পবিত্র বাইবেল পরিচিতি ও পর্যালোচনা তৃতীয় অধ্যায় - বৈপরীত্য ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.) ১ টি
৩. ২. ৩. নোহের নৌকায় কত জোড়া প্রাণি ছিল?

পয়দায়েশ/ আদিপুস্তক ৬/১৯-২০: ‘‘সমস্ত জীবজন্তুর স্ত্রী-পুরুষ জোড়া জোড়া নিয়ে তাদের প্রাণ রক্ষা করার জন্য তোমার সঙ্গে সেই জাহাজে প্রবেশ করাবে; সব জাতের পাখি ও সব জাতের পশু ও সব জাতের ভূচর সরীসৃপ জোড়া জোড়া প্রাণ রক্ষা করার জন্য তোমার কাছে আসবে।’’ (মো.-১৩)

পয়দায়েশ/ আদিপুস্তক ৭/৮-৯: ‘‘নূহের প্রতি আল্লাহর হুকুম অনুসারে পাক ও নাপক পশুর, এবং পাখির ও ভূমিতে গমনশীল যাবতীয় জীবের স্ত্রী-পুরুষ জোড়া জোড়া করে জাহাজে নূহের কাছে প্রবেশ করলো।’’ (মো.-১৩)

পয়দায়েশ ৭/২-৩: ‘‘তুমি পাক-পবিত্র পশুর স্ত্রী-পুরুষ নিয়ে প্রত্যেক জাতের সাত জোড়া করে এবং নাপাক পশুর স্ত্রী-পুরুষ নিয়ে প্রত্যেক জাতের এক জোড়া করে, এবং আসমানের পাখিদেরও স্ত্রী-পুরুষ নিয়ে প্রত্যেক জাতের সাত জোড়া করে, সারা দুনিয়াতে তাদের বংশ রক্ষা করার জন্য নিজের সঙ্গে রাখ।’’ (মো.-১৩)

একই পুস্তকের তিনটা বক্তব্য। প্রথম ও দ্বিতীয় বক্তব্য থেকে জানা যায় যে, আল্লাহ নূহকে নির্দেশ দেন, সর্বজাতীয় পশু, সর্বজাতীয় পক্ষী ও সর্বজাতীয় ভূচর সরীসৃপ স্ত্রীপুরুষ জোড়া জোড়া সাথে নিতে এবং নূহ এ নির্দেশ পালন করেছিলেন।

কিন্তু তৃতীয় বক্তব্য থেকে জানা যায়, তিনি তাঁকে সকল পবিত্র পশু এবং সকল পাখি সাত জোড়া করে সাথে নিতে নির্দেশ দেন। আর অপবিত্র পশু জোড়া জোড়া করে সাথে নিতে নির্দেশ দেন। প্রথম দু বক্তব্যে ‘সাত জোড়ার’ কোনোরূপ উল্লেখ নেই; বরং পবিত্র ও অপবিত্র সকল পশু ও পাখি এক জোড়া করে নেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। পক্ষান্তরে তৃতীয় বক্তব্যে শুধু অপবিত্র পশু এক জোড়া করে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উভয় বক্তব্যের মধ্যে সুস্পষ্ট সাংঘর্ষিকতা বিদ্যমান।