بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
সূরাঃ ২৮/ আল-কাসাস | Al-Qasas | سورة القصص আয়াতঃ ৮৮ মাক্কী
২৮ : ৩১ وَ اَنۡ اَلۡقِ عَصَاكَ ؕ فَلَمَّا رَاٰهَا تَهۡتَزُّ كَاَنَّهَا جَآنٌّ وَّلّٰی مُدۡبِرًا وَّ لَمۡ یُعَقِّبۡ ؕ یٰمُوۡسٰۤی اَقۡبِلۡ وَ لَا تَخَفۡ ۟ اِنَّكَ مِنَ الۡاٰمِنِیۡنَ ﴿۳۱﴾
و ان الق عصاك فلما راها تهتز كانها جآن ولی مدبرا و لم یعقب یموسی اقبل و لا تخف انك من الامنین ﴿۳۱﴾
• ‘আর তুমি তোমার লাঠি ফেলে দাও’। অতঃপর যখন সে ওটাকে দেখল, সাপের মত ছুটাছুটি করছে, তখন সে পিছনের দিকে ছুটল এবং ফিরেও তাকাল না। (বলা হল) ‘হে মূসা, সামনে যাও এবং ভয় পেয়ো না, নিশ্চয় তুমি নিরাপদ’।

-আল-বায়ান

• আর (বলা হল) ‘তোমার লাঠি নিক্ষেপ কর।’ অতঃপর যখন সে সেটাকে দেখল ছুটাছুটি করতে যেন ওটা একটা সাপ, তখন পেছনের দিকে দৌড় দিল, ফিরেও তাকাল না। (তখন তাকে বলা হল) ‘ওহে মূসা! সামনে এসো, ভয় করো না, তুমি নিরাপদ।’

-তাইসিরুল

• আরও বলা হলঃ তুমি তোমার লাঠি নিক্ষেপ কর। অতঃপর যখন সে ওটাকে সর্পের ন্যায় ছুটাছুটি করতে দেখল তখন পিছনের দিকে ছুটতে লাগল এবং ফিরে তাকালোনা। তাকে বলা হলঃ হে মূসা! সামনে এসো, ভয় করনা, তুমিতো নিরাপদ।

-মুজিবুর রহমান

• And [he was told], "Throw down your staff." But when he saw it writhing as if it was a snake, he turned in flight and did not return. [Allah said], "O Moses, approach and fear not. Indeed, you are of the secure.

-Sahih International

৩১. আরও বলা হল, আপনি আপনার লাঠি নিক্ষেপ করুন। তারপর, তিনি যখন সেটাকে সাপের ন্যায় ছুটোছুটি করতে দেখলেন তখন পিছনের দিকে ছুটিতে লাগলেন এবং ফিরে তাকালেন না। তাকে বলা হল, হে মূসা! সামনে আসুন, ভয় করবেন না; আপনি তো নিরাপদ।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩১) তুমি তোমার লাঠি নিক্ষেপ কর।’ অতঃপর যখন সে একে সাপের মত ছুটাছুটি করতে দেখল, তখন পিছনে না তাকিয়ে সে বিপরীত দিকে ছুটতে লাগল। (তাকে বলা হল,) ‘হে মূসা! অগ্রসর হও, ভয় করো না; নিশ্চয়ই তুমি নিরাপদে রয়েছ। [1]

[1] এটি সেই মু’জিযা যা মূসা (আঃ) নবুওত প্রাপ্তির পর প্রাপ্ত হয়েছিলেন। যেহেতু মু’জিযা অস্বাভাবিক জিনিসকে বলা হয়, যা স্বাভাবিকতার বিপরীত ও কর্মকারণশূন্য। আর যেহেতু এসব জিনিস (মু’জিযা) কেবল আল্লাহর ইচ্ছা ও আদেশক্রমেই প্রকাশ পায়; কোন মানুষের এখতিয়ারভুক্ত নয় -- যদিও হোক সে কোন মহান পয়গম্বর ও নৈকট্যপ্রাপ্ত নবী -- সেহেতু মূসা (আঃ)-এর হাতের লাঠি মাটিতে ফেলে দেওয়ার পর একটি জীবন্ত সাপ হয়ে গেল তখন তিনি ভয় পেয়ে গেলেন। আবার যখন আল্লাহ তার প্রকৃতত্বের কথা জানিয়ে অভয় দান করলেন, তখন তাঁর ভয় দূর হল এবং তাঁর নিকট এ কথা স্পষ্ট হল যে, মহান আল্লাহ তাঁর সত্যতার প্রমাণস্বরূপ এই মু’জিযা দান করেছেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২৮ : ৩২ اُسۡلُكۡ یَدَكَ فِیۡ جَیۡبِكَ تَخۡرُجۡ بَیۡضَآءَ مِنۡ غَیۡرِ سُوۡٓءٍ ۫ وَّ اضۡمُمۡ اِلَیۡكَ جَنَاحَكَ مِنَ الرَّهۡبِ فَذٰنِكَ بُرۡهَانٰنِ مِنۡ رَّبِّكَ اِلٰی فِرۡعَوۡنَ وَ مَلَا۠ئِهٖ ؕ اِنَّهُمۡ كَانُوۡا قَوۡمًا فٰسِقِیۡنَ ﴿۳۲﴾
اسلك یدك فی جیبك تخرج بیضآء من غیر سوٓء و اضمم الیك جناحك من الرهب فذنك برهانن من ربك الی فرعون و ملائهٖ انهم كانوا قوما فسقین ﴿۳۲﴾
• ‘তোমার হাত তোমার বগলে রাখ, এটা ত্রুটিমুক্ত অবস্থায় শুভ্রোজ্জ্বল হয়ে বেরিয়ে আসবে। আর ভয় থেকে রক্ষার জন্য তোমার হাত তোমার নিজের দিকে মিলাও। অতঃপর এ দু’টো তোমার রবের পক্ষ থেকে দু’টি প্রমাণ, ফির‘আউন ও তার পারিষদবর্গের জন্য। নিশ্চয় তারা ফাসিক কওম’।

-আল-বায়ান

• তোমার হাত তোমার বগলে রাখ, তা দোষমুক্ত জ্যোতির্ময় হয়ে বেরিয়ে আসবে, ভয় থেকে রক্ষার্থে তোমার হাত তোমার উপর চেপে ধর। এ দু’টি হল ফেরাউন ও তার পারিষদবর্গের জন্য তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে প্রমাণ, নিশ্চয় তারা পাপাচারী সম্প্রদায়।’

-তাইসিরুল

• তোমার হাত তোমার বগলে রাখ, ওটা বের হয়ে আসবে শুভ্র সমুজ্জ্বল নির্দোষ হয়ে। ভয় দূর করার জন্য তোমার হস্তদ্বয় তোমার উপর চেপে ধর। এ দু’টি তোমার রাব্ব প্রদত্ত প্রমাণ, ফির‘আউন ও তার পরিষদবর্গের জন্য। তারাতো সত্যত্যাগী সম্প্রদায়।

-মুজিবুর রহমান

• Insert your hand into the opening of your garment; it will come out white, without disease. And draw in your arm close to you [as prevention] from fear, for those are two proofs from your Lord to Pharaoh and his establishment. Indeed, they have been a people defiantly disobedient."

-Sahih International

৩২. আপনার হাত আপনার বগলে রাখুন, এটা বের হয়ে আসবে শুভ্ৰ-সমুজ্জল নির্দোষ হয়ে। আর ভয় দূর করার জন্য আপনার দুহাত নিজের দিকে চেপে ধরুন। অতঃপর এ দুটি আপনার রব-এর দেয়া প্রমাণ, ফিরআউন ও তার পরিষদ বর্গের জন্য।(১) তারা তো ফাসেক সম্প্রদায়।

(১) এ মু'জিযা দুটি তখন মূসাকে দেখানোর কারণ তাকে ফিরআউনের কাছে যে ভয়াবহ দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হচ্ছে সেখানে তিনি একেবারে খালি হাতে তার মুখোমুখি হবেন। না। বরং প্রচণ্ড শক্তিশালী অস্ত্ৰ নিয়ে যাবেন। এ দু'টি মু'জিযাই ছিল অত্যন্ত সুস্পষ্ট। নবুওয়াতের পক্ষে বিরাট ও অকাট্য প্রমাণ। [দেখুন: ইবন কাসীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩২) তোমার হাত নিজ জামার বুকের উন্মুক্ত অংশে প্রবেশ করাও, তা নির্মল উজ্জ্বল হয়ে বের হয়ে আসবে।[1] ভয় দূর করবার জন্য তোমার হাতকে বুকের উপর চেপে ধর।[2] এ দুটি ফিরআউন ও তার পারিষদবর্গের জন্য তোমার প্রতিপালক-প্রদত্ত প্রমাণ। ওরা অবশ্যই সত্যত্যাগী সম্প্রদায়।’ [3]

[1] يَدٌ بَيضَاء (উজ্জ্বল হাত) এটি ছিল দ্বিতীয় মু’জিযা, যা তাঁকে দান করা হয়েছিল।

[2] লাঠি সাপ হয়ে যাওয়ার ফলে মূসা (আঃ)-এর মনে যে ভয় সঞ্চারিত হয়েছিল তা দূর করার এক পদ্ধতি বলে দেওয়া হল। নিজের বাজু (হাত) শরীরে রেখে নাও, তাতে ভয় দূর হয়ে যাবে। কোন কোন মুফাসসির বলেন, এটি সকল মানুষ ও সকল প্রকার ভয় দূর করার জন্য প্রযোজ্য। যখনই কেউ কোন কিছু হতে ভয় পাবে তখনই এ রকম করলে তার ভয় দূর হয়ে যাবে। ইমাম ইবনে কাসীর (রঃ) বলেন, যে কোন ব্যক্তি মূসা (আঃ)-এর অনুকরণে ভয়ের সময় নিজ হাত হৃদয়ের উপর রাখলে তার হৃদয় হতে ভয় বিলকুল দূর হয়ে যাবে, নতুবা কমসে কম সে ভয় কিছু হাল্কা হবে -- ইন শাআল্লাহ।

[3] অর্থাৎ, ফিরআউন ও তার জাতির সামনে এই দুই মু’জিযা নিজের সত্যতার প্রমাণস্বরূপ পেশ কর। এরা আল্লাহর আনুগত্য হতে দূরে সরে গেছে এবং এরা আল্লাহর দ্বীন-বিরোধী।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২৮ : ৩৩ قَالَ رَبِّ اِنِّیۡ قَتَلۡتُ مِنۡهُمۡ نَفۡسًا فَاَخَافُ اَنۡ یَّقۡتُلُوۡنِ ﴿۳۳﴾
قال رب انی قتلت منهم نفسا فاخاف ان یقتلون ﴿۳۳﴾
• মূসা বলল, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমি তাদের এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছি, তাই আমি আশঙ্কা করছি যে, তারা আমাকে হত্যা করবে’।

-আল-বায়ান

• মূসা বলল- ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি তাদের একজনকে হত্যা করেছি, কাজেই আমি আশঙ্কা করছি তারা আমাকে হত্যা করবে।’

-তাইসিরুল

• মূসা বললঃ হে আমার রাব্ব! আমিতো তাদের একজনকে হত্যা করেছি। ফলে আমি আশংকা করছি যে, তারা আমাকে হত্যা করবে।

-মুজিবুর রহমান

• He said, "My Lord, indeed, I killed from among them someone, and I fear they will kill me.

-Sahih International

৩৩. মূসা বললেন, হে আমার রব! আমি তো তাদের একজনকে হত্যা করেছি ফলে আমি আশংকা করছি তারা আমাকে হত্যা করবে।(১)

(১) এর অর্থ এ ছিল না যে, এ ভয়ে আমি সেখানে যেতে চাই না বরং অর্থ ছিল, আপনার পক্ষ থেকে এমন কোন ব্যবস্থা থাকা দরকার যার ফলে আমার সেখানে পৌঁছার সাথে সাথেই কোন প্রকার কথাবার্তা ও রিসালাতের দায়িত্বপালন করার আগেই তারা যেন আমাকে হত্যার অপরাধে গ্রেফতার করে না নেয়। কারণ এ অবস্থায় তো আমাকে যে উদ্দেশ্যে এ অভিযানে সেখানে পাঠানো হচ্ছে তা ব্যর্থ হয়ে যাবে। পরবর্তী আয়াত থেকে একথা স্বতস্ফৰ্তভাবে সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, মূসার এ আবেদনের উদ্দেশ্য ছিল স্বাভাবিক ভয় যা মানুষ মাত্রই করে থাকে। এ ধরনের ভয় থাকা নবুওয়তের মর্যাদার পরিপন্থী কোন কাজ নয়।

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩৩) মূসা বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি তো ওদের একজনকে হত্যা করেছি, ফলে আমি আশংকা করছি যে, ওরা আমাকে হত্যা করবে। [1]

[1] এ ছিল সেই আশঙ্কা যা বাস্তবে মূসা (আঃ)-এর প্রাণে ছিল। কারণ, তাঁর হাতে এক কিবত্বী খুন হয়ে গিয়েছিল।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২৮ : ৩৪ وَ اَخِیۡ هٰرُوۡنُ هُوَ اَفۡصَحُ مِنِّیۡ لِسَانًا فَاَرۡسِلۡهُ مَعِیَ رِدۡاً یُّصَدِّقُنِیۡۤ ۫ اِنِّیۡۤ اَخَافُ اَنۡ یُّكَذِّبُوۡنِ ﴿۳۴﴾
و اخی هرون هو افصح منی لسانا فارسله معی ردا یصدقنی انی اخاف ان یكذبون ﴿۳۴﴾
• ‘আর আমার ভাই হারূন, সে আমার চেয়ে স্পষ্টভাষী, তাই তাকে আমার সাথে সাহায্যকারী হিসেবে প্রেরণ করুন, সে আমাকে সমর্থন করবে। আমি আশঙ্কা করছি যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলবে।

-আল-বায়ান

• আর আমার ভাই হারূন আমার চেয়ে প্রাঞ্জলভাষী, কাজেই তাকে তুমি সাহায্যকারীরূপে আমার সঙ্গে প্রেরণ কর, সে আমাকে সমর্থন জানাবে। আমি আশঙ্কা করছি তারা আমাকে মিথ্যে বলে প্রত্যাখ্যান করবে।’

-তাইসিরুল

• আমার ভাই হারূন আমা অপেক্ষা বাগ্মী; অতএব তাকে আমার সাহায্যকারী রূপে প্রেরণ করুন, সে আমাকে সমর্থন করবে। আমি আশংকা করি যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলবে।

-মুজিবুর রহমান

• And my brother Aaron is more fluent than me in tongue, so send him with me as support, verifying me. Indeed, I fear that they will deny me."

-Sahih International

৩৪. আর আমার ভাই হারূন আমার চেয়ে বাগ্মী(১); অতএব তাকে আমার সাহায্যকারীরূপে প্রেরণ করুন, সে আমাকে সমর্থন করবে। আমি আশংকা করি তারা আমার প্রতি মিথ্যারোপ করবে।

(১) এ আয়াত থেকে জানা গেল যে, ওয়াজ ও প্রচারকার্যে ভাষার প্রাঞ্জলতা ও প্রশংসনীয় বর্ণনাভঙ্গি কাম্য। এই গুণ অর্জনে প্রচেষ্টা চালানো নিন্দনীয় নয়। তবে হারূন আলাইহিস সালাম তার ভাই মূসা আলাইহিস সালাম থেকে বেশী বাগ্মী হলেও ফের'আউনের সাথে কথাবার্তা মূসা আলাইহিস সালামের মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছিল বলেই প্রমাণিত হয়। এর দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, বাগ্মীতার যেমন প্রয়োজন তেমনি জ্ঞানের পরিধিরও আলাদা কদর রয়েছে।

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩৪) আমার ভাই হারূন আমার থেকে বাগ্মী; অতএব তাকে আমার সহযোগীরূপে প্রেরণ কর,[1] সে আমাকে সমর্থন করবে। নিশ্চয় আমি আশংকা করি যে, ওরা আমাকে মিথ্যাবাদী বলবে।’

[1] ইস্রাঈলী বর্ণনা মতে মূসা (আঃ) ছিলেন তোতলা। যার কারণ এই বলা হয়ে থাকে যে, শিশু মূসার সামনে আগুনের আঙ্গার ও খেজুর অথবা মুক্তা রাখা হয়েছিল। তিনি আগুনের আঙ্গার তুলে মুখে পুরে নিয়েছিলেন, যার জন্য তাঁর জিহ্বা পুড়ে গিয়েছিল। এই ঘটনা বা যুক্তি ঠিক হোক অথবা ভুল, কুরআনের এই আয়াত হতে প্রমাণিত হয় যে, মূসা (আঃ)-এর তুলনায় হারূন (আঃ) বেশি বাকপটু ও স্পষ্টভাষী ছিলেন। আর মূসা (আঃ)-এর মুখে ছিল আড়ষ্টতা ও জড়তা। যা দূর করার জন্য তিনি নবুঅত প্রাপ্তির পর দু’আ করেছিলেন। رِدء এর অর্থ সহায়ক, সহযোগী, সমর্থক। অর্থাৎ, হারূন নিজ বাকপটুতায় আমার সাহায্য ও সহযোগিতা করবে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২৮ : ৩৫ قَالَ سَنَشُدُّ عَضُدَكَ بِاَخِیۡكَ وَ نَجۡعَلُ لَكُمَا سُلۡطٰنًا فَلَا یَصِلُوۡنَ اِلَیۡكُمَا ۚۛ بِاٰیٰتِنَاۤ ۚۛ اَنۡتُمَا وَ مَنِ اتَّبَعَكُمَا الۡغٰلِبُوۡنَ ﴿۳۵﴾
قال سنشد عضدك باخیك و نجعل لكما سلطنا فلا یصلون الیكما بایتنا انتما و من اتبعكما الغلبون ﴿۳۵﴾
• আল্লাহ বললেন, ‘আমি তোমার ভাইয়ের মাধ্যমে তোমার বাহু শক্তিশালী করব এবং তোমাদের দু’জনকে ক্ষমতা দান করব, ফলে তারা তোমাদের কাছে পৌঁছতে পারবে না। আমার নিদর্শনাবলী দ্বারা তোমরা ও তোমাদের অনুসারীরা বিজয়ী হবে’।

-আল-বায়ান

• আল্লাহ বললেন- ‘আমি তোমার ভ্রাতার মাধ্যমে তোমার হাতকে শক্তিশালী করব এবং তোমাদেরকে প্রমাণপঞ্জি দান করব, যার ফলে তারা তোমাদের কাছে পৌঁছতেই পারবে না। আমার নিদর্শন বলে তোমরা এবং তোমাদের অনুসারীরাই বিজয়ী থাকবে।

-তাইসিরুল

• (আল্লাহ) বললেনঃ আমি তোমার ভাইয়ের দ্বারা তোমার বাহু শক্তিশালী করব এবং তোমাদের উভয়কে প্রাধান্য দান করব। তারা তোমাদের কাছে পৌঁছতে পারবেনা। তোমরা এবং তোমাদের অনুসারীরা আমার নিদর্শন বলে তাদের উপর প্রবল হবে।

-মুজিবুর রহমান

• [Allah] said, "We will strengthen your arm through your brother and grant you both supremacy so they will not reach you. [It will be] through Our signs; you and those who follow you will be the predominant."

-Sahih International

৩৫. আল্লাহ্‌ বললেন, অচিরেই আমরা আপনার ভাইয়ের দ্বারা আপনার বাহুকে শক্তিশালী করব এবং আপনাদের উভয়কে প্রাধান্য দান করব। ফলে তারা আপনাদের কাছে পৌছতে পারবে না। আপনারা এবং আপনাদের অনুসারীরা আমাদের নিদর্শন বলে তাদের উপর প্রবল হবেন।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩৫) আল্লাহ বললেন, ‘আমি তোমার ভাই দ্বারা তোমার বাহু শক্তিশালী করব[1] এবং তোমাদের উভয়কে আধিপত্য দান করব। ওরা তোমাদের নিকট পৌঁছতে পারবে না।[2] তোমরা এবং তোমাদের অনুসারীরা আমার নিদর্শন বলেই ওদের উপর বিজয়ী হবে।’ [3]

[1] মূসা (আঃ)-এর দু’আ মঞ্জুর করা হল আর তার আশানুরূপ হারূন (আঃ)-কেও নবুঅত প্রদান করে তাঁর সঙ্গী ও সহযোগী বানানো হল।

[2] অর্থাৎ, আমি তোমাদের সুরক্ষা করব। ফিরআউন ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না।

[3] এটা সেই বিষয় যা কুরআনে বিভিন্ন স্থানে বর্ণিত হয়েছে। যেমন, সূরা মায়িদাহ ৬৭নং, আহযাব ৩৯নং, মুজাদিলাহ ৩১নং, মু’মিন ৫১-৫২নং আয়াত দ্রষ্টব্য।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২৮ : ৩৬ فَلَمَّا جَآءَهُمۡ مُّوۡسٰی بِاٰیٰتِنَا بَیِّنٰتٍ قَالُوۡا مَا هٰذَاۤ اِلَّا سِحۡرٌ مُّفۡتَرًی وَّ مَا سَمِعۡنَا بِهٰذَا فِیۡۤ اٰبَآئِنَا الۡاَوَّلِیۡنَ ﴿۳۶﴾
فلما جآءهم موسی بایتنا بینت قالوا ما هذا الا سحر مفتری و ما سمعنا بهذا فی ابآئنا الاولین ﴿۳۶﴾
• অতঃপর মূসা যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট নিদর্শনগুলো নিয়ে আসল, তখন তারা বলল, ‘এ তো মিথ্যা যাদু ছাড়া আর কিছুই নয় এবং এরূপ কথা আমাদের পিতৃপুরুষদের মধ্যেও শুনিনি’।

-আল-বায়ান

• মূসা যখন তাদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শন নিয়ে আসল, তারা বলল- এতো অলীক যাদু মাত্র, আমাদের পূর্বপুরুষদের যামানায় এ সবের কথা তো শুনিনি।

-তাইসিরুল

• মূসা যখন তাদের নিকট আমার সুস্পষ্ট নিদর্শনগুলি নিয়ে এলো তখন তারা বললঃ এটাতো অলীক ইন্দ্রজাল মাত্র! আমাদের পূর্ব-পুরুষদের কাছে আমরা কখনও এরূপ কথা শুনিনি।

-মুজিবুর রহমান

• But when Moses came to them with Our signs as clear evidences, they said, "This is not except invented magic, and we have not heard of this [religion] among our forefathers."

-Sahih International

৩৬. অতঃপর মূসা যখন তাদের কাছে আমাদের সুস্পষ্ট নিদর্শন নিয়ে আসল, তারা বলল, এটা তো অলীক জাদু মাত্ৰ!(১) আর আমাদের পূর্বপুরুষদের কালে কখনো এরূপ কথা শুনিনি।(২)

(১) বলা হয়েছেঃ অলীক জাদু বা বানোয়াট জাদু। [কুরতুবী] তুমি নিজে এটা বানিয়ে নিয়েছ। [ফাতহুল কাদীর]

(২) রিসালাতের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মূসা আলাইহিস সালাম যেসব কথা বলেছিলেন সে দিকে ইংগিত করা হয়েছে। কুরআনের অন্যান্য জায়গায় এগুলোর বিস্তারিত বিবরণ এসেছে। অন্যত্র এসেছে, মূসা তাকে বলেনঃ “তুমি কি পবিত্র পরিচ্ছন্ন নীতি অবলম্বন করতে আগ্রহী? এবং আমি তোমাকে তোমার রবের পথ বাতলে দিলে কি তুমি ভীত হবে? [সূরা আন-নাযি'আতঃ ১৮–১৯] সূরা ত্বা-হায়ে বলা হয়েছেঃ আর আমরা তোমার রবের রাসূল, তুমি বনী ইসরাঈলকে আমাদের সাথে যেতে দাও। আমরা তোমার কাছে তোমার প্রতিপালকের কাছ থেকে নির্দশন নিয়ে এসেছি। আর যে ব্যক্তি সঠিক পথের অনুসারী হয় তার জন্য রয়েছে শান্তি ও নিরাপত্তা। আমাদের প্রতি অহী নাযিল করা হয়েছে। এ মর্মে যে, শাস্তি তার জন্য যে মিথ্যা আরোপ করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়। [সূরা ত্বা-হা: ৪৭–৪৮]

এ কথাগুলো সম্পর্কেই ফিরআউন বলে, আমাদের বাপ দাদারাও কখনো একথা শোনেনি যে, মিসরের ফিরআউনের উপরেও কোন কর্তৃত্বশালী সত্তা আছে, যে তাকে হুকুম করার ক্ষমতা রাখে, তাকে শাস্তি দিতে পারে, তাকে নির্দেশ দেবার জন্য কোন লোককে তার দরবারে পাঠাতে পারে এবং যাকে ভয় করার জন্য মিসরের বাদশাহকে উপদেশ দেয়া যেতে পারে। এ সম্পূর্ণ অভিনব কথা আমরা আজ এক ব্যক্তির মুখে শুনছি। অথবা আয়াতের অর্থ আমরা নবুওয়ত ও রিসালাত সম্পর্কে আগে কখনও শুনিনি। [দেখুন: ফাতহুল কাদীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩৬) সুতরাং মূসা যখন ওদের নিকট আমার সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী সহ উপস্থিত হল, তখন ওরা বলল, ‘এ তো অলীক যাদু মাত্র! আমাদের পূর্বপুরুষকালে কখনও এরূপ ঘটতে শুনিনি।’ [1]

[1] অর্থাৎ, এই দাওয়াত যে, বিশ্ব-জাহানে একমাত্র আল্লাহই ইবাদতের যোগ্য এটি আমাদের জন্য সম্পূর্ণ নতুন কথা। এ কথা না আমরা শুনেছি আর না আমাদের পূর্বপুরুষেরা এই তাওহীদ সম্পর্কে অবহিত ছিল। মক্কার মুশরিকরাও নবী (সাঃ) সম্পর্কে বলেছিল,{أَجَعَلَ الْآلِهَةَ إِلَهًا وَاحِدًا إِنَّ هَذَا لَشَيْءٌ عُجَابٌ} অর্থাৎ, সে কি বহু উপাস্যের পরিবর্তে এক উপাস্য বানিয়ে নিয়েছে? এ তো এক অত্যাশ্চর্য ব্যাপার। (সূরা সা’দ ৫ আয়াত)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২৮ : ৩৭ وَ قَالَ مُوۡسٰی رَبِّیۡۤ اَعۡلَمُ بِمَنۡ جَآءَ بِالۡهُدٰی مِنۡ عِنۡدِهٖ وَ مَنۡ تَكُوۡنُ لَهٗ عَاقِبَۃُ الدَّارِ ؕ اِنَّهٗ لَا یُفۡلِحُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۳۷﴾
و قال موسی ربی اعلم بمن جآء بالهدی من عندهٖ و من تكون لهٗ عاقبۃ الدار انهٗ لا یفلح الظلمون ﴿۳۷﴾
• আর মূসা বলল, ‘আমার রব সম্যক অবগত আছেন, কে তাঁর কাছ থেকে হিদায়াত নিয়ে এসেছে এবং আখিরাতে কার পরিণাম শুভ হবে। নিশ্চয় যালিমরা সফল হবে না’।

-আল-বায়ান

• মূসা বলল- ‘আমার প্রতিপালক বেশ ভাল ক’রেই জানেন কে তাঁর নিকট থেকে পথ নির্দেশ নিয়ে এসেছে এবং কার পরিণাম আখিরাতে শুভ হবে। যালিমরা কক্ষনো সাফল্য লাভ করবে না।’

-তাইসিরুল

• মূসা বললঃ আমার রাব্ব সম্যক অবগত, কে তাঁর নিকট হতে পথ নির্দেশ নিয়ে এসেছে, এবং আখিরাতে কার পরিণাম শুভ হবে। নিশ্চয়ই যালিমরা সফলকাম হবেনা।

-মুজিবুর রহমান

• And Moses said, "My Lord is more knowing [than we or you] of who has come with guidance from Him and to whom will be succession in the home. Indeed, wrongdoers do not succeed."

-Sahih International

৩৭. আর মূসা বললেন, আমার রব সম্যক অবগত, কে তার কাছ থেকে পথনির্দেশ এনেছে এবং আখেরাতে কার পরিণাম শুভ হবে। যালিমরা তো কখনো সফলকাম হবে না।(১)

(১) অর্থাৎ আমার রব আমার অবস্থা ভালো জানেন। তিনি জানেন তাঁর পক্ষ থেকে যাকে রাসূল নিযুক্ত করা হয়েছে সে কেমন লোক। পরিণামের ফায়সালা তাঁরই হাতে রয়েছে। তিনিই তোমাদের ও আমাদের মাঝে ফায়সালা করে দেবেন। তিনিই জানেন কার জন্য তিনি আখেরাতের সুন্দর পরিণাম নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। [ইবন কাসীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩৭) মূসা বলল, আমার প্রতিপালক সম্যক অবগত, কে তাঁর নিকট থেকে পথনির্দেশ এনেছে[1] এবং (পরকালে) কার পরিণাম শুভ হবে।[2] নিশ্চয় সীমালংঘনকারীরা সফলকাম হবে না। [3]

[1] অর্থাৎ, তোমার ও আমার চেয়ে আল্লাহই হিদায়াতের ব্যাপারে অধিক জ্ঞাত। অতএব যে কথা আল্লাহর পক্ষ হতে আসবে সে কথা সত্য হবে, নাকি তোমাদের ও তোমাদের বাপ-দাদাদের কথা?

[2] শুভ-পরিণাম বলতে পরকালে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তাঁর দয়া এবং ক্ষমার যোগ্য হওয়া। আর এ যোগ্যতা একমাত্র তওহীদপন্থীদেরই লাভ হবে।

[3] ظَالِم (সীমালংঘনকারী) বলতে কাফের ও মুশরিকদেরকে বুঝানো হয়েছে। কারণ আরবীতে ظلم এর অর্থ وضع الشيء في غير محله কোন জিনিসকে তার নিজের জায়গায় না রেখে অন্য জায়গায় রাখা। মুশরিক যেহেতু আল্লাহর জায়গায় এমন কিছুকে মাবূদ বানিয়ে দেয় যারা ইবাদতের যোগ্য নয়। অনুরূপ কাফেররাও প্রতিপালকের আসল স্থান সম্বন্ধে অনভিজ্ঞ থাকে। সেই জন্য এরাই সব থেকে বড় সীমালংঘনকারী, অনাচারী ও অত্যাচারী। আর এরা পরকালে সফলতা হতে; অর্থাৎ, আল্লাহর অনুগ্রহ, দয়া ও ক্ষমা হতে বঞ্চিত হবে। এই আয়াত থেকেও জানা গেল যে, সব চেয়ে বড় সফলতা পরকালের সফলতা। পৃথিবীর সুখ-শান্তি, ধন-সম্পদের আধিক্য সত্যিকার সফলতা নয়। কারণ, এ সাময়িক সফলতা পৃথিবীতে মুশরিক-কাফের সকলের ভাগ্যেই জোটে। কিন্তু মহান আল্লাহ তাদের সফলতার কথা খন্ডন করেছেন, যাতে এ কথা স্পষ্ট হয় যে, সত্যিকার সফলতা পরকালের চিরস্থায়ী সফলতা; পৃথিবীর কয়েক দিনের অস্থায়ী সুখ-শান্তি এবং ধন-সম্পদ প্রকৃত সফলতা নয়।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২৮ : ৩৮ وَ قَالَ فِرۡعَوۡنُ یٰۤاَیُّهَا الۡمَلَاُ مَا عَلِمۡتُ لَكُمۡ مِّنۡ اِلٰهٍ غَیۡرِیۡ ۚ فَاَوۡقِدۡ لِیۡ یٰهَامٰنُ عَلَی الطِّیۡنِ فَاجۡعَلۡ لِّیۡ صَرۡحًا لَّعَلِّیۡۤ اَطَّلِعُ اِلٰۤی اِلٰهِ مُوۡسٰی ۙ وَ اِنِّیۡ لَاَظُنُّهٗ مِنَ الۡكٰذِبِیۡنَ ﴿۳۸﴾
و قال فرعون یایها الملا ما علمت لكم من اله غیری فاوقد لی یهامن علی الطین فاجعل لی صرحا لعلی اطلع الی اله موسی و انی لاظنهٗ من الكذبین ﴿۳۸﴾
• আর ফির‘আউন বলল, ‘হে পারিষদবর্গ, আমি ছাড়া তোমাদের কোন ইলাহ আছে বলে আমি জানি না। অতএব হে হামান, আমার জন্য তুমি ইট পোড়াও, তারপর আমার জন্য একটি প্রাসাদ তৈরী কর। যাতে আমি মূসার ইলাহকে দেখতে পাই। আর নিশ্চয় আমি মনে করি সে মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত’।

-আল-বায়ান

• ফিরআউন বলল- ‘হে পারিষদবর্গ! আমি ছাড়া তোমাদের কোন ইলাহ আছে বলে আমি জানি না। কাজেই ওহে হামান! তুমি আমার জন্য ইট পোড়াও, অতঃপর আমার জন্য একটি প্রাসাদ নির্মাণ কর যাতে আমি মূসার ইলাহকে দেখতে পারি, আমার নিশ্চিত ধারণা যে, সে একজন মিথ্যেবাদী।’

-তাইসিরুল

• ফির‘আউন বললঃ হে পরিষদবর্গ! আমি ছাড়া তোমাদের অন্য উপাস্য আছে বলে আমি জানিনা। হে হামান! তুমি আমার জন্য ইট পোড়াও এবং একটি সুউচ্চ প্রাসাদ তৈরী কর; হয়তো আমি তাতে উঠে মূসার মা‘বূদকে দেখতে পাব। তবে আমি অবশ্য মনে করি যে, সে মিথ্যাবাদী।

-মুজিবুর রহমান

• And Pharaoh said, "O eminent ones, I have not known you to have a god other than me. Then ignite for me, O Haman, [a fire] upon the clay and make for me a tower that I may look at the God of Moses. And indeed, I do think he is among the liars."

-Sahih International

৩৮. আর ফিরআউন বলল, হে পরিষদবর্গ! আমি ছাড়া তোমাদের অন্য কোন ইলাহ আছে বলে জানি না! অতএব হে হামান! তুমি আমার জন্য ইট পোড়াও এবং একটি সুউচ্চ প্রাসাদ তৈরী কর; হয়ত আমি সেটাতে উঠে মূসার ইলাহকে দেখতে পারি। আর আমি তো মনে করি, সে অবশ্যই মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩৮) ফিরআউন বলল, ‘হে পারিষদবর্গ! আমি ছাড়া তোমাদের অন্য কোন উপাস্য আছে বলে জানি না! হে হামান! তুমি আমার জন্য ইট পোড়াও[1] এবং এক সুউচ্চ প্রাসাদ নির্মাণ কর; হয়তো আমি এতে মূসার উপাস্যকে উঁকি মেরে দেখতে পারি।[2] তবে আমি অবশ্যই মনে করি, সে মিথ্যাবাদী।’ [3]

[1] অর্থাৎ, মাটিকে পুড়িয়ে ইট তৈরী কর। হামান ছিল ফিরআউনের মন্ত্রী, পরামর্শদাতা ও তার রাজকার্যের দায়িত্বশীল ব্যক্তি।

[2] অর্থাৎ, একটি উঁচু ও সুদৃঢ় প্রাসাদ তৈরী কর। যার উপর চড়ে আকাশে গিয়ে আমি দেখতে পারি যে, সেখানে আমি ছাড়া অন্য কোন রব (প্রতিপালক) আছে কি না?

[3] অর্থাৎ, মূসার দাবী যে, আসমানে একজন রব রয়েছে, যে সারা বিশ্বের পালনকর্তা, আমি তাকে এ দাবীতে মিথ্যাবাদী মনে করি।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২৮ : ৩৯ وَ اسۡتَكۡبَرَ هُوَ وَ جُنُوۡدُهٗ فِی الۡاَرۡضِ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ وَ ظَنُّوۡۤا اَنَّهُمۡ اِلَیۡنَا لَا یُرۡجَعُوۡنَ ﴿۳۹﴾
و استكبر هو و جنودهٗ فی الارض بغیر الحق و ظنوا انهم الینا لا یرجعون ﴿۳۹﴾
• আর ফির‘আউন ও তার সেনাবাহিনী অন্যায়ভাবে যমীনে অহঙ্কার করেছিল এবং তারা মনে করেছিল যে, তাদেরকে আমার নিকট ফিরিয়ে আনা হবে না।

-আল-বায়ান

• ফেরাউন ও তার বাহিনী অকারণে পৃথিবীতে অহংকার করেছিল আর তারা ভেবেছিল যে, তাদেরকে আমার কাছে ফিরিয়ে আনা হবে না।

-তাইসিরুল

• ফির‘আউন ও তার বাহিনী অন্যায়ভাবে পৃথিবীতে অহংকার করেছিল যে, তারা আমার নিকট প্রত্যাবর্তিত হবেনা।

-মুজিবুর রহমান

• And he was arrogant, he and his soldiers, in the land, without right, and they thought that they would not be returned to Us.

-Sahih International

৩৯. আর ফিরআউন ও তার বাহিনী অন্যায়ভাবে যমীনে অহংকার করেছিল এবং তারা মনে করেছিল যে, তাদেরকে আমাদের নিকট ফিরিয়ে আনা হবে না।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩৯) ফিরআউন ও তার বাহিনী অন্যায়ভাবে পৃথিবীতে অহংকার করেছিল[1] এবং ওরা মনে করেছিল যে, ওরা আমার নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে না ।

[1] এখানে পৃথিবী, যমীন বা দেশ বলতে ‘মিসর’কে বুঝানো হয়েছে, যেখানে ফিরআউন রাজত্ব করত। অহংকার অর্থ, অকারণে নাহক নিজেকে বড় মনে করা। অর্থাৎ তার নিকট কোন প্রমাণ ছিল না যার দ্বারা মূসা (আঃ)-এর প্রমাণ ও মু’জিযাকে প্রত্যাখ্যান করতে পারত। কিন্তু সে অহংকার ও শত্রুতাবশতঃ অস্বীকার করার রাস্তা অবলম্বন করল।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
২৮ : ৪০ فَاَخَذۡنٰهُ وَ جُنُوۡدَهٗ فَنَبَذۡنٰهُمۡ فِی الۡیَمِّ ۚ فَانۡظُرۡ كَیۡفَ كَانَ عَاقِبَۃُ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۴۰﴾
فاخذنه و جنودهٗ فنبذنهم فی الیم فانظر كیف كان عاقبۃ الظلمین ﴿۴۰﴾
• অতঃপর আমি তাকে ও তার সেনাবাহিনীকে পাকড়াও করলাম, তারপর তাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলাম। অতএব, দেখ যালিমদের পরিণাম কিরূপ হয়েছিল?

-আল-বায়ান

• কাজেই আমি তাকে ও তার বাহিনীকে পাকড়াও করলাম, অতঃপর তাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলাম। এখন দেখ, যালিমদের পরিণতি কী হয়েছিল।

-তাইসিরুল

• অতএব আমি তাকে ও তার বাহিনীকে পাকড়াও করলাম এবং তাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলাম। দেখ, যালিমদের পরিণাম কি হয়ে থাকে।

-মুজিবুর রহমান

• So We took him and his soldiers and threw them into the sea. So see how was the end of the wrongdoers.

-Sahih International

৪০. অতঃপর আমরা তাকে ও তার বাহিনীকে পাকড়াও করলাম এবং তাদেরকে সাগরে নিক্ষেপ করলাম। সুতরাং দেখুন, যালিমদের পরিণাম কিরূপ হয়েছিল!

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৪০) অতএব আমি তাকে ও তার বাহিনীকে পাকড়াও করে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলাম।[1] সুতরাং দেখ, সীমালংঘনকারীদের পরিণাম কি ছিল!

[1] যখন তার অবিশ্বাস ও ঔদ্ধত্য সীমা অতিক্রম করল এবং কোনক্রমেই ঈমান আনতে প্রস্তুত হল না, তখন শেষ পর্যন্ত এক সকালে আমি তার সলিল সমাধি ঘটালাম।

(যার বিস্তারিত আলোচনা সূরা শুআরায় ১০-৬৮ আয়াতে উল্লেখ হয়েছে।)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
দেখানো হচ্ছেঃ ৩১ থেকে ৪০ পর্যন্ত, সর্বমোট ৮৮ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ « আগের পাতা 1 2 3 4 5 6 7 8 9 পরের পাতা »