ইসলামী জীবন-ধারা সফরের আদব আবদুল হামীদ ফাইযী ১ টি

নিজ ঘর-বাড়ি ছেড়ে লেখাপড়া, ব্যবসা, জিহাদ, হজ্জ-উমরাহ অথবা দাওয়াতের উদ্দেশ্যে বিদেশে সফর করা সহজ জিনিস নয়। সফর বড় কষ্টের, বড় ধৈর্যের। রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, ‘‘সফর হল আযাবের একটি টুকরা। সফর তোমাদেরকে (নিয়মিত) পানাহার ও নিদ্রা থেকে বিরত রাখে। সুতরাং নিজ প্রয়োজন শেষ হলেই পরিবারের প্রতি সত্বর প্রত্যাবর্তন কর।’’[1]

মহানবী (ﷺ) নিজ জীবনে বহু সফর করেছেন। সুতরাং সফরের আদবেও তিনিই আমাদের আদর্শ। আসুন আমরা সেই আদব জেনে আমল করি।

দূরের সফরে একা যাওয়া উচিত নয়। কথায় বলে ‘একা না বোকা।’ বিপদে-আপদে একজন সহযোগী সঙ্গী হলে সফর অনেক সহজ হয়।

এক ব্যক্তি সফর থেকে ফিরে এলে আল্লাহর রসূল (ﷺ) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘তোমার সঙ্গে কে ছিল?’’ লোকটি বলল, ‘কেউ ছিল না।’ এ শুনে আল্লাহর রাসুল (ﷺ) বললেন,

الرَّاكِبُ شَيْطَانٌ وَالرَّاكِبَانِ شَيْطَانَانِ وَالثَّلاَثَةُ رَكْبٌ

‘‘একাকী সফরকারী শয়তান, দু’জন মিলে সফরকারীও দু’টি শয়তান। আর তিনজন মিলে সফরকারী হল (শয়তান মুক্ত) সফরকারী।’’[2]

শয়তান মু’মিনকে একা-দোকা পেয়ে কষ্ট দিতে ভারী সুযোগ ও অত্যন্ত মজা পায়। তাই একলা বা দোকলা সফরকারীকে শয়তান বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, জামাআতবদ্ধভাবে সফর করলে বিপদ-আপদে সহায়তা লাভ হয় এবং লাঘব হয় সফরের কষ্ট। রাসুল (ﷺ) বলেন, ‘‘একাকীত্বে কত কষ্ট তা যদি মানুষ যদি জানত, যেমন আমি জানি, তাহলে রাতে কোন সওয়ারী একাকী পথ চলত না।’’[3]

[1]. বুখারী তাওহীদ পাবঃ হা/১৮০৪, মুসলিম আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা হা/১৯২৭ প্রমুখ

[2]. আহমদ, আবূ দাঊদ হা/২৬০৭, তিরমিযী, হাকেম ২/১০২, সহীহুল জা’মে হা/৩৫২৪

[3]. বুখারী তাওহীদ পাবঃ হা/ ২৯৯৮ প্রমুখ