بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
সূরাঃ ৩০/ আর-রুম | Ar-Rum | سورة الروم আয়াতঃ ৬০ মাক্কী
৩০ : ৪১ ظَهَرَ الۡفَسَادُ فِی الۡبَرِّ وَ الۡبَحۡرِ بِمَا كَسَبَتۡ اَیۡدِی النَّاسِ لِیُذِیۡقَهُمۡ بَعۡضَ الَّذِیۡ عَمِلُوۡا لَعَلَّهُمۡ یَرۡجِعُوۡنَ ﴿۴۱﴾
ظهر الفساد فی البر و البحر بما كسبت ایدی الناس لیذیقهم بعض الذی عملوا لعلهم یرجعون ﴿۴۱﴾
• মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সমুদ্রে ফাসাদ প্রকাশ পায়। যার ফলে আল্লাহ তাদের কতিপয় কৃতকর্মের স্বাদ তাদেরকে আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে।

-আল-বায়ান

• মানুষের কৃতকর্মের কারণে জলে স্থলে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে যাতে তিনি তাদেরকে তাদের কোন কোন কাজের শাস্তি আস্বাদন করান, যাতে তারা (অসৎ পথ হতে) ফিরে আসে।

-তাইসিরুল

• মানুষের কৃতকর্মের কারণে সমুদ্রে ও স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে তাদেরকে কোন কোন কর্মের শাস্তি তিনি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে।

-মুজিবুর রহমান

• Corruption has appeared throughout the land and sea by [reason of] what the hands of people have earned so He may let them taste part of [the consequence of] what they have done that perhaps they will return [to righteousness].

-Sahih International

৪১. মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সাগরে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে; ফলে তিনি তাদেরকে তাদের কোন কোন কাজের শাস্তি আস্বাদন করান(১), যাতে তারা ফিরে আসে।(২)

(১) অর্থাৎ স্থলে, জলে তথা সারা বিশ্বে মানুষের কুকর্মের বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। ‘বিপর্যয়’ বলে দুর্ভিক্ষ, মহামারী, অগ্নিকাণ্ড, পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার ঘটনাবলীর প্রাচুর্য, সব কিছু থেকে বরকত উঠে যাওয়া, উপকারী বস্তুর উপকার কম এবং ক্ষতি বেশী হয়ে যাওয়া ইত্যাদি আপদ-বিপদ বোঝানো হয়েছে। [সা’দী, কুরতুবী, বাগভী] অন্য এক আয়াতে এই বিষয়বস্তু এভাবে বর্ণিত হয়েছে, “তোমাদেরকে যেসব বিপদাপদ স্পর্শ করে, সেগুলো তোমাদেরই কৃতকর্মের কারণে। অনেক গোনাহ তো আল্লাহ ক্ষমাই করে দেন।” [সূরা আশ-শূরা: ৩০]

উদ্দেশ্য এই যে, এই দুনিয়ায় বিপদাপদের সত্যিকার কারণ তোমাদের গোনাহ; যদিও দুনিয়াতে এসব গোনাহের পুরোপুরি প্রতিফল দেয়া হয় না এবং প্রত্যেক গোনাহর কারণেই বিপদ আসে না। বরং অনেক গোনাহ, তো ক্ষমা করে দেয়া হয়। তবে এটা সত্য যে, সমস্ত গোনাহর কারণে বিপদ আসে না বরং কোন কোন গোনাহর কারণেই বিপদ আসে। দুনিয়াতে প্রত্যেক গোনাহর কারণে বিপদ আসলে একটি মানুষও পৃথিবীতে বেঁচে থাকত না। ভূপৃষ্ঠে কোন জীব-জন্তুকেই রেহাই দিতেন না; কিন্তু তিনি এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দিয়ে থাকেন।” [সূরা আন-নাহল: ৬১]

আল্লাহ আরো বলেন, আল্লাহ মানুষকে তাদের কৃতকর্মের জন্য শাস্তি দিলে ভূ-পৃষ্ঠে কোন জীব-জন্তুকেই রেহাই দিতেন না, কিন্তু তিনি এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দিয়ে থাকেন।” [সূরা ফাতির: ৪৫] বরং অনেক গোনাহ তো আল্লাহ মাফই করে দেন। যেগুলো মাফ করেন না, সেগুলোরও পুরোপুরি শাস্তি দুনিয়াতে দেন না; বরং সামান্য স্বাদ আস্বাদন করান।

(২) কাতাদাহ বলেন, এটা আল্লাহ কর্তৃক মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রাসূল হিসেবে পাঠানোর আগের অবস্থার বর্ণনা। যখন যমীন ভ্ৰষ্টতা ও অন্ধকারে পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। তারপর আল্লাহ যখন তাঁর নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পাঠালেন, তখন মানুষের মধ্যে যারা ফিরে আসার তারা ফিরে আসল। [তাবারী]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪১) মানুষের কৃতকর্মের দরুন জলে-স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে; যাতে ওদের কোন কোন কর্মের শাস্তি ওদেরকে আস্বাদন করানো হয়। যাতে ওরা (সৎপথে) ফিরে আসে। [1]

[1] ‘স্থল’ বলতে মানুষের বাসভূমি এবং জল বলতে সমুদ্র, সামুদ্রিক পথ এবং সমুদ্র-উপকূলে বসবাসের স্থান বুঝানো হয়েছে। ‘ফাসাদ’ (বিপর্যয়) বলতে ঐ সকল আপদ-বিপদকে বুঝানো হয়েছে, যার দ্বারা মনুষ্য-সমাজে সুখ-শান্তি ও নিরাপত্তা বিনষ্ট হয় এবং মানুষের শান্তিময় জীবন-যাত্রা ব্যাহত হয়। এই জন্য এর অর্থ গোনাহ ও পাপাচরণ করাও সঠিক। অর্থাৎ, মানুষ এক অপরের উপর অত্যাচার করছে, আল্লাহর সীমা লংঘন করছে এবং নৈতিকতার বিনাশ সাধন করছে, যুদ্ধ-বিগ্রহ ও রক্তপাত সাধারণ ব্যাপার হয়ে পড়েছে। অবশ্য ‘ফাসাদ’-এর অর্থ আকাশ-পৃথিবীর ঐ সকল বিপর্যয় নেওয়াও সঠিক, যা আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি ও সতর্কতা স্বরূপ প্রেরণ করা হয়। যেমন দুর্ভিক্ষ, মহামারী, অনিরাপত্তা, ভূমিকম্প, বন্যা ইত্যাদি। উদ্দেশ্য এই যে, যখন মানুষ আল্লাহর অবাধ্যতাকে নিজেদের অভ্যাসে পরিণত করে নেয়, তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিফল স্বরূপ তাদের কর্মপ্রবণতা মন্দের দিকে ফিরে যায় এবং তার ফলে পৃথিবী নানা বিপর্যয়ে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে, সুখ-শান্তি বিলীন হয় এবং তার পরিবর্তে ভয়-ভীতি, নিরাপত্তাহীনতা, ছিন্তাই-ডাকাতি, লড়াই ও লুটপাট ছড়িয়ে পড়ে। তার সাথে সাথে কখনো আকাশ ও পৃথিবীর বিভিন্ন আপদ-বিপদ (প্রাকৃতিক দুর্যোগ)ও প্রেরিত হয়। আর তাতে উদ্দেশ্য এই থাকে যে, ঐ সর্বনাশী বিপর্যয় ও আপদ-বিপদ দেখে সম্ভবত মানুষ পাপকর্ম থেকে বিরত হবে এবং আল্লাহর কাছে তওবা করে পুনরায় তাঁর আনুগত্যের দিকে ফিরে আসবে। এর বিপরীত যে সমাজের রীতি-নীতি ও চাল-চলন আল্লাহর আনুগত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং যে সমাজে আল্লাহর ‘হদ্দ’ (দন্ডবিধি) কায়েম হয়, অত্যাচারের জায়গায় ন্যায়পরায়ণতা বিরাজ করে, সে সমাজে সুখ-শান্তি এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে মঙ্গল ও বরকত দেওয়া হয়। যেমন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, ‘‘পৃথিবীতে আল্লাহ তাআলার একটি ‘হদ্দ’ কায়েম করা সেখানকার মানুষের জন্য চল্লিশ দিনের বৃষ্টি থেকেও উত্তম।’’ (নাসাঈ, ইবনে মাজা) অনুরূপ একটি হাদীসে এসেছে, ‘‘যখন একটি পাপাচারী মারা যায়, তখন শুধু মানুষই নয়; বরং গ্রাম-শহর, গাছপালা এবং প্রাণীরাও পর্যন্ত শান্তিলাভ করে।’’ (বুখারীঃ কিতাবুর রিক্বাক, মুসলিমঃ কিতাবুল জানাইয)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৩০ : ৪২ قُلۡ سِیۡرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ فَانۡظُرُوۡا كَیۡفَ كَانَ عَاقِبَۃُ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلُ ؕ كَانَ اَكۡثَرُهُمۡ مُّشۡرِكِیۡنَ ﴿۴۲﴾
قل سیروا فی الارض فانظروا كیف كان عاقبۃ الذین من قبل كان اكثرهم مشركین ﴿۴۲﴾
• বল, ‘তোমরা যমীনে ভ্রমণ কর। অতঃপর দেখ পূর্ববর্তীদের পরিণাম কিরূপ হয়েছিল’। তাদের অধিকাংশই ছিল মুশরিক।

-আল-বায়ান

• বল, পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর, অতঃপর দেখ আগে যারা ছিল তাদের পরিণাম কী হয়েছে। তাদের অধিকাংশই ছিল মুশরিক।

-তাইসিরুল

• বলঃ তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর এবং দেখ, তোমাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কি হয়েছে! তাদের অধিকাংশই ছিল মুশরিক।

-মুজিবুর রহমান

• Say, [O Muhammad], "Travel through the land and observe how was the end of those before. Most of them were associators [of others with Allah].

-Sahih International

৪২. বলুন, তোমরা যমীনে ভ্রমণ কর অতঃপর দেখ পূর্ববর্তীদের পরিণাম কী হয়েছে! তাদের অধিকাংশই ছিল মুশরিক।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪২) বল, ‘তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করে দেখ, তোমাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কিরূপ হয়েছে। ওদের অধিকাংশই ছিল অংশীবাদী।’[1]

[1] এখানে বিশেষ করে অংশীবাদী ও মুশরিকদের কথা উল্লেখ হয়েছে। যেহেতু শিরক হল সবচাইতে বড় গোনাহ। এ ছাড়াও এতে অন্যান্য পাপাচার ও অবাধ্যতাও এসে যায়। কারণ, অন্যান্য পাপও মানুষ নিজের প্রবৃত্তি-পূজার ফলেই করে থাকে। এই জন্য অনেকেই পাপ ও অবাধ্যাচরণকে আমলগত শিরক বলে আখ্যায়িত করেছেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৩০ : ৪৩ فَاَقِمۡ وَجۡهَكَ لِلدِّیۡنِ الۡقَیِّمِ مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّاۡتِیَ یَوۡمٌ لَّا مَرَدَّ لَهٗ مِنَ اللّٰهِ یَوۡمَئِذٍ یَّصَّدَّعُوۡنَ ﴿۴۳﴾
فاقم وجهك للدین القیم من قبل ان یاتی یوم لا مرد لهٗ من الله یومئذ یصدعون ﴿۴۳﴾
• তাই তুমি তোমার নিজকে সরল-সঠিক দীনের উপর কায়েম রাখ, আল্লাহর পক্ষ থেকে সেদিন আসার পূর্বে, যা ফেরানো যাবে না। সেদিন তারা বিভক্ত হয়ে পড়বে।

-আল-বায়ান

• কাজেই তুমি নিজেকে সত্য দ্বীনে প্রতিষ্ঠিত রাখ, আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন দিন (ক্বিয়ামত দিবস) আসার পূর্বে যা কক্ষনো প্রত্যাহার করা হবে না। সেদিন মানুষ বিভক্ত হয়ে যাবে (দু’ভাগে)।

-তাইসিরুল

• তুমি সরল দীনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত কর, আল্লাহর নির্দেশে অনিবার্য দিন আসার পূর্বে, সেদিন মানুষ বিভক্ত হয়ে পড়বে।

-মুজিবুর রহমান

• So direct your face toward the correct religion before a Day comes from Allah of which there is no repelling. That Day, they will be divided.

-Sahih International

৪৩. সুতরাং আপনি সরল-সঠিক দ্বীনে নিজকে প্রতিষ্ঠিতত করুন, আল্লাহর পক্ষ থেকে যে দিন অনিবার্য তা উপস্থিত হওয়ার আগে, সেদিন মানুষ বিভক্ত হয়ে পড়বে।(১)

(১) কাতাদাহ বলেন, এর অর্থ আপনি ইসলামের ওপর সুপ্রতিষ্ঠিত থাকুন। সেদিন আসার পূর্বেই যেদিন মানুষ বিভক্ত হয়ে পড়বে, একদল জান্নাতী হবে, আরেকদল হবে জাহান্নামী। [তাবারী] আল্লামা শানকীতী বলেন, এ আয়াত এ সূরার অন্য আয়াতের অনুরূপ যেখানে এসেছে, “আর যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে সেদিন তারা বিভক্ত হয়ে পড়বে। অতএব যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তারা জন্নাতে খোশহালে থাকবে; আর যারা কুফরী করেছে এবং আমাদের আয়াতসমূহ ও আখিরাতের সাক্ষাতের প্রতি মিথ্যারোপ করেছে, পরিণামে তাদেরকেই আযাবের মাঝে উপস্থিত রাখা হবে।” তাছাড়া অন্য সূরায় এসেছে, “এবং সতর্ক করতে পারেন কেয়ামতের দিন সম্পর্কে, যাতে কোন সন্দেহ নেই। একদল থাকবে জান্নাতে আরেক দল জলন্ত আগুনে।” [সূরা আশ-শূরা: ৭]।

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪৩) যে দিবস অনিবার্য,[1] আল্লাহর নির্দেশে তা উপস্থিত হওয়ার পূর্বে তুমি স্থিতিশীল ধর্মে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত কর; সেদিন মানুষ বিভক্ত হয়ে পড়বে। [2]

[1] অর্থাৎ কিয়ামতের দিন সংঘটিত হওয়াকে কেউ নিবারণ করতে বা বাধা দিতে পারবে না। অতএব তা সংঘটিত হওয়ার পূর্বেই আল্লাহর আনুগত্যের পথ বেছে নিয়ে সৎকর্ম করে পুণ্য সঞ্চয় করে নাও।

[2] অর্থাৎ, দুই দলে বিভক্ত হয়ে যাবে; এক দল মু’মিন, অপর দল কাফের।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৩০ : ৪৪ مَنۡ كَفَرَ فَعَلَیۡهِ كُفۡرُهٗ ۚ وَ مَنۡ عَمِلَ صَالِحًا فَلِاَنۡفُسِهِمۡ یَمۡهَدُوۡنَ ﴿ۙ۴۴﴾
من كفر فعلیه كفرهٗ و من عمل صالحا فلانفسهم یمهدون ﴿۴۴﴾
• যে কুফরী করে তার কুফরীর পরিণাম তার উপরই। আর যারা সৎকর্ম করে তারা তাদের নিজদের জন্য শয্যা রচনা করে।

-আল-বায়ান

• যে কুফুরী করে সেই তার কুফুরীর শাস্তি ভোগ করবে, আর যারা সৎকর্ম করে তারা নিজেদেরই সুখ সরঞ্জাম সংগ্রহ করছে।

-তাইসিরুল

• যে কুফরী করে, কুফরীর শাস্তি তারই; যারা সৎ কাজ করে তারা নিজেদেরই জন্য রচনা করে শান্তির আবাস।

-মুজিবুর রহমান

• Whoever disbelieves - upon him is [the consequence of] his disbelief. And whoever does righteousness - they are for themselves preparing,

-Sahih International

৪৪. যে কুফরী করে কুফরীর শাস্তি তারই প্ৰাপ্য; আর যারা সৎকাজ করে তারা নিজেদেরই জন্য রচনা করে সুখশয্যা।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪৪) যে অবিশ্বাস করে, অবিশ্বাসের জন্য সে-ই দায়ী। আর যারা সৎকাজ করে, তারা নিজেদেরই জন্য সুখশয্যা রচনা করে। [1]

[1] مهد এর অর্থ রাস্তা সমান করা, বিছানা বিছানো। অর্থাৎ তারা নেক আমল দ্বারা জান্নাত যাওয়া এবং জান্নাতে উচ্চস্থান অর্জন করার নিমিত্তে রাস্তা নির্মাণ ও সুখশয্যা রচনা করে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৩০ : ৪৫ لِیَجۡزِیَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ مِنۡ فَضۡلِهٖ ؕ اِنَّهٗ لَا یُحِبُّ الۡكٰفِرِیۡنَ ﴿۴۵﴾
لیجزی الذین امنوا و عملوا الصلحت من فضلهٖ انهٗ لا یحب الكفرین ﴿۴۵﴾
• যেন তিনি স্বীয় অনুগ্রহে প্রতিদান দেন, যারা ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে তাদেরকে। নিশ্চয় তিনি কাফিরদের ভালবাসেন না।

-আল-বায়ান

• যাতে তিনি স্বীয় অনুগ্রহভান্ডার থেকে তাদেরকে পুরস্কৃত করতে পারেন যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে। তিনি কাফিরদেরকে ভালবাসেন না।

-তাইসিরুল

• কারণ যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে, তিনি (আল্লাহ) তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে পুরস্কৃত করেন। তিনি কাফিরদেরকে পছন্দ করেননা।

-মুজিবুর রহমান

• That He may reward those who have believed and done righteous deeds out of His bounty. Indeed, He does not like the disbelievers.

-Sahih International

৪৫. যাতে করে আল্লাহ যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে পুরস্কৃত করেন। নিশ্চয় তিনি কাফিরদেরকে পছন্দ করেন না।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪৫) কারণ, যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে, আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে পুরস্কৃত করেন।[1] নিশ্চয় তিনি অবিশ্বাসীদেরকে ভালবাসেন না।

[1] অর্থাৎ, জান্নাত অর্জনের জন্য শুধু নেকীই ততক্ষণ পর্যন্ত যথেষ্ট নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার সাথে আল্লাহর অনুগ্রহ শামিল হবে। সুতরাং তিনি স্বীয় অনুগ্রহে এক এক নেকীর বিনিময় দশ থেকে সাতশ’ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে দেবেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৩০ : ৪৬ وَ مِنۡ اٰیٰتِهٖۤ اَنۡ یُّرۡسِلَ الرِّیَاحَ مُبَشِّرٰتٍ وَّ لِیُذِیۡقَكُمۡ مِّنۡ رَّحۡمَتِهٖ وَ لِتَجۡرِیَ الۡفُلۡكُ بِاَمۡرِهٖ وَ لِتَبۡتَغُوۡا مِنۡ فَضۡلِهٖ وَ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُوۡنَ ﴿۴۶﴾
و من ایتهٖ ان یرسل الریاح مبشرت و لیذیقكم من رحمتهٖ و لتجری الفلك بامرهٖ و لتبتغوا من فضلهٖ و لعلكم تشكرون ﴿۴۶﴾
• আর তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে রয়েছে, তিনি বাতাস প্রেরণ করেন [বৃষ্টির] সুসংবাদ বহনকারী হিসেবে এবং যাতে তিনি তোমাদেরকে তাঁর রহমত আস্বাদন করাতে পারেন এবং যাতে তাঁর নির্দেশে নৌযানগুলো চলাচল করে, আর যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ থেকে কিছু সন্ধান করতে পার। আর যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হও।

-আল-বায়ান

• তাঁর নিদর্শনের মধ্যে হল এই যে, তিনি বায়ু প্রেরণ করেন সুসংবাদ দানের জন্য ও তোমাদেরকে তাঁর অনুগ্রহ আস্বাদন করানোর জন্য। তাঁর নির্দেশে নৌযান চলে যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করতে পার আর তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পার।

-তাইসিরুল

• তাঁর নিদর্শনাবলীর একটি এই যে, তিনি বায়ু প্রেরণ করেন সুসংবাদ দেয়ার জন্য ও তোমাদেরকে তাঁর অনুগ্রহ আস্বাদন করানোর জন্য, এবং যেন তাঁর বিধানে নৌযানগুলি বিচরণ করে, যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হও।

-মুজিবুর রহমান

• And of His signs is that He sends the winds as bringers of good tidings and to let you taste His mercy and so the ships may sail at His command and so you may seek of His bounty, and perhaps you will be grateful.

-Sahih International

৪৬. আর তার নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি বায়ু পাঠান সুসংবাদ দেয়ার জন্য(১) এবং তোমাদেরকে তাঁর কিছু রহমত আস্বাদন করাবার জন্য; আর যাতে তার নির্দেশে নৌযানগুলো বিচরণ করে এবং যাতে তোমরা তার অনুগ্রহের কিছু সন্ধান করতে পার, আর যেন তোমরা কৃতজ্ঞ হও।(২)

(১) মুজাহিদ বলেন, এর অর্থ বৃষ্টির পূর্বে সুসংবাদবাহী বাতাস। [আত-তাফসীরুস সহীহ]

(২) এ আয়াতের সমার্থে আরও দেখুন, সূরা আল-বাকারাহ: ১৬৪; সূরা আল-মুমিনুন: ২২।

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪৬) আর তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে একটি এই যে, তিনি সুসংবাদবাহীরূপে[1] বায়ু প্রেরণ করেন; যাতে তিনি তোমাদেরকে নিজ অনুগ্রহ আস্বাদন করান[2] এবং যাতে তাঁর নির্দেশে জলযানগুলি বিচরণ করে,[3] আর যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার[4] এবং তাঁর কৃতজ্ঞ হতে পার।[5]

[1] অর্থাৎ, বৃষ্টির সুসংবাদবাহীরূপে।

[2] অর্থাৎ, বৃষ্টিদানে তোমাদেরকে আনন্দিত করেন এবং ক্ষেতের ফসলও সবুজ হয়ে মেতে ওঠে।

[3] অর্থাৎ, সেই বায়ু দ্বারা নৌকা চলাচল করে; উদ্দেশ্য পাল-তোলা নৌকা। বর্তমানে মানুষ আল্লাহর দেওয়া বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন প্রকার যন্ত্রচালিত জলজাহাজ, নৌকা ইত্যাদি তৈরি করেছে। তারপরেও তার জন্য অনুকূল বায়ুর প্রয়োজন। তাছাড়া আল্লাহ তাআলা তাকে তুফানী ঢেউ দ্বারা সমুদ্রে ডুবিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।

[4] অর্থাৎ, তার সাহায্যে বিভিন্ন দেশে গিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য দ্বারা (তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার)।

[5] ঐ সকল প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য অগণিত অনুগ্রহ ও নিয়ামতের জন্য কৃতজ্ঞ হতে পার। অর্থাৎ, এই সকল অনুগ্রহ আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে এই জন্য প্রদান করে থাকেন, যাতে তোমরা নিজেদের জীবন-যাত্রায় তার দ্বারা উপকৃত হও এবং আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্য কর।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৩০ : ৪৭ وَ لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا مِنۡ قَبۡلِكَ رُسُلًا اِلٰی قَوۡمِهِمۡ فَجَآءُوۡهُمۡ بِالۡبَیِّنٰتِ فَانۡتَقَمۡنَا مِنَ الَّذِیۡنَ اَجۡرَمُوۡا ؕ وَ كَانَ حَقًّا عَلَیۡنَا نَصۡرُ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۴۷﴾
و لقد ارسلنا من قبلك رسلا الی قومهم فجآءوهم بالبینت فانتقمنا من الذین اجرموا و كان حقا علینا نصر المؤمنین ﴿۴۷﴾
• আর অবশ্যই আমি তোমার পূর্বে রাসূলগণকে তাদের কওমের নিকট পাঠিয়েছিলাম। অতঃপর তারা তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে এসেছিল। অতঃপর যারা অপরাধ করেছিল আমি তাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করলাম। আর মুমিনদেরকে সাহায্য করা তো আমার কর্তব্য।

-আল-বায়ান

• তোমার পূর্বে আমি রসূলগণকে পাঠিয়েছিলাম তাদের নিজ নিজ জাতির নিকট। তারা তাদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শন নিয়ে এসেছিল। অতঃপর যারা অন্যায় করেছিল আমি তাদেরকে শাস্তি দিয়েছিলাম। মু’মিনদের সাহায্য করা আমার দায়িত্ব।

-তাইসিরুল

• আমি তোমার পূর্বে রাসূলদেরকে প্রেরণ করেছিলাম তাদের নিজ নিজ সম্প্রদায়ের নিকট। তারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন নিয়ে এসেছিল; অতঃপর আমি অপরাধীদেরকে শাস্তি দিয়েছিলাম। মু’মিনদেরকে সাহায্য করা আমার দায়িত্ব।

-মুজিবুর রহমান

• And We have already sent messengers before you to their peoples, and they came to them with clear evidences; then We took retribution from those who committed crimes, and incumbent upon Us was support of the believers.

-Sahih International

৪৭. আর আমরা তো আপনার আগে রাসূলগণকে পাঠিয়েছিলাম তাদের নিজ নিজ সম্প্রদায়ের কাছে। অতঃপর তাঁরা তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে এসেছিলেন; অতঃপর আমরা অপরাধীদের থেকে প্রতিশোধ নিয়েছিলাম। আর আমাদের দায়িত্ব তো মুমিনদের সাহায্য করা।(১)

(১) অর্থাৎ আমি অপরাধী কাফেরদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিলাম এবং মুমিনদের সাহায্য করা আমার দায়িত্ব ছিল। এই আয়াত থেকে জানা গেল যে, আল্লাহ তাআলা কৃপাবশতঃ মুমিনের সাহায্য করাকে নিজ দায়িত্বে গ্রহণ করেছেন। [সা’দী]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪৭) আমি তো তোমার পূর্বে রসূলদেরকে তাদের নিজ নিজ সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরণ করেছিলাম, তারা ওদের নিকট সুস্পষ্ট বহু নিদর্শন এনেছিল; অতঃপর আমি অপরাধীদের শাস্তি দিয়েছিলাম। আর বিশ্বাসীদের সাহায্য করা আমার দায়িত্ব।[1]

[1] অর্থাৎ, হে মুহাম্মাদ! যেমন আমি তোমাকে তোমার সম্প্রদায়ের নিকট রসূল করে প্রেরণ করেছি, অনুরূপ তোমার পূর্বের রসূলগণকে তাদের নিজ নিজ সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরণ করেছিলাম। তাদের সাথে যথাযথ প্রমাণ ও অলৌকিক নিদর্শনাবলী ছিল। কিন্তু তাদের সম্প্রদায়রা তাদেরকে মিথ্যা মনে করেছিল এবং তাদের প্রতি ঈমান আনয়ন করেনি। অবশেষে তাদের মিথ্যাজ্ঞান ও অবাধ্যতার পাপের ফলে আমি তাদেরকে শাস্তি দিয়েছি এবং আমার কর্তব্য হিসাবে মু’মিনদেরকে সাহায্য ও সহযোগিতা করেছি। এটা আসলে নবী (সাঃ) ও তাঁর প্রতি ঈমান আনয়নকারী মুসলিমদের জন্য সান্ত্বনা যে, কাফের ও মুশরিকদের মিথ্যাজ্ঞান করাতে ভয়ের কোন কারণ নেই। যেহেতু এটা কোন নতুন কথা নয়; বরং প্রত্যেক নবীর সাথে তাঁর জাতি একই রকম ব্যবহার প্রদর্শন করেছে। অনুরূপ এটা কাফেরদের জন্য সতর্কবাণী যে, যদি তারা ঈমান আনয়ন না করে, তাহলে তাদেরও শেষ ফল তাই হবে, যা পূর্ববর্তী জাতিদের হয়েছে। কারণ আল্লাহর সাহায্য তো পরিশেষে মু’মিনদের জন্যই আসে; যাতে পয়গম্বর ও মু’মিনগণ সকলেই শামিল থাকেন। حَقاًّ শব্দটি كان এর খবর হিসেবে ব্যবহার হয়েছে এবং তা তার ইসম (বিশেষ্য)র পূর্বে ব্যবহার হয়েছে, আর তা হল نَصرُ المُؤمِنِين ।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৩০ : ৪৮ اَللّٰهُ الَّذِیۡ یُرۡسِلُ الرِّیٰحَ فَتُثِیۡرُ سَحَابًا فَیَبۡسُطُهٗ فِی السَّمَآءِ كَیۡفَ یَشَآءُ وَ یَجۡعَلُهٗ كِسَفًا فَتَرَی الۡوَدۡقَ یَخۡرُجُ مِنۡ خِلٰلِهٖ ۚ فَاِذَاۤ اَصَابَ بِهٖ مَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِهٖۤ اِذَا هُمۡ یَسۡتَبۡشِرُوۡنَ ﴿ۚ۴۸﴾
الله الذی یرسل الریح فتثیر سحابا فیبسطهٗ فی السمآء كیف یشآء و یجعلهٗ كسفا فتری الودق یخرج من خللهٖ فاذا اصاب بهٖ من یشآء من عبادهٖ اذا هم یستبشرون ﴿۴۸﴾
• আল্লাহ, যিনি বাতাস প্রেরণ করেন ফলে তা মেঘমালাকে ধাওয়া করে; অতঃপর তিনি মেঘমালাকে যেমন ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন এবং তাকে খন্ড- বিখন্ড করে দেন, ফলে তুমি দেখতে পাও, তার মধ্য থেকে নির্গত হয় বারিধারা। অতঃপর যখন তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাদের উপর ইচ্ছা বারি বর্ষণ করেন, তখন তারা হয় আনন্দিত।

-আল-বায়ান

• আল্লাহ যিনি বায়ু প্রেরণ করেন, অতঃপর তা মেঘমালার সঞ্চার করে, অতঃপর তিনি তা আকাশে ছড়িয়ে দেন যেভাবে ইচ্ছে করেন, অতঃপর তাকে খন্ড বিখন্ড করে দেন, তারপর তুমি দেখতে পাও তার মাঝ থেকে বৃষ্টি-ফোঁটা নির্গত হচ্ছে, অতঃপর তিনি তাঁর বান্দাহদের মধ্যে যাদের নিকট তিনি ইচ্ছে করেন তাদের কাছে যখন তা পৌঁছে দেন তখন তারা হয় আনন্দিত।

-তাইসিরুল

• আল্লাহ! তিনি বায়ু প্রেরণ করেন; ফলে এটা মেঘমালাকে সঞ্চারিত করে, অতঃপর তিনি একে যেমন ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন, পরে একে খন্ড বিখন্ড করেন এবং তুমি দেখতে পাও ওটা হতে নির্গত হয় বারিধারা; অতঃপর যখন তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাদেরকে ইচ্ছা তাদের নিকট ওটা পৌঁছে দেন তখন তারা হয় হর্ষোৎফুল্ল –

-মুজিবুর রহমান

• It is Allah who sends the winds, and they stir the clouds and spread them in the sky however He wills, and He makes them fragments so you see the rain emerge from within them. And when He causes it to fall upon whom He wills of His servants, immediately they rejoice

-Sahih International

৪৮. আল্লাহ, যিনি বায়ু পাঠান, ফলে তা মেঘমালাকে সঞ্চালিত করে; অতঃপর তিনি এটাকে যেমন ইচ্ছে আকাশে ছড়িয়ে দেন; পরে এটাকে খণ্ড-বিখণ্ড করেন, ফলে আপনি দেখতে পান সেটার মধ্য থেকে নির্গত হয় বৃষ্টিধারা; তারপর যখন তিনি তার বান্দাদের মধ্যে যাদের কাছে ইচ্ছে এটা পৌছে দেন, তখন তারা হয় আনন্দিত,

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪৮) আল্লাহ, যিনি বায়ু প্রেরণ করেন, ফলে তা (বায়ু) মেঘমালাকে সঞ্চালিত করে;[1] অতঃপর তিনি একে যেমন ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন,[2] পরে একে খন্ড-বিখন্ড করেন[3] এবং তুমি দেখতে পাও, তা থেকে বারিধারা নির্গত হয়।[4] অতঃপর যখন তিনি তাঁর দাসদের মধ্যে যাদের প্রতি ইচ্ছা তা দান করেন; তখন ওরা হর্ষোৎফুল্ল হয়।

[1] অর্থাৎ, সে মেঘমালা যেখানেই থাকুক, সেখান থেকে বায়ু তাকে উড়িয়ে নিয়ে যায়।

[2] কখনো চালিয়ে, কখনো স্থির রেখে, কখনো থাক-থাক ঘনীভূত করে, কখনো বহুদূর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ করে। এইভাবে আকাশে মেঘমালার বিভিন্ন রূপ হয়ে থাকে।

[3] অর্থাৎ, মেঘমালাকে আকাশে ছড়িয়ে দেওয়ার পর কখনো তাকে বিভিন্ন খন্ডে বিভক্ত করে দেন।

[4] وَدَق এর অর্থ বৃষ্টি। অর্থাৎ ঐ সকল মেঘমালা থেকে আল্লাহ যখন চান বৃষ্টি বর্ষণ হয়। যাতে বৃষ্টির প্রয়োজন বোধকারিগণ আনন্দিত হয়।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৩০ : ৪৯ وَ اِنۡ كَانُوۡا مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ یُّنَزَّلَ عَلَیۡهِمۡ مِّنۡ قَبۡلِهٖ لَمُبۡلِسِیۡنَ ﴿۴۹﴾
و ان كانوا من قبل ان ینزل علیهم من قبلهٖ لمبلسین ﴿۴۹﴾
• যদিও এর আগে তাদের প্রতি বৃষ্টি বর্ষণের পূর্বে তারা ছিল নিরাশ।

-আল-বায়ান

• যদিও ইতোপূর্বে তাদের প্রতি বৃষ্টি বর্ষণের পূর্বে তারা ছিল চরমভাবে হতাশ।

-তাইসিরুল

• যদিও তারা তাদের প্রতি বৃষ্টি বর্ষণের পূর্বে নিরাশ ছিল।

-মুজিবুর রহমান

• Although they were, before it was sent down upon them - before that, in despair.

-Sahih International

৪৯. যদিও ইতোপূর্বে তাদের প্রতি বৃষ্টি বর্ষণের আগে তারা ছিল একান্ত নিরাশ।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪৯) ওরা অবশ্যই ওদের প্রতি বৃষ্টি প্রেরিত হওয়ার পূর্বে নিরাশ থাকে।

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৩০ : ৫০ فَانۡظُرۡ اِلٰۤی اٰثٰرِ رَحۡمَتِ اللّٰهِ كَیۡفَ یُحۡیِ الۡاَرۡضَ بَعۡدَ مَوۡتِهَا ؕ اِنَّ ذٰلِكَ لَمُحۡیِ الۡمَوۡتٰی ۚ وَ هُوَ عَلٰی كُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۵۰﴾
فانظر الی اثر رحمت الله كیف یحی الارض بعد موتها ان ذلك لمحی الموتی و هو علی كل شیء قدیر ﴿۵۰﴾
• অতএব তুমি আল্লাহর রহমতের চি‎হ্নসমূহের প্রতি দৃষ্টি দাও। কিভাবে তিনি যমীনের মৃত্যুর পর তা জীবিত করেন। নিশ্চয় এভাবেই তিনি মৃতকে জীবিত করেন এবং তিনি সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান।

-আল-বায়ান

• অতএব আল্লাহর রহমাতের ফল দেখে নাও, কীভাবে তিনি ভূমিকে তার মৃত্যুর পর জীবিত করেন। এভাবেই নিশ্চয় তিনি মৃতকে জীবিত করবেন, কেননা সব কিছুর উপর তিনি সর্বশক্তিমান।

-তাইসিরুল

• আল্লাহর অনুগ্রহের ফল সম্বন্ধে চিন্তা কর - কিভাবে তিনি ভূমির মৃত্যুর পর ওকে পুনরুজ্জীবিত করেন! এভাবেই আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন, কারণ তিনি সর্ব বিষয়ে সর্ব শক্তিমান।

-মুজিবুর রহমান

• So observe the effects of the mercy of Allah - how He gives life to the earth after its lifelessness. Indeed, that [same one] will give life to the dead, and He is over all things competent.

-Sahih International

৫০. সুতরাং আপনি আল্লাহর অনুগ্রহের ফল সম্বন্ধে চিন্তা করুন, কিভাবে তিনি যমীনকে জীবিত করেন সেটার মৃত্যুর পর। এভাবেই তো আল্লাহ মৃতকে জীবিতকারী, আর তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।(১)

(১) এ আয়াতের সমার্থে সূরা আল-আ’রাফের ৫৭ নং আয়াত দেখুন।

তাফসীরে জাকারিয়া

(৫০) সুতরাং তুমি আল্লাহর করুণার চিহ্ন লক্ষ্য কর, কিভাবে তিনি ভূমির মৃত্যুর পর একে পুনর্জীবিত করেন। নিঃসন্দেহে তিনি মৃতকে জীবিত করবেন[1] এবং তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।

[1] ‘করুণার চিহ্ন’ বলতে ঐ সকল ফল-ফসলকে বুঝানো হয়েছে, যা বৃষ্টির পানিতে উৎপন্ন হয় এবং মানুষের সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্যের কারণ হয়। এখানে লক্ষ্য করা বা দেখার অর্থ হল, শিক্ষা গ্রহণের চোখে দেখা, যাতে মানুষ আল্লাহর অসীম ক্ষমতার কথা এবং কিয়ামতের দিন তিনি যে মৃতকে জীবিত করবেন, সে কথা স্বীকার করে নেয়।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
দেখানো হচ্ছেঃ ৪১ থেকে ৫০ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬০ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ « আগের পাতা 1 2 3 4 5 6 পরের পাতা »