উমরা শুরু করলে তা পূর্ণ করা ওয়াজিব। তবে হজ্জের মত উমরা আদায় আবশ্যিক কি-না সে ব্যাপারে ইমামদের মাঝে মতানৈক্য রয়েছে। ইমাম শাফেয়ি ও ইমাম আহমদ ইবনে হাম্মল (রাঃ) এর নিকট উমরা করা ওয়াজিব। প্রমাণ: পবিত্র কুরআনের বাণী ‘ وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ -তোমরা আল্লাহর জন্য হজ্জ ও উমরা পূর্ণ কর।’[1] এই অভিমতের পক্ষে বেশ কিছু হাদিসও রয়েছে তন্মধ্যে কয়েকটি হল নিম্নরূপ—

  1. এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)এর কাছে এসে বললেন আমার পিতা খুব বৃদ্ধ। তিনি হজ্জ-উমরা করতে অপারগ, এমনকী সফরও করতে পারেন না। উত্তরে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)বললেন, ‘তোমার পিতার পক্ষ থেকে হজ্জ ও উমরা পালন করো।[2]
  2. কোনো কোনো বর্ণনায় হাদিসে জিব্রিলের একাংশে এসেছে (وأن تحج وتعتمر -তুমি হজ্জ করবে ও উমরা করবে)[3]
  3. আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে জিজ্ঞাসা করলেন, নারীর ওপর কি জিহাদ ফরজ? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)বললেন, তাদের ওপর জিহাদ আছে যে জিহাদে কিতাল (যুদ্ধ) নেই। আর তা হল হজ্জ ও উমরা।[4]
  4. হাদিসে এসেছে, ‘হজ্জ ও উমরা দুটি ফরজ কর্ম। এতে কিছু যায় আসে না যে তুমি কোনটি দিয়ে শুরু করলে।’[5]

ইমাম আবু হানিফা (রহ.) এর মতানুসারে উমরা করা সুন্নত। প্রমাণ, জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিস: উমরা করা ওয়াজিব কি-না রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। উত্তরে তিনি বলেছেন, না; তবে যদি উমরা করো তা হবে উত্তম।[6]

উভয়পক্ষের দলিল প্রমাণ পর্যালোচনা করলে যারা ওয়াজিব বলেছেন তাদের কথাই প্রাধান্যপ্রাপ্ত বলে মনে হয়।

[1] - সূরা আল বাকারা : ১৯২

[2] - أتى رجل فقال : إن أبي شيخ كبير لا يستطيع الحج ولا العمرة ولا الظعن ، فقال : حج عن أبيك واعتمر (আবু দাউদ : হাদিস নং ১৮১০; তিরমিযী : হাদিস নং ৯৩০)

[3] -ইবনে হিববান : হাদিস নং ১৭৩ ; দারা কুতনী : ২/২৮২)

[4] - আহমদ : ২/১৬৫ ; ইবনে মাজাহ : হাদিস নং ২৯০১

[5] - إن الحج والعمرة فريضتان لا يضرك أيهما بدأت (দারা কুতনী : হাদিস নং ২১৭ )

[6] - أن النبي صلى الله عليه وسلم سئل عن العمرة ، أ واجبة هي ، فقال: لا ، و أن تعتمروا أفضل (আহমদ, তিরমিযি )