মসজিদে ঢুকে ইমাম সাহেবকে রুকু’ অবস্থায় পেলে যা করতে হয়:

কেউ মসজিদে প্রবেশ করে ইমাম সাহেবকে রুকু’ অবস্থায় পেলে সে তাকবীরাতুল-ইহরাম বলে দ্রুত রুকু’তে চলে যাবে। কারণ, তখন তার জন্য রুকু’র তাকবীর বলা সুন্নাত। ওয়াজিব নয়। তবে সে যদি রুকু’র তাকবীর বলারও সুযোগ পায় তাহলে তা হবে তার জন্য অতি উত্তম।

এমন পরিস্থিতিতে নিম্নে বর্ণিত তিনটি অবস্থার কোনো একটি ঘটতে পারে:

১. সে এ ব্যাপারে নিশ্চিত যে, ইমাম সাহেব রুকু’ থেকে উঠার আগেই সে তাঁর সাথে রুকু’ পেয়েছে। তখন সে উক্ত রাকাত পেয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে এবং এমতাবস্থায় সূরা ফাতিহা পড়ার বাধ্যবাধকতা আর তার ওপর থাকবে না।

২. সে এ ব্যাপারে নিশ্চিত যে, সে রুকুতে যাওয়ার পূর্বেই ইমাম সাহেব রুকু’ থেকে উঠে গিয়েছেন। তখন সে উক্ত রাকাত পায় নি বলে ধরে নেওয়া হবে এবং তাকে উক্ত রাকাত কাযা করতে হবে।

৩. সে এ ব্যাপারে সন্দিহান যে, সে ইমাম সাহেবকে রুকু’তে পেয়েছে না কি পায়নি। এমতাবস্থায় সে যে দিকে তার মন বেশি ধাবিত হয় তাই ধরে নিবে। যদি তার প্রবল ধারণা হয় যে, সে ইমাম সাহেবকে রুকু’তেই পেয়েছে তাহলে সে উক্ত রাকাত পেয়েছে বলে ধরে নিবে। আর যদি এ ব্যাপারে তার প্রবল ধারণা হয় যে, সে ইমাম সাহেবকে রুকু’তে পায়নি তাহলে সে উক্ত রাকাত পায়নি বলে ধরে নিবে। এমতাবস্থায় যদি সালাতের কোনো অংশ তার ছুটে গিয়ে থাকে তা হলে সে এ জন্য সালামের পর দু’টি সাহু সাজ্দাহ দিবে। আর যদি সালাতের কোনো অংশ তার না ছুটে থাকে। তথা উক্ত রাকাতটি যদি সে সালাতের প্রথম রাকাত হয়ে থাকে। আর এ দিকে তার প্রবল ধারণা হলো যে, সে রাকাতটি পেয়েছে তাহলে তাকে আর কোনো সাহু সাজদাহ দিতে হবে না। কারণ, তার সালাত তখন তার ইমাম সাহেবের সালাতের সাথে পুরাপুরি সম্পৃক্ত। আর ইমাম সাহেব তাঁর মুক্তাদির অন্যান্য সকল সাহু সাজ্দাহ বহন করে থাকেন যদি তাঁর মুক্তাদির সালাতের কোনো রুকন না ছুটে থাকে। আর যদি রাকাত পাওয়া না পাওয়া নিয়ে তার সন্দেহ হয় এবং তার মন কোনো দিকে প্রবলভাবে ধাবিত হয় না। তা হলে সে রুকু’ পায় নি বলেই ধরে নিবে। কারণ, তখন তার ব্যাপারে এটিই নিশ্চিত এবং এটিই স্বাভাবিক। আর তখন সে সন্দেহের জন্য সালামের আগে দু’টি সাহু সাজদাহ দিবে।

এখানে একটি কথা বিশেষভাবে স্মরণ করিয়ে দিতে হয়। আর তা হচ্ছে এই যে, কেউ কেউ মসজিদে ঢুকে ইমাম সাহেবকে রুকু’ অবস্থায় পেলে সে উচ্চ স্বরে ঘন ঘন গলাখাঁকারি দেয় যেন ইমাম সাহেব তার জন্য রুকু’তে আরেকটু দেরি করেন অথবা বলে:

إِنَّ اللهَ مَعَ الصَّابِرِينَ “নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা ধৈর্যশীলদের সাথেই রয়েছেন”। আবার বা কেউ কেউ জমিনে খুব জোরে পদক্ষেপণ করে নিজের উপস্থিতি জানা ন দেয়। উক্ত কর্মকান্ডগুলো কখনো করা ঠিক নয়। কারণ, তা ইমাম সাহেব ও অন্যান্য মুক্তাদিদেরকে বিরক্ত করার শামিল।