আর তুমি যখন কুরআন পড় তখন তোমার ও যারা আখিরাতে ঈমান আনে না তাদের মধ্যে আমি এক অদৃশ্য পর্দা দিয়ে দেই। আল-বায়ান
তুমি যখন কুরআন পাঠ কর তখন আমি তোমার আর যারা আখেরাতে বিশ্বাস করে না তাদের মাঝে একটা অদৃশ্য পর্দা স্থাপন ক’রে দিয়েছি। তাইসিরুল
তুমি যখন কুরআন পাঠ কর তখন তোমার ও যারা পরলোকে বিশ্বাস করেনা তাদের মধ্যে এক প্রচ্ছন্ন পর্দা টেনে দিই। মুজিবুর রহমান
And when you recite the Qur'an, We put between you and those who do not believe in the Hereafter a concealed partition. Sahih International
৪৫. আর আপনি যখন কুরআন পাঠ করেন তখন আমরা আপনার ও যারা আখিরাতের উপর ঈমান রাখে না তাদের মধ্যে এক প্রচ্ছন্ন পর্দা রেখে দেই।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৪৫) তুমি যখন কুরআন পাঠ কর, তখন তোমার ও যারা পরলোকে বিশ্বাস করে না, তাদের মধ্যে এক আবরক পর্দা করে দিই। [1]
[1] مَسْتُوْرٌ অর্থ হল سَاتِر (আবরক বা অন্তরাল) অথবা مستور عن الأبصار (চোখের অন্তরালে) তাই তারা তা দেখে না। এ ছাড়াও তাদের ও হিদায়াতের মধ্যে রয়েছে অন্তরায়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর এভাবেই আমি প্রতিফল দান করি তাকে, যে বাড়াবাড়ি করে এবং তার রবের নিদর্শনাবলীতে ঈমান আনে না। আর আখিরাতের আযাব তো অবশ্যই কঠোরতর ও অধিকতর স্থায়ী। আল-বায়ান
আমি এভাবেই প্রতিফল দেই তাদেরকে যারা সীমালঙ্ঘন করে এবং তার প্রতিপালকের নিদর্শনে বিশ্বাস করে না। আর আখিরাতের ‘আযাব অবশ্যই সবচেয়ে বেশী কঠিন ও সবচেয়ে বেশী স্থায়ী। তাইসিরুল
এবং এভাবেই আমি প্রতিফল দিই তাকে, যে বাড়াবাড়ি করে এবং তার রবের নিদর্শনে বিশ্বাস স্থাপন করেনা; পরকালের শাস্তিতো অবশ্যই কঠিনতর ও অধিক স্থায়ী। মুজিবুর রহমান
And thus do We recompense he who transgressed and did not believe in the signs of his Lord. And the punishment of the Hereafter is more severe and more enduring. Sahih International
১২৭. আর এভাবেই আমরা প্রতিফল দেই তাকে যে বাড়াবাড়ি করে ও তার রব-এর নিদর্শনে ঈমান না আনে।(১) আর আখেরাতের শাস্তি তো অবশ্যই কঠিনতর ও অধিক স্থায়ী।
(১) এখানে আল্লাহ “যিকির” অর্থাৎ তাঁর কিতাব ও তাঁর প্রেরিত উপদেশমালা থেকে যারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাদের দুনিয়ায় যে “অতৃপ্ত জীবন” যাপন করানো হয় সেদিকে ইশারা করা হয়েছে। অর্থাৎ এভাবেই যারা আল্লাহর আয়াতসমূহের উপর মিথ্যারোপ করে আমরা তাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে প্রতিফল দিয়ে থাকি। “তাদের জন্য দুনিয়ার জীবনে আছে শাস্তি এবং আখিরাতের শাস্তি তো আরো কঠোর! আর আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা করার মত তাদের কেউ নেই।” [সূরা আর-রাদ: ৩৪] [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া(১২৭) আর এইভাবেই আমি তাকে প্রতিফল দেব, যে সীমালংঘন করেছে ও তার প্রতিপালকের নিদর্শনে বিশ্বাস স্থাপন করেনি। আর পরকালের শাস্তি অবশ্যই কঠোরতর ও চিরস্থায়ী।’
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর নিশ্চয় যারা আখেরাতের প্রতি ঈমান আনে না, তারাই এই পথ থেকে বিচ্যুত। আল-বায়ান
যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না তারা সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে। তাইসিরুল
যারা আখিরাতে বিশ্বাস করেনা তারাতো সরল পথ হতে বিচ্যুত। মুজিবুর রহমান
But indeed, those who do not believe in the Hereafter are deviating from the path. Sahih International
৭৪. আর নিশ্চয় যারা আখেরাতে ঈমান রাখে না, তারা সরল পথ থেকে বিচ্যুত,
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৭৪) যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, তারা অবশ্যই সরল পথ হতে বিচ্যুত। [1]
[1] অর্থাৎ, সরল পথ হতে বিচ্যুত হওয়ার একমাত্র কারণ হল, পরকালে অবিশ্বাস।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর যদি আমি তাদের দয়া করতাম এবং তাদের দুঃখ-দুর্দশা থেকে মুক্ত করতাম, তবুও তারা অবাধ্যতায় বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়াত। আল-বায়ান
আমি তাদের প্রতি দয়া করলেও আর তাদের দুঃখ দুর্দশা দূর করলেও তারা তাদের অবাধ্যতায় ঘুরপাক খেতে থাকবে। তাইসিরুল
আমি তাদের উপর দয়া করলেও এবং তাদের দুঃখ-দৈন্য দূর করলেও তারা অবাধ্যতায় বিভ্রান্তের ন্যায় ঘুরতে থাকবে। মুজিবুর রহমান
And even if We gave them mercy and removed what was upon them of affliction, they would persist in their transgression, wandering blindly. Sahih International
৭৫. আর যদি আমরা তাদেরকে দয়া করি এবং তাদের দুঃখ-দৈন্য দূর করি তবুও তারা অবাধ্যতায় বিভ্রান্তের ন্যায় ঘুরতে থাকবে।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৭৫) আমি তাদের উপর দয়া করলেও এবং তাদের দুঃখ-দৈন্য দূর করলেও তারা অবাধ্যতায় বিভ্রান্তের ন্যায় ঘুরতে থাকবে। [1]
[1] ইসলামের বিরুদ্ধে তাদের অন্তরে যে বিদ্বেষ ও শত্রুতা ছিল এবং কুফরী ও শিরকের নর্দমার মধ্যে যেভাবে তারা হাবুডুবু খাচ্ছিল এখানে তার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানযারা সালাত কায়েম করে এবং যাকাত দেয়। আর তারাই আখিরাতের প্রতি নিশ্চিত বিশ্বাস রাখে। আল-বায়ান
যারা নামায কায়েম করে, যাকাত আদায় করে আর তারা আখিরাতে বিশ্বাসী। তাইসিরুল
যারা সালাত কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে এবং যারা আখিরাতে নিশ্চিত বিশ্বাসী। মুজিবুর রহমান
Who establish prayer and give zakah, and of the Hereafter they are certain [in faith]. Sahih International
৩. যারা সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয় আর তারাই আখেরাতে নিশ্চিত বিশ্বাস রাখে।(১)
(১) অর্থাৎ কুরআন মজীদের এ আয়াতগুলো কেবলমাত্রএমন সবলোকদেরই পথনির্দেশনা দেয় এবং শুভ পরিণামের সুসংবাদও একমাত্রএমন সবলোকদের দান করে যাদের মধ্যে দুটি বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী পাওয়া যায়। একটি হচ্ছে, তারা ঈমান আনে এবং সে ঈমান অনুসারে আমল করে। ঈমান আনার অর্থ হচ্ছে তারা কুরআন ও মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাওয়াত গ্রহণ করে। এক আল্লাহকে নিজেদের একমাত্র উপাস্য ও রব বলে মেনে নেয়। কুরআনকে আল্লাহর কিতাব হিসেবে স্বীকার করে নেয়। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সত্য নবী বলে গ্রহণ করে। আর আমল করার অর্থ হচ্ছে, তারা এ বিষয়গুলো কেবলমাত্র মেনে নিয়েই বসে থাকে না বরং কার্যত এগুলোর অনুসরণ ও আনুগত্য করতে উদ্বুদ্ধ হয়। তাই তারা সালাত কায়েম করে এবং যাকাত দেয়। দ্বিতীয় গুণটি হচ্ছে, তারা ঈমান রাখে যে, এ জীবনের পর দ্বিতীয় আর একটি জীবন আছে, সেখানে আমাদের নিজেদের কাজের হিসেব দিতে এবং প্রত্যেকটি কাজের প্রতিদান লাভ করতে হবে। এ দু'টি শর্ত যারা পূর্ণ করবে। কুরআন মজীদের আয়াত তাদেরকেই দুনিয়ায় সত্য সরল পথের সন্ধান দেবে। [ইবন কাসীর]
এ পথের প্রতিটি পর্যায়ে তাদেরকে শুদ্ধ ও অশুদ্ধ এবং ন্যায় ও অন্যায়ের পার্থক্য বুঝিয়ে দেবে। তাদেরকে ভুল পথের দিকে অগ্রসর হবার হাত থেকে রক্ষা করবে। তাদেরকে এ নিশ্চয়তা দান করবে যে, সত্য-সঠিক পথ অবলম্বন করার ফল দুনিয়ায় যাই হোক না কেন শেষ পর্যন্ত তারই বদৌলতে চিরন্তন সফলতা তারাই অর্জন করবে এবং তারা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের সৌভাগ্য লাভে সক্ষম হবে। যেমন অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, “বলুন, এটি মুমিনদের জন্য হেদায়াত ও আরোগ্য। আর যারা ঈমান আনে না তাদের কানে রয়েছে বধিরতা এবং কুরআন এদের (অন্তরের) উপর অন্ধত্ব তৈরী করবে।” [সূরা ফুসসিলাত: ৪৪]
তাফসীরে জাকারিয়া(৩) যারা যথাযথভাবে নামায পড়ে, যাকাত দেয় ও পরলোকে নিশ্চিত বিশ্বাসী। [1]
[1] এ বিষয়টি বিভিন্ন স্থানে কয়েকবার আলোচিত হয়েছে যে, কুরআন কারীম এমনিতে বিশ্ব মানবতার পথ নির্দেশিকা হিসাবে অবতীর্ণ হয়েছে। কিন্তু তা হতে সত্যিকার পথ ওরাই পায়, যারা পথ অন্বেষণকারী। যারা নিজেদের অন্তর ও মস্তিষ্কর জানালাগুলি সত্য দেখার ও শোনার জন্য বন্ধ রাখে বা যাদের অন্তরাত্মা পাপের অন্ধকারে নিমজ্জিত, তাদেরকে কুরআন কিরূপে পথের দিশা দিতে পারে? এর উদাহরণ সেই (ঘুমন্ত বা) অন্ধ ব্যক্তিদের ন্যায় যারা সূর্যের আলো থেকে বঞ্চিত; যদিও সূর্য সারা বিশ্বকে আলোকিত করে।
তাফসীরে আহসানুল বায়াননিশ্চয় যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না আমি তাদের জন্য তাদের আমলসমূহকে সুশোভিত করে দিয়েছি। ফলে তারা বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়। আল-বায়ান
যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না, তাদের (চোখে) তাদের কর্মকান্ডকে আমি সুশোভিত করেছি, কাজেই তারা উদভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়, তাইসিরুল
যারা আখিরাতে বিশ্বাস করেনা তাদের দৃষ্টিতে তাদের কাজকে আমি শোভন করেছি, ফলে তারা বিভ্রান্তিতে ঘুরে বেড়ায়। মুজিবুর রহমান
Indeed, for those who do not believe in the Hereafter, We have made pleasing to them their deeds, so they wander blindly. Sahih International
৪. নিশ্চয় যারা আখেরাতে ঈমান আনে না, তাদের জন্য তাদের কাজকে আমরা শোভন করেছি(১), ফলে তারা বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়;
(১) এখানে বলা হয়েছে যে, যারা আখেরাতে ঈমান রাখে না আমরা তাদের দৃষ্টিতে তাদের কুকর্মকে শোভন করে দিয়েছি। ফলে তারা সেগুলোকে উত্তম মনে করে পথ ভ্ৰষ্টতায় লিপ্ত থাকে। এটা এ জন্যই যে, তারা আখেরাতকে অস্বীকার করেছে। [ইবন কাসীর] সুতরাং আখেরাতকে অস্বীকার করাই তাদের জন্য যাবতীয় পতনের মূল কারণ হিসেবে বিবেচিত হলো। এক গুনাহ অন্য গুনাহর কারণ হয়। অন্য আয়াতে আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ “তারা যেমন প্রথমবারে তাতে ঈমান আনেনি তেমনি আমরাও তাদের মনোভাবের ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করে দেব এবং তাদেরকে তাদের অবাধ্যতায় উদভ্ৰান্তের মত ঘুরে বেড়াতে দেব।” [সূরা আল-আনআমঃ ১১০]
তাফসীরে জাকারিয়া(৪) নিশ্চয় যারা পরলোকে বিশ্বাস করে না, তাদের দৃষ্টিতে তাদের কর্মকে আমি শোভন করেছি, [1] ফলে ওরা বিভ্রান্তের মত ঘুরে বেড়ায়; [2]
[1] এটি পাপের পরিণাম ও তার বদলা যে, পাপ তাদেরকে ভাল মনে হয়। আর এর মূল কারণ হল পরকালে অবিশ্বাস। শোভন করার সম্পর্ক আল্লাহর দিকে করা হয়েছে, যেহেতু প্রতিটি জিনিস তার ইচ্ছাতেই হয়ে থাকে। তাছাড়া এর মধ্যে আল্লাহর সেই নীতি কার্যকর থাকে, যাতে তিনি সৎ লোকদের জন্য পুণ্যের এবং অসৎ লোকদের জন্য পাপের রাস্তা সহজ করে থাকেন। কিন্তু এই উভয়ের মধ্যে একটি রাস্তা বেছে নেওয়া মানুষের নিজের এখতিয়ারভুক্ত।
[2] অর্থাৎ, ভ্রষ্টতার যে রাস্তায় তারা চলতে থাকে তার বাস্তবিকতা তাদের অজানা থাকে এবং সঠিক রাস্তার দিশা পায় না।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানএদের জন্যই রয়েছে নিকৃষ্ট আযাব। আর এরাই আখিরাতে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত। আল-বায়ান
এরাই হল যাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি আর এরাই আখিরাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত। তাইসিরুল
এদেরই জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি এবং এরাই আখিরাতে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত। মুজিবুর রহমান
Those are the ones for whom there will be the worst of punishment, and in the Hereafter they are the greatest losers. Sahih International
৫. এদেরই জন্য রয়েছে নিকৃষ্ট শাস্তি এবং এরাই আখেরাতে সর্বাধিক ক্ষতিগ্ৰস্ত।(১)
(১) এ নিকৃষ্ট শাস্তিটি কিভাবে, কখনও কোথায় হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। কারণ তা ব্যাপক, দুনিয়া ও আখেরাত উভয় স্থানেই তাদের জন্য রয়েছে নিকৃষ্ট শাস্তি। [ইবন কাসীর] এ দুনিয়ায়ও বিভিন্ন ব্যক্তি, দল ও জাতি নানাভাবে এ শাস্তি লাভ করে থাকে। এ দুনিয়া থেকে বিদায় নেওয়ার সময় একেবারে মৃত্যুর দ্বারদেশেও যালেমরা এর একটি অংশ লাভ করে। মৃত্যুর পরে “আলমে বরযাখে” ও (মৃত্যুর পর থেকে কিয়ামত পূর্ববর্তী সময়) মানুষ এর মুখোমুখি হয়। আর তারপর হাশরের ময়দানে এর একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে এবং তারপর এক জায়গায় গিয়ে তা আর কোনদিন শেষ হবে না।
তাফসীরে জাকারিয়া(৫) এদের জন্য আছে নিকৃষ্ট শাস্তি এবং এরাই পরকালে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর এ দুনিয়ার জীবন খেল-তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয় এবং নিশ্চয় আখিরাতের নিবাসই হলো প্রকৃত জীবন, যদি তারা জানত। আল-বায়ান
পার্থিব এ জীবন ক্রীড়া-কৌতুক ছাড়া কিছু নয়, আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন- তারা যদি জানত! তাইসিরুল
এই পার্থিব জীবনতো ক্রীড়া-কৌতুক ব্যতীত কিছুই নয়। পারলৌকিক জীবনই প্রকৃত জীবন, যদি তারা জানতো। মুজিবুর রহমান
And this worldly life is not but diversion and amusement. And indeed, the home of the Hereafter - that is the [eternal] life, if only they knew. Sahih International
৬৪. আর এ দুনিয়ার জীবন তো খেলতামাশা ছাড়া কিছুই নয়।(১) আর আখেরাতের জীবনই তো প্রকৃত জীবন(২), যদি তারা জানত!
(১) এ আয়াতে পার্থিবজীবন ক্রীড়া কৌতুক বলা হয়েছে। উদ্দেশ্য এই যে, ক্রীড়া কৌতুকের যেমন কোন স্থিতি নেই এবং এর দ্বারা কোন বড় সমস্যার সমাধান হয় না, অল্পক্ষণ পরেই সব তামাশা খতম হয়ে যায়, পার্থিব জীবনের অবস্থাও তদ্রুপ। পার্থিব জীবনের বাস্তবতা শুধুমাত্র এতটুকুই যেমন ছোট ছেলেরা কিছুক্ষণের জন্য নেচে গেয়ে আমোদ করে এবং তারপর যার যার ঘরে চলে যায়। জীবনের কোন একটি আকৃতিও এখানে স্থায়ী ও চিরন্তন নয়। যে যে অবস্থায়ই আছে সাময়িকভাবে একটি সীমিত সময়কালের জন্যই আছে। [দেখুন: ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর]
(২) অর্থাৎ যদি তারা একথা জানতো, এ দুনিয়ার জীবন একটি পরীক্ষার অবকাশ মাত্র এবং মানুষের জন্য আসল জীবন, যা চিরকাল স্থায়ী হবে, তা হচ্ছে আখেরাতের জীবন, তাহলে তারা এখানে পরীক্ষার সময়-কালকে খেলা-তামাশায় নষ্ট না করে এর প্রতিটি মুহুর্তএমন সবকাজে ব্যবহার করতো যা সেই চিরন্তন জীবনের জন্য উৎকৃষ্ট ফলদায়ক হতো। দুনিয়ার জীবনের উপর আখেরাতের জীবনকে প্রাধান্য দিত। [দেখুন: ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া(৬৪) এ পার্থিব জীবন তো খেল-তামাশা ছাড়া কিছুই নয়।[1] আর পারলৌকিক জীবনই তো প্রকৃত জীবন;[2] যদি ওরা জানত। [3]
[1] অর্থাৎ যে পার্থিব জীবন তাদেরকে পরকালের জীবন সম্বন্ধে অন্ধ এবং তার জন্য সম্বল সঞ্চয় করার ব্যাপারে উদাসীন করে রেখেছে, তা আসলে এক ধরনের খেলাধূলা অপেক্ষা বেশি মর্যাদা রাখে না। কাফেররা পার্থিব জীবন নিয়ে ব্যাপৃত থাকে, তাতে সুখ অর্জনের জন্য দিবারাত্রি মেহনত করে, কিন্তু যখন মারা যায়, তখন শূন্য হাত হয়ে পরকালের পথে পাড়ি দেয়। যেমন শিশুরা সারা দিন ধুলো-বালির ঘর বানিয়ে খেলা করে এবং পরে বাড়ী ফিরে যাওয়ার সময় খালি হাতে ফিরে যায়, ক্লান্তি ছাড়া তাদের আর কিছুই অর্জন হয় না।
[2] সুতরাং এমন নেক আমল করা প্রয়োজন, যাতে পারলৌকিক জীবন সুন্দর হতে পারে।
[3] কারণ, যদি তারা এ কথা জানত, তাহলে পারলৌকিক জীবন সম্বন্ধে অমনোযোগী হয়ে ইহলৌকিক জীবন নিয়ে মগ্ন হত না। বলা বাহুল্য, এর ঔষধ হচ্ছে জানা ও শেখা, শরীয়তের জ্ঞান শিক্ষা করা।
তাফসীরে আহসানুল বায়াননিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে লানত করেন এবং তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন অপমানজনক আযাব। আল-বায়ান
যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত করেছেন আর তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন অপমানজনক শাস্তি। তাইসিরুল
যারা আল্লাহ ও রাসূলকে পীড়া দেয়, আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত করেন এবং তিনি তাদের জন্য রেখেছেন লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। মুজিবুর রহমান
Indeed, those who abuse Allah and His Messenger - Allah has cursed them in this world and the Hereafter and prepared for them a humiliating punishment. Sahih International
৫৭. নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে লা’নত করেন এবং তিনি তাদের জন্য প্ৰস্তুত রেখেছেন লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।(১)
(১) যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কোন প্রকার কষ্ট দেয়, তার সত্তা অথবা গুণাবলীতে প্রকাশ্য অথবা ইঙ্গিতে কোন দোষ বের করে, সে কাফের হয়ে যায়। [দেখুন: আত-তাহরীর ওয়াত তানওয়ীর; মুয়াসসার]
তাফসীরে জাকারিয়া(৫৭) যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তো তাদেরকে ইহলোকে ও পরলোকে অভিশপ্ত করেন এবং তিনি তাদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন। [1]
