালাত আদায়, হাজীদের সেবা ও যিলহজের দশদিনের ফযীলত অধ্যায়ে লিখিত আমলসমূহ প্রভৃতি নেক আমলে নিজেকে নিয়োজিত রাখা।

৮ যিলহজ

নিজ অবস্থান স্থল থেকে হজের নিয়তে لَبَّيْكَ حَجَّاً (লাব্বাইকা হাজ্জান) বলে ইহরাম বাঁধা এবং মিনায় গমন করা। সেখানে যোহর, আসর, মাগরিব, ইশা এবং পরদিনের ফজরের সালাত নিজ নিজ ওয়াক্তে দু’রাক‘আত করে আদায় করা।

৯ যিলহজ (আরাফা দিবস)

১. ৯ যিলহজ সূর্যোদয়ের পর আরাফায় রওয়ানা হওয়া। সেখানে যোহরের আউয়াল ওয়াক্তে যোহর ও আসর দুই ওয়াক্তের সালাত এক আযান ও দুই ইকামতে দু’রাক‘আত করে একসাথে আদায় করা। সালাত আদায়ের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দো‘আ ও যিকরে মশগুল থাকা। সাধ্যমত উভয় হাত তুলে দো‘আ করা।

২. সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর ধীরে-সুস্থে শান্তভাবে মুযদালিফায় রওয়ানা হওয়া।

৩. মুযদালিফায় পৌঁছে ইশার ওয়াক্তে এক আযান ও দুই ইকামতে, মাগরিব ও ইশার সালাত একসাথে আদায় করা। ইশার সালাত কসর করে দু’রাক‘আত পড়া এবং সাথে সাথে বেতরের সালাতও আদায় করে নেয়া।

৪. মুযদালিফায় রাতযাপন। ফজর হওয়ার পর আউয়াল ওয়াক্তে ফজরের সালাত আদায় করা। আকাশ ফর্সা হওয়া পর্যন্ত দো‘আ মুনাজাতে মশগুল থাকা।

৫. মুযদালিফা থেকে কঙ্কর সংগ্রহ করা যেতে পারে তবে জরুরী নয়। ৫৯ বা ৭০টি কঙ্কর সংগ্রহ করা। মিনা থেকেও কঙ্কর সংগ্রহ করা যেতে পারে। পানি দিয়ে কঙ্কর ধৌত করার কোনো বিধান নেই।

৬. সূর্যোদয়ের পূর্বে মিনায় রওয়ানা হওয়া। তবে দুর্বলদের ক্ষেত্রে মধ্যরাতের পর মিনার উদ্দেশে রওনা হয়ে যাওয়া জায়েয।

১০ যিলহজ

১. তালবিয়া পাঠ বন্ধ করে জামরায়ে আকাবা তথা বড় জামরায় সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করা। নিক্ষেপের সময় প্রত্যেকবার ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবর’ অথবা ‘আল্লাহু আকবর’ বলা।

২. হাদী তথা পশু যবেহ করা, অন্যকে দায়িত্ব দিয়ে থাকলে হাদী যবেহ হয়েছে কি-না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া। হারামের অধিবাসিদের ওপর হাদী যবেহ করা ওয়াজিব নয়।

৩. মাথা মুণ্ডন অথবা চুল ছোট করা। মুণ্ডন করাই উত্তম। মহিলাদের ক্ষেত্রে আঙুলের অগ্রভাগ পরিমাণ ছোট করা।

৪. মাথা মুণ্ডনের মাধ্যমে ইহরাম হতে বেরিয়ে প্রাথমিক হালাল হয়ে যাওয়া, এতে স্বামী-স্ত্রী মেলা-মেশা ছাড়া ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ অন্যসব বিষয় বৈধ হয়ে যাবে।

৫. তাওয়াফে যিয়ারত বা তাওয়াফে ইফাযা তথা ফরয তাওয়াফ সম্পাদন করা। এ ক্ষেত্রে এগার ও বার তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত বিলম্ব করার অবকাশ রয়েছে। অধিকাংশ শরীয়তবিদের মতে এরপরেও আদায় করা যাবে, তবে ১৩ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্বে সেরে নেয়া ভাল।

৬. সাঈ করা ও পুনরায় মিনায় গমন।

৭. ১০ তারিখ দিবাগত রাত মিনায় যাপন।

উল্লেখ্য, তাওয়াফে যিয়ারত বা তাওয়াফে ইফাযা আদায়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মেলা-মেশাও বৈধ হয়ে যায়।

১১ যিলহজ

সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে যাওয়ার পর ছোট, মধ্য, বড় জামরার প্রত্যেকটিতে সাতটি করে কঙ্কর নিক্ষেপ করা। ছোট জামরা থেকে শুরু করে বড় জামরায় শেষ করা। ছোট ও মধ্য জামরায় নিক্ষেপের পর দাঁড়িয়ে দু’হাত উঠিয়ে দীর্ঘ দো‘আ করা।

১২ যিলহজ

১. ১২ তারিখ অর্থাৎ ১১ তারিখ দিবাগত রাত মিনায় রাতযাপন।

২. সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে যাওয়ার পর তিন জামরার প্রত্যেকটিতে সাতটি করে কঙ্কর নিক্ষেপ। শুধু ছোট ও মধ্য জামরাতে নিক্ষেপের পর দাঁড়িয়ে দু’হাত উঠিয়ে দীর্ঘ দো‘আ করা।

হাজীদের জন্য ১২ তারিখে মিনা ত্যাগ করা জায়েয। তবে শর্ত হচ্ছে সূর্যাস্তের পূর্বেই মিনার সীমানা অতিক্রম করতে হবে। সেদিনই যদি কাউকে মক্কা ছেড়ে যেতে হয় তাহলে মক্কা ত্যাগের পূর্বে বিদায়ী তাওয়াফ আদায় করা।

৩. ১২ তারিখ দিবাগত রাত মিনায় যাপন করা উত্তম। ১২ তারিখের রাত মিনায় যাপন করলে ১৩ তারিখ সূর্য হেলে যাওয়ার পর ছোট, মধ্য ও বড় জামরায় কঙ্কর নিক্ষেপ করে মিনা ত্যাগ করা।

১৩ যিলহজ

১. সূর্য হেলে যাওয়ার পর পর ছোট, মধ্য ও বড় জামরায় সাতটি করে কঙ্কর নিক্ষেপ। ছোট জামরা থেকে শুরু করে বড় জামরাতে গিয়ে শেষ করবে। শুধু ছোট ও মধ্য জামরাতে নিক্ষেপের পর দাঁড়িয়ে দু’হাত উঠিয়ে দো‘আ করবে।

২. মিনা ত্যাগ করে মক্কা অভিমুখে যাত্রা এবং মক্কা ত্যাগের আগে বিদায়ী তাওয়াফ সম্পাদন করা। তবে প্রসূতি ও স্রাবগ্রস্ত মহিলাদের জন্য বিদায়ী তাওয়াফ না করার অনুমতি আছে।

৮ যিলহজের পূর্বে কিরান হজকারীর করণীয়

১- মীকাত থেকে বা মীকাত অতিক্রম করার আগে ইহরাম বাঁধা। কিরান হজ পালনকরী বলবে-

لَبَّيْكَ عُمْرَةً وَحَجًّا

(লাব্বাইকা উমরাতান ওয়া হাজ্জান)

এরপর সাধ্যমত তালবিয়া পাঠ করতে থাকা। ১০ যিলহজ বড় জামরাতে কঙ্কর নিক্ষেপের আগ মুহূর্তে তালবিয়া পাঠ বন্ধ করা।

২- তাওয়াফে কুদূম সম্পাদন করা।

৩- হজের মূল সাঈ অগ্রিম আদায় করার ইচ্ছা করলে তাওয়াফে কুদুমের পর সাঈ করে নেয়া। এ তাওয়াফ সুন্নত, ওয়াজিব নয়। কেননা, এই তাওয়াফ না করে সরাসরি মিনায় চলে যাবার অনুমতিও আছে। তখন সাঈ তাওয়াফে যিয়ারতের পর করতে হবে। কুরবানীর দিন পর্যন্ত ইহরাম অবস্থায় থাকা।

৮ যিলহজ

মিনায় গমন করা এবং সেখানে যোহর, আসর ও ইশা দুই রাক‘আত এবং মাগরিব ও পরদিনের ফজরের সালাত নিজ নিজ ওয়াক্তে আদায় করা।

৯ যিলহজ (আরাফা দিবস)

(১) ৯ যিলহজ সূর্যোদয়ের পর আরাফা অভিমুখে যাত্রা। সেখানে যোহর ও আসর দুই ওয়াক্তের সালাত যোহরের ওয়াক্তে এক আযান ও দুই ইকামতে দু’রাক‘আত করে একসাথে আদায় করা। সালাত আদায় শেষ করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দু’আ ও যিকরে মশগুল থাকা।

(২) সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর ধীরে-সুস্থে শান্তভাবে মুযদালিফা অভিমুখে রওয়ানা হওয়া।

(৩) মুযদালিফায় পৌঁছে ইশার ওয়াক্তে এক আযান ও দুই ইকামতে, মাগরিব ও ইশা একসাথে আদায় করা। ইশার সালাত কসর করে দু’রাক‘আত পড়া এবং সাথে বেতরের সালাতও আদায় করে নেয়া।

(৪) মুযদালিফায় রাত্রিযাপন। ফজর হওয়ার পর আউয়াল ওয়াক্তেই ফজরের সালাত আদায় করা। আকাশ ফর্সা হওয়া পর্যন্ত দো‘আ ও মুনাজাতে মশগুল থাকা।

(৫) সূর্যোদয়ের পূর্বে মিনায় রওয়ানা হওয়া। তবে দুর্বলদের ক্ষেত্রে মধ্যরাতের পর মিনার উদ্দেশে রওনা করা জায়েয।

(৬) মুযদালিফা থেকে কঙ্কর সংগ্রহ করা যেতে পারে তবে জরুরী নয়। কঙ্কর সংখ্যা হবে ৫৯ বা ৭০টি। মিনা থেকেও কঙ্কর সংগ্রহ করা চলে। পানি দিয়ে কঙ্কর ধৌত করার কোনো বিধান নেই।

১০ যিলহজ

১। জামরায়ে আকাবা তথা বড় জামরায় সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করা। নিক্ষেপের সময় প্রত্যেকবার বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বা আল্লাহু আকবার বলা।

২। হাদী তথা পশু যবেহ করা, অন্যকে দায়িত্ব দিয়ে থাকলে হাদী যবেহ হয়েছে কি-না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া। হারামের অধিবাসীদের জন্য হাদী যবেহ নেই।

৩। মাথা মুণ্ডন অথবা চুল ছোট করা। মুণ্ডন করাই উত্তম। নারীদের ক্ষেত্রে আঙুলের অগ্রভাগ পরিমাণ ছোট করা।

৪। মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট করার মাধ্যমে ইহরাম হতে বেরিয়ে প্রাথমিক হালাল হয়ে যাওয়া, এতে স্বামী-স্ত্রী মেলা-মেশা ছাড়া ইহরাম অবস্থায় হারাম হয়ে যাওয়া অন্যসব কিছু জায়েয হয়ে যাবে।

৫। তাওয়াফে যিয়ারত সম্পাদন করা। এ ক্ষেত্রে ১১ ও ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত বিলম্ব করার অবকাশ রয়েছে। অধিকাংশ শরীয়তবিদের মতানুসারে এরপরেও আদায় করা যাবে, তবে ১৩ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্বে সেরে নেয়া ভাল।

৬। তাওয়াফে কুদুমের সাথে সাঈ না করে থাকলে সাঈ করা।

৭ । ১০ তারিখ দিবাগত রাত মিনায় যাপন।

উল্লেখ্য, তাওয়াফে যিয়ারত আদায়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মেলা-মেশাও জায়েয হয়ে যায়।

১১ যিলহজ

সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে যাওয়ার পর তিন জামরার প্রত্যেকটিতে সাতটি করে কঙ্কর নিক্ষেপ। ছোট জামরা থেকে শুরু করে বড় জামরায় শেষ করা। ছোট ও মধ্য জামরায় নিক্ষেপের পর দাঁড়িয়ে দু’হাত উঠিয়ে দীর্ঘ দু’আ করা। বড় জামরায় কঙ্কর নিক্ষের পর দো‘আ নেই।

১২ যিলহজ

১। ১২ তারিখ (১১ তারিখ দিবাগত রাত) মিনায় রাতযাপন।

২। সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে যাওয়ার পর তিন জামরার প্রত্যেকটিতে সাতটি করে কঙ্কর নিক্ষেপ। শুধু ছোট ও মধ্য জামরাতে নিক্ষেপের পর দাঁড়িয়ে দু’হাত উঠিয়ে দীর্ঘ দো‘আ করা।

৩। হাজীদের জন্য ১২ তারিখে মিনা ত্যাগ করা জায়েয। তবে শর্ত হচ্ছে সূর্যাস্তের পূর্বেই মিনার সীমানা অতিক্রম করতে হবে।

৪। মক্কা ত্যাগের পূর্বে বিদায়ী তাওয়াফ সম্পন্ন করা।

১৩ যিলহজ

১। সূর্য হেলে যাওয়ার পর পর তিন জামরায় সাতটি করে কঙ্কর নিক্ষেপ করা। ছোট জামরা থেকে শুরু করে বড় জামরাতে গিয়ে শেষ করা। শুধু ছোট ও মধ্য জামরাতে নিক্ষেপের পর দাঁড়িয়ে দু’হাত উঠিয়ে দীর্ঘ দো‘আ করা।

২। মিনা ত্যাগ করে মক্কায় রওয়ান করা। মক্কা ত্যাগের আগে বিদায়ী তাওয়াফ সম্পাদন করা। প্রসূতি ও স্রাবগ্রস্ত মহিলাদের জন্য বিদায়ী তাওয়াফ না করার অনুমতি আছে।

৮ যিলহজের পূর্বে ইফরাদ হজকারীর করণীয়

১- মীকাত অতিক্রম করার আগে ইহরাম বাঁধা। ইফরাদ হজ পালনকারী বলবে,

لَبَّيْكَ حَجًّا

(লাব্বাইকা হাজ্জান)

এরপর সাধ্যমত তালবিয়া পাঠ করা।

২- তাওয়াফে কুদুম সম্পাদন করা।

৩- হজের মূল সাঈ অগ্রিম আদায় করার ইচ্ছা করলে তাওয়াফে কুদূমের পর সাঈ করে নেয়া। এ তাওয়াফ সুন্নত, ওয়াজিব নয়। কেননা, এই তাওয়াফ না করে সরাসরি মিনায় চলে যাওয়ারও অনুমতি আছে। তখন সাঈ তাওয়াফে যিয়ারতের পর সম্পাদন করা। কুরবানীর দিন পর্যন্ত ইহরাম অবস্থায় থাকা।

৮ যিলহজ

মিনায় গমন করা এবং সেখানে যোহর, আসর, মাগরিব, ইশা এবং পরদিনের ফজরের সালাত নিজ নিজ ওয়াক্তে দু’রাক‘আত করে আদায় করা।

৯ যিলহজ (আরাফা দিবস)

১. ৯ যিলহজ সূর্যোদয়ের পর আরাফা অভিমুখে যাত্রা। সেখানে - যোহর ও আসর- এই দুই ওয়াক্তের সালাত যোহরের ওয়াক্তে এক আযান ও দুই একামতে দু’ রাকাআত করে একসাথে আদায় করা। সালাত আদায় শেষ করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দো‘আ ও যিকরে মশগুল থাকা।

২. সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর ধীরে-সুস্থে শান্তভাবে মুযদালিফাভিমুখে রওয়ানা হওয়া।

৩. মুযদালিফায় পৌঁছে ইশার ওয়াক্তে, এক আযান ও দুই একামতে, মাগরিব ও ইশা একসাথে আদায় করা। ইশার সালাত কসর করে দু’রাক‘আত পড়া এবং সাথে সাথে বেতরের সালাতও আদায় করে নেয়া।

৪. মুযদালিফায় রাত্রিযাপন। সুবহে সাদিক উদয়ের পর অন্ধকার থাকা অবস্থাতেই ফজরের সালাত আদায় করা। আকাশ ফর্সা হওয়া পর্যন্ত দো‘আ মুনাজাতে মশগুল থাকা।

৫. সূর্যোদয়ের পূর্বে মিনা অভিমুখে যাত্রা। তবে দুর্বলদের ক্ষেত্রে মধ্যরাতের পর মিনার উদ্দেশে রওনা করা বৈধ।

৬. মুযদালিফা থেকে কঙ্কর সংগ্রহ করা যেতে পারে তবে জরুরী নয়। মোট কঙ্কর সংখ্যা ৫৯ বা ৭০টি। মিনা থেকেও কঙ্কর সংগ্রহ করা চলে। পানি দিয়ে কঙ্কর ধৌত করার কোনো বিধান নেই।

১০ যিলহজ

১। জামরায়ে আকাবা তথা বড় জামরায় সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ।

২। মাথা মুণ্ডন অথবা চুল ছোট করা। মুণ্ডন করাই উত্তম। নারীদের ক্ষেত্রে আঙুলের অগ্রভাগ পরিমাণ ছোট করা।

৪। মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট করার মাধ্যমে ইহরাম হতে বেরিয়ে প্রাথমিক হালাল হয়ে যাওয়া, অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রী মেলা-মেশা ব্যতীত ইহরাম অবস্থায় হারাম হয়ে যাওয়া অন্যসব কিছু বৈধ হয়ে যাওয়া।

৫। তাওয়াফে যিয়ারত সম্পাদন। এ ক্ষেত্রে ১১ ও ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত বিলম্ব করার অবকাশ রয়েছে। অধিকাংশ ফেকহবিদদের মতানুসারে এর পরেও আদায় করা যাবে। তবে ১৩ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্বে সেরে নেয়া ভাল।

৬। তাওয়াফে কুদুমের সাথে সাঈ না করে থাকলে সাঈ করা।

৭ । ১০ তারিখ দিবাগত রাত মিনায় যাপন।

উল্লেখ্য, তাওয়াফে যিয়ারত আদায়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মেলা-মেশাও বৈধ হয়ে যায়।

১১ যিলহজ

সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে যাওয়ার পর তিন জামরার প্রত্যেকটিতে সাতটি করে কঙ্কর নিক্ষেপ। ছোট জামরা থেকে শুরু করে বড় জামরায় শেষ করা। ছোট ও মধ্য জামরায় নিক্ষেপের পর দাঁড়িয়ে (দু’হাত উঠিয়ে) দু’আ করা। বড় জামরায় কঙ্কর নিক্ষের পর দো‘আ নেই।

১২ যিলহজ

১। ১২ তারিখ (১১ তারিখ দিবাগত রাত) মিনায় রাতযাপন।

২। সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে যাওয়ার পর তিন জামরার প্রত্যেকটিতে সাতটি করে কঙ্কর নিক্ষেপ। শুধু ছোট ও মধ্য জামরাতে নিক্ষেপের পর দাঁড়িয়ে দু’হাত উঠিয়ে দো‘আ করা।

৩। হাজীদের জন্য ১২ তারিখে মিনা ত্যাগ করা বৈধ। তবে শর্ত হচ্ছে সূর্যাস্তের পূর্বেই মিনার সীমানা অতিক্রম করতে হবে।

৪. মক্কা ত্যাগের পূর্বে বিদায়ী তাওয়াফ সম্পন্ন করা।


১৩ যিলহজ

১। সূর্য হেলে যাওয়ার পর পর তিন জামরায় সাতটি করে কঙ্কর নিক্ষেপ। ছোট জামরা থেকে শুরু করে বড় জামরাতে গিয়ে শেষ করবে। শুধু ছোট ও মধ্য জামরাতে নিক্ষেপের পর দাঁড়িয়ে (দু’হাত উঠিয়ে) দো‘আ করবে।

২। মিনা ত্যাগ করে মক্কা অভিমুখে যাত্রা এবং মক্কা ত্যাগের আগে বিদায়ি তাওয়াফ সম্পাদন। তবে প্রসূতি ও স্রাবগ্রস্ত মহিলারা এ থেকে অব্যাহতি পাবে।

হজের তালবিয়া নিম্নরূপ

لَبَّيْكَ اللّهُمَّ لَبَّيْكْ، لَبَّيْكَ لا شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكْ ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكْ ، لا شَرِيْكَ لَكْ

(লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা, লাব্বাইকা লা শারীকা লাকা লাব্বাইকা, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি‘মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারীকা লাকা)

‘আমি হাযির, হে আল্লাহ! আমি হাযির। তোমার কোনো শরীক নেই। নিশ্চয়ই প্রশংসা ও নিয়ামত তোমার এবং রাজত্বও, তোমার কোনো শরীক নেই।

তওয়াফের সময় রুকনে ইয়ামানী থেকে হজরে আসওয়াদ পর্যন্ত পড়ার বিশেষ দো‘আ

رَبَّنَا آَتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآَخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

(রববানা আতিনা ফিদ দুনইয়া হাসানাহ, ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাহ, ওয়াকিনা আযাবান নার) হে আমাদের রব! আমাদের দুনিয়াতে কল্যাণ দাও এবং আখেরাতে কল্যাণ দাও এবং আমাদেরকে অগ্নির শাস্তি হতে বাছাও।

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

(লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহূ লা শারীকালাহূ লাহুল মুলক, ওয়ালাহুল হামদ, ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর)

‘আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মা‘বুদ নেই। তিনি এক তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁরই এবং প্রশংসা মাত্রই তাঁর। তিনি সকল কিছুর ওপর ক্ষমতাবান।’

- ﴿ رَبَّنَا ظَلَمۡنَآ أَنفُسَنَا وَإِن لَّمۡ تَغۡفِرۡ لَنَا وَتَرۡحَمۡنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٢٣ ﴾ [الاعراف: ٢٣]

(১) ‘হে আমাদের রব, আমরা নিজদের উপর যুল্ম করেছি। আর যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদেরকে রহম না করেন তবে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব।’[1]

- ﴿ رَّبِّ ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيۡتِيَ مُؤۡمِنٗا وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتِۖ وَلَا تَزِدِ ٱلظَّٰلِمِينَ إِلَّا تَبَارَۢا ٢٨ ﴾ [نوح: ٢٨]

(২) ‘হে আমার রব! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে, যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবে তাকে এবং মুমিন নারী-পুরুষকে ক্ষমা করুন এবং ধ্বংস ছাড়া আপনি যালিমদের আর কিছুই বাড়িয়ে দেবেন না।’[2]

- ﴿ رَبِّ ٱجۡعَلۡنِي مُقِيمَ ٱلصَّلَوٰةِ وَمِن ذُرِّيَّتِيۚ رَبَّنَا وَتَقَبَّلۡ دُعَآءِ ٤٠ رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ يَوۡمَ يَقُومُ ٱلۡحِسَابُ ٤١ ﴾ [ابراهيم: ٤٠، ٤١]

(৩) ‘হে আমার রব, আমাকে সালাত কায়েমকারী বানান এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও, হে আমাদের রব, আর আমার দো‘আ কবুল করুন। হে আমাদের রব, যেদিন হিসাব কায়েম হবে, সেদিন আপনি আমাকে, আমার পিতামাতাকে ও মুমিনদেরকে ক্ষমা করে দিবেন।’[3]

- ﴿ رَّبَّنَا عَلَيۡكَ تَوَكَّلۡنَا وَإِلَيۡكَ أَنَبۡنَا وَإِلَيۡكَ ٱلۡمَصِيرُ ٤ ﴾ [الممتحنة: ٤]

(৪) ‘হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা আপনার ওপরই ভরসা করি, আপনারই অভিমুখী হই আর প্রত্যাবর্তন তো আপনারই কাছে।’[4]

- ﴿ رَبَّنَا لَا تَجۡعَلۡنَا فِتۡنَةٗ لِّلَّذِينَ كَفَرُواْ وَٱغۡفِرۡ لَنَا رَبَّنَآۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡحَكِيمُ ٥ ﴾ [الممتحنة: ٥]

(৫) ‘হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে কাফিরদের উৎপীড়নের পাত্র বানাবেন না। হে আমাদের রব, আপনি আমাদের ক্ষমা করে দিন। নিশ্চয় আপনি মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’[5]

- ﴿ قَالَ رَبِّ ٱشۡرَحۡ لِي صَدۡرِي ٢٥ وَيَسِّرۡ لِيٓ أَمۡرِي ٢٦ وَٱحۡلُلۡ عُقۡدَةٗ مِّن لِّسَانِي ٢٧ ﴾ [طه: ٢٥، ٢٧]

(৬) ‘হে আমার রব, আমার বুক প্রশস্ত করে দিন। এবং আমার কাজ সহজ করে দিন। আর আমার জিহবার জড়তা দূর করে দিন।’[6]

-﴿ رَبَّنَآ ءَامَنَّا بِمَآ أَنزَلۡتَ وَٱتَّبَعۡنَا ٱلرَّسُولَ فَٱكۡتُبۡنَا مَعَ ٱلشَّٰهِدِينَ ٥٣ ﴾ [ال عمران: ٥٣]

(৭) ‘হে আমাদের রব, আপনি যা নাযিল করেছেন তার প্রতি আমরা ঈমান এনেছি এবং আমরা রাসূলের অনুসরণ করেছি। অতএব, আমাদেরকে সাক্ষ্যদাতাদের তালিকাভুক্ত করুন।’[7]

- ﴿ فَقَالُواْ عَلَى ٱللَّهِ تَوَكَّلۡنَا رَبَّنَا لَا تَجۡعَلۡنَا فِتۡنَةٗ لِّلۡقَوۡمِ ٱلظَّٰلِمِينَ ٨٥ وَنَجِّنَا بِرَحۡمَتِكَ مِنَ ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡكَٰفِرِينَ ٨٦ ﴾ [يونس: ٨٥، ٨٦]

(৮) ‘তখন তারা বলল, ‘আমরা আল্লাহর উপরই তাওয়াক্কুল করলাম। হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে যালিম কওমের ফিতনার পাত্র বানাবেন না। আর আমাদেরকে আপনার অনুগ্রহে কাফির কওম থেকে নাজাত দিন।’[8]

- ﴿ رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسۡرَافَنَا فِيٓ أَمۡرِنَا وَثَبِّتۡ أَقۡدَامَنَا وَٱنصُرۡنَا عَلَى ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡكَٰفِرِينَ ١٤٧ ﴾ [ال عمران: ١٤٧]

(৯) ‘হে আমাদের রব, আমাদের পাপ ও আমাদের কর্মে আমাদের সীমালঙ্ঘন ক্ষমা করুন এবং অবিচল রাখুন আমাদের পদসমূহকে, আর কাফির কওমের উপর আমাদেরকে সাহায্য করুন’।[9]

-১০ ﴿ رَّبِّ ٱغۡفِرۡ وَٱرۡحَمۡ وَأَنتَ خَيۡرُ ٱلرَّٰحِمِينَ ١١٨ ﴾ [المؤمنون: ١١٨]

(১০) ‘হে আমাদের রব, আপনি ক্ষমা করুন, দয়া করুন এবং আপনিই সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’[10]

১১- ﴿ رَبَّنَآ ءَاتِنَا فِي ٱلدُّنۡيَا حَسَنَةٗ وَفِي ٱلۡأٓخِرَةِ حَسَنَةٗ وَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ ٢٠١ ﴾ [البقرة: ٢٠١]

(১১) হে আমাদের রব, আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দিন। আর আখিরাতেও কল্যাণ দিন এবং আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা করুন।[11]

১২- ﴿رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذۡنَآ إِن نَّسِينَآ أَوۡ أَخۡطَأۡنَاۚ رَبَّنَا وَلَا تَحۡمِلۡ عَلَيۡنَآ إِصۡرٗا كَمَا حَمَلۡتَهُۥ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِنَاۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلۡنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِۦۖ وَٱعۡفُ عَنَّا وَٱغۡفِرۡ لَنَا وَٱرۡحَمۡنَآۚ أَنتَ مَوۡلَىٰنَا فَٱنصُرۡنَا عَلَى ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡكَٰفِرِينَ ٢٨٦ ﴾ [البقرة: ٢٨٦]

(১২) ‘হে আমাদের রব, আমাদের উপর বোঝা চাপিয়ে দেবেন না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে এমন কিছু বহন করাবেন না, যার সামর্থ্য আমাদের নেই। আর আপনি আমাদেরকে মার্জনা করুন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আর আমাদের উপর দয়া করুন। আপনি আমাদের অভিভাবক। অতএব আপনি কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন।’ [12]

১৩- ﴿ رَبَّنَا لَا تُزِغۡ قُلُوبَنَا بَعۡدَ إِذۡ هَدَيۡتَنَا وَهَبۡ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحۡمَةًۚ إِنَّكَ أَنتَ ٱلۡوَهَّابُ ٨ ﴾ [ال عمران: ٨]

(১৩) ‘হে আমাদের রব, আপনি হিদায়াত দেয়ার পর আমাদের অন্তরসমূহ বক্র করবেন না এবং আপনার পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দান করুন। নিশ্চয় আপনি মহাদাতা।’ [13]

১৪- ﴿ وَٱلَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا هَبۡ لَنَا مِنۡ أَزۡوَٰجِنَا وَذُرِّيَّٰتِنَا قُرَّةَ أَعۡيُنٖ وَٱجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِينَ إِمَامًا ٧٤ ﴾ [الفرقان: ٧٣]

(১৪) ‘হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান করুন যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে। আর আপনি আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানিয়ে দিন’।[14]

১৫- ﴿ رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لَنَا وَلِإِخۡوَٰنِنَا ٱلَّذِينَ سَبَقُونَا بِٱلۡإِيمَٰنِ وَلَا تَجۡعَلۡ فِي قُلُوبِنَا غِلّٗا لِّلَّذِينَ ءَامَنُواْ رَبَّنَآ إِنَّكَ رَءُوفٞ رَّحِيمٌ ١٠ ﴾ [الحشر: ١٠]

(১৫) ‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে ও আমাদের ভাই যারা ঈমান নিয়ে আমাদের পূর্বে অতিক্রান্ত হয়েছে তাদেরকে ক্ষমা করুন; এবং যারা ঈমান এনেছিল তাদের জন্য আমাদের অন্তরে কোন বিদ্বেষ রাখবেন না; হে আমাদের রব, নিশ্চয় আপনি দয়াবান, পরম দয়ালু।[15]

১৬-﴿ رَبَّنَآ أَتۡمِمۡ لَنَا نُورَنَا وَٱغۡفِرۡ لَنَآۖ إِنَّكَ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٞ ٨ ﴾ [التحريم: ٨]

(১৬) ‘হে আমাদের রব, আমাদের জন্য আমাদের আলো পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন; নিশ্চয় আপনি সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান।’ [16]

১৭-﴿ رَبَّنَآ إِنَّنَآ ءَامَنَّا فَٱغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ ١٦ ﴾ [ال عمران: ١٦]

(১৭) ‘হে আমাদের রব, নিশ্চয় আমরা ঈমান আনলাম। অতএব, আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা করুন’।[17]

১৮-﴿رَبِّ ٱجۡعَلۡ هَٰذَا ٱلۡبَلَدَ ءَامِنٗا وَٱجۡنُبۡنِي وَبَنِيَّ أَن نَّعۡبُدَ ٱلۡأَصۡنَامَ ٣٥﴾ [ابراهيم: ٣٥]

(১৮) ‘হে আমার রব, আপনি এ শহরকে নিরাপদ করে দিন এবং আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে মূর্তি পূজা থেকে দূরে রাখুন’।[18]

১৯- ﴿ رَبَّنَا لَا تَجۡعَلۡنَا مَعَ ٱلۡقَوۡمِ ٱلظَّٰلِمِينَ ٤٧ ﴾ [الاعراف: ٤٧]

(১৯) ‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে যালিম কওমের অন্তর্ভুক্ত করবেন না’।[19]

২০- ﴿ حَسۡبِيَ ٱللَّهُ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۖ عَلَيۡهِ تَوَكَّلۡتُۖ وَهُوَ رَبُّ ٱلۡعَرۡشِ ٱلۡعَظِيمِ ١٢٩ ﴾ [التوبة: ١٢٩]

(২০) ‘আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। আমি তাঁরই উপর তাওয়াক্কুল করেছি। আর তিনিই মহাআরশের রব।’[20]

[1]. আরাফ ২৩।

[2]. নূহ : ২৮।

[3]. ইবরাহীম : ৪০-৪১।

[4]. মুমতাহিনা : ৪।

[5]. মুমতাহিনা : ৫।

[6]. ত্বা-হা : ২৫-২৭।

[7]. আলে-ইমরান : ৫৩।

[8]. ইউনুস : ৮৬।

[9]. আলে-ইমরান : ১৪৭।

[10]. মুমিনুন : ১১৮।

[11]. বাকারা : ২০১।

[12]. বাকারা : ২৮৬।

[13]. আলে-ইমরান : ৮।

[14]. ফুরকান : ৭৪।

[15]. হাশর : ১০।

[16]. তাহরীম : ৮।

[17]. আলে-ইমরান : ১৬।

[18]. ইবরাহীম : ৩৫।

[19]. আরাফ : ৪৭।

[20]. তওবা : ১২৯।
  • «اَللَّهُمَّ أَعِنِّا عَلَى ذِكْرِكَ وَشُكْرِكَ وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ»

(১) ‘হে আল্লাহ! তোমার যিকর করার, তোমার শুকরিয়া জ্ঞাপন করার এবং তোমার ইবাদত সঠিক ও সুন্দরভাবে সম্পাদন করার কাজে আমাকে সহায়তা কর।’[1]

  • «اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبُخْلِ، وَأُعُوذُ بِكَ مِنَ الْجُبْنِ، وَأَعُوذُ بِكَ من أَنْ أُرَدَّ إِلَى أَرْذَلِ الْعُمُرِ، وَأُعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الدُّنْيَا، وَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ».

(২) ‘হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় চাচ্ছি কৃপণতা থেকে এবং আশ্রয় চাচ্ছি কাপুরুষতা থেকে। আর আশ্রয় চাচ্ছি বার্ধক্যের চরম পর্যায় থেকে। দুনিয়ার ফিতনা-ফাসাদ ও কবরের আযাব থেকে।’[2]

  • «اَللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْماً كَثِيراً، وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ، وَارْحَمْنِي إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ»

(৩) ‘হে আল্লাহ, আমি আমার নিজের উপর অনেক বেশি জুলুম করেছি আর তুমি ছাড়া গুনাহ্সমূহ কেউই মাফ করতে পারে না। সুতরাং তুমি তোমার নিজ গুণে মার্জনা করে দাও এবং আমার প্রতি তুমি রহম কর। তুমি তো মার্জনাকারী ও দয়ালু।’[3]

  • «اَللَّهُمَّ حَبِّبْ إِلَيْنَا الإِِيمَانَ وَزَيِّنْهُ فِي قُلُوبِنَا، وَكَرِّهْ إِلَيْنَا الْكُفْرَ وَالْفُسُوقَ وَالْعِصْيَانَ، وَاجْعَلْنَا مِنَ الرَّاشِدِينَ، اَللَّهُمَّ تَوَفَّنَا مُسْلِمِينَ وَأَحْيِنَا مُسْلِمِينَ، وَأَلْحِقْنَا بِالصَّالِحِينَ غَيْرَ خَزَايَا وَلاَ مَفْتُونِينَ».

(৪) ‘হে আল্লাহ! তুমি ঈমানকে আমাদের নিকট সুপ্রিয় করে দাও এবং তা আমাদের অন্তরে সুশোভিত করে দাও। কুফর, অবাধ্যতা ও পাপাচারকে আমাদের অন্তরে ঘৃণিত করে দাও, আর আমাদেরকে হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করে নাও। হে আল্লাহ! আমাদেরকে মুসলমান হিসেবে মৃত্যু দাও। আমাদের মুসলমান হিসেবে বাঁচিয়ে রাখ। লাঞ্ছিত ও বিপর্যস্ত না করে আমাদেরকে সৎকর্মশীলদের সাথে সম্পৃক্ত কর।[4]

  1. «اَللَّهُمَّ رَحْمَتَكَ أَرْجُو، فَلاَ تَكِلْنِي إِلَى نَفْسِي طَرْفَةَ عَيْنٍ، وَأَصْلِحْ لِي شَأْنِي كُلَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ».

(৫) হে আল্লাহ! তোমারই রহমতের আকাঙ্ক্ষী আমি। সুতরাং এক পলকের জন্যও তুমি আমাকে আমার নিজের ওপর ছেড়ে দিয়ো না। তুমি আমার সমস্ত বিষয় সুন্দর করে দাও। তুমি ভিন্ন প্রকৃত কোনো মা‘বুদ নেই।[5]

  • «لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ الْحَلِيمُ الْعَظِيمُ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ رَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيْمِ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ رَبُّ السَّمَوَاتِ وَرَبُّ الأَرْضِ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ».

(৬) আল্লাহ ছাড়া কোনো মা‘বুদ নেই, যিনি সহনশীল, মহীয়ান। আল্লাহ ছাড়া কোনো মা‘বুদ নেই, যিনি সুমহান আরশের রব। আল্লাহ ছাড়া কোনো মা‘বুদ নেই। তিনি আকাশমণ্ডলীর রব, যমিনের রব এবং সুমহান আরশের রব।[6]

  • «اَللَّهُمَّ أَنْتَ الأَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الآخِرُ فَلَيْسَ بَعْدَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُونَكَ شَيْءٌ، اِقْضِ عَنِّي الدَّيْنَ وَأَغْنِنِي مِنَ الْفَقْرِ».

(৭) ‘হে আল্লাহ! তুমিই প্রথম, তোমার পূর্বে কিছু নেই। তুমিই সর্বশেষ, তোমার পরে কিছু নেই। তুমি সবার ওপর, তোমার ওপরে কিছুই নেই। তুমি সবচে’ কাছের, তোমার চেয়ে নিকটবর্তী কিছুই নেই; তুমি আমার ঋণ পরিশোধ করে দাও আমাকে দারিদ্র্যমুক্ত করে অমুখাপেক্ষী কর।’[7]

  • «اَللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ».

(৮) ‘হে আল্লাহ! তুমি তোমার হারাম বস্তু হতে বাঁচিয়ে তোমার হালাল বস্তু দিয়ে আমার প্রয়োজন মিটিয়ে দাও এবং তোমার অনুগ্রহ দ্বারা সমৃদ্ধ করে। তুমি ভিন্ন অন্য সবার থেকে আমাকে অমুখাপেক্ষী করে দাও।’[8]

  • «اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ».

(৯) ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় চাচ্ছি জাহান্নামের আযাব হতে, কবরের আযাব হতে, মসিহ দাজ্জালের অনিষ্ট হতে এবং জীবন মৃত্যুর ফেতনা হতে।’[9]

  • «اَللَّهُمَّ إِنِّي أَسْاَلُكَ بِأَنِّي أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ، وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفْوًا أَحَدٌ».

(১০) ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে চাই; কেননা আমি সাক্ষ্য দিই যে- তুমিই আল্লাহ। তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তুমি এক অদ্বিতীয়। সকল কিছুই যার মুখাপেক্ষী। যিনি জন্ম দেননি এবং জন্ম নেননি এবং যার সমকক্ষ কেউ নেই।’[10]

  • «اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ جَهْدِ الْبَلاَءِ، وَسُوءِ الْقَضَاءِ، وَمِنْ دَرَكِ الشَّقَاءِ، وَشَمَاتَةِ الأَعْدَاءِ».

(১১) ‘হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি বিপদের কষ্ট, নিয়তির অমঙ্গল, দুর্ভাগ্যের স্পর্শ ও বিপদে শত্রু উপহাস হতে।’[11]

  • «اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الشِّقَاقِ، وَالنِّفَاقِ، وَسُوءِ الأَخْلاَقِ».

(১২) ‘হে আল্লাহ! আমি সকল বিরোধ, কপটতা-মুনাফেকি এবং বদ চরিত্র হতে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’[12]

  • «اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي كُلَّهُ، دِقَّهُ وَجِلَّهُ، وَعَلاَنِيَتَهُ وَسِرَّهُ، وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ».

(১৩) ‘হে আল্লাহ! আমার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দাও ছোট গুনাহ, বড় গুনাহ, প্রকাশ্য ও গোপন গুনাহ, আগের গুনাহ, পরের গুনাহ।’[13]

  • «اَللَّهُمَّ اهْدِنَا فِيمَنْ هَدَيْتَ، وَعَافِنَا فِيمَنْ عَافَيْتَ، وَتَوَلَّنَا فِيمَنْ تَوَلَّيْتَ، وَبَارِكْ لَنَا فِيمَا أَعْطَيْتَ، وَقِنَا شَرَّ مَا قَضَيْتَ، إِنَّكَ تَقْضِي وَلاَ يُقْضَى عَلَيْكَ، وَإِنَّهُ لاَ يَذِلُّ مَنْ وَالَيْتَ،وَلا يَعزُّ مَن عَادَيتَ, تَبَارَكْتَ ربَّنَا وَتَعَالَيْتَ».

(১৪) ‘হে আল্লাহ! তুমি যাদেরকে হেদায়েত করেছ, আমাদেরকে তাদের অন্তর্ভুক্ত কর। তুমি যাদেরকে নিরাপদ রেখেছ আমাদেরকে তাদের দলভুক্ত কর। তুমি যাদের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছ, আমাদেরকে তাদের দলভুক্ত করো। তুমি আমাদেরকে যা দিয়েছ তাতে বরকত দাও। তুমি যে অমঙ্গল নির্দিষ্ট করেছ তা হতে আমাদেরকে রক্ষা করো। কারণ তুমিই তো ফয়সালা কর। তোমার ওপরে তো কেউ ফয়সালা করার নেই। তুমি যার অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছ, সে কোনো দিন অপমানিত হবে না এবং তুমি যার সাথে শত্রুতা করেছ, সে কখনো সম্মানিত হতে পাবে না। হে আমাদের রব! তুমি বরকতময় ও সুমহান।’[14]

  • «اَللَّهُمَّ اجْعَلْ فِي قَلْبِي نُورًا، وَفِي سَمْعِي نُورًا، وَفِي بَصَرِي نُورًا، وَمِنْ بَيْنِ يَدَيَّ نُورًا، وَمِنْ خَلْفِي نُورًا، وَعَنْ يَمِينِي نُورًا، وَعَنْ شِمَالِي نُورًا، وَمِنْ فَوْقِي نُورًا، وَمِنْ تَحْتِي نُورًا، وَأَعْظِمْ لِي نُورًا يَا رَبَّ الْعَالَمِينَ».

(১৫) ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার অন্তরে নূর প্রদান কর। আমার কর্ণে নূর দাও। আমার চোখে নূর দাও। আমার সম্মুখে নূর দাও। আমার পশ্চাতে নূর দাও। আমার ডানে নূর দাও। আমার বামে নূর দাও। আমার ওপরে নূর দাও। আমার নিচে নূর দাও। আর হে সৃষ্টিকুলের রব, আমার নূরকে তুমি প্রশস্ত করে দাও।’[15]

  • «يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَى دِينِكَ».

(১৬) হে অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী! তোমার দীনের ওপর আমার অন্তরকে অবিচল রাখ।[16]

[1]. হাকিম : ১/৪৯৯।

[2]. বুখারী : ৫৮৮৮।

[3]. বুখারী : ৫৮৫১।

[4]. আহমদ : ১৪৯৪৫।

[5]. আবূ দাউদ : ৪৪২৬।

[6]. আহমদ : ৩২৮৬।

[7]. মুসলিম : ৪৮৮৮।

[8]. তিরমিযী : ৩৪৮৬।

[9]. মুসলিম : ৯৩০।

[10]. তিরমিযী : ৩৩৯৭।

[11]. বুখারী : ৫৮৭১।

[12]. বুখারী : ৫৩৭৬।

[13]. মুসলিম : ৭৪৫।

[14]. তিরমিযী : ৪২৬।

[15]. মুসলিম : ১২৭৯।

[16]. তিরমিযী : ৩৪৪৪।

আইয়ামে তাশরীক : যিলহজ মাসের ১১, ১২, ১৩ তারিখকে আইয়ামে তাশরীক বলা হয়।

ইযতিবা : ডান বগলের নিচ দিয়ে চাদরের প্রান্ত বাম কাঁধের ওপর উঠিয়ে রাখা। এভাবে, ডান কাঁধ খালি রেখে উভয় প্রান্ত বাম কাঁধের ওপর ঝুলিয়ে রাখা।

ইয়াওমুত তারবিয়াহ : যিলহজ মাসের ৮ তারিখ মিনায় যাওয়ার দিন।

ইয়াওমু আরাফা : আরাফা দিবস। যিলহজ মাসের ৯ তারিখ সূর্য হেলে যাওয়ার পর থেকে সূযাস্ত পর্যন্ত ফরয হিসেবে আরাফায় অবস্থান করতে হয়। এ দিনকে ইয়াওমু আরাফা বলে।

ইহরাম : হারাম বা নিষিদ্ধ করে নেয়া। হজ ও উমরা পালনের উদ্দেশ্যে সুনির্দিষ্ট কিছু কথা ও কাজ নিজের ওপর নিষিদ্ধ করে নেয়ার সংকল্প করা।

ওয়াদি মুহাস্সার : এটি মুযদালিফা ও মিনার মাঝামাঝি একটি জায়গার নাম, যেখানে আবরাহা ও তার হস্তী বাহিনীকে ধ্বংস করা হয়েছিল। স্থানটি হেরেমের ভেতরে অবস্থিত কিন্তু ইবাদতের স্থান নয়। এখানে পৌঁছলে আল্লাহর গজব নাযিল হওয়ার স্থান হিসেবে তা দ্রুত অতিক্রম করা উচিত।

ওয়াদি উরনাহ : আরাফার মাঠের পাশে বিস্তৃত উপত্যকা, যা মুযদালিফার দিক থেকে আরাফায় প্রবেশের ঢোকার সময় প্রথম সামনে পড়ে।

উকূফ : অবস্থান করা। আরাফা ও মুযদালিফায় অবস্থান করাকে যথাক্রমে উকূফে আরাফা ও উকূফে মুযদালিফা বলা হয়।

কসর : সংক্ষিপ্ত করা। চার রাক‘আত বিশিষ্ট সালাতগুলো দু’রাক‘আত করে আদায় করা।

কিরান : মিলিয়ে করা। হজ ও উমরাকে একই সাথে আদায় করার নাম কিরান করা। এটি তিন প্রকার হজের অন্যতম।

জামরাহ : শাব্দিক অর্থ পাথর। মিনায় অবস্থিত শয়তানকে পাথর মারার স্থান। জামরার সংখ্যা তিনটি।

জাবাল : পাহাড়।

জাবালে আরাফা : আরাফায় অবস্থিত পাহাড়, যাকে জাবালে রহমতও বলে।

তাওয়াফ : প্রদক্ষিণ করা। কা‘বার চারপাশে প্রদক্ষিণ করাকে তাওয়াফ বলে।

তাওয়াফে ইফাযা বা তাওয়াফে যিয়ারাহ : ১০ যিলহজ কুরবানী ও হলক-কসরের পর থেকে ১২ যিলহজের মধ্যে কা‘বা শরীফের তাওয়াফ করাকে তাওয়াফে ইফাযা বা তাওয়াফে যিয়ারাহ বলে। এ তাওয়াফ ফরয।

তাওয়াফে কুদূম : কদূম অর্থ আগম করা। সুতরাং এর অর্থ আগমনী তাওয়াফ। মীকাতের বাইরের লোকেরা যখন হজ বা উমরার উদ্দেশ্যে কা‘বা শরীফে আসেন, তখন তাদেরকে বায়তুল্লাহ তথা কা‘বার সম্মানার্থে এ তাওয়াফটি করতে হয়। এটি সুন্নত।

তাওহীদ : আল্লাহর একত্ববাদ।

তাকবীর : বড় করা। ইসলামী পরিভাষায় ‘আল্লাহু আকবার’ বলাকে তাকবীর বলে।

তামাত্তু : উপকৃত হওয়া, উপকার নেয়া, ভোগ করা। একই সফরে প্রথমে উমরা আর পরে হজ আলাদাভাবে আদায় করাকে তামাত্তু বলে। এটি তিন প্রকার হজের অন্যতম।

তালবিয়া : সাড়া দেয়া। এখানে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে হজ বা উমরার উদ্দেশ্যে আগমনকারীকে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ বলে যে বাণী পাঠ করতে হয় তাকে তালবিয়া বলা হয়।

তাহলীল : লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা।

দম : রক্ত। হজ-উমরা আদায়ে ওয়াজিব ছুটে যাওয়া জনিত ভুল-ত্রুটি হলে তার কাফ্ফারা স্বরূপ একটি পশু যবেহ করে গরীব-মিসকীনদের মধ্যে বিলিয়ে দিতে হয়। এই পশু যবেহকে বলে দম দেয়া।

নহর : কুরবানী করা। উট কুরবানী করার জন্য দাঁড়ানো অবস্থায় তার গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। এ প্রক্রিয়াকে নহর বলে।

ফিদয়া : ক্ষতিপূরণ। সাধারণ কোন অপরাধ হয়ে গেলে তিনটি কাজের যেকোন একটি করতে হয়। ছয়জন মিসকীনকে এক কেজি দশ গ্রাম পরিমাণ খাবার প্রদান কিংবা তিনদিন সিয়াম পালন করা অথবা ছাগল যবেহ করে গরীব-মিসকীনদের মধ্যে বিতরণ করে দেয়া।

বাতনে ওয়াদী : বাতন অর্থ পেট বা মধ্যভাগ। আর ওয়াদী অর্থ উপত্যকা। তাই বাতনে ওয়াদী শব্দদু’টির অর্থ উপত্যকার মধ্যভাগ। সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝখানে নিচু উপত্যকা এলাকা ছিল। সে উপত্যকাটিকেই বাতনে ওয়াদী বলে।

মাকামে ইবরাহীম : ইবরাহীম আ.-এর দাঁড়ানোর স্থান। একটি বড় পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে ইবরাহীম আ. কা‘বা শরীফ নির্মাণ সম্পন্ন করেন। সে পাথরে তাঁর পদচিহ্ন পড়ে যায়, যা এখনো বর্তমান রয়েছে। কা‘বা শরীফের সামনে অবস্থিত এই পাথরকে মাকামে ইবরাহীম বলা হয়।

মাতাফ : তাওয়াফ করার স্থান। কা‘বা ঘরের চারদিকে সাদা পাথর বিছানো এলাকাকে মাতাফ বলা হয়। এখান দিয়েই তাওয়াফ করা হয়।

মাবরুর : মকবুল। হাদীসে মকবুল হজকে হজ্জে মাবরূর বলা হয়েছে।

মাশ‘আর : নিদর্শন সম্বলিত স্থান। আর মাশ‘আরুল হারাম বলতে মুযদালিফাকে বুঝানো হয়েছে।

মাস‘আ : সাঈ করার স্থান। সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যবর্তী জায়গা, যেখানে লোকজন সাঈ করে।

মুলতাযাম : লেপ্টে থাকার স্থান। হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামানীর মাঝখানে অবস্থিত কা‘বা ঘরের স্থান, যা দু’আ কবুলের স্থান হিসেবে পরিচিত। তাই এখানে সবসময় লোকজন লেগেই থাকে।

রওযা : বাগান। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ মিম্বর ও ঘরের মাঝখানের অংশকে রওযাতুম মিন রিয়াযিল জান্নাত বা জান্নাতের একটি বাগান বলে অভিহিত করেছেন।

রমল : ঘন পদক্ষেপে দ্রুত হাঁটা। হজ বা উমরার প্রথম তাওয়াফের সময় প্রথম তিন চক্কর ঘন পদক্ষেপে বীরদর্পে বাহু ঘুরিয়ে দ্রুত হাঁটতে হয়। এটাকে রমল বলে।

রুকন : স্তম্ভ। হজের রুকনের অর্থ হজের স্তম্ভসমূহ, যার ওপর হজের ভিত্তি। এর কোনটি বাদ গেলে হজ হয় না।

রুকনে ইয়ামানী : রুকনে ইয়ামানীর অর্থ কা‘বার সেই স্তম্ভ যেটি ইয়ামান দেশের দিকে স্থাপিত।

সাঈ : দৌড়ানো। এখানে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মাঝখানে সাতবার যাওয়া আসা করাকে বুঝায়।

হজ্জে আকবার : যিলহজের দশ তারিখের দিনকে কুরআনে ‘ইয়াওমুল হাজ্জিল-আকবার তথা বড় হজের দিন বলা হয়েছে। যিলহজের ৯ তারিখ তথা আরাফা দিবস যদি শুক্রবারে হয় তাহলে আরাফা দিবস ও জুমাবার- উভয়ের ফযীলত লাভ হয়। তবে এটি আকবরী হজ নামে যে লোক মুখে প্রচলিত তার কোন ভিত্তি নেই।

হলক-কসর : হজ বা উমরার কাজ সম্পন্ন হলে মাথার চুল কামাতে বা ছোট করতে হয়। মাথা কামানোকে হলক এবং চুল ছোট করাকে কসর বলা হয়।

হারাম : নিষিদ্ধ বস্তুকে হারাম বলে। আবার সম্মানিত স্থানকেও হারাম বলে। মক্কা ও মদীনার নির্দিষ্ট সীমারেখাকে হারাম বলে।

হালাল : বৈধ হওয়া। ইহরাম শেষ হওয়ার পর মুক্ত অবস্থাকে হালাল হওয়া বলে।

হিজর বা হাতীম : কা‘বা শরীফ সংলগ্ন উত্তর পাশে খোলা জায়গা, যা ইবরাহীম আ. কর্তৃক নির্মিত মূল কা‘বার অংশ ছিল।

হজের সফরে প্রয়োজনীয় আরবী শব্দসমূহ - খাদ্য ও পানীয়

খাদ্য ও পানীয়

বাংলা

আরবী

বাংলা

আরবী

পানি

মুইয়া

নাস্তা

ফুতুর

মিষ্টি পানি

মুইয়া হেলু

দুপুরের খাবার

গাদা

কলের পানি

মুইয়া মাকিনা

রাতের খাবার

আশা

বৃষ্টির পানি

মুইয়া মাতার

হুক্কা

শিশা

বরফের পানি

মুইয়া মুসাল্লায

সিগারেট

সিজারা

চাউল/ভাত

রুয্

চিনি

সুগ্গার

মাংস্

লাহাম

চা

শাই

গরুর মাংস

লাহমুল বাকার

কফি

গাহওয়া

মুরগীর মাংস

লাহমুদ্দাজাজ

পরাটা

মুতাববাখ

খাসীর মাংস

লাহাম মায়েয

মাখন

যুবদা

উটের মাংস

লাহমুল জামাল

পনীর

যুবন

মেষ/দুম্বার গোশ্ত

লাহমুল গানাম

তৈল

যাইত

ভূনা মাংস

লাহাম মাশাওয়ী

সালুন

ইদাম

বিরিয়ানী

রুয মাশওয়ী

আটা

দকীক

সাদা ভাত

রুয সালুল

কিমা

মাফ্রম্নম

পোলাও

রুয বুখারী

পান

তাম্বুল

দুধ

হালীব

চুন

নূরা

দধি

লাবান

মাথা

রা’স

রুটি

খুবয/আইশ

কলিজা

কিবদা

আলু গোশ্ত

লাহামবাতাতিস

গুরদা

কলব

শুরুয়া

শুরবা

ক্ষুধার্ত

জাওআন

পিপাসিত

আতশান

সমুদ্রের মাছ

হূতুলবাহার

ছোট মাছ

সামাক

নদীর মাছ

হূতুননাহার

মাছ

হূত

দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১০ পর্যন্ত, সর্বমোট ২৪ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 3 পরের পাতা »