আয়াতুল্লাহ - আল্লাহর নিদর্শনাবলী বিষয়ক আয়াতসমূহ ৯৬ টি
৪০ গাফির (আল মু'মিন)
৪০:৬৯ اَلَمۡ تَرَ اِلَی الَّذِیۡنَ یُجَادِلُوۡنَ فِیۡۤ اٰیٰتِ اللّٰهِ ؕ اَنّٰی یُصۡرَفُوۡنَ ﴿ۖۛۚ۶۹﴾

তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনি যারা আল্লাহর নিদর্শনাবলী সম্পর্কে বাকবিতন্ডা করে? তাদেরকে কোথায় ফিরানো হচ্ছে? আল-বায়ান

তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য কর না যারা আল্লাহর নির্দশনগুলো সম্পর্কে বাক-বিতন্ডা করে? (সত্য থেকে) তাদেরকে কীভাবে ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে? তাইসিরুল

তুমি কি লক্ষ্য করনা তাদের প্রতি যারা আল্লাহর নিদর্শন সম্পর্কে বিতর্ক করে? কিভাবে তাদেরকে বিপথগামী করা হচ্ছে? মুজিবুর রহমান

Do you not consider those who dispute concerning the signs of Allah - how are they averted? Sahih International

৬৯. আপনি কি লক্ষ্য করেন না তাদেরকে যারা আল্লাহ্‌র নিদর্শন সম্পর্কে বিতর্ক করে? তাদেরকে কোথায় ফিরানো হচ্ছে?

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৬৯) তুমি কি ওদের লক্ষ্য কর না, যারা আল্লাহর নিদর্শনাবলী সম্পর্কে বিতর্ক করে?[1] ওরা কোথায় ফিরে যাচ্ছে? [2]

[1] অস্বীকার ও মিথ্যাজ্ঞান করার জন্য অথবা তা খন্ডন ও বাতিল সাব্যস্ত করার জন্য।

[2] অর্থাৎ, প্রমাণাদি এসে যাওয়া এবং সত্য প্রকাশিত হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ওরা কিভাবে তা প্রত্যাখ্যান করছে? এটা হল আশ্চর্যের প্রকাশ।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪০ গাফির (আল মু'মিন)
৪০:৮১ وَ یُرِیۡكُمۡ اٰیٰتِهٖ ٭ۖ فَاَیَّ اٰیٰتِ اللّٰهِ تُنۡكِرُوۡنَ ﴿۸۱﴾

আর তিনি তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলী দেখান। অতএব তোমরা আল্লাহর কোন্ কোন্ নিদর্শনকে অস্বীকার করবে? আল-বায়ান

তিনি তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শন দেখান। কাজেই আল্লাহর কোন্ নিদর্শনকে তোমরা অস্বীকার কর। তাইসিরুল

তিনি তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলী দেখিয়ে থাকেন। সুতরাং তোমরা আল্লাহর কোন্ কোন্ নি‘আমাত অস্বীকার করবে? মুজিবুর রহমান

And He shows you His signs. So which of the signs of Allah do you deny? Sahih International

৮১. আর তিনি তোমাদেরকে তার নিদর্শনাবলী দেখিয়ে থাকেন। অতএব, তোমরা আল্লাহর কোন কোন নিদর্শনকে অস্বীকার করবে?

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৮১) তিনি তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলী দেখিয়ে থাকেন।[1] সুতরাং তোমরা আল্লাহর কোন্ নিদর্শনকে অস্বীকার করবে? [2]

[1] যেগুলো তাঁর মহাশক্তি ও একত্বকে প্রমাণ করে। আর নিদর্শনগুলো কেবল বিশ্বজগতেই নেই, বরং তোমাদের দেহের মধ্যেও তা বিদ্যমান রয়েছে।

[2] এগুলো এত জাজ্বল্যমান, ব্যাপক ও এত বেশী যে, কোন অস্বীকারকারী তা অস্বীকার করার ক্ষমতা রাখে না। এখানে ‘ইস্তিফহাম’ (জিজ্ঞাসা) নেতিবাচক।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪১ হা-মীম আস-সাজদা (ফুসসিলাত)
৪১:৩৭ وَ مِنۡ اٰیٰتِهِ الَّیۡلُ وَ النَّهَارُ وَ الشَّمۡسُ وَ الۡقَمَرُ ؕ لَا تَسۡجُدُوۡا لِلشَّمۡسِ وَ لَا لِلۡقَمَرِ وَ اسۡجُدُوۡا لِلّٰهِ الَّذِیۡ خَلَقَهُنَّ اِنۡ كُنۡتُمۡ اِیَّاهُ تَعۡبُدُوۡنَ ﴿۳۷﴾

আর তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে রয়েছে রাত ও দিন, সূর্য ও চাঁদ । তোমরা না সূর্যকে সিজদা করবে, না চাঁদকে। আর তোমরা আল্লাহকে সিজদা কর যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা কেবলমাত্র তাঁরই ইবাদাত কর। আল-বায়ান

তাঁর নিদর্শনগুলোর মধ্যে হল রাত, দিন, সূর্য আর চন্দ্র। সূর্যকে সেজদা করো না, চন্দ্রকেও না। সেজদা কর আল্লাহকে যিনি ওগুলোকে সৃষ্টি করেছেন যদি সত্যিকারভাবে একমাত্র তাঁরই তোমরা ইবাদাত করতে চাও। তাইসিরুল

তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে রাত ও দিন, সূর্য ও চাঁদ। তোমরা সূর্যকে সাজদাহ করনা, চাঁদকেও নয়; সাজদাহ কর আল্লাহকে, যিনি এগুলি সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা প্রকৃতই তাঁর ইবাদাত কর। মুজিবুর রহমান

And of His signs are the night and day and the sun and moon. Do not prostrate to the sun or to the moon, but prostate to Allah, who created them, if it should be Him that you worship. Sahih International

৩৭. আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে রাত ও দিন, সূর্য ও চাঁদ। তোমরা সূর্যকে সিজদা করো না, চাঁদকেও নয়(১); আর সিজদ কর আল্লাহকে, যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা কেবলমাত্র তাঁরই ইবাদত কর।

(১) অর্থাৎ এসব আল্লাহর প্রতিভূ নয় যে এগুলোর আকৃতিতে আল্লাহ নিজেকে প্রকাশ করছেন বলে মনে করে তাদের ইবাদত করতে শুরু করবে। বরং এগুলো আল্লাহর নিদর্শন এসব নিদর্শন নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করলে তোমরা বিশ্ব জাহান ও তার ব্যবস্থাপনার সত্যতা ও বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পারবে এবং এ কথাও জানতে পারবে যে নবী-রাসূল আলাইহিমুস সালাম আল্লাহ সম্পর্কে যে তাওহীদের শিক্ষা দিচ্ছেন তাই প্রকৃত সত্য। সূর্য ও চাঁদের উল্লেখের পূর্বে দিন ও রাতের উল্লেখ করা হয়েছে এ বিষয়ে সাবধান করে দেয়ার জন্য যে রাতের বেলা সূর্যের অদৃশ্য হওয়া ও চাঁদের আবির্ভূত হওয়া এবং দিনের বেলা চাঁদের অদৃশ্য হওয়া ও সূর্যের আবির্ভূত হওয়া সুস্পষ্ট ভাবে এ কথা প্রমাণ করে যে, এ দুটির কোনটিই আল্লাহ বা আল্লাহ প্রতিভূ নয়। উভয়েই তাঁর একান্ত দাস।

তারা আল্লাহর আইনের নিগড়ে বাধা পড়ে আবর্তন করছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চাঁদ ও সূর্য সম্পর্কে মানুষের আকীদা-বিশ্বাসকে পরিশুদ্ধ করার জন্য বিভিন্নভাবে প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সন্তান ইবরাহীম মারা গেলে সেদিনই সূর্যগ্রহণ হয়। লোকেরা বলাবলি করতে লাগলো যে, ইব্রাহীমের মৃত্যুর কারণেই সূর্যগ্ৰহণ হয়েছে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন যে, সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ করো মৃত্যু বা জীবনের জন্য হয় না। বরং এ দুটি আল্লাহর নিদর্শনাবলী থেকে দুটি নিদর্শন; যা তিনি তাঁর বান্দাদের দেখিয়ে থাকেন। সুতরাং যখন তোমরা এরূপ কিছু দেখবে, তখন সালাতের দিকে ধাবিত হবে ৷ [বুখারী: ১০৫৮]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩৭) তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে রাত ও দিন, সূর্য ও চন্দ্র।[1] তোমরা সূর্যকে সিজদা করো না, চন্দ্রকেও নয়;[2] বরং সিজদা কর আল্লাহকে, যিনি এগুলি সৃষ্টি করেছেন,[3] যদি তোমরা তাঁরই ইবাদত (দাসত্ব) কর।

[1] অর্থাৎ, রাতকে অন্ধকার দিয়ে ঢেকে দেওয়া যাতে মানুষ তাতে বিশ্রাম নিতে পারে এবং দিনকে আলোক-উজ্জ্বল করা যাতে জীবিকা উপার্জনে কোন অসুবিধা না হয়। অতঃপর পালাক্রমে রাত ও দিনের আগমন-প্রত্যাগমন। কখনো রাতের বড় ও দিনের ছোট হওয়া, আবার কখনো এর বিপরীত দিনের বড় ও রাতের ছোট হওয়া। অনুরূপ সূর্য ও চাঁদের নির্ধারিত সময়ে উদিত হওয়া ও অস্ত যাওয়া। তাদের স্ব স্ব কক্ষপথে নিজের নিজের পথ অতিক্রম করা এবং তাদের আপসে কোন সংঘর্ষ ঘটা থেকে সুরক্ষিত থাকা ইত্যাদি সবই প্রমাণ করে যে, তাদের অবশ্য অবশ্যই কোন স্রষ্টা এবং মালিক আছেন। অনুরূপ তিনি এক ও একক এবং সারা বিশ্বজগতে কেবল তাঁরই কর্তৃত্ব ও নির্দেশ চলে। যদি পরিচালনা করার ও নির্দেশ দেওয়ার অধিকারী একাধিক হত, তবে সারা জগতের এ সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা এত মজবুত এবং সুনিয়ন্ত্রিতভাবে টিকে থাকত না।

[2] কারণ, এরাও তোমাদের মত আল্লাহর সৃষ্ট। প্রভুত্বের কোন এখতিয়ার তাদের মধ্যে নেই। অথবা তাতে তারা শরীকও নয়।

[3] خَلَقَهُنَّ তে সর্বনাম স্ত্রীলিঙ্গ বহুবচন এই জন্য এসেছে যে, হয় তো خَلَقَ هَذِه الأَرْبَعَةَ الْمَذْكُوْرَةَ অর্থের ভিত্তিতে। কেননা, জ্ঞানহীন বস্তুর বহুবচনের ক্ষেত্রে (ব্যাকরণগত) বিধান হল এটাই। অথবা এই সর্বনামের লক্ষ্য কেবল চাঁদ এবং সূর্য। আর কোন কোন ব্যাকরণ-শাস্ত্রবিদের কাছে দ্বিবচনও বহুবচনরূপে গণ্য হয়। কিংবা এর উদ্দিষ্ট হল, آيات নিদর্শনাবলী। (ফাতহুল ক্বাদীর)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪১ হা-মীম আস-সাজদা (ফুসসিলাত)
৪১:৩৯ وَ مِنۡ اٰیٰتِهٖۤ اَنَّكَ تَرَی الۡاَرۡضَ خَاشِعَۃً فَاِذَاۤ اَنۡزَلۡنَا عَلَیۡهَا الۡمَآءَ اهۡتَزَّتۡ وَ رَبَتۡ ؕ اِنَّ الَّذِیۡۤ اَحۡیَاهَا لَمُحۡیِ الۡمَوۡتٰی ؕ اِنَّهٗ عَلٰی كُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۳۹﴾

তাঁর আরেকটি নিদর্শন হল এই যে, তুমি যমীনকে দেখতে পাও শুষ্ক-অনুর্বর, অতঃপর যখন আমি তার উপর পানি বর্ষণ করি তখন তা আন্দোলিত ও স্ফীত হয়। নিশ্চয়ই যিনি যমীনকে জীবিত করেন তিনি মৃতদেরও জীবিতকারী। নিশ্চয় তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। আল-বায়ান

তাঁর নিদর্শনগুলোর মধ্যে হল এই যে, তুমি যমীনকে দেখ শুষ্ক অনুর্বর পড়ে আছে। অতঃপর আমি যখন তার উপর বৃষ্টি বর্ষণ করি তখন তা সতেজ হয় ও বেড়ে যায়। যিনি এ মৃত যমীনকে জীবিত করেন, তিনি অবশ্যই মৃতদেরকে জীবিত করবেন। তিনি সকল বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান। তাইসিরুল

আর তাঁর একটি নিদর্শন এই যে, তুমি ভূমিকে দেখতে পাও শুষ্ক উষর, অতঃপর আমি তাতে বৃষ্টি বর্ষণ করলে তা আন্দোলিত ও স্ফীত হয়; যিনি জীব দেন তিনিই মৃতের জীবন দানকারী। তিনিতো সর্ব বিষয়ে সর্ব শক্তিমান। মুজিবুর রহমান

And of His signs is that you see the earth stilled, but when We send down upon it rain, it quivers and grows. Indeed, He who has given it life is the Giver of Life to the dead. Indeed, He is over all things competent. Sahih International

৩৯. আর তাঁর একটি নিদর্শন এই যে, আপনি ভূমিকে দেখতে পান শুষ্ক ও উষর, অতঃপর যখন আমরা তাতে পানি বর্ষণ করি তখন তা আন্দোলিত ও স্ফীত হয়। নিশ্চয় যিনি যমীনকে জীবিত করেন তিনি অবশ্যই মৃতদের জীবনদানকারী। নিশ্চয় তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩৯) আর তাঁর একটি নিদর্শন এই যে, তুমি ভূমিকে দেখতে পাও শুষ্ক,[1] অতঃপর আমি ওতে বৃষ্টি বর্ষণ করলে তা শস্য-শ্যামলা হয়ে আন্দোলিত ও স্ফীত হয়;[2] নিশ্চয় যিনি ভূমিকে জীবিত করেন, তিনিই জীবিত করবেন মৃতকে।[3] নিশ্চয়ই তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।

[1] خَاشِعَةً এর অর্থ হল, শুখো-অনাবৃষ্টি অর্থাৎ, মৃত বা উদ্ভিদশূন্য।

[2] অর্থাৎ, বিভিন্ন প্রকারের সুস্বাদু ফল ও ফসলাদি উৎপন্ন করে।

[3] মৃত ভূমিকে বৃষ্টি দ্বারা এভাবে জীবিত করে দেওয়া এবং তাকে উৎপন্ন করার যোগ্য বানিয়ে দেওয়া প্রমাণ করে যে, তিনি মৃতদেরকে অবশ্যই জীবিত করবেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪১ হা-মীম আস-সাজদা (ফুসসিলাত)
৪১:৫৩ سَنُرِیۡهِمۡ اٰیٰتِنَا فِی الۡاٰفَاقِ وَ فِیۡۤ اَنۡفُسِهِمۡ حَتّٰی یَتَبَیَّنَ لَهُمۡ اَنَّهُ الۡحَقُّ ؕ اَوَ لَمۡ یَكۡفِ بِرَبِّكَ اَنَّهٗ عَلٰی كُلِّ شَیۡءٍ شَهِیۡدٌ ﴿۵۳﴾

বিশ্বজগতে ও তাদের নিজদের মধ্যে আমি তাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী দেখাব যাতে তাদের কাছে সুস্পষ্ট হয় যে, এটি (কুরআন) সত্য; তোমার রবের জন্য এটাই যথেষ্ট নয় কি যে, তিনি সকল বিষয়ে সাক্ষী? আল-বায়ান

আমি তাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী দেখাব দূর দিগন্তে (অর্থাৎ দূর পর্যন্ত ইসলামের আলো বিচ্ছুরিত হবে) আর তাদের নিজেদের মধ্যেও (অর্থাৎ কাফিররা নতজানু হয়ে ইসলাম কবূল করবে) যখন তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, এ কুরআন সত্য। এটা কি যথেষ্ট নয় যে, তোমার প্রতিপালক সব কিছুরই সাক্ষী। তাইসিরুল

আমি শীঘ্র তাদের জন্য আমার নিদর্শনাবলী ব্যক্ত করব বিশ্বজগতে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে। ফলে তাদের নিকট সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে যে ওটাই সত্য। এটা কি যথেষ্ট নয় যে, তোমার রাব্ব সর্ব বিষয়ে অবহিত? মুজিবুর রহমান

We will show them Our signs in the horizons and within themselves until it becomes clear to them that it is the truth. But is it not sufficient concerning your Lord that He is, over all things, a Witness? Sahih International

৫৩. অচিরেই আমরা তাদেরকে আমাদের নিদর্শনাবলী দেখাব, বিশ্ব জগতের প্রান্তসমূহে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে; যাতে তাদের কাছে সুস্পষ্ট হয়ে উঠে যে, অবশ্যই এটা (কুরআন) সত্য। এটা কি আপনার রবের সম্পর্কে যথেষ্ট নয় যে, তিনি সব কিছুর উপর সাক্ষী?

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৫৩) আমি ওদের জন্য আমার নিদর্শনাবলী বিশ্বজগতে ব্যক্ত করব এবং ওদের নিজেদের মধ্যেও; ফলে ওদের নিকট স্পষ্ট হয়ে উঠবে যে, এ (কুরআন) সত্য।[1] এ কি যথেষ্ট নয় যে, তোমার প্রতিপালক সর্ববিষয়ের প্রত্যক্ষদর্শী? [2]

[1] যার দ্বারা কুরআনের সত্যতা এবং এটা যে আল্লাহর পক্ষ হতে আগত, তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। অর্থাৎ, أنه তে সর্বনামটি কুরআনের প্রতি ইঙ্গিত করে। কেউ কেউ বলেন, তা ইসলাম অথবা রসূল (সাঃ)-এর প্রতি ইঙ্গিত করে। সকল ক্ষেত্রেই অর্থের নিগূঢ়ত্ব একই। آفاق শব্দটি أفق এর বহুবচন, অর্থ হল কিনারা (দিকচক্রবাল)। উদ্দেশ্য হল, আমি নিজ নিদর্শনাবলী বিশ্বজাহানের দিকচক্রবালেও দেখাবো, আর মানুষের নিজ দেহের ভিতরেও। কেননা, আকাশ ও পৃথিবীর প্রান্তে-প্রান্তেও কুদরতের বড় বড় নিদর্শন বিদ্যমান রয়েছে। যেমন, সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্ররাজি, দিবারাত্রি, বৃষ্টি, বজ্র, বিদ্যুৎ, উদ্ভিদ, জড় পদার্থ, পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা ও সমুদ্র প্রভৃতি। ‘নিজেদের মধ্যে’ বলতে যে সকল মিশ্রিত উপাদান ও পদার্থ দ্বারা মানুষের অস্তিত্ব ও কাঠামো গঠিত তাই উদ্দেশ্য; যার বিস্তারিত বিবরণ চিকিৎসা-বিজ্ঞানের একটি চিত্তাকর্ষী বিষয়। কেউ কেউ বলেন যে, آفاق (দিকচক্রবাল) থেকে পূর্ব ও পশ্চিমের সেই দূর-দূরান্ত এলাকা উদ্দেশ্য, যা জয় করা মুসলিমদের জন্য আল্লাহ সহজ করে দিয়েছিলেন। আর أنفس (নিজেদের মধ্যে) থেকে নিজেদের আরব্য ভূমির উপর মুসলিমদের উন্নতি ও সাফল্য উদ্দেশ্য। যেমন, বদর যুদ্ধ, মক্কা বিজয় প্রভৃতিতে মুসলিমদেরকে প্রভূত সম্মান ও মর্যাদা দান করা হয়েছে।

[2] এ প্রশ্ন হল স্বীকৃতিসূচক। অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলা নিজ বান্দার কথা ও কর্মের সাক্ষী থাকার জন্য যথেষ্ট। আর তিনিই এ কথার সাক্ষ্য দেন যে, কুরআন আল্লাহর বাণী, যা তাঁর সত্য রসূল মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর উপর অবতীর্ণ  হয়েছে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪২ আশ-শূরা
৪২:২৯ وَ مِنۡ اٰیٰتِهٖ خَلۡقُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ مَا بَثَّ فِیۡهِمَا مِنۡ دَآبَّۃٍ ؕ وَ هُوَ عَلٰی جَمۡعِهِمۡ اِذَا یَشَآءُ قَدِیۡرٌ ﴿۲۹﴾

আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি এবং এতদোভয়ের মধ্যে তিনি যে সব জীব-জন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন সেগুলো। তিনি যখন ইচ্ছা তখনই এগুলোকে একত্র করতে সক্ষম। আল-বায়ান

তাঁর নিদর্শনসমূহের অন্তর্গত হল আসমান ও যমীনের সৃষ্টি, আর এ দু’য়ের ভিতর যে প্রাণীকুল ছড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। আর যখন ইচ্ছে তিনি তাদেরকে একত্রিত করতে সক্ষম। তাইসিরুল

তাঁর অন্যতম নিদর্শন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং এতদুভয়ের মধ্যে তিনি যে সব জীবজন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন সেগুলি। তিনি যখন ইচ্ছা তখনই ওদেরকে সমবেত করতে সক্ষম। মুজিবুর রহমান

And of his signs is the creation of the heavens and earth and what He has dispersed throughout them of creatures. And He, for gathering them when He wills, is competent. Sahih International

২৯. আর তাঁর অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি এবং এ দুয়ের মধ্যে তিনি যে সকল জীব-জন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন সেগুলো; আর তিনি যখন ইচ্ছে তখনই তাদেরকে সমবেত করতে সক্ষম।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৯) তাঁর অন্যতম নিদর্শন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং এ দুয়ের মধ্যে তিনি যে সব জীবজন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন সেগুলি; তিনি যখন ইচ্ছা তখনই ওদেরকে সমবেত করতে সক্ষম।[1]

[1] دَابَّةٌ (যমীনে বিচরণশীল জীব) একটি ব্যাপক শব্দ; যাতে মানুষ ও জ্বিন ব্যতীত অন্যান্য সমস্ত জীব-জন্তু শামিল। যাদের আকৃতি, রঙ, ভাষা, স্বভাব ও রুচি এবং প্রকার ও শ্রেণী একে অপর থেকে অবশ্যই ভিন্ন ভিন্ন। আর তারা পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে রয়েছে। এদের সকলকেই মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন একই ময়দানে একত্রিত করবেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪২ আশ-শূরা
৪২:৩২ وَ مِنۡ اٰیٰتِهِ الۡجَوَارِ فِی الۡبَحۡرِ كَالۡاَعۡلَامِ ﴿ؕ۳۲﴾

তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে আরো রয়েছে সমুদ্রে চলাচলকারী পর্বতমালার মত জাহাজসমূহ। আল-বায়ান

তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে হল সমুদ্রে নির্বিঘ্নে চলমান জাহাজ- পাহাড়ের মত। তাইসিরুল

তাঁর অন্যতম নিদর্শন পর্বত সদৃশ সমুদ্রে চলমান নৌযানসমূহ। মুজিবুর রহমান

And of His signs are the ships in the sea, like mountains. Sahih International

৩২. আর তাঁর অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে পর্বতসদৃশ সাগরে চলমান নৌযানসমূহ।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩২) তাঁর অন্যতম নিদর্শন সমুদ্রগামী পাহাড় তুল্য নৌযানসমূহ।[1]

[1] الجَوَارِ অথবা الجَوَارِيْ হল, جَارِيَةٌ (চলমান)এর বহুবচন। অর্থ, নৌকা ও পানিজাহাজসমূহ। এগুলো মহান আল্লাহর পরিপূর্ণ শক্তির নিদর্শন। সমুদ্রে ভাসমান পাহাড়সম নৌযান ও জাহাজসমূহ তাঁরই নির্দেশে চলমান। তিনি নির্দেশ দিলে এগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠে নিশ্চল হয়ে পড়বে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪২ আশ-শূরা
৪২:৩৩ اِنۡ یَّشَاۡ یُسۡكِنِ الرِّیۡحَ فَیَظۡلَلۡنَ رَوَاكِدَ عَلٰی ظَهۡرِهٖ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِكَ لَاٰیٰتٍ لِّكُلِّ صَبَّارٍ شَكُوۡرٍ ﴿ۙ۳۳﴾

তিনি যদি চান বাতাসকে থামিয়ে দিতে পারেন। ফলে জাহাজগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠে গতিহীন হয়ে পড়বে। নিশ্চয় এতে পরম ধৈর্যশীল ও কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য অনেক নিদর্শন রয়েছে। আল-বায়ান

তিনি যদি ইচ্ছে করেন বাতাসকে থামিয়ে দিতে পারেন, তখন জাহাজগুলো সমুদ্র পৃষ্ঠে গতিহীন হয়ে পড়বে। এতে প্রত্যেক অতি ধৈর্যশীল শুকর আদায়কারীর জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। তাইসিরুল

তিনি ইচ্ছা করলে বায়ুকে স্তদ্ধ করে দিতে পারেন; ফলে নৌযানসমূহ নিশ্চল হয়ে পড়বে সমুদ্র পৃষ্ঠে। নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে ধৈর্যশীল ও কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য। মুজিবুর রহমান

If He willed, He could still the wind, and they would remain motionless on its surface. Indeed in that are signs for everyone patient and grateful. Sahih International

৩৩. তিনি ইচ্ছে করলে বায়ুকে স্তব্ধ করে দিতে পারেন; ফলে নৌযানসমূহ নিশ্চল হয়ে পড়বে সমুদ্রপৃষ্ঠে। নিশ্চয় এতে অনেক নিদর্শন রয়েছে, প্রত্যেক চরম ধৈর্যশীল ও একান্ত কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩৩) তিনি ইচ্ছা করলে বায়ুকে স্তব্ধ করে দিতে পারেন; ফলে নৌযানসমূহ সমুদ্রের বুকে নিশ্চল হয়ে পড়বে। নিশ্চয়ই এতে ধৈর্যশীল ও কৃতজ্ঞদের জন্য বহু নিদর্শন রয়েছে।

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪৫ আল-জাসিয়া
৪৫:১৩ وَ سَخَّرَ لَكُمۡ مَّا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ جَمِیۡعًا مِّنۡهُ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِكَ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یَّتَفَكَّرُوۡنَ ﴿۱۳﴾

আর যা কিছু রয়েছে আসমানসমূহে এবং যা কিছু রয়েছে যমীনে, তার সবই তিনি তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। চিন্তাশীল কওমের জন্য নিশ্চয় এতে নিদর্শনাবলী রয়েছে। আল-বায়ান

আর তিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত রেখেছেন যা আছে আকাশে আর যা আছে যমীনে সেগুলোর সব কিছুকে। এতে চিন্তাশীল মানুষদের জন্য অবশ্যই অনেক নিদর্শন আছে। তাইসিরুল

তিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সব কিছু নিজ অনুগ্রহে। চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য এতে রয়েছে নিদর্শন। মুজিবুর রহমান

And He has subjected to you whatever is in the heavens and whatever is on the earth - all from Him. Indeed in that are signs for a people who give thought. Sahih International

১৩. আর তিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন আসমানসমূহ ও যমীনের সমস্ত কিছু নিজ অনুগ্রহে, নিশ্চয় এতে অনেক নিদর্শনাবলী রয়েছে, এমন সম্প্রদায়ের জন্য যারা চিন্তা করে।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(১৩) তিনি তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সমস্ত কিছু নিজের পক্ষ হতে,[1] চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য এতে রয়েছে বহু নিদর্শন।

[1] ‘অধীন’ করার অর্থ হল, সেগুলোকে তোমাদের সেবায় নিযুক্ত করে রেখেছেন। তোমাদের জন্য যাবতীয় মঙ্গল ও উপকারিতা এবং তোমাদের জীবন ও জীবিকা সব কিছুই এরই সাথে সম্পৃক্ত। যেমন, চাঁদ-সূর্য, উজ্জ্বল তারকারাজি, মেঘ-বৃষ্টি এবং হাওয়া ইত্যাদি। আর ‘নিজের পক্ষ হতে’ মানে স্বীয় বিশেষ রহমতে ও অনুগ্রহে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪৬ আল-আহকাফ
৪৬:২৭ وَ لَقَدۡ اَهۡلَكۡنَا مَا حَوۡلَكُمۡ مِّنَ الۡقُرٰی وَ صَرَّفۡنَا الۡاٰیٰتِ لَعَلَّهُمۡ یَرۡجِعُوۡنَ ﴿۲۷﴾

আর অবশ্যই আমি তোমাদের পার্শ্ববর্তী জনপদসমূহ ধ্বংস করেছিলাম। আর আমি বিভিন্নভাবে আয়াতসমূহকে বর্ণনা করেছিলাম যাতে তারা ফিরে আসে। আল-বায়ান

আমি ধ্বংস করেছিলাম তোমাদের চারপাশের জনপদ। আমি নানাভাবে নিদর্শন দেখিয়েছিলাম যাতে তারা (সঠিক পথে) ফিরে আসে। তাইসিরুল

আমিতো ধ্বংস করেছিলাম তোমাদের চতুস্পার্শ্ববর্তী জনপদসমূহ; আমি তাদেরকে বিভিন্নভাবে আমার নিদর্শনাবলী বিবৃত করেছিলাম, যাতে তারা ফিরে আসে সৎ পথে। মুজিবুর রহমান

And We have already destroyed what surrounds you of [those] cities, and We have diversified the signs [or verses] that perhaps they might return [from disbelief]. Sahih International

২৭. আর অবশ্যই আমরা ধ্বংস করেছিলাম তোমাদের চারপাশের জনপদসমূহ; এবং আমরা বিভিন্নভাবে আয়াতসমূহ বিবৃত করেছিলাম, যাতে তারা ফিরে আসে।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(২৭) আমি তো ধ্বংস করেছিলাম তোমাদের চারিপাশের জনপদসমূহকে,[1] আমি তাদেরকে বিভিন্নভাবে আমার নিদর্শনাবলী বিবৃত করেছিলাম, যাতে তারা (সৎপথে) ফিরে আসে।[2]

[1] ‘চতুষ্পাশর্ববর্তী জনপদসমূহ’ বলতে আ’দ, সামুদ এবং লূতের ঐ বসতিগুলোকে বুঝানো হয়েছে, যেগুলো হেজাযের নিকটে অবস্থিত ছিল এবং ইয়ামান, সিরিয়া ও ফিলিস্তীন যাতায়াত পথে সেগুলোর পাশ দিয়েই তারা অতিক্রম করত।

[2] অর্থাৎ, আমি বিভিন্নভাবে এবং বিভিন্ন ধরনের দলীলাদি তাদের সামনে উপস্থাপন করেছিলাম এই মনে করে যে, হয়তো তারা তাওবা করবে। কিন্তু তারা অটল-অবিচল থাকল।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫১ আয-যারিয়াত
৫১:২০ وَ فِی الۡاَرۡضِ اٰیٰتٌ لِّلۡمُوۡقِنِیۡنَ ﴿ۙ۲۰﴾

সুনিশ্চিত বিশ্বাসীদের জন্য যমীনে অনেক নিদর্শন রয়েছে। আল-বায়ান

নিশ্চিত বিশ্বাসীদের জন্য পৃথিবীতে আছে নিদর্শন, তাইসিরুল

নিশ্চিত বিশ্বাসীদের নিদর্শন রয়েছে ধরিত্রীতে – মুজিবুর রহমান

And on the earth are signs for the certain [in faith] Sahih International

২০. আর নিশ্চিত বিশ্বাসীদের জন্য নিদর্শনসমূহ রয়েছে যমীনে(১),

(১) অর্থাৎ ঈমানদারদের জন্যে যমীনে আল্লাহর অনেক নির্দশন আছে। মূলত: যমীনে মহান আল্লাহর অসংখ্য নিদর্শন রয়েছে। উদ্ভিদ, বৃক্ষ ও বাগ-বাগিচাই দেখুন, এদের বিভিন্ন প্রকারের বর্ণ ও গন্ধ, এক একটি পত্রের নিখুঁত সৌন্দর্য এবং প্রত্যেকটির বৈশিষ্ট্য ও ক্রিয়ার হাজারো বৈচিত্র্য রয়েছে। এমনিভাবে ভূপৃষ্টে নদীনালা কুপ ও অন্যান্য জলাশয় রয়েছে। ভূ-পৃষ্ঠে সুউচ্চ পাহাড় ও গিরিগুহা রয়েছে। মৃত্তিকায় জন্মগ্রহণকারী অসংখ্য প্রকার জীবজন্তু ও তাদের বিভিন্ন উপকারীতা রয়েছে। ভূপৃষ্ঠের মানবমণ্ডলীর বিভিন্ন গোত্র, জাতি এবং বিভিন্ন ভূখণ্ডের মানুষের মধ্যে বর্ণ ও ভাষার স্বাতন্ত্র্য, চরিত্র ও অভ্যাসের পার্থক্য ইত্যাদি বিষয়ে চিন্তা করলে প্রত্যেকটির মধ্যে আল্লাহ তা'আলার কুদরত ও হিকমতের এত বিকাশ দৃষ্টিগোচর হবে, যা গণনা করাও সুকঠিন। এ সব নিদর্শনের মধ্যে এ আয়াতে সম্ভবত: সেসব নিদর্শনই বোঝানো উদ্দেশ্য, যা আখেরাতের সম্ভাবনা এবং তার অবশ্যম্ভাবিতা ও অনিবার্যতার সাক্ষ্য দিচ্ছে [দেখুন: কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর]।

তাফসীরে জাকারিয়া

(২০) নিশ্চিত বিশ্বাসীদের অনেক নিদর্শন রয়েছে পৃথিবীতে।

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫১ আয-যারিয়াত
৫১:২১ وَ فِیۡۤ اَنۡفُسِكُمۡ ؕ اَفَلَا تُبۡصِرُوۡنَ ﴿۲۱﴾

তোমাদের নিজদের মধ্যেও। তোমরা কি চক্ষুষ্মান হবে না? আল-বায়ান

আর (নিদর্শন আছে) তোমাদের মাঝেও, তোমরা কি দেখ না? তাইসিরুল

এবং তোমাদের মধ্যেও। তোমরা কি অনুধাবন করবেনা? মুজিবুর রহমান

And in yourselves. Then will you not see? Sahih International

২১. এবং তোমাদের নিজেদের মধ্যেও। তবুও তোমরা কি চক্ষুষ্মান হবে না?

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(২১) এবং তোমাদের নিজেদের মধ্যেও! তোমরা কি ভেবে দেখবে না?

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৩ আন-নাজম
৫৩:১৮ لَقَدۡ رَاٰی مِنۡ اٰیٰتِ رَبِّهِ الۡكُبۡرٰی ﴿۱۸﴾

নিশ্চয় সে তার রবের বড় বড় নিদর্শনসমূহ থেকে দেখেছে। আল-বায়ান

সে তার প্রতিপালকের বড় বড় নিদর্শন দেখেছিল। তাইসিরুল

সেতো তার প্রতিপালকের মহান নিদর্শনাবলী দেখেছিল। মুজিবুর রহমান

He certainly saw of the greatest signs of his Lord. Sahih International

১৮. অবশ্যই তিনি তার রবের মহান নিদর্শনাবলীর কিছু দেখেছিলেন;

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(১৮) নিঃসন্দেহে সে তার প্রতিপালকের মহান নিদর্শনাবলী দেখেছিল। [1]

[1] যেগুলোর মধ্যে জিবরীল (আঃ)-এর আসল আকৃতি, ‘সিদরাতুল মুন্তাহা’ ও প্রতিপালকের অন্যান্য মহাশক্তির কিছু নিদর্শন। যার বিস্তারিত আলোচনা মি’রাজ সংক্রান্ত হাদীসমূহে করা হয়েছে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৪ আল-কামার
৫৪:১ اِقۡتَرَبَتِ السَّاعَۃُ وَ انۡشَقَّ الۡقَمَرُ ﴿۱﴾

কিয়ামত নিকটবর্তী হয়েছে এবং চাঁদ বিদীর্ণ হয়েছে। আল-বায়ান

ক্বিয়ামত নিকটবর্তী হয়েছে এবং চন্দ্র খন্ডিত হয়েছে, তাইসিরুল

কিয়ামাত আসন্ন, চাঁদ বিদীর্ণ হয়েছে, মুজিবুর রহমান

The Hour has come near, and the moon has split [in two]. Sahih International

১. কিয়ামত কাছাকাছি হয়েছে(১), আর চাঁদ বিদীর্ণ হয়েছে(২),

(১) পূর্ববর্তী সুরা আন-নাজমে (أَزِفَتِ الْآزِفَةُ) বলে সমাপ্ত করা হয়েছে, যাতে কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। আলোচ্য সূরাকে এই বিষয়বস্তু দ্বারাই অর্থাৎ (اقْتَرَبَتِ السَّاعَةُ) বলে শুরু করা হয়েছে। [কুরতুবী] কিয়ামতের বিপুলসংখ্যক আলামতের মধ্যে সর্ববৃহৎ আলামত হচ্ছে খোদ শেষনবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নবুওয়াত। [কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর] এক হাদীসে তিনি বলেন, আমার আগমন ও কেয়ামত হাতের দুই অঙ্গুলির ন্যায় অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত৷ [বুখারী: ৪৯৩৬, ৬৫০৩, মুসলিম: ২৯৫০, মুসনাদে আহমাদ: ৫/৩৩৮] আরও কতিপয় হাদীসে এই নৈকট্যের বিষয়বস্তু বর্ণিত হয়েছে।

(২) এখানে কেয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার একটি দলীল চন্দ্র বিদীর্ণ হওয়ার মু'জিযায় আলোচিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মু'জিযা হিসাবে চন্দ্র দ্বিখণ্ডিত হয়ে আলাদা হয়ে যাওয়া কেয়ামতের একটি বড় আলামত। এছাড়াও এই মু'জিযাটি আরও এক দিক দিয়ে কেয়ামতের আলামত। তা এই যে, চন্দ্র যেমন আল্লাহর কুদরাতে দুই খণ্ডে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল, তেমনিভাবে কেয়ামতে সমস্ত গ্ৰহ উপগ্রহের খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যাওয়া কোন অসম্ভব ব্যাপার নয়। মক্কার কাফেররা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে তার রেসালাতের সপক্ষে কোন নিদর্শন চাইলে আল্লাহ তা'আলা তার সত্যতার প্রমাণ হিসেবে চন্দ্র বিদীর্ণ হওয়ার মু'জিযা প্রকাশ করেন।

এই মু'জিযার প্রমাণ কুরআন পাকের এই আয়াতে আছে এবং অনেক সহীহ হাদীসেও আছে। এসব হাদীস সাহাবায়ে কেরামের একটি বিরাট দলের রেওয়ায়েতক্রমে বর্ণিত আছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর, জুবায়ের ইবনে মুতইম, ইবনে আব্বাস ও আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম প্রমুখ। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ এ কথাও বর্ণনা করেন। যে, তিনি তখন অকুস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং মু'জিযা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেছেন। ইমাম তাহাতী ও ইবনে কাসীর এই মু'জিযা সম্পর্কিত সকল রেওয়ায়েতকে ‘মুতাওয়াতির’ বলেছেন। তাই এই মু'জিযার বাস্তবতা অকাট্য রূপে প্রমাণিত। যা অস্বীকার করা সুস্পষ্ট কুফরী। [দেখুন: ইবন কাসীর; কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর]

ঘটনার সার-সংক্ষেপ এই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় ছিলেন। তখন মুশরিকরা তার কাছে নবুওয়াতের নিদর্শন চাইল। তখন ছিল চন্দ্রোজ্জ্বল রাত্রি। আল্লাহ তা'আলা এই সুস্পষ্ট অলৌকিক ঘটনা দেখিয়ে দিলেন যে, চন্দ্র দ্বিখণ্ডিত হয়ে একখণ্ড পুর্বদিকে ও অপরখণ্ড পশ্চিমদিকে চলে গেল এবং উভয় খণ্ডের মাঝখানে পাহাড় অন্তরাল হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপস্থিত সবাইকে বললেনঃ দেখ এবং সাক্ষ্য দাও। সবাই যখন পরিষ্কাররূপে এই মু'জিযা দেখে নিল, তখন চন্দ্রের উভয় খণ্ড পুনরায় একত্রিত হয়ে গেল। কোন চক্ষুষ্মান ব্যক্তির পক্ষে এই সুস্পষ্ট মু'জিযা অস্বীকার করা সম্ভবপর ছিল না, কিন্তু মুশরিকরা বলতে লাগলঃ মুহাম্মদ সারা বিশ্বের মানুষকে জাদু করতে পারবে না। অতএব, বিভিন্ন স্থান থেকে আগত লোকদের জন্য অপেক্ষা কর। তারা কি বলে শুনে নাও। এরপর বিভিন্ন স্থান থেকে আগন্তুক মুশরিকদেরকে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করল। তারা সবাই চন্দ্রকে দ্বিখণ্ডিত অবস্থায় দেখেছে বলে স্বীকার করল। নিম্নে এতদসংক্রান্ত বর্ণনাসমূহের কয়েকটি উল্লেখ করা হলো।

* আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বৰ্ণনা করেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আমলে চন্দ্র বিদীর্ণ হয়ে দুই খণ্ড হয়ে গেল। সবাই এই ঘটনা অবলোকন করল এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা সাক্ষ্য দাও। [বুখারী: ৩৮৬৯, মুসলিম: ২৮০০, তিরমিযী: ৩২৮৫, মুসনাদে আহমাদ: ১/৩৭৭]

* আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে অপর বর্ণনায় এসেছে, মক্কায় (অবস্থানকালে) চন্দ্র বিদীর্ণ হয়ে দুই খণ্ড হয়ে যায়। কোরাইশ কাফেররা বলতে থাকে, এটা জাদু, মুহাম্মদ তোমাদেরকে জাদু করেছে। অতএব, তোমরা বহির্দেশ থেকে আগমনকারী মুসাফিরদের অপেক্ষা কর। যদি তারাও চন্দ্রকে দ্বিখণ্ডিত অবস্থায় দেখে থাকে, তবে মুহাম্মদের দাবি সত্য। পক্ষান্তরে তারা এরূপ দেখে না থাকলে এটা জাদু ব্যতীত কিছু নয়। এরপর বহির্দেশ থেকে আগত মুসাফিরদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় তারা সবাই চন্দ্রকে দ্বিখন্ডিত অবস্থায় দেখেছে বলে স্বীকার করে। [আবু দাউদ তায়ালেসী: ১/৩৮, হাদীস নং ২৯৫, বাইহাকী: দালায়েল ২/২৬৬]

* জুবাইর ইবন মুতইম রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলের যুগে চাঁদ ফেটে গিয়ে দুভাগে বিভক্ত হয়েছিল। এর এক অংশ ছিল এ পাহাড়ের উপর অপর অংশ অন্য পাহাড়ের উপর। তখন মুশরিকরা বলল, মুহাম্মাদ আমাদেরকে জাদু করেছে। তারপর তারা আবার বলল, যদি তারা আমাদেরকে জাদু করে থাকে তবে সে তো আর দুনিয়াসুদ্ধ সবাইকে জাদু করতে পারবে না। [মুসনাদে আহমাদ: ৪/৮১–৮২]

* আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেনঃ মক্কাবাসীরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে নবুওয়তের কোন নিদর্শন দেখতে চাইলে আল্লাহ তা'আলা চন্দ্রকে দ্বিখণ্ডিত অবস্থায় দেখিয়ে দিলেন। তারা হেরা পর্বতকে উভয় খণ্ডের মাঝখানে দেখতে পেল। [বুখারী: ৩৮৬৮, মুসলিম: ২৮০২]

* আবদুল্লাহ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এ আয়াতের তাফসীর করার সময় বলেন, এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে ঘটেছিল। চাঁদ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। একভাগ পাহাড়ের সামনে অপর ভাগ পাহাড়ের পিছনে ছিল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা সাক্ষী থাক। [মুসলিম: ২১৫৯, তিরমিযী: ৩২৮৮]

* আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে চাঁদ ফেটেছিল ৷ [বুখারী: ৪৮৬৬]

তাফসীরে জাকারিয়া

(১) কিয়ামত আসন্ন,[1] চন্দ্র বিদীর্ণ হয়েছে। [2]

[1] প্রথমতঃ এ কথা বিশ্বসৃষ্টির বিগত কাল অনুপাতে। কারণ, যা অতিবাহিত হয়ে গেছে তার তুলনায় যা অবশিষ্ট আছে, তা অল্প। দ্বিতীয়তঃ আগামী প্রত্যেকটি জিনিসই নিকটবর্তী হয়। তাই নবী করীম (সাঃ) তাঁর নিজের ব্যাপারে বলেছেন যে, আমার আগমন কাল কিয়ামত সংলগ্নে। অর্থাৎ, আমার ও কিয়ামতের মধ্যে আর কোন নবী আসবেন না।

[2] এটি সেই মু’জেযা, যা মক্কাবাসীদের দাবী অনুযায়ী দেখানো হয়েছিল। চাঁদ দু’ টুকরো হয়ে গিয়েছিল। এমনকি লোকেরা তার (দু’খন্ড চাঁদের) মাঝ দিয়ে হিরা পাহাড়কে দেখতে পায়। অর্থাৎ, চাঁদের এক টুকরো পাহাড়ের একদিকে এবং দ্বিতীয় টুকরো পাহাড়ের অপর দিকে চলে যায়। (বুখারীঃ আনসারদের ফযীলত অধ্যায়, মুসলিমঃ কিয়ামতের বর্ণনা অধ্যায়) পূর্বের প্রায় সকল সালাফে সালেহীনের এটাই মত। (ফাতহুল ক্বাদীর) ইমাম ইবনে কাসীর (রঃ) লিখছেন যে, ‘উলামাগণ সকলেই এ ব্যাপারে একমত যে, চাঁদ নবী করীম (সাঃ)-এর যুগে দ্বিখন্ডিত হয় এবং এটা তাঁর সুস্পষ্ট মু’জিযাসমূহের অন্যতম। বিশুদ্ধসূত্রে সাব্যস্ত বহুবিধ সূত্রে বর্ণিত হাদীসগুলোও তা প্রমাণ করে।’

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৪ আল-কামার
৫৪:২ وَ اِنۡ یَّرَوۡا اٰیَۃً یُّعۡرِضُوۡا وَ یَقُوۡلُوۡا سِحۡرٌ مُّسۡتَمِرٌّ ﴿۲﴾

আর তারা কোন নিদর্শন দেখলে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, ‘চলমান যাদু’। আল-বায়ান

কিন্তু তারা যখন কোন নিদর্শন দেখে তখন মুখ ফিরিয়ে নেয় আর বলে- ‘এটা তো সেই আগের থেকে চলে আসা যাদু।’ তাইসিরুল

তারা কোনো নিদর্শন দেখলে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলেঃ এটাতো চিরাচরিত যাদু। মুজিবুর রহমান

And if they see a miracle, they turn away and say, "Passing magic." Sahih International

২. আর তারা কোন নিদর্শন দেখলে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, এটা তো চিরাচরিত জাদু।(১)

(১) مُسْتَمِرٌّ শব্দের প্রচলিত অর্থ দীর্ঘস্থায়ী। এর কয়েকটি অর্থ হতে পারে। এক, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতদিন একের পর এক যে জাদু চালিয়ে যাচ্ছেন, নাউযুবিল্লাহ-এটিও তার একটি। দুই, এটা পাকা জাদু। অত্যন্ত নিপুণভাবে এটি দেখানো হয়েছে। তিন, অন্য সব জাদু যেভাবে অতীত হয়ে গিয়েছে এটিও সেভাবে অতীত হয়ে যাবে, এর দীর্ঘস্থায়ী কোন প্রভাব পড়বে। না। এটা স্বল্পক্ষণস্থায়ী জাদুর প্রতিক্রিয়া, যা আপনাআপনি নিঃশেষ হয়ে যাবে। [বাগভী, কুরতুবী]

তাফসীরে জাকারিয়া

(২) তারা কোন নিদর্শন দেখলে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, এটা তো চিরাচরিত যাদু।[1]

[1] অর্থাৎ, কুরাইশরা ঈমান আনার পরিবর্তে তা যাদু বলে আখ্যায়িত করে নিজেদের বিমুখতার আচরণ বহাল রাখে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৫৭ আল-হাদীদ
৫৭:১৭ اِعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰهَ یُحۡیِ الۡاَرۡضَ بَعۡدَ مَوۡتِهَا ؕ قَدۡ بَیَّنَّا لَكُمُ الۡاٰیٰتِ لَعَلَّكُمۡ تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۷﴾

তোমরা জেনে রাখ যে, আল্লাহ্ যমীনকে তার মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন। আমি নিদর্শনসমূহ তোমাদের কাছে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছি, আশা করা যায় তোমরা বুঝতে পারবে। আল-বায়ান

জেনে রেখ, আল্লাহই যমীনকে তার মৃত্যুর পর আবার জীবিত করেন। আমি তোমাদের কাছে সুস্পষ্টভাবে নিদর্শন বর্ণনা করেছি যাতে তোমরা বুঝতে পার। তাইসিরুল

জেনে রেখ, আল্লাহই ধরিত্রীকে ওর মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন। আমি নিদর্শনগুলি তোমাদের জন্য বিশদভাবে ব্যক্ত করেছি যাতে তোমরা বুঝতে পার। মুজিবুর রহমান

Know that Allah gives life to the earth after its lifelessness. We have made clear to you the signs; perhaps you will understand. Sahih International

১৭. জেনে রাখা যে, আল্লাহই যমীনকে তার মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন। আমরা নিদর্শনগুলো তোমাদের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছি যাতে তোমরা বুঝতে পার।(১)

(১) এখানে যে প্রসঙ্গে একথাটি বলা হয়েছে তা ভালভাবে বুঝে নেয়া দরকার। কুরআন মজীদে বেশ কিছু জায়গায় নবুওয়াত ও কিতাব নাযিলকে বৃষ্টির বরকতের সাথে তুলনা করা হয়েছে। কেননা, ভূ-পৃষ্ঠের ওপর বৃষ্টিপাত যে কল্যাণ বয়ে আনে নবুওয়াত এবং কিতাবও মানবজাতির জন্য সে একই রকমের কল্যাণ বয়ে আনে। মৃত ভূ-পৃষ্ঠে যেমন রহমতের বৃষ্টির এক বিন্দু পড়তেই শস্য শ্যামল হয়ে ওঠে। ঠিক তেমনি আল্লাহর রহমতে যে দেশে নবী প্রেরিত হন এবং অহী ও কিতাব নাযিল হওয়া শুরু হয় সেখানে মৃত মানবতা অকস্মাৎ জীবন লাভ করে। [দেখুন: ইবন কাসীর; কুরতুবী]

তাফসীরে জাকারিয়া

(১৭) তোমরা জেনে রেখো যে, আল্লাহই পৃথিবীকে ওর মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন। আমি নিদর্শনগুলি তোমাদের জন্য বিশদভাবে ব্যক্ত করেছি; যাতে তোমরা বুঝতে পার।

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
দেখানো হচ্ছেঃ ৮১ থেকে ৯৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ৯৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ « আগের পাতা 1 2 3 4 5