-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
২১. সে বলল, এ রূপই হবে। তোমার রব বলেছেন, এটা আমার জন্য সহজ। আর আমরা তাকে এজন্যে সৃষ্টি করব যেন সে হয় মানুষের জন্য এক নিদর্শন(১) ও আমাদের কাছ থেকে এক অনুগ্রহ; এটা তো এক স্থিরীকৃত ব্যাপার।
(১) এটা এমন এক নিদর্শন যা সৰ্বকালের জন্য শিক্ষণীয় বিষয় হিসেবে নেয়া যায়। এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাঁর অপার কুদরতের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। [ফাতহুল কাদীর] তিনি আদমকে পিতা-মাতা ব্যতীত, হাওয়াকে মাতা ব্যতীত আর সমস্ত মানুষকে পিতা-মাতার মাধ্যমে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু ঈসা আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করেছেন পিতা ব্যতীত। এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাঁর সব ধরনের শক্তি ও ক্ষমতা দেখিয়েছেন। তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। তার নিকট কোন কিছুই কঠিন নয়।
তাফসীরে জাকারিয়া(২১) সে বলল, ‘এই ভাবেই হবে;[1] তোমার প্রতিপালক বলেছেন, এটা আমার জন্য সহজসাধ্য এবং তাকে আমি এই জন্য সৃষ্টি করব, যেন সে হয় মানুষের জন্য এক নিদর্শন[2] ও আমার নিকট হতে এক অনুগ্রহ;[3] এটা তো এক স্থিরীকৃত ব্যাপার।’ [4]
[1] অর্থাৎ, এ কথা তো সত্য যে তোমাকে কোন পুরুষ স্পর্শ করেনি বৈধ উপায়ে, আর না অবৈধ উপায়ে। যদিও স্বাভাবিক গর্ভ ধারণের জন্য তা অতি আবশ্যক। তবুও এভাবেই হবে।
[2] অর্থাৎ, আমি স্বাভাবিক হেতুর (মিলন সংসাধনের) মুখাপেক্ষী নই। আমার জন্য এটা অতি সহজ আর তাকে আমি আমার সৃজন-শক্তির এক নির্দশন করতে চাই। এর আগে আমি তোমাদের আদি পিতা আদমকে বিনা পুরুষ ও নারীতে সৃষ্টি করেছি। আর তোমাদের মাতা হাওয়াকেও কেবল পুরুষ হতে সৃষ্টি করেছি। এবার ঈসাকে সৃষ্টি করে চতুর্থ পদ্ধতি সৃষ্টি করার যে ক্ষমতা তা প্রকাশ করতে চাই; আর তা হল শুধু মায়ের গর্ভ হতে বিনা পুরুষের মিলনে সৃষ্টি করা। আমি সৃষ্টির চারটি পদ্ধতিতেই সৃষ্টি করতে সমভাবে ক্ষমতাবান।
[3] এর অর্থ নবুঅত যা আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ তাঁর জন্য এবং ওদের জন্যও যারা তাঁর নবুঅতের উপর ঈমান আনবে।
[4] এটি জিবরীলের কথারই পরিশিষ্ট; যা তিনি আল্লাহর পক্ষ হতে বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ, মু’জিযামূলক (অস্বাভাবিক) সৃষ্টি আল্লাহর জ্ঞান ও তাঁর মহাশক্তি ও ইচ্ছায় স্থিরীকৃত আছে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
২২. অতঃপর সে তাকে গর্ভে ধারণ করল এবং তা সহ দূরের এক স্থানে চলে গেল;(১)
(১) দূরবর্তী স্থানে মানে বাইত লাহিম। [কুরতুবী] কাতাদা বলেন, পূর্বদিকে। [তাবারী] মারইয়াম আলাইহাস সালাম হঠাৎ গর্ভধারণ করলেন। এ অবস্থায় যদি তিনি নিজের ইতিকাফের জায়গায় বসে থাকতেন এবং লোকেরা তাঁর গর্ভধারণের কথা জানতে পারতো, তাহলে শুধুমাত্র পরিবারের লোকেরাই নয়, সম্প্রদায়ের অন্যান্য লোকরাও তাঁর জীবন ধারণ কঠিন করে দিতো। তাই তিনি কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হবার পর ইচ্ছা পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত নিজ সম্প্রদায়ের তিরস্কার, নিন্দাবাদ ও ব্যাপক দুৰ্ণাম থেকে রক্ষা পান। [দেখুন, কুরতুবী; ইবন কাসীর] ঈসা আলাইহিস সালামের জন্ম যে পিতা ছাড়াই হয়েছিল এ ঘটনাটি নিজেই তার একটি বিরাট প্রমাণ। যদি তিনি বিবাহিত হতেন এবং স্বামীর ঔরসে সন্তান জন্মলাভের ব্যাপার হতো তাহলে তো সন্তান প্রসবের জন্য তাঁর শ্বশুরালয়ে বা পিতৃগৃহে না গিয়ে একাকী একটি দূরবর্তী স্থানে চলে যাওয়ার কোন কারণই ছিল না। সুতরাং নাসারাদের মিথ্যাচার এখানে স্পষ্ট। তারা তাকে বিবাহিত বানিয়ে ছাড়ছে।
তাফসীরে জাকারিয়া(২২) অতঃপর সে গর্ভে সন্তান ধারণ করল ও তাকে নিয়ে এক দূরবর্তী স্থানে চলে গেল।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
২৩. অতঃপর প্রসব-বেদনা তাকে এক খেজুর গাছের নিচে আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। সে বলল, হায়, এর আগে যদি আমি মরে যেতাম(১) এবং মানুষের স্মৃতি থেকে সম্পূর্ণ হারিয়ে যেতাম!
(১) বিপদের কারণে মৃত্যু কামনা নিষিদ্ধ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “তোমাদের কেউ যেন বিপদে পড়ে অধৈর্য হয়ে মৃত্যু কামনা না করে” [বুখারীঃ ৫৯৮৯, মুসলিমঃ ২৬৮০, ২৬৮১, আবুদাউদঃ ৩১০৮] সম্ভবত: মারইয়াম ধর্মের দিক চিন্তা করে মৃত্যু কামনা করেছিলেন। অর্থাৎ মানুষ দুর্নাম রটাবে এবং সম্ভবতঃ এর মোকাবেলায় আমি ধৈর্যধারণ করতে পারব না, ফলে অধৈর্য হওয়ার গোনাহে লিপ্ত হয়ে পড়ব। মৃত্যু হলেও গোনাহ থেকে বেঁচে যেতাম, তাই এখানে মৃত্যু কামনা মূল উদ্দেশ্য নয়, গোনাহ থেকে বাঁচাই উদ্দেশ্য। [দেখুন, ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর]
তাফসীরে জাকারিয়া(২৩) প্রসব বেদনা তাকে এক খেজুর গাছের তলে নিয়ে এল; সে বলল, ‘হায়! এর পূর্বে যদি আমি মারা যেতাম ও লোকের স্মৃতি হতে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হতাম।’ [1]
[1] মৃত্যু কামনা এই ভয়ে যে, আমি সন্তানের ব্যাপারে লোকেদেরকে কিভাবে সন্দেহমুক্ত করব; যখন তারা আমার কোন কথাই বিশ্বাস করতে চাইবে না। তথা এই চিন্তাও ছিল যে, আমি মানুষের নিকট আবেদা-যাহেদা (ইবাদত কারিণী, সংসার-বিরাগিণী) হিসাবে খ্যাতি লাভ করেছি। কিন্তু এরপর আমি তাদের চোখে একজন ব্যভিচারিণী হিসাবে গণ্য হব।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
২৪. তখন ফেরেশতা তাঁর নিচ থেকে ডেকে তাকে বলল, তুমি পেরেশান হয়ো না(১), তোমার পাদদেশে তোমার রব এক নহর সৃষ্টি করেছেন;(২)
(১) এখানে কে মারইয়াম আলাইহাস সালামকে ডেকেছিল তা নিয়ে দু'টি মত রয়েছে। এক. তাকে ফেরেশতা জিবরীলই ডেকেছিলেন। তখন “তার নীচ থেকে” এর অর্থ হবে, গাছের নীচ থেকে। [ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর] দুই. কোন কোন মুফাসসির বলেছেনঃ তাকে তার সন্তানই ডেকেছিলেন। তখন এটিই হবে ঈসা আলাইহিস সালামের প্রথম কথা বলা। ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর] কোন কোন কেরাআতে (مِنْ تَحْتِهَا) (যে তার নীচে আছে) পড়া হয়েছে। যা শেষোক্ত অর্থের সমর্থন করে। তবে অধিকাংশ মুফাসসির প্রথম অর্থটিকেই গুরুত্বসহকারে বর্ণনা করেছেন।
(২) এর আভিধানিক অর্থ ছোট নহর। [ইবন কাসীর] এ ক্ষেত্রে আল্লাহ তা'আলা তাঁর কুদরাত দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে একটি ছোট নহর জারী করে দেন [ফাতহুল কাদীর] অথবা সেখানে একটি মৃত নহর ছিল। আল্লাহ সেটাকে পানি দ্বারা পূর্ণ করে দেন। [ফাতহুল কাদীর]
তাফসীরে জাকারিয়া(২৪) (জিবরীল) তার নিম্নপাশ হতে আহবান করে তাকে বলল, ‘তুমি দুঃখ করো না, তোমার নিম্নদেশে তোমার প্রতিপালক এক নদী সৃষ্টি করেছেন।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
২৫. আর তুমি তোমার দিকে খেজুর-গাছের কাণ্ডে নাড়া দাও, সেটা তোমার উপর তাজা-পাকা খেজুর ফেলবে।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(২৫) তুমি তোমার দিকে খেজুর গাছের কান্ড হিলিয়ে দাও; ওটা তোমার সামনে সদ্যঃপক্ব তাজা খেজুর ফেলতে থাকবে। [1]
[1] سَري ছোট নদী বা ঝরনাকে বলা হয়। অর্থাৎ মু’জিযা বা কারামত স্বরূপ মারয়্যামের পদতলে পান করার জন্য পানির ছোট নদী এবং খাওয়ার জন্য একটি শুকনো খেজুর গাছ হতে টাটকা পাকা খেজুরের ব্যবস্থা করলেন। আহবানকারী ছিলেন জিবরীল (আঃ) যিনি উপত্যকার নীচে হতে আহবান করেছিলেন। কেউ কেউ বলেন যে, سَري অর্থ সরদার বা নেতা, আর সে অর্থে ঈসা (আঃ)-কে বুঝানো হয়েছে এবং তিনিই মা মারয়্যামকে নিম্নদেশ হতে আওয়াজ দিয়েছিলেন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
২৬. কাজেই খাও, পান কর এবং চোখ জুড়াও। অতঃপর মানুষের মধ্যে কাউকেও যদি তুমি দেখ তখন বলো, আমি দয়াময়ের উদ্দেশ্যে মৌনতা অবলম্বনের মানত করেছি।(১) কাজেই আজ আমি কিছুতেই কোন মানুষের সাথে কথাবার্তা বলব না।(২)
(১) কাতাদাহ বলেন, তিনি খাবার, পানীয় ও কথা-বার্তা এ তিনটি বিষয় থেকেই সাওম পালন করেছিলেন। [আত-তাফসীরুস সহীহ]
(২) কোন কোন মুফাস্সির বলেন, ইসলাম পূর্বকালে সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত মৌনতা অবলম্বন করা এবং কারও সাথে কথা না বলার সাওম পালন ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত ছিল। [ইবন কাসীর] ইসলাম একে রহিত করে মন্দ কথাবার্তা, গালিগালাজ, মিথ্যা, পরনিন্দা ইত্যাদি থেকে বেঁচে থাকাকেই জরুরী করে দিয়েছে। সাধারণ কথাবার্তা ত্যাগ করা ইসলামে কোন ইবাদত নয়। তাই এর মানত করাও জায়েয নয়। এক হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ “সন্তান সাবালক হওয়ার পর পিতা মারা গেলে তাকে এতীম বলা হবে না এবং সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মৌনতা অবলম্বন করা কোন ইবাদত নয়।” [আবু দাউদঃ ২৮৭৩]
তাফসীরে জাকারিয়া(২৬) সুতরাং আহার কর, পান কর ও চোখ জুড়াও;[1] মানুষের মধ্যে কাউকেও যদি তুমি দেখ, তাহলে বল, [2] আমি দয়াময়ের উদ্দেশ্যে চুপ থাকার মানত করেছি; সুতরাং আজ আমি কিছুতেই কোন মানুষের সাথে কথা বলব না।’
[1] অর্থাৎ খেজুর খাও, নদী বা ঝরনার পানি পান কর এবং সন্তানকে দেখে চোখ জুড়াও।
[2] এখানে বলার অর্থ ইশারা বা ইঙ্গিতে বলা; মুখের বলা নয়। যেহেতু তাদের শরীয়তে রোযার অর্থই ছিল খাওয়া ও কথা বলা হতে বিরত থাকা।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
২৭. তারপর সে সন্তানকে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের কাছে উপস্থিত হল; তারা বলল, হে মারইয়াম! তুমি তো এক অঘটন করে বসেছ।(১)
(১) فريًّا আরবী ভাষায় এ শব্দটির আসল অর্থ, কর্তন করা ও চিরে ফেলা। যে কাজ কিংবা বস্তু প্ৰকাশ পেলে অসাধারণ কাটাকাটি হয় তাকে فرى বলা হয়। [কুরতুবী] উপরে সেটাকেই ‘অঘটন’ অনুবাদ করা হয়েছে। শব্দটির অন্য অর্থ হচ্ছে, বড় বিষয় বা বড় ব্যাপার। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া(২৭) অতঃপর সে সন্তানকে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের নিকট উপস্থিত হল; তারা বলল, ‘হে মারয়্যাম! তুমি তো এক অদ্ভুত কান্ড করে বসেছ।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
২৮. হে হারূনের বোন!(১) তোমার পিতা অসৎ ব্যক্তি ছিল না এবং তোমার মা'ও ছিল না ব্যভিচারিণী।(২)
(১) মুসা আলাইহিস সালাম-এর ভাই ও সহচর হারূন আলাইহিস সালাম মারইয়ামের আমলের শত শত বছর পুর্বে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছিলেন। এখানে মারইয়ামকে হারুন-ভগ্নি বলা বাহ্যিক অর্থের দিক দিয়ে শুদ্ধ হতে পারে না। মুগীরা ইবনে শো'বা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাজরানবাসীদের কাছে প্রেরণ করেন, তখন তারা প্রশ্ন করে যে, তোমাদের কুরআনে মারইয়ামকে হারূন-ভগিনী বলা হয়েছে। অথচ মুগীরা এ প্রশ্নের উত্তর জানতেন না। ফিরে এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ঘটনা ব্যক্ত করলে তিনি বললেনঃ তুমি বলে দিলে না কেন যে, বনী ইসরাঈলগণ নবীদের নামে নাম রাখা পছন্দ করতেন” [মুসলিমঃ ২১৩৫, তিরমিযীঃ ৩১৫৫] এই হাদীসের উদ্দেশ্য দু'রকম হতে পারে।
(এক) মারইয়াম হারূন আলাইহিস সালাম এর বংশধর ছিলেন বলেই তাঁর সাথে সম্বন্ধ করা হয়েছে- যদিও তাদের মধ্যে সময়ের অনেক ব্যবধান রয়েছে; যেমন আরবদের রীতি রয়েছে। যেমন তারা তামীম গোত্রের ব্যক্তিকে أخا تميم এবং আরবের লোককে أخا العرب বলে অভিহিত করে। [ইবন কাসীর]
(দুই) এখানে হারূন বলে মুসা আলাইহিস সালাম এর সহচর হারূন নবীকে বোঝানো হয়নি বরং মারইয়ামের কোন এক জ্ঞাতি ভ্রাতার নামও ছিল হারূন যিনি তৎকালিন সময়ে প্রসিদ্ধ ছিলেন এবং এ নাম হারূন নবীর নামানুসারে রাখা হয়েছিল। এভাবে মারইয়াম হারুন-ভগিনী বলা সত্যিকার অর্থেই শুদ্ধ। [দেখুন, কুরতুবী; ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর]
(২) কুরআনের এই বাক্যে ইঙ্গিত রয়েছে যে, সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তিদের সন্তান-সন্ততি মন্দ কাজ করলে তাতে সাধারণ লোকদের মন্দ কাজের তুলনায় বেশী গোনাহ হয়। কারণ, এতে তাদের বড়দের লাঞ্ছনা ও দুর্নাম হয়। কাজেই সম্মানিত লোকদের সন্তানদের উচিত সৎকাজ ও আল্লাহভীতিতে অধিক মনোনিবেশ করা। গোনাহ ও অপরাধ থেকে দূরে থাকা। [দেখুন, ফাতহুল কাদীর]
তাফসীরে জাকারিয়া(২৮) হে হারূন ভগ্নী![1] তোমার পিতা অসৎ ব্যক্তি ছিল না এবং তোমার মাতাও ছিল না ব্যভিচারিণী।
[1] হারূন বলতে মারয়্যামের সহোদর বা বৈমাত্রেয় কোন ভাইকে বুঝানো হয়েছে। অথবা হারূন বলতে মূসা (আঃ)-এর ভাই হারূন (আঃ)-কে বুঝানো হয়েছে এবং আরবের পরিভাষা অনুযায়ী তাঁর প্রতি সম্বদ্ধ করা হয়েছে। যেমন, আরবের লোকেরা বলে থাকে, يَا أخَا تَمِيم! يَا أخَا العَرَب (অর্থাৎ, হে তামীম বংশের লোক, হে আরবের লোক!) অথবা তাকওয়া-পরহেযগারী, পবিত্রতা ও ইবাদতে হারূন (আঃ)-এর মত মনে করে তাঁকে তাঁরই সাদৃশ্যে ‘হে হারূনের বোন’ বলা হয়েছে। এ ধরনের উদাহরণ কুরআনেও রয়েছে। (আইসারুত তাফাসীর ও ইবনে কাসীর)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
২৯. তখন মারইয়াম সন্তানের প্রতি ইংগিত করল। তারা বলল, যে কোলের শিশু তার সাথে আমরা কেমন করে কথা বলব?
-
তাফসীরে জাকারিয়া(২৯) অতঃপর মারয়্যাম ইঙ্গিতে সন্তানকে দেখাল। তারা বলল, যে দোলনার শিশু তার সাথে আমরা কেমন করে কথা বলব?’
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৩০. তিনি বললেন, আমি তো আল্লাহর বান্দা। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন, আমাকে নবী করেছেন,
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৩০) (শিশুটি) বলল, ‘নিশ্চয় আমি আল্লাহর দাস; তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে নবী করেছেন। [1]
[1] আল্লাহ তাঁর লিখিত তকদীরে আমার ব্যাপারে ফায়সালা করে রেখেছিলেন যে, তিনি আমাকে কিতাব ও নবুঅত দান করবেন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান