যেসব হাদিস আল্লাহ তা‘আলার সাথে সম্পৃক্ত করা হয় তাই হাদিসে কুদসি। হাদিসে কুদসিকে হাদিসে ইলাহি, অথবা হাদিসুর রাব্বানি ইত্যাদি বলা হয়। কারণ, এসব হাদিসের সর্বশেষ স্তর আল্লাহ তা‘আলা। লেখক এ প্রকার বর্ণনা করেননি, সম্পূরক হিসেবে আমরা তার আলোচনা করছি।

قُدُس শব্দের আভিধানিক অর্থ পবিত্র। تقديس শব্দের অর্থ আল্লাহর পবিত্রতা। ইরশাদ হচ্ছে:

﴿ وَنَحۡنُ نُسَبِّحُ بِحَمۡدِكَ وَنُقَدِّسُ لَكَۖ ٣٠ ﴾ [البقرة: ٣٠]

“আমরা আপনার প্রশংসার তসবিহ পাঠ করি ও আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করি”। আল্লাহর এক নামقُدُّوس অর্থ পবিত্র অথবা বরকতময় অথবা তিনি পবিত্র বৈপরীত্য, সমকক্ষ ও সৃষ্টিজীবের সাদৃশ্য থেকে। البيت المقدَّس অর্থ ‘শির্ক থেকে পবিত্র ঘর’। হাদিসে কুদসি যেহেতু মহান আল্লাহর পবিত্র সত্ত্বার সাথে সম্পৃক্ত, তাই এ প্রকার হাদিসকে الحـديث القُـــدُسي বলা হয়।

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআনুল কারিম ব্যতীত যে হাদিস তার রবের পক্ষ থেকে সরাসরি বর্ণনা করেন, অথবা জিবরীলের মাধ্যমে তার পক্ষ থেকে বর্ণনা করেন তাই হাদিসে কুদসি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু সংবাদ দিচ্ছেন, তাই এ প্রকারকে হাদিস বলা হয়। আল্লাহ তা‘আলার সাথে সম্পৃক্ত করা হয় হিসেবে কুদসি বলা হয়।

হাদিসে কুদসির ভাবার্থ আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে এতে কারো দ্বিমত নেই, তবে তার শব্দ প্রসঙ্গে ইখতিলাফ রয়েছে:

একদল আলেম বলেন: আল্লাহ তা‘আলা ইলহাম[1] অথবা ঘুম অথবা জিবরীল ‘আলাইহিস সালামের মাধ্যমে হাদিসে কুদসির ভাবার্থ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অহি করেন, তবে তার শব্দ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে। শুধু কুরআনুল কারিম শব্দসহ আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে, যার তিলাওয়াত করে আমরা তার ইবাদত আঞ্জাম দেই।

অপরদল আলেম বলেন, হাদীসে কুদসির ভাবার্থ ও শব্দ সবই আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে। কারণ আল্লাহ তা‘আলা কুরআন ব্যতীতও কথা বলেন। তবে এটি মু‘জিয বা অপারগকারী হিসেবে আল্লাহ নাযিল করেন নি, কিংবা এর মত আনার ব্যাপারে চ্যালেঞ্জও দেন নি। তাছাড়া এর তেলাওয়াতের মাধ্যমে সালাত আদায়ের বিষয়টিও নেই। এ অভিমতই বিশুদ্ধ।

[1] প্রত্যাদেশ।