অর্থঃ গুনগ্রাহী, সুবিবেচক
- The One who gives a lot of reward for a little obedience.
- The Grateful, the Thankful
ٱلشَّكُورُ | আশ-শাকূর (গুণগ্রাহী, সুবিবেচক)[1] | Ash-Shakūr | The Most Appreciative
আল্লাহর নামসমূহের মধ্যে আশ-শাকির (পুরস্কার দানকারী, শুকরিয়াকারী) ও আশ-শাকূর (গুণগ্রাহী, সুবিবেচক)। তিনি বান্দার ইখলাসের সাথে স্বল্প আমলেরও পুরস্কার দান করেন, বান্দার অনেক দোষ-ত্রুটি ও গুনাহ মাফ করে দেন, কেউ উত্তমরূপে সৎকাজ করলে তিনি তার কাজের প্রতিদান বিনষ্ট করেন না; বরং তিনি বহুগুণে অগণিতভাবে তার আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি করে দেন। তাঁর পুরস্কারের ধরণ হলো, তিনি বান্দার কাজের বিনিময়ে এর সাওয়াব দশ থেকে সাতশত গুণ বরং যাকে ইচ্ছা এর চেয়েও অধিক দান করেন। তিনি বান্দাকে কখনও দুনিয়াতেও তাৎক্ষণিক পুরস্কার দান করেন। বান্দার আমলের কারণে তাদেরকে পুরস্কার দেওয়া আল্লাহর উপর অত্যাবশ্যকীয় না হওয়া সত্ত্বেও তিনি নিজের দয়া ও বদান্যতার কারণে তাদেরকে পুরস্কার দেওয়া নিজের উপর ওয়াজিব করে নিয়েছেন। কোন আমলকারী উত্তমরূপে ইখলাসের সাথে তাঁর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আমল করলে তিনি তার আমল নষ্ট করেন না।[2]
কোন বান্দা তাঁর আদেশ মান্য করলে, তাঁর আনুগত্য করলে তিনি তাকে সে কাজে সাহায্য করেন, তিনি তার প্রশংসা করেন, গুণগান করেন, তার অন্তরে নূর, ঈমান ও প্রশস্ততা দান করেন। তার শারীরিক শক্তি সামর্থ বৃদ্ধি করে দেন, প্রতিটি কাজে তিনি বরকত ও সম্মৃদ্ধি দান করেন এবং আরো কাজ করার তাওফিক দান করেন।
এছাড়াও তিনি বান্দাকে তার কাজের বিনিময়ে পরকালীন অফুরন্ত পূর্ণ সাওয়াব দান করেন, যা কখনও শেষ হওয়ার নয়। বান্দার প্রতি আল্লাহর শুকরিয়ার আরেকটি ধরণ হলো, বান্দা আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোন কিছু ত্যাগ করলে তিনি এর বিনিময়ে তার চেয়ে উত্তম কিছু দান করেন। বান্দা তাঁর দিকে এক বিঘত পরিমাণ এগিয়ে আসলে (নিকটবর্তী হলে) তিনি তার প্রতি এক হাত পরিমাণ এগিয়ে আসেন, বান্দা এক হাত পরিমাণ এগিয়ে আসলে তিনি তার দিকে দুহাত পরিমাণ এগিয়ে আসেন। বান্দা তাঁর দিকে হেঁটে আসলে তিনি তার দিকে দৌড়ে যান। কেউ আমল করলে তিনি তার প্রতিদান বহগুণে বৃদ্ধি করে দেন।[3]
[1] এ নামের দলিল হলো আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণী,
﴿إِن تُقۡرِضُواْ ٱللَّهَ قَرۡضًا حَسَنٗا يُضَٰعِفۡهُ لَكُمۡ وَيَغۡفِرۡ لَكُمۡۚ وَٱللَّهُ شَكُورٌ حَلِيمٌ١﴾ [التغابن : ١٧]
“যদি তোমরা আল্লাহকে উত্তম ঋণ দাও, তিনি তা তোমাদের জন্য দ্বিগুন করে দিবেন এবং তোমাদের ক্ষমা করে দিবেন। আল্লাহ গুণগ্রাহী, পরম ধৈর্যশীল।” [সূরা আত-তাগাবুন, আয়াত: ১৭]
[2] তাওদীহুল কাফিয়া আশ-শাফিয়া, পৃ. ১২৫-১২৬; আল-হাক্কুল ওয়াদিহ আল-মুবীন পৃ. ৭০।
[3] আত-তাফসীর, ১/১৮৫ ও ৫/৬৩০।