আর-রাহীকুল মাখতূম উহুদ যুদ্ধ (غَزْوَةُ أُحُدٍ) আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী (রহঃ) ১ টি
হামরাউল আসাদ অভিযান (غَزْوَةُ حَمْرَاءِ الْأَسَدِ‏):

এদিকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যুদ্ধে সৃষ্ট অবস্থার উপর গভীর চিন্তা করে সারা রাত কাটিয়ে দেন। তাঁর আশঙ্কা ছিল, যদি মুশরিকরা এ চিন্তা করে যে, যুদ্ধ ক্ষেত্রে তাদের পাল্লা ভারী থাকা সত্ত্বেও তারা কোন উপকার লাভ করতে পারেনি, তাহলে তারা অবশ্যই লজ্জিত হবে এবং রাস্তা হতে ফিরে এসে মদীনার উপর দ্বিতীয়বার আক্রমণ চালাবে এ জন্যে তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন যে, যে প্রকারেই হোক তাদের পশ্চাদ্ধাবন করতে হবে।

আহলে সিয়ারের বর্ণনায় রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উহুদ যুদ্ধের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ তৃতীয় হিজরীর ৮ই শাওয়াল রবিবারে সকালে ঘোষণা করেন যে, শত্রুদের মোকাবেলার জন্যে বের হতে হবে। সাথে সাথে তিনি এ ঘোষণাও দেন যে, ‏‏(‏لاَ يَخْرُجُ مَعَنَا إِلاَّ مَنْ شَهِدْ الْقِتَالَ‏)‏ যারা উহুদ যুদ্ধে শরীক ছিল শুধু তারাই যাবে। এর পরেও আব্দুল্লাহ ইবনু উবাই তাদের সাথে যাবার অনুমতি চাইলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে অনুমতি দিলেন না। এ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মদীনার মুসলিম পল্লীটি শয্যার উপর লাফিয়ে উঠলেন। সব শোক, সব সন্তাপ, সব জ্বালা, সব যন্ত্রণা বিস্মৃত হয়ে তাঁরা গত কালের রক্ত রঞ্জিত অস্ত্রগুলো তুলে নিলেন হাতে এবং উৎসাহের সাথে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর খিদমতে সমবেত হতে লাগলেন। দেখতে দেখতে মুসলিম বাহিনী মদীনা ত্যাগ করে গেলেন।

জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) যিনি উহুদ যুদ্ধে শরীক হওয়ার সুযোগ লাভ করেন নি, এ যুদ্ধে শরীক হওয়ার জন্য নাবী কারীম (ﷺ)-এর খিদমতে আরজ পেশ করলেন। তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) আমি চাচ্ছি যে, আপনি যে সকল যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করবেন আমিও যেন সে সকল যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করার সুযোগ লাভ করি। কিন্তু যেহেতু এ যুদ্ধে (উহুদ) আমার পিতা তাঁর সন্তানদের দেখাশোনার জন্য আমাকে বাড়িতে রেখে দেন সেহেতু আমি তাতে শরীক হতে পারিনি। অতএব, আমাকে অভিযানে অংশ গ্রহণ করার সুযোগ দান করা হোক।’ রাসূল কারীম (ﷺ) তাঁকে অনুমতি প্রদান করলেন।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আগের মতো রণসাজে সজ্জিত হয়ে ঘোড়ার পিঠে আরোহণ করে অগ্রগামী হয়ে চলতে থাকলেন। আর সবাই চলছিলেন পায়ে হেঁটে। কর্মসূচী অনুযায়ী মদীনা হতে আট মাইল দূরে হামরাউল আসাদ নামক স্থানে পৌঁছে তাঁরা শিবির স্থাপন করলেন।

এখানে অবস্থান কালে মা‘বাদ ইবনু আবূ মা‘বাদ খুযায়ী রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর খিদমতে হাজির হয়ে ইসলাম গ্রহণ করে। আবার এটাও কথিত আছে যে, সে শিরকের উপরেই প্রতিষ্ঠিত ছিল। কিন্তু সে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)’র শুভাকাঙ্ক্ষী ছিল। কেননা, খুযাআহ ও বনু হাশিমের মধ্যে বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক সাহায্যের চুক্তি ছিল। যাহোক, সে বলল, ‘হে মুহাম্মাদ (ﷺ)! আপনার ও আপনার সহচরদের ক্ষয় ক্ষতিতে আমি অত্যন্ত ব্যথিত হয়েছি। আমি কামনা করছিলাম যে, আল্লাহ আপনাদেরকে নিরাপদে রাখবেন। তার এ সহানুভূতি প্রকাশে খুশী হয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে বললেন, ‘তুমি আবূ সুফইয়ানের নিকট গমন কর এবং তাকে হতোদ্যম করে দাও।’

এদিকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যে আশঙ্কা করছিলেন যে, মুশরিকরা মদীনায় প্রত্যাবর্তনের কথা চিন্তা ভাবনা করবে তা ছিল সম্পূর্ণ সত্য।

মুশরিকরা মদীনা হতে ছত্রিশ মাইল দূরে ‘রাওহা’ নামক স্থানে পৌঁছে যখন শিবির স্থাপন করল তখন তারা পরস্পর পরস্পরকে তিরস্কার ও ভৎর্সনা করতে লাগল। তারা পরস্পর বলাবলি করতে লাগল যে, আমরা কোন কাজই করতে পারলাম না এবং আমাদের উদ্দেশ্য সফল হল না। আবূ সুফইয়ান, ইকরামা প্রভৃতি দলপতিগণ বলতে লাগল, ‘মুহাম্মাদ (ﷺ) আহত এবং তার অধিক সংখ্যক ভক্তই আঘাতে জর্জরিত, এ অবস্থায় মদীনা আক্রমণ না করে ফিরে যাওয়া আমাদের পক্ষে কোনক্রমেই যুক্তিসম্মত হচ্ছে না। মুসলিমগণকে সমূলে উৎপাটিত ও সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত করার জন্যই আমরা এত উদ্যোগ আয়োজন করলাম এবং সবকিছুই বিধ্বস্ত করে ফেললাম। এখন তার সুযোগ উপস্থিত হয়েছে, অথচ আমরা ফিরে যাচ্ছি, দু’দিন পরেই তারা আবারও সামলিয়ে উঠবে, তখন আমাদের উদ্দেশ্য সহজ সাধ্য হবে না। কেননা, তাদের শান-শওকত ও শক্তি কিছুটা খর্ব হলেও তাদের মধ্যে এখনো কিছু সংখ্যক লোক থেকে গেছে যারা আবার তোমাদের মাথাব্যথার কারণ হবে। অতএব, তোমাদের উচিত যে, মদীনায় ফিরে গিয়ে তাদের মূলোৎপাটন করে ফেলবে।

আবূ সুফইয়ান বিভিন্ন গোত্রের যে সমস্ত লোকদেরকে নানাভাবে প্রলুব্ধ করে নিজেদের দলে আনয়ন করেছিলেন তারা বলতে লাগল, ‘কী করতে এসেছিলাম আর কী করে যাচ্ছি। মদীনা আক্রমণ করে ধর্মের শত্রুদেরকে বিধ্বস্ত করে ফেলব, মদীনার সমস্ত ধন-সম্পদ লুটে নিব, তাদের যুবতী ও কুমারীদের সতীত্ব নষ্ট করব এবং যা খুশী তাই করব। কিন্তু এখন দেখছি এ সব কিছুই হল না। আমাদেরকে উল্টো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। তাই তারা সিদ্ধান্ত করল যে, মদীনা আক্রমণ করতেই হবে। উমাইয়ার পুত্র সাফওয়ান এর প্রতিবাদ করল বটে, কিন্তু কেউই তার কথা গ্রাহ্য করল না।

কিন্তু এ ধরণের কথাবার্তা থেকে ধারণা করা যায় যে, এটা ছিল মুশরিক কুরাইশদের একটি সাধারণ অভিমত। যারা উভয় পক্ষের শক্তি সামর্থ্য সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখত না। কিন্তু সাফওয়ান বিন উমাইয়া, যিনি একজন উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন, তিনি এ মতের বিরোধিতা করেন এবং বলেন, ‘হে লোক সকল! তোমরা এরূপ কাজ কর না। আমার ভয় হয় যে, মদীনার যারা উহুদ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে নি তারাও তোমাদের বিরুদ্ধে এ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করবে। তোমরা এ অবস্থায় ফিরে চল। এখন বিজয় রয়েছে তোমাদেরই। অন্যথায় আমার ভয় হয় যে, যদি এখন মদীনা আক্রমণ কর তাহলে বিপদে পড়ে যাবে। কিন্তু অধিক সংখ্যক লোকই এ মত গ্রহণ করল না এবং সিদ্ধান্ত হল যে, মদীনা আক্রমণ করতে হবে।

তখনো তারা শিবির ছেড়ে বের হয়নি এমন সময় মা’বাদ ইবনু আবি মা’বাদ খুযায়ী তথায় গিয়ে হাজির হল। মা’বাদের ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে আবূ সুফইয়ান কিছুই জানত না। তাই তাকে দেখেই আবূ সুফইয়ান সাগ্রহে বলে উঠলেন, ‘এ যে, মা’বাদ’। সংবাদ কী? মা’বাদ উত্তর দিল, ‘সংবাদ আর কী, এখনই সরে পড়।’ আবূ সুফইয়ান প্রশ্ন করলেন, ‘ব্যাপার কী, মুহাম্মাদ (ﷺ) সম্বন্ধে কোন সংবাদ আছে না কি?’ মা’বাদ জবাবে বলল, ‘আছে বৈ কি। মুহাম্মাদ (ﷺ) বিপুল আয়োজনে অগ্রসর হচ্ছেন। এবার মদীনার প্রত্যেক মুসলিমই যোগদান করেছে।’ এ কথা শুনে আবূ সুফইয়ান বললেন, ‘আরে সর্বনাশ! তুমি বলছ কী? তাদের অবশিষ্ট শক্তিটুকু বিনষ্ট করতে, তাদেরকে সমূলে উৎপাটিত করতে দৃঢ় সংকল্প করে আমরা মদীনার দিকে অগ্রসর হতে যাচ্ছি, মুহাম্মাদ (ﷺ) প্রত্যুষে আবার যুদ্ধ যাত্রা করেছে, এটাও কি সম্ভব? তুমি বলছ কী?’ মা’বাদ জবাব দিল ‘বলছি ভালই, এখনও মানে মানে সরে পড়। মুসলিম বাহিনী এসে পড়তে বেশী দেরী নেই, শীঘ্রই সরে পড়।’

আবূ সুফইয়ান তখন সকলকে মক্কার পথে যাত্রা করার আদেশ প্রদান করলেন। কুরাইশ বাহিনী আর কাল বিলম্ব না করে স্বদেশ অভিমুখে রওয়ানা হল। তবে আবূ সুফইয়ান একটা কাজ করল যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) যেন মুশরিকদের পশ্চাদ্ধাবন না করেন এ জন্যে তাদের পাশ দিয়ে গমনকারী আব্দুল ক্বায়স গোত্রের এক কাফেলার লোকদেরকে বলেন, ‘আপনারা মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে আমাদের একটি পয়গাম পৌঁছিয়ে দিবেন কি? আমি ওয়াদা করছি যে, আপনারা যখন মক্কা আসবেন তখন আমি এর বিনিময়ে আপনাদের উটগুলো যতো বহন করতে পারে ততো কিশমিস প্রদান করব।’

ঐ লোকগুলো বলল, ‘জ্বী হ্যাঁ পারব।’

আবূ সুফইয়ান তখন তাদেরকে বললেন, ‘মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে এ খবর পৌঁছে দিবেন যে, আমরা তাঁকে ও তাঁর সঙ্গীদেরকে খতম করে দেয়ার জন্যে দ্বিতীয়বার আক্রমণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।’

এরপর এ কাফেলা যখন হামরাউল আসাদে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এবং সাহাবায়ে কিরামের পাশ দিয়ে গমন করে তখন তাদেরকে আবূ সুফইয়ানের এ পয়গাম শুনিয়ে দেয় এবং বলে,

(‏إِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُوْا لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ‏ ‏إِيْمَاناً وَقَالُوْا حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ فَانقَلَبُوْا بِنِعْمَةٍ مِّنَ اللهِ وَفَضْلٍ لَّمْ يَمْسَسْهُمْ سُوْءٌ وَاتَّبَعُوْا رِضْوَانَ اللهِ وَاللهُ ذُوْ فَضْلٍ عَظِيْمٍ‏)‏‏ [‏آل عمران‏:‏ 173، 174‏]‏‏.‏

‘তোমাদের বিরুদ্ধে লোক (মুশরিকরা) জামায়েত হয়েছে, সুতরাং তোমরা তাদেরকে ভয় কর, কিন্তু এটা তাঁদের বিশ্বাস দৃঢ়তর করেছিল এবং তাঁরা বলেছিলেন, ‘আল্লাহই আমাদের জন্যে যথেষ্ট এবং তিনি কত উত্তম কর্ম বিধায়ক!’ তারপর তাঁরা আল্লাহর অবদান ও অনুগ্রহসহ ফিরে এসেছিলেন, কোন অনিষ্ট তাঁদেরকে স্পর্শ করে নি, এবং আল্লাহ যাতে সন্তুষ্ট তাঁরা তারই অনুসরণ করেছিলেন এবং আল্লাহ বড় অনুগ্রহশীল (সূরাহ আল-ইমরান (৩) : ১৭৩-১৭৪)

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) রবিবার হামরাউল আসাদে পৌঁছেছিলেন এবং সোমবার, মঙ্গলবার এবং বুধবার অর্থাৎ তৃতীয় হিজরীর ৯ই, ১০ই এবং ১১ই শাওয়াল তথায় অবস্থান করেছিলেন, এরপর মদীনায় ফিরে এসেছিলেন। ফিরবার পূর্বে আবূ উযযা জুমহী রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর হাতে বন্দী হয়। এ ছিল ঐ ব্যক্তি যে বদরের যুদ্ধে বন্দী হওয়ার পর দারিদ্র ও কন্যার আধিক্যের কারণে বিনা মুক্তিপণে মুক্তি পেয়েছিল। শর্ত ছিল, সে ভবিষ্যতে কখনও রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বিরুদ্ধে কাউকেও সাহায্য করবে না। কিন্তু সে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে কবিতার মাধ্যমে নাবী (ﷺ) ও সাহাবায়ে কিরামের বিরুদ্ধে জনগণকে উত্তেজিত করতে থাকে। অতঃপর উহুদ যুদ্ধে মুসলিমগণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যে সে নিজেও আগমন করে, তাকে গ্রেফতার করে যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)’র খিদমতে হাযির করা হয় তখন সে বলতে শুরু করে : ‘মুহাম্মাদ (ﷺ) আমার অপরাধ ক্ষমা করুন, আমার প্রতি অনুগ্রহ করুন এবং আমার শিশু সন্তানদের খাতিরে আমাকে ছেড়ে দিন। আমি অঙ্গীকার করছি যে, এরূপ অপরাধমূলক কাজ আর কখনও করব না।’ নাবী (ﷺ) উত্তরে বলেন,

‏‏(‏لَا تَمْسَحُ عَارِضِيْكَ بِمَكَّةَ بَعْدَهَا وَتَقُوْلُ ‏:‏ خَدَعْتُ مُحَمَّداً مَرَّتَيْنِ، لَا يُلْدَغُ الْمُؤْمِنُ مِنْ جُحْرٍ مَرَّتَيْنِ‏)

‘এখন এটা হতে পারে না যে, মক্কায় ফিরে গিয়ে নিজের কপালে হাত মেরে বলবে, ‘আমি মুহাম্মাদ (ﷺ)-কে দু’দুবার প্রতারিত করেছি। মু’মিনকে এক ছিদ্র হতে দু’বার দংশন করা হয় না।’ এরপর তিনি যুবাইর (রাঃ)-কে অথবা আ’সিম ইবনু সাবিত (রাঃ)-কে তার গর্দান উড়িয়ে দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। তাঁরা তাকে হত্যা করেন।

অনুরূপভাবে মক্কার একজন গুপ্তচরও মারা যায়। তার নাম ছিল মুআবিয়া ইবনু মুগীরা ইবনু আবিল আস। সে ছিল আব্দুল মালিক ইবনু মারওয়ানের নানা। উহুদের দিন মুশরিকরা যখন মক্কার দিকে ফিরে যায় তখন সে তার চাচাতো ভাই উসমান ইবনু আফফান (রাঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করতে আসে। উসমান (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট তার জন্যে নিরাপত্তা প্রার্থনা করেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে এ শর্তে নিরাপত্তা প্রদান করেন যে, সে যদি মদীনায় তিন দিনের বেশী অবস্থান করে তবে তাকে হত্যা করে দেয়া হবে। কিন্তু মদীনা যখন মুসলিম সৈন্য হতে শূন্য হয়ে গেল তখন এ লোকটি কুরাইশের গোয়েন্দাগিরি করার জন্য মদীনায় তিন দিনের বেশী থেকে যায়।

অতঃপর যখন মুসলিম সেনাবাহিনী মদীনায় ফিরে আসে তখন সে পালাবার চেষ্টা করে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যায়দ ইবনু হারিসাহ (রাঃ) ও আম্মার ইবনু ইয়াসার (রাঃ)-কে নির্দেশ দেন তারা যেন ঐ ব্যক্তির পিছু নিয়ে তাকে হত্যা করেন।[1]

হামরাউল আসাদ অভিযানের বর্ণনা পৃথক নামে দেয়া হলেও প্রকৃত পক্ষে এটা উহুদ যুদ্ধেরই একটা অংশ ও পরিশিষ্ট।

[1] উহুদ যুদ্ধ এবং হামরাউল-আসাদ অভিযানের বিস্তারিত বিবরণ যাদুল মা‘আদ ২য় খন্ড, ৯১-১০৮ পৃঃ, ইবুন হিশাম, ২য় খন্ড, ৬০-১২৯ পৃঃ, ফাতহুল বারী শারাহ, সহীহুল বুখারী, ৭ম খন্ড, ৩৪৫-৩৭৭ পৃ: এবং শায়খ আব্দুল্লাহর মুখতাসারুস সীরাহ ২৪২-২৫৭ পৃ: জমা করা হয়েছে। আরও অন্যান্য সূত্রগুলোর হাওয়ালা সংশ্লিষ্ট স্থানগুলোতে দেয়া হয়েছে।