আর-রাহীকুল মাখতূম উহুদ যুদ্ধ (غَزْوَةُ أُحُدٍ) আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী (রহঃ) ১ টি
মুশরিকদের শেষ আক্রমণ (آخِرُ هُجُوْمٍ قَامَ بِهِ الْمُشْرِكُوْنَ‏‏):

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন ঘাঁটির মধ্যে স্বীয় অবস্থানস্থলে পৌঁছে যান তখন মুশরিকরা মুসলিমগণকে ঘায়েল করার শেষ চেষ্টা করে। ইবনু ইসহাক্বের বর্ণনায় রয়েছে যে, যে সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঘাঁটির মধ্যে প্রবেশ করেছিলেন ঐ সময় আবূ সুফইয়ান ও খালিদ ইবনু ওয়ালীদের নেতৃত্বে মুশরিকদের একটি দল পাহাড়ের উপর উঠে পড়ে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঐ সময় দু‘আ করেন,

‏(‏اللهم إِنَّهُ لَا يَنْبَغِيْ لَهُمْ أَنْ يَعْلُوْنَا‏)‏

‘হে আল্লাহ! এরা যেন আমাদের হতে উপরে যেতে না পারে।’ অতঃপর উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এবং মুহাজিরদের একটি দল যুদ্ধ করে তাদেরকে পাহাড়ের উপর হতে নীচে নামিয়ে দেন।[1]

মাগাযী উমভীর বর্ণনায় রয়েছে যে, মুশরিকরা পাহাড়ের উপর চড়ে বসলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সা‘দ (রাঃ)-কে বলেন,(‏اجْنُبْهُمْ‏) ‘তাদের উদ্যম নষ্ট করে দাও অর্থাৎ তাদেরকে পিছনে সরিয়ে দাও।’ তিনি উত্তরে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আমি একাই কিভাবে তাদের উদ্যম নষ্ট করব?’ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তিন বার এ কথারই পুনারাবৃত্তি করেন। অবশেষে সা‘দ (রাঃ) স্বীয় তূণ হতে একটি তীর বের করেন এবং একটি লোকের উপর নিক্ষেপ করেন। লোকটি সেখানেই মৃত্যুবরণ করে। সা‘দ (রাঃ) বলেন, ‘পুনরায় আমি আমার তীর গ্রহণ করি। আমি ওটা চিনতাম। ওটা দ্বারা দ্বিতীয় এক ব্যক্তিকে মারলাম। সেও মারা গেল। তারপর আমি আবার ঐ তীর গ্রহণ করলাম এবং তৃতীয় ব্যক্তিকে মারলাম। তাঁরও প্রাণ নির্গত হয়ে গেল। অতঃপর মুশরিকরা নীচে নেমে গেল। আমি বললাম যে এটা বরকতপূর্ণ তীর। তার পর আমি ঐ তীর আমার তূণের মধ্যে রেখে দিলাম।’ এ তীর সারা জীবন সা‘দ (রাঃ)-এর কাছেই থাকে এবং তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর সন্তানদের নিকট থাকে। [2]

[1] ইবনু হিশাম, ২য় খন্ড ৮৬ পৃঃ।

[2] যাদুল মাআ’দ, ২য় খন্ড ৯৫ পৃঃ।