সহীহ দুআ ও যিক্‌র শুদ্ধ দুআ আবদুল হামীদ ফাইযী ১ টি

দুআ ও যিকরকারী মুসলিমদের জন্য একটি সতর্কতার বিষয় এই যে, কেউ যেন দুআ ও যিকর করতে গিয়ে বিদআত করে না বসে। দুআ বা যিকর কেবল তাই করা উচিত, যা আল্লাহ ও তার রসূল (ﷺ) শিক্ষা দিয়েছেন। অথবা কোন সাহাবী তার জীবনে তা আমল করে গেছেন। যা কিতাব ও সহীহ (ও হাসান) সুন্নাহতে অথবা কোন সাহাবার আমলে প্রমাণিত। যেহেতু সহীহ হাদীসের উপর আমলই মুসলিমদের জন্য যথেষ্ট। অন্যথা জাল ও দুর্বল হাদীস অথবা কোন আলেমের মনগড়া কল্পিত আরবী বাক্য দ্বারা যিকর বা দুআ বিদআত হবে। যেমন যদি কোন অনির্দিষ্ট দুআ বা যিকর কোন স্থান, সময়, নিয়ম, গুণ, সংখ্যা বা কারণ ইত্যাদি দ্বারা নির্দিষ্ট করে নেওয়া হয়, তাহলে তাও বিদআতরূপে পরিগণিত হবে। তাই সাধারণ ক্ষেত্রে ও নিজের প্রয়োজনের সময় দুআ করতেও কুরআনী দুআ, শুদ্ধ হাদীসে বর্ণিত দুআয়ে-রসূল অথবা শুদ্ধ প্রমাণিত কোন সাহাবার দুআ বেছে নেওয়া উচিত। কোন দুআ না পেলে হাম্দ ও দরূদ পড়ে নিজের ভাষার নিজের প্রয়োজন আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা চলে।

পক্ষান্তরে রসূল (ﷺ) যে স্থানে বা সময়ে দুআ করতে নির্দেশ দিয়েছেন বা নিজে দুআ করেছেন সেই দুআর সেই নিয়ম ও পদ্ধতি সকলের ক্ষেত্রে মান্য হবে। যেমন ইস্তিসকায়, আরাফায়, সাফা মারওয়ার উপর, ছােট ও মধ্যম জামরায় পাথর মারার পর, কুনুতে, কেউ দুআ করতে আবেদন করলে তার জন্য (কখনো কখনো) হাত তুলে দুআ করছেন। এসব ক্ষেত্রে হাত তুলে দুআ করা হবে। নামাযের পর দুআ বা যিকর। করেছেন বা করতে নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু হাত তুলেননি বা তুলতে নির্দেশ দেননি, দাফনের পর দুআ করতে নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু হাত তুলতে বলেননি বা নিজেও হাত তুলে ওখানে দুআ করেননি, বর-কনের জন্য দুআ করেছেন, কিন্তু হাত তুলেননি। তাই এ সব ক্ষেত্রে এবং যেখানে তার আদর্শ বর্তমান রয়েছে, সেখানে হাত তোলা দুআর আদব বলে আমরা হাত তুলতে পারি না। তাই তো জুমআর খুতবায় দুআ বিধেয় হলেও, হাত তুলে বিদআত। মাসরুক বলেন, ‘(জুমআর দিন ইমামমুক্তাদী মিলে যারা হাত তুলে দুআ করে) আল্লাহ তাদের হাত কেটে নিক।” (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবাহ ৫৪৯১ ও ৫৪৯৩ নং)

অনুরূপ কারণে জামাআত থাকতেও আল্লাহর রসূল (ﷺ) যেখানে জামাআতী দুআ করেননি বা কোন সাহাবাও করেননি, সেখানে আমরাও জামাআত করে দুআ করতে পারি না। তিনি যেমন করেছেন বা নির্দেশ দিয়েছেন, সাহাবায়ে কেরাম ঐ সব ক্ষেত্রে যেমন করেছেন, তেমনটাই করা আমাদের কর্তব্য। অনুসরণে আমাদের কল্যাণ এবং নতুনভাবে কিছু করাতেই বিপদ আছে। | আসুন, আমরা আগামীতে দেখি, আমাদের আদর্শ রসূল সু কোথায়, কোন সময়ে, কিভাবে, কতবার, কি দুআ বা যিক পড়েছেন বা পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছেন এবং সেই মতই আমল করি। যেগুলি প্রার্থনার সাধারণ দুআ সেগুলি আমাদের প্রয়োজন মত সময়ে অর্থের প্রতি লক্ষ্য করে বেছে নিয়ে প্রার্থনা করি।