আমলনামা বলতে সেই কিতাবগুলো উদ্দেশ্য, যা ফেরেশতাগণ লিখে থাকেন এবং দুনিয়ার জীবনে প্রত্যেক মানুষের মৌখিক ও কর্মগত আমলসমূহ তাতে তারা সংরক্ষণ করেন। কিয়ামতের দিন আমলনামা প্রদান সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَكُلَّ إِنْسَانٍ أَلْزَمْنَاهُ طَائِرَهُ فِي عُنُقِهِ وَنُخْرِجُ لَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كِتَابًا يَلْقَاهُ مَنْشُورًا اقْرَأْ كِتَابَكَ كَفَى بِنَفْسِكَ الْيَوْمَ عَلَيْكَ حَسِيبًا﴾

‘‘প্রত্যেক মানুষের আমলনামা আমি তার গলায় লাগিয়ে দিবো এবং কিয়ামতের দিন আমি তার জন্য বের করবো এক কিতাব, যা সে পাবে উন্মুক্ত অবস্থায়। আমি বলবো, তোমার আমলনামা নিজেই পাঠ করো। আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব-নিকাশের জন্য যথেষ্ট’’। (সূরা বনী ইসরাঈল: ১৩-১৪)

আলেমগণ বলেছেন, طائره অর্থ হলো তার আমলসমূহ। কাউকে কিয়ামতের দিন আমলনামা দেয়া হবে ডান হাতে আবার কাউকে দেয়া হবে তার বাম হাতে। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَيَقُولُ هَاؤُمْ اقْرَءُوا كِتَابِيَه * إِنِّي ظَنَنتُ أَنِّي مُلاَقٍ حِسَابِيَه * فَهُوَ فِي عِيشَةٍ رَاضِيَةٍ  * فِي جَنَّةٍ عَالِيَةٍ * قُطُوفُهَا دَانِيَةٌ * كُلُوا وَاشْرَبُوا هَنِيئًا بِمَا أَسْلَفْتُمْ فِي الأَيَّامِ الْخَالِيَةِ * وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِشِمَالِهِ فَيَقُولُ يَالَيْتَنِي لَمْ أُوتَ كِتَابِيّه * وَلَمْ أَدْرِ مَا حِسَابِيَه * يَالَيْتَهَا كَانَتْ الْقَاضِيَةَ  * مَا أَغْنَى عَنِّي مَالِيَه * هَلَكَ عَنِّي سُلْطَانِيّه * خُذُوهُ فَغُلُّوهُ *  ثُمَّ الْجَحِيمَ صَلُّوهُ * ثُمَّ فِي سِلْسِلَةٍ ذَرْعُهَا سَبْعُونَ ذِرَاعًا فَاسْلُكُوهُ * إِنَّهُ كَانَ لاَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ * وَلاَ يَحُضُّ عَلَى طَعَامِ الْمِسْكِينِ * فَلَيْسَ لَهُ الْيَوْمَ هَاهُنَا حَمِيمٌ * وَلاَ طَعَامٌ إِلاَّ مِنْ غِسْلِينٍ * لاَ يَأْكُلُهُ إِلاَّ الْخَاطِئُونَ﴾

‘‘অতঃপর যার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে সে বলবে, এসো! তোমরাও আমার আমলনামা পড়ে দেখো। আমি জানতাম যে, আমাকে হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে। অতঃপর সে সুখী জীবন যাপন করবে সুউচ্চ জান্নাতে। তার ফলসমূহ অবনমিত থাকবে। বিগত দিনে তোমরা যা প্রেরণ করেছিলে তার প্রতিদান স্বরূপ তোমরা খাও এবং পান করো তৃপ্তি সহকারে। আর যার আমলনামা বাম হাতে দেয়া হবে, সে বলবে হায় আমাকে যদি আমলনামা না দেয়া হতো! আমি যদি না জানতাম আমার হিসাব! হায় আমার মৃত্যুই যদি শেষ পরিণতি হতো! আমার ধন-সম্পদ আমার কোনো উপকারে আসলোনা। আমার ক্ষমতাও বরবাদ হয়ে গেলো। ফেরেশতাদেরকে বলা হবে, একে ধর। অতঃপর গলায় বেড়ি লাগাও। অতঃপর নিক্ষেপ করো জাহান্নামে। অতঃপর তাকে এমন শিকল দিয়ে বাঁধো যার দৈর্ঘ হবে সত্তর গজ। নিশ্চয় সে মহান আল্লাহতে বিশ্বাসী ছিল না এবং মিসকীনকে খাদ্য দিতে উৎসাহিত করতো না। অতএব আজকের দিনে এখানে তার কোনো অন্তরঙ্গ বন্ধু থাকবে না এবং কোন খাদ্য নেই ক্ষতমিশ্রিত পুঁজ ব্যতীত। গুনাহগার ব্যতীত কেউ এটা খাবে না’’। (সূরা আল-হাক্কাহ: ১৯- ৩৭)