দ্বীনী প্রশ্নোত্তর যাকাত আবদুল হামীদ ফাইযী ৩০ টি
দাওয়াতের কাজের জন্য, ইসলামী বই-পুস্তক ছেপে বা ক্যাসেট-সিডি তৈরি করে বিতরণের জন্য কি যাকাতের অর্থ ব্যবহার করা যায়?

ইসলামের দাওয়াতের কাজে যাকাতের অর্থ ব্যবহার করা যায়। যেহেতু তা আমভাবে যাকাতের একটি খাত ‘ফী সাবীলিল্লাহ’র অন্তর্ভুক্ত। ২২০

২২০ (ইবনে জিবরীন)
পেশাদার ভিক্ষুকদেরকে কি যাকাতের মাল দেওয়া যাবে?

যদি জানা যায় যে, যাঞাকারী একটি পেশাদার ভিক্ষুক, সে যাকাতের হকদার নয় এবং ভিক্ষা করা তাঁর বৈধও নয়, তাহলে তাকে ভিক্ষাও দেবেন না। ২২১
বিদায়ী হজ্জের সময়ে আল্লাহ্‌র রাসুল (সঃ) সাদকাহ বিতরণ করছিলেন। এমন সময় দুটি লোক এসে তাঁর কাছে যাঞা করল। তিনি লোক দুটির দিকে নজর তুলে পুনরায় নামিয়ে নিলেন। দেখলেন, তাঁরা উভয়ে কর্মক্ষম লোক। অতঃপর তিনি বললেন, “তোমরা যদি চাও, তাহলে আমি দিতে পারি। কিন্তু এ মালে কোন ধনী ও উপার্জনশীল কর্মঠ লোকের কোন অংশে নেই।” ২২২

২২১ (ইবনে জিবরীন), ২২২ (আবূ দাঊদ ১৬৩৩ নং)
একজন লোককে গরীব ভেবে যাকাতের অর্থ দিলাম। সেও হয়তো হাদিয়া ভেবে হাত পেতে নিয়ে নিল। কিন্তু পরবর্তীতে জানতে পারলাম, সে ধনী ব্যক্তি। এখন আমার যাকাত কি কবুল হবে?

কোন লোককে যাকাতের হকদার ভেবে যাকাত দেওয়ার পর যদি মনে হয় যে, সে আসলে যাকাতের হকদার নয়, তাহলে অজানার কারণে তা কবুল হয়ে যাবে। একদা (বনী ইসরাঈলের) এক ব্যক্তি এক রাতে অজান্তে এক চোরকে সাদকাহ করল। সকালে সে জানতে পারল যে সে চোর ছিল। কিন্তু তাতে সে আল্লাহ্‌র প্রশংসা করল। তারপরের রাতে আবার অজান্তে এক বেশ্যাকে সাদকাহ করল। সকাল বেলায় তা সে জানতে পেরে তাঁর জন্যও আলহামদুলিল্লাহ্‌ পড়ল। তৃতীয় রাতেও অজান্তে এক ধনীর হাতে সাদকাহ দিল। সকালে তা জানতে পেরে আল্লাহ্‌র প্রশংসা করল। অতঃপর (নবী অথবা স্বপ্নযোগে) তাকে বলা হল যে, তোমার সাদকাহ কবুল হয়ে গেছে। আর সম্ভবতঃ তোমার ঐ দান নিয়ে চোর চুরি করা থেকে বিরত হবে, বেশ্যা বেশ্যাবৃত্তি হতে তাওবাহ করবে এবং ধনী উপদেশ গ্রহণ করবে করে দান করতে শিখবে। ২২৩

২২৩ (বুখারী, মুসলিম ১০২২ নং)
কাউকে যাকাত দেওয়ার সময় সে যাকাতের হকদার কি না, তা জিজ্ঞাসা করা জরুরী কি?

দেওয়ার সময় সে যাকাতের হকদার কিনা জিজ্ঞাসা করা জরুরী নয়? তাতে মুসলিমের বেইজ্জত হয়। যদি আপনি আপনার প্রবল ধারণায় মনে করেন যে, অমুক যাকাতের হকদার, তাহলে তাকে দিয়ে ফেলুন। হাত পাতা ফকীর না হলেও সে মিসকীন হতে পারে। অতএব আপনার সাদকাহ আদায় ও কবুল হয়ে যাবে--ইনশাআল্লাহ।

কাউকে যাকাত দেওয়ার সময় তাকে জানিয়ে দেওয়া জরুরী কি?

যাকে যাকাতের মাল দিয়ে সাহায্য করা হবে, তাকে এ কথা জানানো জরুরী নয় যে, তা যাকাতের মাল। আপনি তাকে হকদার বুঝলে, তাকে দিন। সে যা মনে করে গ্রহণ করবে, করুক।

কোন শ্রেণীর ঋণগ্রস্থকে যাকাতের মাল দিয়ে সাহায্য করতে পারা যায়?

যে ব্যক্তি কোন বিধেয় বা বৈধ কাজ করতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়, তাকেই যাকাত দিয়ে সাহায্য করা যাবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি অবৈধ কাজ করতে গিয়ে; যেমন মদ খেতে অভ্যাসী হয়ে, বেশ্যাগমনে অথবা জুয়া খেলায় সর্বস্ব হারিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়, তাকে যাকাত দিয়ে সাহায্য করা যাবে না। ২২৪

২২৪ (ফিক্বাহুয যাকাত ২/৬২৫)
কাউকে ঋণ দেওয়ার পর সে যাকাতের হকদার হলে, যাকাতের নিয়তে ঋণ মউকুফ করে দেওয়া বৈধ কি?

কাউকে ঋণ দেওয়ার পর সে যাকাতের হকদার হলে, যাকাতের নিয়তে ঋণ মউকুব করে দেওয়া বৈধ কি না---এ বিষয়ে উলামাদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। অনেকে বলেছেন, নিজের টাকা বাঁচানোর উদ্দেশ্যে এমন করা বৈধও নয়। কিন্তু অন্যান্য অনেকে বলেছেন, যে, যদি সত্যিই সে যাকাতের হকদার হয়, তাহলে তাঁর ঋণ মওকুব করে, যাকাত থেকে শোধ করা হলে, তাকে এ কথা জানিয়ে দিলে এমন কাজ বৈধ। আর আল্লাহ্‌ই অধিক জানেন। ২২৫

২২৫ (ফিক্বাহুয যাকাত ২/৮৪৯)
আমি একজন প্রবাসী। আমার যাকাত কি আমার স্বদেশের মানুষদেরকে দিতে পারব?

যাকাত স্থানীয় হকদারকে দেওয়াই উত্তম। তবে সেখানে যদি হকদার না থাকে অথবা অন্য জায়গায় হকদার বেশি হকদার হয়, তাহলে সেখানে দেওয়া যায়। তাতে কোন বাধা নেই। ২২৬ (ইবনে উষাইমীন, ইবনে জিবরীন)

আমার মা পৃথক থাকে। আমি কি আমার মা-কে যাকাত দিতে পারি?

মা-কে যাকাত দেওয়া বৈধ নয়। মায়ের ভরণপোষণ করা তো ছেলের জন্য ওয়াজেব। আর তা হবে তাঁর পকেট থেকে। অনুরূপ বাপ, স্ত্রী ও ছেলেকে যাকাত দেওয়া যাবে না। ২২৭ (ইবনে বায)

আমার স্বামী বিদেশে পড়াশুনা করে। কিন্তু তাঁর অর্থের বড় অভাব। আমি কি আমার মালের যাকাত তাকে দিতে পারি?

স্ত্রী তাঁর স্বামীকে প্রয়োজনে যাকাত দিতে পারে। যেহেতু স্বামীর ভরণপোষণ করা স্ত্রীর উপর ওয়াজেব নয়।

দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১০ পর্যন্ত, সর্বমোট ৩০ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 3 পরের পাতা »