যুলহজ্জ মাসের প্রথম নয় দিন রোযা রাখা মুস্তাহাব। যেহেতু আল্লাহ আয্যা অজাল্ল যুলহজ্জের প্রথম দশ দিনকে অন্যান্য দিনের উপর শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা দান করেছেন। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) বলেন। ‘‘এই দশদিনের মধ্যে কৃত নেক আমলের চেয়ে আল্লাহর নিকট অধিক পছন্দনীয় আর কোন আমল নেই।’’ (সাহাবাগণ) বললেন, ‘আল্লাহর পথে জিহাদও নয় কি?’ তিনি বললেন, ‘‘আল্লাহর পথে জিহাদও নয়। তবে এমন কোন ব্যক্তি (এর আমল) যে নিজের জান-মাল সহ বের হয় এবং তারপর কিছুও সঙ্গে নিয়ে আর ফিরে আসে না।[1]

আর রোযা হল একটি নেক আমল। সুতরাং তা পালন করাও এ দিনগুলিতে মুস্তাহাব।[2]

প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ও এই নয় দিনে রোযা পালন করতেন। তাঁর পত্নী ( হাফসাহ রাঃ) বলেন, ‘‘নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) যুল হজ্জের নয় দিন, আশূরার দিন এবং প্রত্যেক মাসের তিন দিন; মাসের প্রথম সোমবার এবং বৃহস্পতিবার রোযা রাখতেন।’’[3]

বাইহাকী ‘ফাযায়েলুল আওকাত’ এ বলেন, এই হাদীসটি আয়েশা (রাঃ) এর ঐ হাদীস অপেক্ষা উত্তম যাতে তিনি বলেন, ‘রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) কে (যুলহজ্জের) দশ দিনে কখনো রোযা রাখতে দেখিনি।’[4] কারণ, এ হাদীসটি ঘটনসূচক এবং তা আয়েশার ঐ অঘটনসূচক হাদীস হতে উত্তম। আর মুহাদ্দেসীনদের একটি নীতি এই যে, যখন ঘটনসূচক ও অঘটনসূচক দু’টি হাদীস পরস্পর-বিরোধী হয় তখন সমন্বয় সাধনের অন্যান্য উপায় না থাকলে ঘটনসূচক হাদীসটিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। কারণ কেউ যদি কিছু ঘটতে না দেখে তবে তার অর্থ এই নয় যে, তা ঘটেই নি। তাই যে ঘটতে দেখেছে তার কথাটিকে ঘটার প্রমাণস্বরূপ গ্রহণ করা হয়।

মোট কথা, যুলহজ্জ মাসের এই নয় দিনে রোযা রাখা মুস্তাহাব। ইমাম নওবী বলেন, ‘ঐ দিনগুলিতে রোযা রাখা পাকা মুস্তাহাব।’[5]

[1] (আহমাদ, মুসনাদ ৩/২৯৮, বুখারী ৯৬৯, আবূ দাঊদ ২৪৩৮, তিরমিযী ৭৫৭, ইবনে মাজাহ ১৭২৭নং)

[2] (আশ্শারহুল মুমতে’ ৬/৪৭১)

[3] (আবূ দাঊদ ২৪৩৭, সহীহ আবূ দাঊদ ২১২৯নং, নাসাঈ)

[4] (মুসলিম ১১৭৬, আবূ দাঊদ ২৪৩৯, তিরমিযী ৭৫৬, ইবনে মাজাহ ১৭২৯নং)

[5] (শরহুন নওবী ৮/৩২০)