بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
সূরাঃ ৪১/ হা-মীম আস-সাজদা (ফুসসিলাত) | Fussilat | سورة فصلت আয়াতঃ ৫৪ মাক্কী
৪১ : ২১ وَ قَالُوۡا لِجُلُوۡدِهِمۡ لِمَ شَهِدۡتُّمۡ عَلَیۡنَا ؕ قَالُوۡۤا اَنۡطَقَنَا اللّٰهُ الَّذِیۡۤ اَنۡطَقَ كُلَّ شَیۡءٍ وَّ هُوَ خَلَقَكُمۡ اَوَّلَ مَرَّۃٍ وَّ اِلَیۡهِ تُرۡجَعُوۡنَ ﴿۲۱﴾
و قالوا لجلودهم لم شهدتم علینا قالوا انطقنا الله الذی انطق كل شیء و هو خلقكم اول مرۃ و الیه ترجعون ﴿۲۱﴾
• আর তারা তাদের চামড়াগুলোকে বলবে, ‘কেন তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলে’? তারা বলবে, ‘আল্লাহ আমাদের বাকশক্তি দিয়েছেন যিনি সবকিছুকে বাকশক্তি দিয়েছেন। তিনি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁরই প্রতি তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।’

-আল-বায়ান

• তারা তাদের চামড়াকে বলবে- আমাদের বিরুদ্ধে কেন সাক্ষ্য দিচ্ছ? তারা উত্তর দিবে- আল্লাহ আমাদেরকে কথা বলার শক্তি দিয়েছেন, যিনি সব কিছুকেই (আজ) কথা বলার শক্তি দিয়েছেন। তিনিই প্রথমবার তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, আর তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে।

-তাইসিরুল

• জাহান্নামীরা তাদের ত্বককে জিজ্ঞেস করবেঃ তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছ কেন? উত্তরে তারা বলবেঃ আল্লাহ! যিনি সব কিছুকে বাকশক্তি দিয়েছেন তিনি আমাদেরকেও বাকশক্তি দিয়েছেন। তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন প্রথমবার এবং তাঁরই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।

-মুজিবুর রহমান

• And they will say to their skins, "Why have you testified against us?" They will say, "We were made to speak by Allah, who has made everything speak; and He created you the first time, and to Him you are returned.

-Sahih International

২১. আর তারা (জাহান্নামীরা) তাদের ত্বককে বলবে, কেন তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলে? তারা বলবে, আল্লাহ্‌ আমাদেরকে বাকশক্তি দিয়েছেন, তিনি সবকিছুকে বাকশক্তি দিয়েছেন। আর তিনি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁরই কাছে তোমরা প্ৰত্যাবর্তিত হবে।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(২১) জাহান্নামীরা ওদের চামড়াকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলে কেন?’[1] উত্তরে চামড়া বলবে, ‘আল্লাহ যিনি সমস্ত কিছুকে বাকশক্তি দিয়েছেন, তিনি আমাদেরও বাকশক্তি দিয়েছেন।’ তিনি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁরই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। [2]

[1] অর্থাৎ, মুশরিক ও কাফেররা যখন দেখবে যে, তাদেরই অঙ্গগুলো তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছে, তখন বিস্মিত অথবা ক্ষুব্ধ হয়ে ধমকের স্বরে এ কথা বলবে।

[2] কেউ কেউ وَهُوَ (তিনি তোমাদেরকে) থেকে আল্লাহর উক্তি বলেছেন। এই দিক দিয়ে এটা হবে ‘জুমলাহ মুস্তা’নিফাহ’ (বিচ্ছিন্ন নতুন বাক্য)। আবার কেউ কেউ বলেছেন, এটা মানুষের চামড়ারই কথা। এই দিক দিয়ে এটা হবে সেই কথার অবশিষ্ট অংশ। কিয়ামতের দিন মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ইতিপূর্বে সূরা নূরের ২৪নং আয়াতে এবং সূরা ইয়াসীনের ৬৫নং আয়াতেও উল্লিখিত হয়েছে। অনুরূপ সহীহ হাদীসসমূহে এ কথা বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন, যখন আল্লাহর নির্দেশে মানুষের অঙ্গগুলো বাক্যালাপে সব কিছু বলে দেবে, তখন বান্দা বলবে, بُعْدًا لَّكُنَّ وَسُحْقًا، فَعَنْكُنَّ كُنْتُ أُنَاضِلُ ‘‘তোমরা ধ্বংস হও, দূর হও। আমি তোমাদের জন্যই ঝগড়া ও দোষখন্ডন করছিলাম।’’ (মুসলিমঃ কিতাবুয্ যুহদ) এই বর্ণনাতেই এসেছে যে, বান্দা বলবে, ‘আমি আমার নিজের দেহ ব্যতীত অন্য কারো সাক্ষ্য মানব না।’ তখন মহান আল্লাহ বলবেন, ‘আমি এবং আমার সম্মানিত লেখক ফিরিশতাগণ কি সাক্ষীর জন্য যথেষ্ট নই?’ অতঃপর তাদের মুখে মোহর লাগিয়ে দেওয়া হবে এবং তাদের অঙ্গগুলোকে কথা বলার নির্দেশ দেওয়া হবে। (ঐ)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪১ : ২২ وَ مَا كُنۡتُمۡ تَسۡتَتِرُوۡنَ اَنۡ یَّشۡهَدَ عَلَیۡكُمۡ سَمۡعُكُمۡ وَ لَاۤ اَبۡصَارُكُمۡ وَ لَا جُلُوۡدُكُمۡ وَ لٰكِنۡ ظَنَنۡتُمۡ اَنَّ اللّٰهَ لَا یَعۡلَمُ كَثِیۡرًا مِّمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۲۲﴾
و ما كنتم تستترون ان یشهد علیكم سمعكم و لا ابصاركم و لا جلودكم و لكن ظننتم ان الله لا یعلم كثیرا مما تعملون ﴿۲۲﴾
• তোমরা কিছুই গোপন করতে না এই বিশ্বাসে যে, তোমাদের কান, চোখসমূহ ও চামড়াসমূহ তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে না, বরং তোমরা মনে করেছিলে যে, তোমরা যা কিছু করতে আল্লাহ তার অনেক কিছুই জানেন না।

-আল-বায়ান

• (দুনিয়ায় নিজেদের শরীরের অংশগুলোকে তোমরা) এই ভেবে গোপন করতে না যে, না তোমাদের কান, না তোমাদের চোখ আর না তোমাদের চামড়া তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। বরং তোমরা মনে করতে যে, তোমরা যা কর তার অধিকাংশই আল্লাহ জানেন না।

-তাইসিরুল

• তোমরা কিছু গোপন করতে না এই বিশ্বাসে যে, তোমাদের কর্ণ, চক্ষু এবং ত্বক তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবেনা; উপরন্ত তোমরা মনে করতে যে, তোমরা যা করতে তার অনেক কিছুই আল্লাহ জানেননা।

-মুজিবুর রহমান

• And you were not covering yourselves, lest your hearing testify against you or your sight or your skins, but you assumed that Allah does not know much of what you do.

-Sahih International

২২. আর তোমরা কিছুই গোপন করতে না এ বিশ্বাসে যে, তোমাদের কান, চোখ ও ত্বক তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে না—বরং তোমরা মনে করেছিলে যে, তোমরা যা করতে তার অনেক কিছুই আল্লাহ জানেন না।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(২২) তোমাদের কান, চোখ ও চামড়া তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে না --এ বিশ্বাসে তোমরা এদের নিকট কিছু গোপন করতে না;[1] উপরন্তু তোমরা মনে করতে যে, তোমরা যা করতে, তার অনেক কিছুই আল্লাহ জানেন না! [2]

[1] এর অর্থ হল, তোমরা পাপকাজ করার সময় মানুষকে গোপন করার চেষ্টা তো করেছিলে, কিন্তু এ ব্যাপারে তোমাদের কোনই আশঙ্কা ছিল না যে, তোমাদের বিরুদ্ধে স্বয়ং তোমাদের অঙ্গগুলো সাক্ষ্য দেবে। তাই তাদের নিকট থেকে গোপনীয়তা অবলম্বন করার কোনই প্রয়োজন তোমরা অনুভব করনি। আর এর কারণ ছিল, তোমাদের পুনরুত্থানকে অস্বীকার করা এবং তার উপর বিশ্বাস না রাখা।

[2] এই জন্য তোমরা আল্লাহর সীমা উল্লংঘন এবং তাঁর অবাধ্যাচরণ করতে ভয়শূন্য ছিলে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪১ : ২৩ وَ ذٰلِكُمۡ ظَنُّكُمُ الَّذِیۡ ظَنَنۡتُمۡ بِرَبِّكُمۡ اَرۡدٰىكُمۡ فَاَصۡبَحۡتُمۡ مِّنَ الۡخٰسِرِیۡنَ ﴿۲۳﴾
و ذلكم ظنكم الذی ظننتم بربكم اردىكم فاصبحتم من الخسرین ﴿۲۳﴾
• আর তোমাদের এ ধারণা যা তোমরা তোমাদের রব সম্পর্কে পোষণ করতে, তাই তোমাদের ধ্বংস করেছে। ফলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেলে।

-আল-বায়ান

• তোমাদের এই (ভুল) ধারণাই- যা তোমরা তোমাদের প্রতিপালক সম্পর্কে পোষণ করতে- তোমাদেরকে ধ্বংস করেছে, ফলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্তদের দলে শামিল হয়ে গেছ।

-তাইসিরুল

• তোমাদের রাব্ব সম্বন্ধে তোমাদের এই ধারণাই তোমাদের ধ্বংস এনেছে। ফলে তোমরা হয়েছ ক্ষতিগ্রস্ত।

-মুজিবুর রহমান

• And that was your assumption which you assumed about your Lord. It has brought you to ruin, and you have become among the losers."

-Sahih International

২৩. আর তোমাদের রব সম্বন্ধে তোমাদের এ ধারণাই তোমাদের ধ্বংস করেছে। ফলে তোমরা হয়েছ ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৩) তোমাদের প্রতিপালক সম্বন্ধে তোমাদের এ ধারণাই তোমাদেরকে ধ্বংসে ফেলেছে।[1] ফলে, তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছ।

[1] অর্থাৎ, আল্লাহ তোমাদের অনেক কার্যকলাপের খবর রাখেন না, এই ভ্রান্ত বিশ্বাস এবং বাতিল ধারণাই তোমাদেরকে ধ্বংসের মধ্যে পতিত করেছে। কেননা, এর কারণে তোমরা নির্ভয়ে সর্বপ্রকার পাপকাজ করতে সাহস করেছিলে। এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণ সম্পর্কে একটি বর্ণনা এসেছে। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, কা’বা শরীফের পাশে দু’জন কুরাইশী এবং একজন সাক্বাফী অথবা দু’জন সাক্বাফী এবং একজন কুরাইশী একত্রিত হয়। তাদের মধ্যে মোটা শরীর এবং অল্প বুদ্ধির অধিকারী ব্যক্তিটি বলল, ‘তোমরা কি মনে কর যে, আমাদের কথা আল্লাহ শুনেন?’ দ্বিতীয়জন বলল, ‘আমাদের জোরে বলা কথাগুলো শুনেন এবং আস্তে বলা কথাগুলো শুনেন না।’ অপর আর একজন বলল, ‘তিনি যদি আমাদের উঁচু আওয়াজে বলা কথাগুলো শুনেন, তবে চুপি চুপি বলা কথাগুলো অবশ্যই শুনেন।’ এরই উপর আল্লাহ {وَمَا كُنْتُمْ تَسْتَتِرُوْنَ} আয়াত অবতীর্ণ হল। (বুখারীঃ তাফসীর সূরা হা-মীম সাজদাহ)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪১ : ২৪ فَاِنۡ یَّصۡبِرُوۡا فَالنَّارُ مَثۡوًی لَّهُمۡ ۚ وَ اِنۡ یَّسۡتَعۡتِبُوۡا فَمَا هُمۡ مِّنَ الۡمُعۡتَبِیۡنَ ﴿۲۴﴾
فان یصبروا فالنار مثوی لهم و ان یستعتبوا فما هم من المعتبین ﴿۲۴﴾
• অতঃপর যদি তারা ধৈর্যধারণ করে তবে আগুনই হবে তাদের আবাস এবং যদি তারা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে চায়, তবুও তারা আল্লাহর সন্তোষপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে না।

-আল-বায়ান

• এখন যদি তারা ধৈর্য ধারণ করে তবুও জাহান্নামই হবে তাদের আবাস, আর যদি তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে তবুও তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত হবে না।

-তাইসিরুল

• এখন তারা ধৈর্য ধারণ করলেও জাহান্নামই হবে তাদের আবাস স্থল এবং তারা অনুগ্রহ চাইলেও অনুগ্রহ প্রাপ্ত হবেনা।

-মুজিবুর রহমান

• So [even] if they are patient, the Fire is a residence for them; and if they ask to appease [Allah], they will not be of those who are allowed to appease.

-Sahih International

২৪. অতঃপর যদি তারা ধৈর্য ধারণ করে তবে আগুনই হবে তাদের আবাস। আর যদি তারা সস্তুষ্টি বিধান করতে চায় তবে তারা সন্তুষ্টিপ্ৰাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে না।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৪) এখন ওরা ধৈর্যশীল হলেও জাহান্নামই হবে ওদের আবাস এবং ওরা ক্ষমাপ্রার্থী হলেও ক্ষমাপ্রাপ্ত হবে না। [1]

[1] এর আর একটি অর্থ এও করা হয়েছে যে, যদি তারা মানাতে (সন্তুষ্ট করতে) চায়, যাতে তারা জান্নাতে যেতে পারে, তবে (আল্লাহর) সন্তুষ্টি তারা কখনও লাভ করতে পারবে না। (আয়সারুত্ তাফাসীর, ফাতহুল ক্বাদীর) কেউ কেউ এর অর্থ করেছেন, তারা পুনরায় দুনিয়াতে ফিরে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করবে, যা মঞ্জুর করা হবে না। (তফসীর ত্বাবারী) অর্থাৎ, তাদের চিরস্থায়ী ঠিকানা হল জাহান্নাম, তাতে ধৈর্য ধারণ করলে (তবুও রহম করা হবে না। যেমন, দুনিয়াতে কোন কোন সময় ধৈর্য ধারণকারীদের প্রতি মায়া-মমতা আসে) অথবা অন্য কোনভাবে সেখান থেকে বের হওয়ার প্রচেষ্টা করলেও, তাদেরকে ব্যর্থই হতে হবে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪১ : ২৫ وَ قَیَّضۡنَا لَهُمۡ قُرَنَآءَ فَزَیَّنُوۡا لَهُمۡ مَّا بَیۡنَ اَیۡدِیۡهِمۡ وَ مَا خَلۡفَهُمۡ وَ حَقَّ عَلَیۡهِمُ الۡقَوۡلُ فِیۡۤ اُمَمٍ قَدۡ خَلَتۡ مِنۡ قَبۡلِهِمۡ مِّنَ الۡجِنِّ وَ الۡاِنۡسِ ۚ اِنَّهُمۡ كَانُوۡا خٰسِرِیۡنَ ﴿۲۵﴾
و قیضنا لهم قرنآء فزینوا لهم ما بین ایدیهم و ما خلفهم و حق علیهم القول فی امم قد خلت من قبلهم من الجن و الانس انهم كانوا خسرین ﴿۲۵﴾
• আর আমি তাদের জন্য মন্দ সহচরবৃন্দ নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম, যারা তাদের সামনে ও পিছনে যা আছে তা তাদের দৃষ্টিতে চাকচিক্যময় করে দিয়েছিল। আর তাদের উপরে আযাবের বাণী সত্যে পরিণত হল, তাদের পূর্বে গত হওয়া জিন ও মানুষের বিভিন্ন জাতির ন্যায়, নিশ্চয় এরা ছিল ক্ষতিগ্রস্ত।

-আল-বায়ান

• আমি তাদেরকে প্রাণের বন্ধু জুটিয়ে দিয়েছিলাম, যারা তাদেরকে তাদের সামনের আর পিছনের প্রত্যেকটি জিনিসকে চাকচিক্যময় করে দেখাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত তাদের উপরও তেমনি ‘আযাবের ফয়সালা কার্যকর হল, যা তাদের পূর্ববর্তী জ্বিন ও মানব দলের উপর কার্যকর হয়েছিল। বাস্তবিকই তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেল।

-তাইসিরুল

• আমি তাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম সহচর যারা তাদের সম্মুখ ও পশ্চাতে যা আছে তা তাদের দৃষ্টিতে শোভন করে দেখিয়েছিল এবং তাদের ব্যাপারেও তাদের পূর্ববর্তী জিন ও মানবদের ন্যায় শাস্তির কথা বাস্তব হয়েছে। তারাতো ছিল ক্ষতিগ্রস্ত।

-মুজিবুর রহমান

• And We appointed for them companions who made attractive to them what was before them and what was behind them [of sin], and the word has come into effect upon them among nations which had passed on before them of jinn and men. Indeed, they [all] were losers.

-Sahih International

২৫. আর আমরা তাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম মন্দ সহচরসমূহ যারা তাদের সামনে ও পিছনে যা আছে তা তাদের দৃষ্টিতে শোভন করে দেখিয়েছিল। আর তাদের উপর শাস্তির বাণী সত্য হয়েছে, তাদের পূর্বে চলে যাওয়া জিন ও মানুষের বিভিন্ন জাতির ন্যায়। নিশ্চয় তারা ছিল ক্ষতিগ্রস্ত।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৫) আমি ওদের সঙ্গী দিয়েছিলাম, যারা ওদের অতীত ও ভবিষ্যৎকে ওদের দৃষ্টিতে সুশোভিত করে দেখিয়েছিল।[1] ওদের ব্যাপারে ওদের পূর্ববর্তী জ্বিন এবং মানুষদের ন্যায় শাস্তির কথা বাস্তব হয়েছে। নিশ্চয় ওরা ছিল ক্ষতিগ্রস্ত।

[1] এ থেকে সেই শয়তান প্রকৃতির মানুষ ও জ্বিনদেরকে বুঝানো হয়েছে, যারা বাতিলপন্থীদের পশ্চাতে লেগে থাকে। তারা তাদের সামনে কুফরী ও অন্যায়কে সুন্দর ও সুশোভিত করে পেশ করে। ফলে তারা ভ্রষ্টতার ঘূর্ণাবর্তে ফেঁসে যায়। পরিশেষে এই অবস্থায় তাদের মৃত্যু আসে এবং তার ফলে তারা চিরদিনকার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিগণিত হয়।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪১ : ২৬ وَ قَالَ الَّذِیۡنَ كَفَرُوۡا لَا تَسۡمَعُوۡا لِهٰذَا الۡقُرۡاٰنِ وَ الۡغَوۡا فِیۡهِ لَعَلَّكُمۡ تَغۡلِبُوۡنَ ﴿۲۶﴾
و قال الذین كفروا لا تسمعوا لهذا القران و الغوا فیه لعلكم تغلبون ﴿۲۶﴾
• আর কাফিররা বলে, ‘তোমরা এ কুরআনের নির্দেশ শুন না এবং এর আবৃত্তি কালে শোরগোল সৃষ্টি কর, যেন তোমরা জয়ী হতে পার।’

-আল-বায়ান

• কাফিররা বলে- এ কুরআন শুনো না, আর তা পড়ার কালে শোরগোল কর যাতে তোমরা বিজয়ী হতে পার।

-তাইসিরুল

• কাফিরেরা বলেঃ তোমরা এই কুরআন শ্রবণ করনা এবং তা আবৃত্তি কালে শোরগোল সৃষ্টি কর যাতে তোমরা জয়ী হতে পার।

-মুজিবুর রহমান

• And those who disbelieve say, "Do not listen to this Qur'an and speak noisily during [the recitation of] it that perhaps you will overcome."

-Sahih International

২৬. আর কাফিররা বলে, তোমরা এ কুরআনের নির্দেশ শোন না এবং তা আবৃত্তির সময় শোরগোল সৃষ্টি কর, যাতে তোমরা জয়ী হতে পার।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৬) অবিশ্বাসীরা বলে, ‘তোমরা এ কুরআন শ্রবণ করো না[1] এবং তা আবৃত্তিকালে শোরগোল সৃষ্টি কর;[2] যাতে তোমরা জয়ী হতে পার।’[3]

[1] এ কথা তারা আপোসে বলাবলি করে। কেউ কেউ لاَ تَسْمَعُوْا (এ কুরআন শুনো না) এর অর্থ করেছেন, তার অনুসরণ করো না। তার কথা মেনো না।

[2] অর্থাৎ, চেঁচামেচি কর, তালি বাজাও, শিস্ দাও এবং চিৎকার করে কথা বল, যাতে উপস্থিত জনগণের কানে কুরআনের আওয়াজ না পৌঁছে এবং তাদের অন্তর কুরআনের লালিত্যময় ভাষা ও তার চমৎকারিত্বে যেন প্রভাবিত না হয়ে যায়।

[3] অর্থাৎ, সম্ভবতঃ এইভাবে চিৎকার করার কারণে মুহাম্মাদ কুরআন পাঠ করাই ছেড়ে দেবে; যা শুনে মানুষ প্রভাবিত হয়।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪১ : ২৭ فَلَنُذِیۡقَنَّ الَّذِیۡنَ كَفَرُوۡا عَذَابًا شَدِیۡدًا ۙ وَّ لَنَجۡزِیَنَّهُمۡ اَسۡوَاَ الَّذِیۡ كَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۲۷﴾
فلنذیقن الذین كفروا عذابا شدیدا و لنجزینهم اسوا الذی كانوا یعملون ﴿۲۷﴾
• সুতরাং আমি অবশ্যই কাফিরদেরকে কঠিন আযাব আস্বাদন করাব এবং আমি অবশ্যই তাদের কাজের নিকৃষ্টতম প্রতিদান দেব।

-আল-বায়ান

• ফলতঃ আমি কাফিরদেরকে অবশ্য অবশ্যই কঠিন শাস্তি আস্বাদন করাব, আর আমি অবশ্য অবশ্যই তাদেরকে তাদের নিকৃষ্টতম কাজের অনুসারে প্রতিফল দিব।

-তাইসিরুল

• আমি অবশ্যই কাফিরদের কঠিন শাস্তি আস্বাদন করাব এবং নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে নিকৃষ্ট কার্যকলাপের প্রতিফল দিব –

-মুজিবুর রহমান

• But We will surely cause those who disbelieve to taste a severe punishment, and We will surely recompense them for the worst of what they had been doing.

-Sahih International

২৭. সুতরাং আমরা অবশ্যই কাফিরদেরকে কঠিন শাস্তি আস্বাদন করাব এবং অবশ্যই আমরা তাদেরকে তাদের নিকৃষ্ট কার্যকলাপের প্রতিফল দেব।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৭) আমি অবশ্যই সত্যপ্রত্যাখ্যানকারীদেরকে কঠিন শাস্তি আস্বাদন করাব এবং নিশ্চয়ই আমি ওদের নিকৃষ্ট কার্যকলাপের সাজা দেব। [1]

[1] অর্থাৎ, কিছু ভাল আমল থাকলেও তার কোনই মূল্য হবে না। যেমন, অতিথিসেবাপরায়ণতা এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা ইত্যাদি। কেননা, ঈমান ধন থেকে তারা বঞ্চিত। অবশ্য পাপ কাজের বদলা তারা পাবে। যার মধ্যে পাকেপ্রকারে পবিত্র কুরআন শুনতে বাধা দেওয়ার মত পাপের বদলাও।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪১ : ২৮ ذٰلِكَ جَزَآءُ اَعۡدَآءِ اللّٰهِ النَّارُ ۚ لَهُمۡ فِیۡهَا دَارُ الۡخُلۡدِ ؕ جَزَآءًۢ بِمَا كَانُوۡا بِاٰیٰتِنَا یَجۡحَدُوۡنَ ﴿۲۸﴾
ذلك جزآء اعدآء الله النار لهم فیها دار الخلد جزآء بما كانوا بایتنا یجحدون ﴿۲۸﴾
• এই আগুন, আল্লাহর দুশমনদের প্রতিদান। সেখানে থাকবে তাদের জন্য স্থায়ী নিবাস তারা যে আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করত তারই প্রতিফলস্বরূপ।

-আল-বায়ান

• আল্লাহর দুশমনদের জন্য প্রতিফল হল এ জাহান্নাম। তাতে আছে তাদের জন্য চিরস্থায়ী আবাস। (এ হল তাদের) প্রতিফল, কারণ তারা আমার আয়াতগুলোকে অস্বীকার করত।

-তাইসিরুল

• জাহান্নাম; এটাই আল্লাহর শত্রুদের পরিণাম; সেখানে তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী আবাস, আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকৃতির প্রতিফল স্বরূপ।

-মুজিবুর রহমান

• That is the recompense of the enemies of Allah - the Fire. For them therein is the home of eternity as recompense for what they, of Our verses, were rejecting.

-Sahih International

২৮. এই আগুন, আল্লাহর দুশমনদের প্রতিদান; সেখানে তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী আবাস, আমাদের নিদর্শনাবলীর প্রতি তাদের অস্বীকৃতির প্রতিফলস্বরূপ।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৮) এ হল আল্লাহর শত্রুদের সাজা; জাহান্নাম। আমার নিদর্শনাবলীকে অস্বীকার করার প্রতিফলস্বরূপ সেখানে ওদের জন্য স্থায়ী আবাস রয়েছে। [1]

[1] নিদর্শনাবলী বলতে যেমন পূর্বেও বলা হয়েছে সেইসব সুস্পষ্ট প্রমাণাদি, যা মহান আল্লাহ আম্বিয়াগণের উপর অবতীর্ণ করেন অথবা সেইসব মু’জিযা, যা তিনি তাঁদেরকে দান করেন কিংবা সকল প্রকার সৃষ্টিগত প্রমাণপুঞ্জ ও সকল প্রাণীর মাঝে বিস্তৃত নিদর্শনাবলী। কাফেররা এ সব অস্বীকার করে। যার ফলে তারা ঈমান আনার সৌভাগ্য লাভ হতে বঞ্চিত থাকে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪১ : ২৯ وَ قَالَ الَّذِیۡنَ كَفَرُوۡا رَبَّنَاۤ اَرِنَا الَّذَیۡنِ اَضَلّٰنَا مِنَ الۡجِنِّ وَ الۡاِنۡسِ نَجۡعَلۡهُمَا تَحۡتَ اَقۡدَامِنَا لِیَكُوۡنَا مِنَ الۡاَسۡفَلِیۡنَ ﴿۲۹﴾
و قال الذین كفروا ربنا ارنا الذین اضلنا من الجن و الانس نجعلهما تحت اقدامنا لیكونا من الاسفلین ﴿۲۹﴾
• আর কাফিররা বলবে, ‘হে আমাদের রব, জিন ও মানুষের মধ্যে যারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে তাদেরকে আমাদের দেখিয়ে দিন। আমরা তাদের উভয়কে আমাদের পায়ের নীচে রাখব, যাতে তারা নিকৃষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হয়।

-আল-বায়ান

• কাফিররা বলবে- হে আমাদের প্রতিপালক! জ্বিন ও মানুষদের মধ্যেকার যারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল তাদের উভয়কে দেখিয়ে দিন, তাদের উভয়কে পায়ের তলায় পিষ্ট করব, যাতে তারা নিকৃষ্ট অধমদের মধ্যে গণ্য হয়।

-তাইসিরুল

• কাফিরেরা বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! যে সব জিন ও মানুষ আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল তাদের উভয়কে দেখিয়ে দিন, আমরা উভয়কে পদদলিত করব, যাতে তারা লাঞ্ছিত হয়।

-মুজিবুর রহমান

• And those who disbelieved will [then] say, "Our Lord, show us those who misled us of the jinn and men [so] we may put them under our feet that they will be among the lowest."

-Sahih International

২৯. আর কাফিররা বলবে, হে আমাদের রব! জিন ও মানুষের মধ্য থেকে যে দু’জন আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল তাদেরকে দেখিয়ে দিন, আমরা তাদের উভয়কে আমাদের পায়ের নিচে রাখব, যাতে তারা নিকৃষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হয়।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৯) সত্যপ্রত্যাখ্যানকারীরা বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! যে সব জ্বিন ও মানুষ আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল তাদেরকে দেখিয়ে দাও,[1] আমরা তাদেরকে পদদলিত করব, যাতে ওরা লাঞ্ছিত হয়।’ [2]

[1] এর অর্থ পরিষ্কার যে, ভ্রষ্টকারী কেবল শয়তানরাই হয় না, বরং অনেক সংখ্যক মানুষও শয়তানের প্রভাবে লোকদেরকে ভ্রষ্ট করার কাজে ব্যস্ত থাকে। পক্ষান্তরে কেউ কেউ জ্বিন বলতে ইবলীস এবং ইনসান বলতে ক্বাবীলকে বুঝিয়েছেন; যে মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম নিজের ভাই হাবীলকে হত্যা করে যুলুম এবং মহাপাপ সম্পাদন করে। হাদীস অনুযায়ী কিয়ামত পর্যন্ত অন্যায়ভাবে সংঘটিত সমস্ত হত্যার পাপের একটি অংশ তার ঘাড়ে চাপবে। কারণ সেই হল মানুষের ইতিহাসে হত্যা-অপরাধের পথিকৃৎ। আমাদের মতে প্রথম অর্থই সর্বাধিক সঠিক।

[2] অর্থাৎ, আমাদের পা দিয়ে তাদেরকে পদদলিত করে খুব লাঞ্ছিত ও অপদস্থ করি। জাহান্নামীদের অনুসৃত নেতাদের উপর যে রাগ হবে তা মিটানোর জন্য তারা এ কথা বলবে। অথচ তারা সকলেই অপরাধী এবং সকলেই এক সাথে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে। যেমন মহান আল্লাহ অন্যত্র বলেছেন, لِكُلِّ ضِعْفٌ وَلَكِنْ لاَ تَعْلَمُوْنَ অর্থাৎ, প্রত্যেকের জন্য দ্বিগুণ (শাস্তি) রয়েছে; কিন্তু তোমরা জান না। (আ’রাফঃ ৩৮) জাহান্নামীদের কথা আলোচনা করার পর মহান আল্লাহ ঈমানদার জান্নাতীদের কথা আলোচনা করছেন। আর এটাই হলো সাধারণতঃ কুরআনের বাক্য-বিন্যাস-পদ্ধতি। যাতে ভয়ের সাথে আশা এবং আশার সাথে ভয়ের কথা উল্লেখ করার প্রতিও যত্ন নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, ভীতি প্রদর্শনের পর এবার সুসংবাদ দেওয়া হচ্ছে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪১ : ৩০ اِنَّ الَّذِیۡنَ قَالُوۡا رَبُّنَا اللّٰهُ ثُمَّ اسۡتَقَامُوۡا تَتَنَزَّلُ عَلَیۡهِمُ الۡمَلٰٓئِكَۃُ اَلَّا تَخَافُوۡا وَ لَا تَحۡزَنُوۡا وَ اَبۡشِرُوۡا بِالۡجَنَّۃِ الَّتِیۡ كُنۡتُمۡ تُوۡعَدُوۡنَ ﴿۳۰﴾
ان الذین قالوا ربنا الله ثم استقاموا تتنزل علیهم الملٓئكۃ الا تخافوا و لا تحزنوا و ابشروا بالجنۃ التی كنتم توعدون ﴿۳۰﴾
• নিশ্চয় যারা বলে, ‘আল্লাহই আমাদের রব’ অতঃপর অবিচল থাকে, ফেরেশতারা তাদের কাছে নাযিল হয় (এবং বলে,) ‘তোমরা ভয় পেয়ো না, দুশ্চিন্তা করো না এবং সেই জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ কর তোমাদেরকে যার ওয়াদা দেয়া হয়েছিল’।

