কিতাবুত তাওহীদ ১ হতে ৬৭ তম অধ্যায় মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব ১ টি
৫০ - যেসব নামের মধ্যে গাইরুল­াহর ইবাদতের অর্থ নিহিত রয়েছে সে নাম রাখা হারাম।

১। আল্ল­াহ তাআলার বাণী .

فَلَمَّا آَتَاهُمَا صَالِحًا جَعَلَا لَهُ شُرَكَاءَ فِيمَا آَتَاهُمَا (الأعراف: 190)

‘‘অতঃপর আল্লাহ যখন উভয়কে একটি সুস্থ ও নিখূঁত সন্তান দান করলেন, তখন তারা তাঁর দানের ব্যাপারে অন্যকে তাঁর শরিক গণ্য করতে শুরু করলো।’’ (আ’রাফ . ১৯০)

ইবনে হযম (রহ:) বলেন, ঊলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন যে, এমন প্রত্যেক নামই হারাম, যা দ্বারা গাইরুল্লাহর ইবাদত করার অর্থ বুঝায়। যেমন, আবদু ওমর, আবদুল কা’বা এবং এ জাতীয় অন্যান্য নাম। তবে আবদুল মোত্তালিব এর ব্যতিক্রম। ইবনে আববাস (রাঃ) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘আদম আ. যখন বিবি হাওয়ার সাথে মিলিত হলেন, তখন হাওয়া গর্ভবতী হলেন। এমতাবস্থায় শয়তান আদম ও হাওয়ার কাছে এসে বললো, ‘আমি তোমাদের সেই বন্ধু ও সাথী, যে নাকী তোমাদের জান্নাত থেকে বের

করেছে। তোমরা অবশ্যই আমার আনুগত্য করো, নতুবা গর্ভস্থ সন্তানের মাথায় উটের শিং গজিয়ে দিবো, তখন সন্তান তোমার পেট কেটে বের করতে হবে। আমি অবশ্যই একাজ করে ছাড়বো।’’

শয়তান এভাবে তাদেরকে ভয় দেখাচ্ছিল। শয়তান বললো, তোমরা তোমাদের সন্তানের নাম ‘আব্দুল হারিছ’ রেখো। তখন তাঁরা শয়তানের আনুগত্য করতে অস্বীকার করলেন। অতঃপর তাদের একটি মৃত সন্তান ভূমিষ্ট হলো। আবারো বিবি হাওয়া গর্ভবতী হলেন। শয়তানও পুনরায় তাঁদের কাছে এসে পূর্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিলো। এর ফলে তাঁদের অন্তরে সন্তানের প্রতি ভালবাসা তীব্র হয়ে দেখা দিলো। তখন তাঁরা সন্তানের নাম ‘আবদুল হারিস’ রাখলেন। এভাবেই তাঁরা আল্ল­াহ প্রদত্ত নেয়ামতের মধ্যে তাঁর সাথে শরিক করে ফেললেন। এটাই হচ্ছে جعلا له شركاء فيما أتاهما এ আয়াতের তাৎপর্য (ইবনে আবি হাতিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন)

কাতাদাহ থেকে সহীহ সনদে অপর একটি হাদীসে বর্নিত আছে, তিনি বলেন, তাঁরা আল্ল­াহর সাথে শরিক করেছিলেন আনুগত্যের ক্ষেত্রে ইবাদতের ক্ষেত্রে নয়।’

মুজাহিদ থেকে সহীহ সনদে لئن أتينا صالحا এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বর্নিত আছে, তিনি বলেন, সন্তানটি মানুষ না হওয়ার আশংকা তাঁরা [পিতা-মাতা] করেছিলেন। ’

[হাসান, সাঈদ প্রমুখের কাছ থেকে এর অর্থ উল্লেখ করা হয়েছে।]

এ অধ্যায় থেকে নিম্ন বর্ণিত বিষয়গুলো জানা যায়ঃ

১। যেসব নামের মধ্যে গাইরুল­াহর ইবাদতের অর্থ নিহিত রয়েছে সে নাম রাখা হারাম।

২। সূরা আ’রাফের ১৯০ নং আয়াতের তাফসীর।

৩। আলোচিত অধ্যায়ে বর্ণিত শিরক হচ্ছে শুধুমাত্র নাম রাখার জন্য। এর দ্বারা হাকীকত [অর্থাৎ শিরক করা] উদ্দেশ্য ছিল না।

৪। আল্ল­াহর পক্ষ থেকে একটি নিখূঁত ও পূর্ণাঙ্গ কন্যা সন্তান লাভ করা একজন মানুষের জন্য নেয়ামতের বিষয়।

৫। আল্ল­াহর আনুগত্যের মধ্যে শিরক এবং ইবাদতের মধ্যে শিরকের ব্যাপারে সালাফে-সালেহীন পার্থক্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন।