৩৭ আল-আ'লিইউ العلي
অর্থঃ উচ্চ-মর্যাদাশীল
✸ Al-'Ali
- The One who is clear from the attributes of the creatures.
- The most high, the exalted.

আল-‘আলা: আল-আ‘লীয়ু (সুউচ্চ)[1] আল-আ‘লা (সুমহান)[2]:

আল্লাহর সুন্দর নামসমূহের মধ্যে একটি নাম হলো আল-আ‘লীয়ু আল-আ‘লা। কেননা সর্বদিক বিবেচনায় সব ধরণের বড়ত্ব, উচুঁ মর্যাদা একমাত্র আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত, তিনি সত্ত্বাগত দিক থেকে উচুঁ[3] এবং তিনি সমস্ত সৃষ্টির উপরে তাঁর আরশে আছেন, তিনি সৃষ্টির সাদৃশ নয়; তাদের বিপরীত, এতদ্বসত্ত্বেও তিনি তাদের সব কিছু অবগত আছেন, তাদের সব কিছু দেখেন, তাদের প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য যাবতীয় কার্য পরিচালনা করেন, তিনি তাঁর তাকদীরি বিধিবিধান, মহাবিশ্বের পরিচালনা ও শর‘ঈ বিধানের ব্যাপারে কথক (কথা বলেন)।[4]

তিনি উচুঁ ক্ষমতা ও মর্যাদা গুণে গুণান্বিত। সৃষ্টির কারো গুণের সাথে তাঁর সুউচ্চ মর্যাদা ও বড়ত্বের তুলনা করা যায় না; সমস্ত সৃষ্টি তাঁর কোনো একটি গুণের সামান্য কোন দিকও বেষ্টন করতে সক্ষম হবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿وَلَا يُحِيطُونَ بِهِۦ عِلۡمٗا١١﴾ [طه: ١١٠]

“তারা (সৃষ্টিকুল) জ্ঞান দিয়ে তাঁকে বেষ্টন করতে পারবে না।” [সূরা ত্বা-হা, আয়াত: ১১০]

অত:এব, জানা গেল যে, তাঁর সমস্ত গুণাবলীতে সৃষ্টিকুল তাঁর অনুরূপ ও সমকক্ষ নয়। তাঁর রয়েছে প্রভাব ও দমনের গুণ; কেননা তিনি কাহহার তথা দমনকারী ও ও নিয়ন্ত্রণকারী, যিনি তাঁর ইজ্জত ও বড়ত্বে সমস্ত সৃষ্টিকে দমন করে রাখেন। সৃষ্টিকুলের ভাগ্য তাঁরই হাতে। তিনি যা চান তা বাঁধা দেওয়ার কেউ নেই। আর তিনি যা চান না তা কখনো হবে না; যদিও সৃষ্টিকুল একত্রিত হয়ে সেটি করতে চেষ্টা করেন আল্লাহ না চাইলে তা কখনোই হবে না। আবার তিনি তাঁর ইচ্ছায় যেটি করতে চান তা সৃষ্টিকুল সকলে মিলে বাঁধা দিলেও তা প্রতিহত করতে পারবে না। কেননা তাঁর রয়েছে পূর্ণাঙ্গ শক্তি, ইচ্ছা বাস্তবায়নের পরিপূর্ণ ক্ষমতা এবং সৃষ্টিকুল সবদিক থেকেই তাঁর প্রতি মুখাপেক্ষী। [5]

তাঁর সমস্ত বড়ত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব, অহংকার, মর্যাদা, সৌন্দর্য ও যাবতীয় পূর্ণতার গুণাবলী সহকারে তিনি আরশে উঠেছেন এবং সমস্ত সম্রাজ্য বেষ্টন করে রেখেছেন।[6]


[1] এ নামের দলিল হলো আল্লাহ তা‘আলার নিম্নোক্ত বাণী,

﴿وَلَا يَ‍ُٔودُهُۥ حِفۡظُهُمَاۚ وَهُوَ ٱلۡعَلِيُّ ٱلۡعَظِيمُ٢٥٥﴾ [البقرة: ٢٥٥]

“এবং এ দু’টোর (আসমানসমূহ ও জমিন) সংরক্ষণ তাঁর জন্য বোঝা হয় না। আর তিনি সুউচ্চ, মহান।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৫৫]

[2] এ নামের দলিল হলো আল্লাহ তা‘আলার নিম্নোক্ত বাণী,

﴿سَبِّحِ ٱسۡمَ رَبِّكَ ٱلۡأَعۡلَى١﴾ [الاعلى: ١]

“আপনি আপনার সুমহান রবের নামের তাসবীহ পাঠ করুন।” [সূরা আল-আ‘লা, আয়াত: ১]

[3] আল-হাক্কুল ওয়াদিহ আল-মুবীন, পৃ. ২৬।

[4] তাওদীহুল কাফিয়া আশ-শাফিয়া, পৃ. ১১৬।

[5] আল-হাক্কুল ওয়াদিহ আল-মুবীন, পৃ. ২৬, ২৭।

[6] আত-তাফসীর, ৫/৬২৩-৬২৪; আল-খুলাসা, পৃ. ১৮৭।