بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
সূরাঃ ৭৫/ আল-ক্বিয়ামাহ | Al-Qiyama | سورة القيامة আয়াতঃ ৪০ মাক্কী
৭৫:১ لَاۤ اُقۡسِمُ بِیَوۡمِ الۡقِیٰمَۃِ ۙ﴿۱﴾
لا اقسم بیوم القیمۃ ۙ۱

আমি কসম করছি কিয়ামতের দিনের! আল-বায়ান

আমি কসম করছি ক্বিয়ামতের দিনের, তাইসিরুল

আমি শপথ করছি কিয়ামাত দিবসের। মুজিবুর রহমান

I swear by the Day of Resurrection Sahih International

১. আমি শপথ করছি কিয়ামতের দিনের(১),

(১) কারও বিরোধী মনোভাব খন্ডন করার জন্যে শপথ করা হলে শপথের পূর্বে لا ব্যবহৃত হয়। আরবী বাক-পদ্ধতিতে এই ব্যবহার প্রসিদ্ধ ও সুবিদিত। এ শব্দ দ্বারা বক্তব্য শুরু করাই প্রমাণ করে যে, আগে থেকে কোন বিষয়ে আলোচনা চলছিল যার প্রতিবাদ করার জন্য এ সূরা নাযিল হয়েছে। অর্থাৎ তোমরা যা বলছে তা ঠিক নয়। আমি কসম করে বলছি, প্রকৃত ব্যাপার হচ্ছে এটি। অর্থাৎ কেয়ামত অবশ্যম্ভাবী। [দেখুন: ইবন কাসীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

(১) আমি শপথ করছি কিয়ামত দিবসের। [1]

[1] لاَ أُقْسِمُ তে لاَ হরফটি অতিরিক্ত। আর এটা আরবী বাকপদ্ধতির বিশেষ রীতি। যেমন,{ مَا مَنَعَكَ أَلاَّ تَسْجُدَ} (সূরা আ’রাফ ১২ আয়াত) {لِئَلاَّ يَعْلَمَ أَهْلُ الْكِتَابِ} (সূরা হাদীদ ২৯ আয়াত) আরো অন্যান্য সূরাতেও এইরূপ ব্যবহার হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, এই শপথের পূর্বে কাফেরদের কথার খন্ডন করা হয়েছে। তারা বলত যে, মরণের পর আর কোন জীবন নেই। لاَ এর দ্বারা বলা হল যে, তোমরা যেমন বলছ, ব্যাপারটা তেমন নয়। আমি কিয়ামতের দিনের কসম খেয়ে বলছি। আর কিয়ামতের দিনের কসম খাওয়ার উদ্দেশ্য তার গুরুত্ব ও মাহাত্ম্যকে স্পষ্ট করা।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৭৫:২ وَ لَاۤ اُقۡسِمُ بِالنَّفۡسِ اللَّوَّامَۃِ ؕ﴿۲﴾
و لا اقسم بالنفس اللوامۃ ۲

আমি আরো কসম করছি আত্ম-ভৎর্সনাকারী আত্মার! আল-বায়ান

আমি আরো কসম করছি সেই মনের যে (অন্যায় কাজ ক’রে বসলে) নিজেকে ধিক্কার দেয় (যে তোমাদেরকে অবশ্যই আবার জীবিত করে উঠানো হবে)। তাইসিরুল

আরও শপথ করছি তিরস্কারকারী আত্মার। মুজিবুর রহমান

And I swear by the reproaching soul [to the certainty of resurrection]. Sahih International

২. আমি আরও শপথ করছি ভর্ৎসনাকারী আত্মার।(১)

(১) لوامة শব্দটি لوم থেকে উদ্ভুত। অর্থ তিরস্কার ও ধিক্কার দেয়া। ‘নাফসে লাওয়ামা’ বলে এমন নফস বোঝানো হয়েছে, যে নিজের কাজকর্মের হিসাব নিয়ে নিজেকে ধিক্কার দেয়। অর্থাৎ কৃত গোনাহ অথবা ওয়াজিব কর্মে ত্রুটির কারণে নিজেকে ভর্ৎসনা করে বলে যে, তুই এমন করলি কেন? সৎকর্ম সম্পর্কেও নিজেকে এই বলে তিরস্কার করে যে, আরও বেশী সৎকাজ সম্পাদন করে উচ্চমর্যাদা লাভ করলে না কেন? সারকথা, কামেল মুমিন ব্যক্তি সর্বদাই তার প্রত্যেক সৎ ও অসৎ কাজের জন্যে নিজেকে তিরস্কারই করে। গোনাহ অথবা ওয়াজিব কর্মে ত্রুটির কারণে তিরস্কার করার হেতু স্পষ্ট। সৎকাজে তিরস্কার করার কারণ এই যে, নফস ইচ্ছা করলে আরও বেশী সৎকাজ করতে পারত। সে বেশী সৎকাজ করল না কেন?

এই অর্থের ভিত্তিতেই হাসান বাসরী রাহেমাহুল্লাহ নফসে-লাওয়ামার তফসীর করেছেন নফসে মুমিনাহ। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহর কসম, মুমিন তো সর্বদা সর্বাবস্থায় নিজেকে ধিক্কারই দেয়। সৎকর্মসমুহেও সে আল্লাহর শানের মোকাবেলায় আপন কর্মে অভাব ও ত্রুটি অনুভব করে। [কুরতুবী] কেননা, আল্লাহর শানের হক পুরোপুরি আদায় করা সাধ্যাতীত ব্যাপার। ফলে তার দৃষ্টিতে ত্রুটি থাকে এবং তজ্জন্যে নিজেকে ধিক্কার দেয়। পক্ষান্তরে অসৎ কাজ হলে মুমিনের কাছে এটা অত্যন্ত কঠোর হয়ে দেখা দেয় ফলে সে নিজেকে ধিক্কার দেয়। [বাগভী]

মূলতঃ নফস তিনটি গুণে গুণান্বিত হয়। নফসে আম্মারা, লাওয়ামা ও মুতমায়িন্নাহ। সাধারণত নাফসে আম্মারা বা খারাপ কাজে উদগ্ৰীবকারী আত্মা প্রতিটি মানুষেরই মজ্জগত ও স্বভাবগত। সে মানুষকে মন্দ কাজে লিপ্ত হতে জোরদার আদেশ করে। কিন্তু ঈমান, সৎকর্ম ও সাধনার বলে সে নফসে-লাওয়ামা হয়ে যায় এবং মন্দ কাজ ও ত্রুটির কারণে অনুতপ্ত হতে শুরু করে। এটাকেই অনেকে বিবেক বলে। কিন্তু মন্দ কাজ থেকে সে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয় না। অতঃপর সৎকর্মে উন্নতি ও আল্লাহর নৈকট্যলাভে চেষ্টা করতে করতে যখন শরীয়তের আদেশ-নিষেধ প্রতিপালন তার মজ্জাগত ব্যাপার হয়ে যায় এবং শরীয়তবিরোধী কাজের প্রতি স্বভাবগত ঘৃণা অনুভব করতে থাকে, তখন এই নফসই মুতমায়িন্নাহ বা সন্তুষ্টচিত্ত উপাধি প্ৰাপ্ত হয়।

এ ধরনের নাফস যাদের অর্জিত হয় তারা দ্বীনী ব্যাপারে কোন প্রকার সন্দেহ বা প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে মুক্ত হয়ে ‘কালবে সালীম’ বা সুস্থ হৃদয়ের অধিকারী হয়। আর এ সমস্ত লোকদের প্রশংসায় আল্লাহ্ তা'আলা অন্য আয়াতে বলেছেন, “যে দিন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কোন কাজে আসবে না; সে দিন উপকৃত হবে শুধু সে, যে আল্লাহর কাছে আসবে বিশুদ্ধ অন্তঃকরণ নিয়ে।” [সূরা আশ-শু'আরা: ৮৮–৮৯]

তাফসীরে জাকারিয়া

(২) আমি শপথ করছি তিরস্কারকারী আত্মার। [1]

[1] অর্থাৎ, ন্যায় ও ভালো কাজ করলেও তিরস্কার করে যে, তা বেশী করে কেন করেনি। আর অন্যায় ও মন্দ কাজ করলেও তিরস্কার করে যে, তা থেকে কেন বিরত থাকেনি? দুনিয়াতেও যাদের বিবেক সচেতন, তাদের আত্মাও তাদেরকে তিরস্কার করে। নচেৎ আখেরাতে তো সকলের আত্মাই তিরস্কার করবে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৭৫:৩ اَیَحۡسَبُ الۡاِنۡسَانُ اَلَّنۡ نَّجۡمَعَ عِظَامَهٗ ؕ﴿۳﴾
ایحسب الانسان الن نجمع عظامهٗ ۳

মানুষ কি মনে করে যে, আমি কখনই তার অস্থিসমূহ একত্র করব না? আল-বায়ান

মানুষ কি মনে করে যে, আমি তার হাড়গুলোকে একত্রিত করতে পারব না। তাইসিরুল

মানুষ কি মনে করে যে, আমি তার অস্থিসমূহ একত্র করতে পারবনা? মুজিবুর রহমান

Does man think that We will not assemble his bones? Sahih International

৩. মানুষ কি মনে করে যে, আমরা কখনোই তার অস্থিসমূহ একত্র করতে পারব না?

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩) মানুষ কি মনে করে যে, আমি তার অস্থিসমূহ একত্র করতে পারব না? [1]

[1] এটা কসমের জওয়াব। এখানে ‘ইনসান’ বলতে কাফের ও নাস্তিককে বুঝানো হয়েছে, যারা কিয়ামতকে বিশ্বাস করে না। কিন্তু তাদের ধারণা ভুল। মহান আল্লাহ অবশ্যই মানুষের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে একত্রিত করবেন। এখানে বিশেষ করে অস্থি বা হাড়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কারণ, অস্থিই হল (মানবদেহ) সৃষ্টির মৌলিক কাঠামো।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৭৫:৪ بَلٰی قٰدِرِیۡنَ عَلٰۤی اَنۡ نُّسَوِّیَ بَنَانَهٗ ﴿۴﴾
بلی قدرین علی ان نسوی بنانهٗ ۴

হ্যাঁ, আমি তার আংগুলের অগ্রভাগসমূহও পুনর্বিন্যস্ত করতে সক্ষম। আল-বায়ান

কেন নয়, আমি তার আঙ্গুলের ডগা পর্যন্ত সঠিকভাবে বানিয়ে দিতে সক্ষম তাইসিরুল

বস্তুতঃ আমি তার অঙ্গুলীর অগ্রভাগ পর্যন্ত পুনঃ বিন্যস্ত করতে সক্ষম। মুজিবুর রহমান

Yes. [We are] Able [even] to proportion his fingertips. Sahih International

৪. অবশ্যই হ্যাঁ, আমরা তার আঙ্গুলের আগা পর্যন্ত পুনর্বিন্যস্ত করতে সক্ষম।(১)

(১) অর্থাৎ বড় বড় হাড়গুলো একত্রিত করে পুনরায় তোমার দেহের কাঠামো প্ৰস্তুত করা এমন কিছুই নয়। আমি তো তোমার দেহের সূক্ষ্মতম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এমনকি তোমার আঙ্গুলের জোড়গুলোও পুনরায় ঠিক তেমন করে বানাতে সক্ষম। যেমন তা এর আগে ছিল, তবে তোমাদের পুনরুত্থিত করতে অসক্ষম হওয়ার কোন কারণ নেই। [কুরতুবী]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪) অবশ্যই। আমি ওর আঙ্গুলের অগ্রভাগ পর্যন্ত সুবিন্যস্ত করতে সক্ষম।[1]

[1] بَنَانٌ হাত-পায়ের (আঙ্গুলের) অগ্রভাগকে বলা হয়; যা জোড়, নখ, সূক্ষ্ম উপশিরা এবং পাতলা হাড় (চামড়ার উপর সূক্ষ্ম রেখা) ইত্যাদি সমন্বিত থাকে। এত সূক্ষ্ম জিনিসগুলোকে তো আমি ঠিক ঠিকভাবে জুড়ে দেব। তাহলে বড় বড় অংশগুলোকে জোড়া দেওয়া কি আমার জন্য কোন কঠিন কাজ হবে? (আঙ্গুলের অগ্রভাগে যে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম রেখা আছে এবং তা এমন সূক্ষ্মভাবে সুবিন্যস্ত আছে যে, একজনের আঙ্গুলের ছাপ অন্যজনের সাথে মিলে না। সুতরাং কী আজব কুদরত সেই মহান স্রষ্টার! -সম্পাদক)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৭৫:৫ بَلۡ یُرِیۡدُ الۡاِنۡسَانُ لِیَفۡجُرَ اَمَامَهٗ ۚ﴿۵﴾
بل یرید الانسان لیفجر امامهٗ ۚ۵

বরং মানুষ চায় ভবিষ্যতেও পাপাচার করতে। আল-বায়ান

কিন্তু মানুষ তার আগামী দিনগুলোতেও পাপাচার করতে চায়। তাইসিরুল

তবুও মানুষ তার সম্মুখে যা আছে তা অস্বীকার করতে চায়; মুজিবুর রহমান

But man desires to continue in sin. Sahih International

৫. বরং মানুষ তার ভবিষ্যতেও পাপাচার করতে চায়।(১)

(১) তারা যে কিয়ামত ও আখেরাতকে অস্বীকার করে তার মূল কারণ হলো, তারা চায় আজ পর্যন্ত তারা পৃথিবীতে যেরূপ লাগামহীন জীবন যাপন করে এসেছে ভবিষ্যতেও ঠিক তেমনি করতে পারে। আজ পর্যন্ত তারা যে ধরনের জুলুম-অত্যাচার, বেঈমানী, পাপাচার ও দুষ্কর্ম করে এসেছে। ভবিষ্যতেও তা করার অবাধ স্বাধীনতা যেন তাদের থাকে। এভাবে সে অসৎকাজ করতেই থাকে, সৎপথে ফিরে আসতে চায় না। [মুয়াস্‌সার, ফাতহুল কাদীর] কোন কোন মুফাসসির বলেন, আয়াতের উদ্দেশ্য হচ্ছে, “বরং সে তার সম্মুখস্থ বস্তু অর্থাৎ কিয়ামতকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করতে চায়।” কারণ, এর পরই বলা হয়েছে, “সে প্রশ্ন করে কখন কিয়ামত আসবে” এ তাফসীরটি ইবনে কাসীর প্রাধান্য দিয়েছেন।

তাফসীরে জাকারিয়া

(৫) বরং মানুষ তার আগামীতেও পাপ করতে চায়; [1]

[1] অর্থাৎ, এই বিশ্বাসে পাপাচরণ এবং সত্যকে অস্বীকার করে যে, কিয়ামত আসবে না।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৭৫:৬ یَسۡـَٔلُ اَیَّانَ یَوۡمُ الۡقِیٰمَۃِ ؕ﴿۶﴾
یسل ایان یوم القیمۃ ۶

সে প্রশ্ন করে, ‘কবে কিয়ামতের দিন’? আল-বায়ান

সে জিজ্ঞেস করে, ‘ক্বিয়ামত দিবস কবে?’ তাইসিরুল

সে প্রশ্ন করেঃ কখন কিয়ামাত দিবস আসবে? মুজিবুর রহমান

He asks, "When is the Day of Resurrection?" Sahih International

৬. সে প্রশ্ন করে, কখন কিয়ামতের দিন আসবে?

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৬) সে প্রশ্ন করে, কখন কিয়ামত দিবস আসবে? [1]

[1] তারা এ প্রশ্ন এই জন্য করে না যে, কৃতপাপ হতে তওবা করবে। বরং কিয়ামত সংঘটিত হওয়াকে তারা অসম্ভব মনে করে। আর এই কারণেই তারা অন্যায়-অনাচার থেকে ফিরে আসে না। পরের আয়াতে মহান আল্লাহ কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার সময় বর্ণনা করছেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৭৫:৭ فَاِذَا بَرِقَ الۡبَصَرُ ۙ﴿۷﴾
فاذا برق البصر ۙ۷

যখন চক্ষু হতচকিত হবে। আল-বায়ান

যখন চোখ ধাঁধিয়ে যাবে, তাইসিরুল

যখন চক্ষু স্থির হয়ে যাবে। মুজিবুর রহমান

So when vision is dazzled Sahih International

৭. যখন চোখ স্থির হয়ে যাবে(১),

(১) برق এর আভিধানিক অর্থ হলো বিদ্যুতের ঝলকে চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়া। কিন্তু প্রচলিত আরবী বাকরীতিতে কথাটি শুধু এ একটি অর্থ জ্ঞাপকই নয় বরং ভীতি-বিহবলতা, বিস্ময় অথবা কোন দুর্ঘটনার আকস্মিকতায় যদি কেউ হতবুদ্ধি হয়ে যায় এবং সে ভীতিকর দৃশ্যের প্রতি তার চক্ষু স্থির-নিবদ্ধ হয়ে যায় যা সে দেখতে পাচ্ছে তাহলে এ অবস্থা বুঝাতেও একথাটি বলা হয়ে থাকে। [দেখুন: ইবন কাসীর] একথাটিই কুরআন মাজীদের আরেক জায়গায় এভাবে বলা হগয়েছে, “আল্লাহ্‌ তো তাদের অবকাশ দিচ্ছেন সেদিন পর্যন্ত যেদিন চক্ষুসমূহ স্থির হয়ে যাবে।”

তাফসীরে জাকারিয়া

(৭) সুতরাং যখন চক্ষু স্থির হয়ে যাবে [1]

[1] ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে। بَرِقَ، تَحَيَّرَ وَانْدَهَشَ যা মৃত্যুর সময় সাধারণতঃ হয়ে থাকে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৭৫:৮ وَ خَسَفَ الۡقَمَرُ ۙ﴿۸﴾
و خسف القمر ۙ۸

আর চাঁদ কিরণহীন হবে, আল-বায়ান

চাঁদ হয়ে যাবে আলোকহীন তাইসিরুল

এবং চক্ষু হয়ে পড়বে জ্যোতিহীন। মুজিবুর রহমান

And the moon darkens Sahih International

৮. এবং চাঁদ হয়ে পড়বে কিরণহীন(১),

(১) এখানে কেয়ামতের পরিস্থিতি বর্ণনা করা হয়েছে। অর্থাৎ যখন চক্ষুতে ধাঁধা লেগে গেল— কেয়ামতের দিন সবার দৃষ্টিতে ধাঁধা লেগে যাবে। ফলে চক্ষু স্থির কোন বস্তু দেখতে পারবে না এবং চন্দ্র জ্যোতিহীন হয়ে যাবে। [ইবন কাসীর] তাছাড়া আরেকটি অনুবাদ হচ্ছে, চন্দ্র গায়েব হয়ে যাবে, চন্দ্র বলতে কিছু আর থাকবে না। [কুরতুবী]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৮) এবং চন্দ্র জ্যোতিবিহীন হয়ে পড়বে। [1]

[1] যখন চাঁদে গ্রহণ লাগে, তখনও সে (চাঁদ) জ্যোতিবিহীন হয়ে যায়। কিন্তু যে চাঁদ কিয়ামতের নিদর্শন স্বরূপ জ্যোতিবিহীন হবে তাতে পুনরায় আর জ্যোতি ফিরে আসবে না।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৭৫:৯ وَ جُمِعَ الشَّمۡسُ وَ الۡقَمَرُ ۙ﴿۹﴾
و جمع الشمس و القمر ۙ۹

আর চাঁদ ও সূর্যকে একত্র করা হবে। আল-বায়ান

সুরুজ আর চাঁদকে একত্রে জুড়ে দেয়া হবে, তাইসিরুল

যখন সূর্য ও চাঁদকে একত্র করা হবে। মুজিবুর রহমান

And the sun and the moon are joined, Sahih International

৯. আর যখন সূর্য ও চাঁদকে একত্র করা হবে(১)—

(১) চাঁদের আলোহীন হয়ে যাওয়া এবং চাঁদ ও সূর্যের পরস্পর একাকার হয়ে যাওয়ার অর্থ, মুজাহিদ বলেন, দু'টিকে একত্রে পেচানো হবে। [আত-তাফসীরুস সহীহ]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৯) যখন সূর্য ও চন্দ্রকে একত্রিত করা হবে। [1]

[1] অর্থাৎ, জ্যোতিবিহীন হওয়াতে একরকম করা হবে। অর্থাৎ, চাঁদের মত সূর্যের জ্যোতিও শেষ হয়ে যাবে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৭৫:১০ یَقُوۡلُ الۡاِنۡسَانُ یَوۡمَئِذٍ اَیۡنَ الۡمَفَرُّ ﴿ۚ۱۰﴾
یقول الانسان یومىذ این المفر ۚ۱۰

সেদিন মানুষ বলবে, ‘পালাবার স্থান কোথায়’? আল-বায়ান

সেদিন মানুষ বলবে- ‘আজ পালানোর জায়গা কোথায়?’ তাইসিরুল

সেদিন মানুষ বলবেঃ আজ পালানোর স্থান কোথায়? মুজিবুর রহমান

Man will say on that Day, "Where is the [place of] escape?" Sahih International

১০. সে-দিন মানুষ বলবে, আজ পালাবার স্থান কোথায়?

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(১০) সেদিন মানুষ বলবে, আজ পালাবার স্থান কোথায়? [1]

[1] অর্থাৎ, যখন এ সব ঘটনাবলী ঘটবে, তখন মানুষ আল্লাহ অথবা জাহান্নামের আযাব থেকে পলায়নের পথ খুঁজবে, কিন্তু তখন পলায়নের পথ কোথায় পাবে?

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১০ পর্যন্ত, সর্বমোট ৪০ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 3 4 পরের পাতা »