-আল-বায়ান

• যারা বলে- আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ, অতঃপর (সে কথার উপর) সুদৃঢ় থাকে, ফেরেশতারা তাদের নিকট অবতীর্ণ হয় আর বলে, তোমরা ভয় করো না, চিন্তা করো না, আর জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ কর যার ওয়া‘দা তোমাদেরকে দেয়া হয়েছে।

-তাইসিরুল

• যারা বলেঃ আমাদের রাব্ব আল্লাহ! অতঃপর অবিচল থাকে, তাদের নিকট অবতীর্ণ হয় মালাইকা (ফেরেশতা) এবং বলেঃ তোমরা ভীত হয়োনা, চিন্তিত হয়োনা এবং তোমাদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তার জন্য আনন্দিত হও।

-মুজিবুর রহমান

• Indeed, those who have said, "Our Lord is Allah " and then remained on a right course - the angels will descend upon them, [saying], "Do not fear and do not grieve but receive good tidings of Paradise, which you were promised.

-Sahih International

৩০. নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের রব আল্লাহ্‌, তারপর অবিচলিত থাকে, তাদের কাছে নাযিল হয় ফেরেশতা (এ বলে) যে, তোমরা ভীত হয়ো না, চিন্তিত হয়ো না এবং তোমাদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তার জন্য আনন্দিত হও।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩০) নিশ্চয় যারা বলে, ‘আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ’[1] তারপর তাতে অবিচলিত থাকে,[2] তাদের নিকট ফিরিশতা অবতীর্ণ হয় (এবং বলে),[3] ‘তোমরা ভয় পেয়ো না, চিন্তিত হয়ো না[4] এবং তোমাদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তার সুসংবাদ নাও।[5]

[1] অর্থাৎ, এক আল্লাহ তাঁর কোন শরীক নেই। প্রতিপালকও তিনিই এবং উপাস্যও তিনিই। এ রকম নয় যে, তাঁর প্রতিপালকত্বকে কেবল স্বীকার করবে এবং উপাস্যত্বের ব্যাপারে অন্যকেও শরীক করবে।

[2] অর্থাৎ, কঠিন থেকে কঠিনতর অবস্থাতেও ঈমান ও তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে এবং তা থেকে আদৌ বিমুখ হয় না। কেউ কেউ এখানে এই ‘ইস্তিক্বামাত’এর অর্থ করেছেন, ইখলাস। অর্থাৎ, বিশুদ্ধচিত্তে কেবল এক আল্লাহরই ইবাদত ও আনুগত্য করে। যেমন, হাদীসেও এসেছে যে, এক ব্যক্তি রসূল (সাঃ)-কে বলল, আমাকে এমন কথা বলে দিন যে, আপনার পর যেন আমার অন্য কাউকে জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন না হয়। তখন রসূল (সাঃ) তাকে বললেন, (قُلْ آمَنْتُ بِاللهِ ثُمَّ اسْتَقِمْ) ‘‘তুমি বল, আমি আল্লাহর উপর ঈমান আনলাম। অতঃপর তারই উপর অবিচল থাক।’’ (মুসলিমঃ কিতাবুল ঈমান)

[3] অর্থাৎ, মৃত্যুর সময় বলে। কেউ কেউ বলেছেন, ফিরিশতাগণ এই সুসংবাদ তিন সময়ে দেন; মৃত্যুর সময়, কবরে এবং কবর থেকে পুনরায় উঠানোর সময়।

[4] আখেরাতে যে সকল অবস্থার সম্মুখীন হবে, তার ব্যাপারে কোন আশঙ্কা করো না এবং দুনিয়াতে ধন-মাল ও সন্তান-সন্ততি যে ছেড়ে এসেছ, সে ব্যাপারেও কোন দুঃখ করো না।

[5] অর্থাৎ, দুনিয়াতে যার প্রতিশ্রুতি তোমাদেরকে দেওয়া হয়েছিল।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
দেখানো হচ্ছেঃ ২১ থেকে ৩০ পর্যন্ত, সর্বমোট ৫৪ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ « আগের পাতা 1 2 3 4 5 6 পরের পাতা »