-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
১১. তবে সে তো বন্ধুর গিরিপথে(১) প্রবেশ করেনি।
(১) عَقَبَة বলা হয় পাহাড়ের বিরাট প্রস্তর খণ্ডকে এবং দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী গিরিপথকে। [ফাতহুল কাদীর]
তাফসীরে জাকারিয়া১১। কিন্তু সে গিরি সংকটে প্রবেশ করল না। [1]
[1] عقبة বলা হয় পাহাড়ের মাঝে মাঝে রাস্তা বা গিরিপথকে। সাধারণতঃ এ পথ বড় দুস্তর, দুরতিক্রম্য ও সংকটময় হয়। এটি মানুষের সেই শ্রম ও কষ্টকে স্পষ্ট করে বুঝাবার জন্য একটি উদাহরণ; যা নেক কাজ করার পথে শয়তানের কুমন্ত্রণা এবং মনের কামনা-বাসনার বিরুদ্ধে করতে হয়। যেমন পাহাড়ের ঐ পথে চড়া অত্যন্ত কঠিন, তেমনি তার নেক কাজ করাও বড় সুকঠিন। (ফাতহুল ক্বাদীর)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
১২. আর কিসে আপনাকে জানাবে—বন্ধুর গিরিপথ কী?
-
তাফসীরে জাকারিয়া১২। কিসে তোমাকে জানাল, গিরি সংকট কি?
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
১৩. এটা হচ্ছেঃ দাসমুক্তি(১)
(১) এসব সৎকর্মের মধ্যে প্রথমে দাসমুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এটা খুব বড় ইবাদত এবং একজন মানুষের জীবন সুসংহত করার নামান্তর। বিভিন্ন হাদীসে এর অনেক সওয়াবের উল্লেখ এসেছে। এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যে কেউ কোন দাসকে মুক্ত করবে সেটা তার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তিপণ হিসেবে বিবেচিত হবে”। [মুসনাদে আহমাদ: ৪/১৪৭, ১৫০]
তাফসীরে জাকারিয়া১৩। তা হচ্ছে ক্রীতদাসকে মুক্তি প্রদান।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
১৪. অথবা দুর্ভিক্ষের দিনে খাদ্যদান(১)—
(১) দ্বিতীয় সৎকর্ম হচ্ছে ক্ষুধার্তকে অন্নদান। যে কাউকে অন্নদান করলে তা আরও বিরাট সওয়াবের কাজ হয়ে যায়। তাই বলা হয়েছে, বিশেষভাবে যদি আত্মীয় ইয়াতীমকে অন্নদান করা হয়, তবে তাতে দ্বিগুণ সওয়াব হয়। (এক) ক্ষুধার্তের ক্ষুধা দূর করার সওয়াব এবং (দুই) আত্মীয়ের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখা ও তার হক আদায় করার সওয়াব। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “কোন মুসলিম ক্ষুধার্তকে অন্নদান ক্ষমাকে অবশ্যম্ভাবী করে”। [মুস্তাদরাকে হাকিম: ২/৫২৪]
তাফসীরে জাকারিয়া১৪। অথবা ক্ষুধার দিনে অন্নদান।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
১৫. ইয়াতীম আত্মীয়কে(১),
(১) এ ধরনের ইয়াতীমের হক সবচেয়ে বেশী। একদিকে সে ইয়াতীম, দ্বিতীয়ত সে তার নিকটাত্মীয়। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘মিসকীনকে দান করা নিঃসন্দেহে একটি দান। কিন্তু আত্মীয়দের দান করা দুটি। দান ও আত্মীয়তার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা। [মুসনাদে আহমাদ: ৪/২১৪, তিরমিযী: ৬৫৩]
তাফসীরে জাকারিয়া১৫। পিতৃহীন আত্মীয়কে।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
১৬. অথবা দারিদ্র-নিষ্পেষিত নিঃস্বকে,
-
তাফসীরে জাকারিয়া১৬। অথবা ধূলায় লুণ্ঠিত দরিদ্রকে। [1]
[1] يوم ذي مَسْغَبَة অর্থাৎঃ ক্ষুধার দিন। ذا متربة মাটি-মাখা বা ধূলায় লুণ্ঠিত। অর্থাৎ, যে দারিদ্রে্র কারণে মাটি বা ধূলার উপর পড়ে থাকে। তার নিজ ঘর-বাড়ি বলেও কিছু থাকে না। মোট কথা হল যে, কোন ক্রীতদাস স্বাধীন করা, কোন ক্ষুধার্ত আত্মীয় অনাথ কিংবা মিসকীনকে খাবার দান করা গিরিপথে চলার মত কঠিন কাজ। যার দ্বারা মানুষ জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেয়ে জান্নাত লাভ করতে পারে। অনাথের তত্ত্বাবধান করা এমনিতেই বিরাট পুণ্যের কাজ। কিন্তু যদি সে আত্মীয় হয়, তাহলে তার তত্ত্বাবধান করায় আছে দ্বিগুণ সওয়াব; এক সদকা করার সওয়াব এবং দুই আত্মীয়ের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখার ও তার হক আদায় করার সওয়াব। অনুরূপ ক্রীতদাস স্বাধীন করারও বড় ফযীলত হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। আজকাল কোন ঋণী ব্যক্তির ঋণ পরিশোধ করে দেওয়াও এক প্রকার ঐ শ্রেণীরই কাজ। অর্থাৎ, সে কাজও এক প্রকার فكّ رَقَبة ।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
১৭. তদুপরি সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায় যারা ঈমান এনেছে এবং পরস্পরকে উপদেশ দিয়েছে ধৈর্য ধারণের, আর পরস্পর উপদেশ দিয়েছে দয়া অনুগ্রহের(১);
(১) এ আয়াতে ঈমানের পর মুমিনের এই কর্তব্য ব্যক্ত করা হয়েছে যে, সে অপরাপর মুসলিম ভাইকে সবর ও অনুকম্পার উপদেশ দেবে। সবরের অর্থ নিজেকে মন্দ কাজ থেকে বাঁচিয়ে রাখা ও সৎকর্ম সম্পাদন করা। مَرْحَمَة এর অর্থ অপরের প্রতি দয়াদ্র হওয়া। অপরের কষ্টকে নিজের কষ্ট মনে করে তাকে কষ্টদান ও যুলুম করা থেকে বিরত হওয়া। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের উম্মতের মধ্যে এই রহম ও করুণাবৃত্তিটির মতো উন্নত নৈতিক বৃত্তিটিকেই সবচেয়ে বেশী প্রসারিত ও বিকশিত করতে চেয়েছেন। হাদীসে এসেছে, “যে মানুষের প্রতি রহমত করে না। আল্লাহ তার প্রতি রহমত করেন না”। [বুখারী: ৭৩৭৬, মুসলিম: ৩১৯, মুসনাদে আহমাদ: ৪/৫৬২] অন্য হাদীসে এসেছে, “যে আমাদের ছোটদের রহমত করে না এবং বড়দের সম্মান পাওয়ার অধিকারের প্রতি খেয়াল রাখে না সে আমাদের দলভুক্ত নয়”। [আবু দাউদ: ৪৯৪৩, তিরমিযী: ১৯২০] আরও বলা হয়েছে, “যারা রহমতের অধিকারী (দয়া করে) তাদেরকে রহমান রহমত করেন, তোমরা যমীনের অধিবাসীদের প্রতি রহমত কর তবে আসমানের উপর যিনি আছেন (আল্লাহ)। তিনিও তোমাদেরকে রহমত করবেন।” [আবু দাউদ: ৪৯৪১, তিরমিযী: ১৯২৪]
তাফসীরে জাকারিয়া১৭। তদুপরি অন্তর্ভুক্ত হওয়া তাদের যারা ঈমান আনে[1] এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় ধৈর্যধারণের ও দয়া দাক্ষিণ্যের।[2]
[1] এ থেকে জানা গেল যে, উল্লিখিত সৎকর্ম তখনই উপকারী ও পরকালের সুখের কারণ হবে, যখন তার কর্তা ঈমানদার হবে।
[2] ঈমানদারদের একটা গুণ এই যে, তারা একে-অপরকে ধৈর্য ও দয়া-দাক্ষিণ্যের উপদেশ দেয়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
১৮. তারাই সৌভাগ্যশালী।
-
তাফসীরে জাকারিয়া১৮। তারাই হল সৌভাগ্যবান।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
১৯. আর যারা আমাদের আয়াতসমূহে কুফরী করেছে, তারাই হতভাগ্য।
-
তাফসীরে জাকারিয়া১৯। পক্ষান্তরে যারা আমার নিদর্শন প্রত্যাখ্যান করেছে, তারাই হল হতভাগ্য।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
২০. তারা পরিবেষ্টিত হবে অবরুদ্ধ আগুনে।
-
তাফসীরে জাকারিয়া২০। তাদের উপরই রয়েছে অবরুদ্ধ অগ্নি।[1]
[1] مؤصَدَة এর অর্থ হল مُغلَقَة অর্থাৎ বন্ধ। তার মানে হল, তাদেরকে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করে তার চতুর্দিক বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাতে প্রথমতঃ আগুনের সম্পূর্ণ তাপ তাদেরকে পৌঁছে এবং দ্বিতীয়তঃ সেখান হতে পলায়ন করে কোথাও যেতে না পারে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান