কোনো কিছুর চারিদিকে আবর্তন করাকে তাওয়াফ বলা হয়। সাজদা ও সালাতের মতই তাওয়াফ একটি ইবাদত। সালাত-সাজদা ও তাওয়াফের মধ্যে পার্থক্য এই যে, বিশ্বের যে কোনো স্থানে থেকে কাবা ঘরের দিকে মুখ করে আল্লাহর জন্য সালাত ও সাজদার ইবাদত আদায় করা যায়। পক্ষান্তরে আবর্তন বা তাওয়াফের ইবাদত একমাত্র কাবা গৃহের চারিদিকে আবর্তনের মাধ্যমে আল্লাহর জন্য এ ইবাদত পালন করা যায়। মহান আল্লাহ বলেন:

وَلْيَطَّوَّفُوا بِالْبَيْتِ الْعَتِيقِ

‘‘এবং তারা তাওয়াফ করুক প্রাচীন গৃহের।’’[1]

কাবা ঘর ছাড়া অন্য কোথাও তাওয়াফ করা দুভাবে হতে পারে:

প্রথমত, মহান আল্লাহর প্রতি চূড়ান্ত ভালবাসা ও ভয়ের সাথে একমাত্র তাঁরই প্রতি চূড়ান্ত ভক্তি প্রকাশের জন্য, অর্থাৎ একমাত্র তাঁরই ইবাদতের উদ্দেশ্যে কাবা ঘর ছাড়া অন্য কোথাও তাওয়াফ করা। এরূপ করা কঠিন হারাম ও নিষিদ্ধ, যেমন মহান আল্লাহর ইবাদতের উদ্দেশ্যে কাবা ঘর ছাড়া অন্য কোনো কিছুর দিকে মুখ করে সালাত আদায় করা কঠিনভাবে নিষিদ্ধ ও হারাম। কেউ যদি কাবা ঘর ছাড়া অন্য কোনো দিকে মুখ করে সালাত আদায় অথবা কাবা ঘর ছাড়া অন্য কোনো কিছুকে আল্লাহর ইবাদত হিসেবে তাওয়াফ করা  বৈধ মনে করে তবে তা শিরক ও কুফর বলে গণ্য।

দ্বিতীয়ত, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো প্রতি ভক্তি প্রকাশের জন্য কোথাও তাওয়াফ করা। এরূপ করা সুস্পষ্টতই শিরক, যেমন আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো তা’যীম বা সম্মান প্রদর্শনের জন্য তাকে সামনে রেখে তার উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করা। লক্ষণীয় যে, শুধু আল্লাহকে খুশি করতে এবং তাঁরই প্রতি ভক্তি জানাতে কাবা ঘর ছাড়া অন্য কোনো বস্ত্তকে কেউই তাওয়াফ করে না। যারা কোনো কবর, স্মৃতিবিজড়িত স্থান বা অন্য কিছুর তাওয়াফ করেন তারা আল্লাহর ইবাদতের কথা বললেও পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রতি ভক্তি প্রদর্শন ও তাঁর নেক-নজর লাভেরও উদ্দেশ্য তাদের থাকে। নইলে কাবা ঘর বাদ দিয়ে অন্যত্র তাওয়াফ করবেন কেন?

[1] সূরা (২২) হাজ্জ: ২৮ আয়াত।