[1] আল্লাহ তাআলাকে কষ্ট দেওয়ার অর্থ হল ঐ সকল কাজ করা, যা তিনি অপছন্দ করেন। তাছাড়া আল্লাহকে কষ্ট দেওয়ার ক্ষমতা কে রাখে? যেমন মুশরিক, ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায় আল্লাহর জন্য সন্তান সাব্যস্ত করে। অথবা যেমন হাদীসে কুদসীতে আছে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘‘আদম সন্তান আমাকে কষ্ট দেয়, তারা যুগকে গালি দেয়, অথচ আমিই যুগ। দিবারাত্রির আবর্তন আমিই করে থাকি।’’ (বুখারী, মুসলিম) সুতরাং ‘যুগ বড় খারাপ, টেরা রাশিচক্র’ ইত্যাদি অনুরূপ কোন কথা বলা ঠিক নয়। কারণ প্রাকৃতিক কর্ম আল্লাহর হাতে, কোন যুগ বা রাশিচক্রের নয়। আর আল্লাহর রসূল (সাঃ)-কে কষ্ট দেওয়ার অর্থ হল, তাঁকে মিথ্যা মনে করা, তাঁকে কবি, মিথ্যুক, যাদুগর ইত্যাদি বলা। এ ছাড়া হাদীসে সাহাবায়ে কিরামগণকে কষ্ট দেওয়া এবং তাঁদের অমর্যাদা করা ও তুচ্ছ ভাবাকেও নবী (সাঃ) নিজের জন্য কষ্ট দেওয়া বলেছেন। অভিশপ্তের অর্থ, আল্লাহর রহমত থেকে দূরীভূত ও বঞ্চিত হওয়া।
তাফসীরে আহসানুল বায়াননিশ্চয় আল্লাহ কাফিরদেরকে লা‘নত করেছেন এবং তাদের জন্য জ্বলন্ত আগুন প্রস্তুত রেখেছেন। আল-বায়ান
আল্লাহ কাফিরদেরকে অভিশাপ দিয়েছেন আর তাদের জন্য জ্বলন্ত অগ্নি প্রস্তুত রেখেছেন। তাইসিরুল
আল্লাহ কাফিরদেরকে অভিশপ্ত করেছেন এবং তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন জ্বলন্ত আগুন। মুজিবুর রহমান
Indeed, Allah has cursed the disbelievers and prepared for them a Blaze. Sahih International
৬৪. নিশ্চয় আল্লাহ্ কাফিরদেরকে করেছেন অভিশপ্ত এবং তাদের জন্য প্ৰস্তুত রেখেছেন জ্বলন্ত আগুন;
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৬৪) আল্লাহ অবিশ্বাসীদেরকে অভিশপ্ত করেছেন এবং তাদের জন্য জ্বলন্ত অগ্নি প্রস্তুত রেখেছেন।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানসেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে। তারা না পাবে কোন অভিভাবক এবং না কোন সাহায্যকারী। আল-বায়ান
তাতে তারা চিরকাল থাকবে, তারা না পাবে কোন অভিভাবক, আর না পাবে কোন সাহায্যকারী। তাইসিরুল
সেখানে তারা স্থায়ী হবে এবং তারা কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবেনা। মুজিবুর রহমান
Abiding therein forever, they will not find a protector or a helper. Sahih International
৬৫. সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে এবং তারা কোন অভিভাবক পাবে না, কোন সাহায্যকারীও নয়।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৬৫) যেখানে ওরা চিরকালের জন্য স্থায়ী হবে। ওরা কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানযেদিন তাদের চেহারাগুলো আগুনে উপুড় করে দেয়া হবে, তারা বলবে, ‘হায়, আমরা যদি আল্লাহর আনুগত্য করতাম এবং রাসূলের আনুগত্য করতাম’! আল-বায়ান
আগুনে যেদিন তাদের মুখ উপুড় করে দেয়া হবে সেদিন তারা বলবে- হায়! আমরা যদি আল্লাহকে মানতাম ও রসূলকে মানতাম। তাইসিরুল
যেদিন তাদের মুখ-মন্ডল আগুনে উলট পালট করা হবে সেদিন তারা বলবেঃ হায়! আমরা যদি আল্লাহকে মানতাম ও রাসূলকে মানতাম! মুজিবুর রহমান
The Day their faces will be turned about in the Fire, they will say, "How we wish we had obeyed Allah and obeyed the Messenger." Sahih International
৬৬. যেদিন তাদের মুখমণ্ডল আগুনে উলট-পালট করা হবে, সেদিন তারা বলবে, হায়! আমরা যদি আল্লাহকে মানতাম আর রাসূলকে মানতাম!
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৬৬) যেদিন অগ্নিতে ওদের মুখমন্ডল উল্টেপাল্টে দগ্ধ করা হবে সেদিন ওরা বলবে, ‘হায়! আমরা যদি আল্লাহর আনুগত্য করতাম ও রসূলকে মান্য করতাম!’
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানতারা আরো বলবে, ‘হে আমাদের রব, আমরা আমাদের নেতৃবর্গ ও বিশিষ্ট লোকদের আনুগত্য করেছিলাম, তখন তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল’। আল-বায়ান
আর তারা বলবে- হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা আমাদের নেতাদেরকে ও আমাদের প্রধানদেরকে মান্য করতাম। তারাই আমাদেরকে গুমরাহ করেছিল। তাইসিরুল
তারা আরও বলবেঃ হে আমাদের রাবব! আমরা আমাদের নেতা ও বড় লোকদের আনুগত্য করেছিলাম এবং তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল। মুজিবুর রহমান
And they will say, "Our Lord, indeed we obeyed our masters and our dignitaries, and they led us astray from the [right] way. Sahih International
৬৭. তারা আরো বলবে, হে আমাদের রব! আমরা আমাদের নেতা ও বড় লোকদের আনুগত্য করেছিলাম এবং তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল;
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৬৭) তারা আরো বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আমাদের নেতা ও বড় বড় লোক (বুযুর্গ)দের আনুগত্য করেছিলাম, সুতরাং ওরা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল। [1]
[1] অর্থাৎ আমরা তোমার পয়গম্বর ও দ্বীনের প্রতি আহবানকারীদেরকে বর্জন করে নিজেদের নেতা, বুযুর্গ ও বড়দের কথা মত চলেছিলাম, কিন্তু আজ আমরা বুঝতে পারলাম যে, তারা আমাদেরকে তোমার পয়গম্বর থেকে দূরে রেখে পথভ্রষ্ট করেছিল। বাপ-দাদাদের প্রথার অনুসরণ ও পাশ্চাত্য সভ্যতার অন্ধানুকরণ আজও বহু মানুষের পথভ্রষ্টতার কারণ। হায়! যদি মুসলিমরা আল্লাহর আয়াতসমূহ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে সেই মানুষের তৈরী পথ বর্জন করে কুরআন ও হাদীসের সরল পথ অবলম্বন করত, তাহলে তাদের কতই না মঙ্গল হত। কারণ পরিত্রাণ একমাত্র আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুসরণে নিহিত আছে। বুযুর্গ ও বড়দের অন্ধানুকরণে অথবা বাপ-দাদার প্রাচীন পথ অবলম্বনে নয়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান‘হে আমাদের রব, আপনি তাদেরকে দ্বিগুণ আযাব দিন এবং তাদেরকে বেশী করে লা‘নত করুন’। আল-বায়ান
হে আমাদের পালনকর্তা! তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দাও আর তাদেরকে মহা অভিশাপে অভিশাপ দাও। তাইসিরুল
হে আমাদের রাব্ব! তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি প্রদান করুন এবং তাদেরকে দিন মহা অভিসম্পাত। মুজিবুর রহমান
Our Lord, give them double the punishment and curse them with a great curse." Sahih International
৬৮. হে আমাদের রব! আপনি তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দিন এবং তাদেরকে দিন মহাঅভিসম্পাত।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৬৮) হে আমাদের প্রতিপালক! ওদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দাও এবং মহা অভিসম্পাত কর।’
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানতোমরা জেনে রাখ যে, দুনিয়ার জীবন ক্রীড়া কৌতুক, শোভা-সৌন্দর্য, তোমাদের পারস্পরিক গর্ব-অহঙ্কার এবং ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র। এর উপমা হল বৃষ্টির মত, যার উৎপন্ন ফসল কৃষকদেরকে আনন্দ দেয়, তারপর তা শুকিয়ে যায়, তখন তুমি তা হলুদ বর্ণের দেখতে পাও, তারপর তা খড়-কুটায় পরিণত হয়। আর আখিরাতে আছে কঠিন আযাব এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। আর দুনিয়ার জীবনটা তো ধোকার সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়। আল-বায়ান
তোমরা জেনে রেখ, দুনিয়ার জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, শোভা-সৌন্দর্য, পারস্পরিক গর্ব-অহঙ্কার আর ধন-মাল ও সন্তানাদিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র। তার উদাহরণ হল বৃষ্টি, আর তা হতে উৎপন্ন শষ্যাদি কৃষকের মনকে আনন্দে ভরে দেয়, তারপর তা পেকে যায়, তখন তুমি তাকে হলুদ বর্ণ দেখতে পাও, পরে তা খড় ভুষি হয়ে যায়। (আর আখেরাতের চিত্র অন্যরকম, পাপাচারীদের জন্য), আখেরাতে আছে কঠিন শাস্তি, (আর নেককারদের জন্য আছে) আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। আর দুনিয়ার জীবনটা তো ধোঁকার বস্তু ছাড়া আর কিছুই না। তাইসিরুল
তোমরা জেনে রেখ যে, পার্থিব জীবনতো ক্রীড়া কৌতুক, জাঁকজমক, পারস্পরিক অহংকার প্রকাশ, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে প্রাচুর্য লাভের প্রতিযোগিতা ব্যতীত আর কিছুই নয়; ওর উপমা বৃষ্টি, যদ্বারা উৎপন্ন শস্য সম্ভার কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে, অতঃপর ওটা শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি ওটা পীতবর্ণ দেখতে পাও; অবশেষে ওটা খড়কুটায় পরিণত হয়। পরকালে (অবিশ্বাসীদের জন্য) রয়েছে কঠিন শাস্তি এবং (সৎপথ অনুসারীদের জন্য রয়েছে) আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতীত কিছুই নয়। মুজিবুর রহমান
Know that the life of this world is but amusement and diversion and adornment and boasting to one another and competition in increase of wealth and children - like the example of a rain whose [resulting] plant growth pleases the tillers; then it dries and you see it turned yellow; then it becomes [scattered] debris. And in the Hereafter is severe punishment and forgiveness from Allah and approval. And what is the worldly life except the enjoyment of delusion. Sahih International
২০. তোমরা জেনে রাখ, নিশ্চয় দুনিয়ার জীবন খেল-তামাশা, ক্রীড়া-কৌতুক, জাঁকজমক, পারস্পরিক গৰ্ব-অহংকার, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে প্রাচুর্য লাভের প্রতিযোগিতা ছাড়া আর কিছু নয়।(১) এর উপমা হলো বৃষ্টি, যার উৎপন্ন শস্য-সম্ভার কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে, তারপর সেগুলো শুকিয়ে যায়, ফলে আপনি ওগুলো পীতবর্ণ দেখতে পান, অবশেষে সেগুলো খড়-কুটায় পরিণত হয়। আর আখেরাতে রয়েছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও সস্তুষ্টি। আর দুনিয়ার জীবন প্রতারণার সামগ্ৰী ছাড়া কিছু নয়।(২)
(১) আলোচ্য আয়াতসমূহে বৰ্ণনা করা হয়েছে যে, ক্ষণস্থায়ী দুনিয়া মোটেই ভরসা করার যোগ্য নয়। পার্থিব জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যা কিছু হয় এবং যাতে দুনিয়াদার ব্যক্তি মগ্ন ও আনন্দিত থাকে, প্রথমে সেগুলো ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে পার্থিব জীবনের মোটামুটি বিষয়গুলো যথাক্রমে এইঃ প্রথমে ক্রীড়া, এরপর কৌতুক, এরপর সাজ-সজ্জা, এরপর পারস্পরিক অহমিকা, এরপর ধন ও জনের প্রাচুর্য নিয়ে পারস্পরিক গর্ববোধ। لَعِبٌ শব্দের অর্থ এমন খেলা, لَهْوٌ এমন খেলাধুলা, যার আসল লক্ষ্য চিত্তবিনোদন زِينَةٌ বা অঙ্গ-সজ্জা, পোশাক ইত্যাদির মোহ সর্বজনবিদিত। প্রত্যেক মানুষের জীবনের প্রথম অংশ ক্রীড়া অর্থাৎ لَعِبٌ এর মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়। এরপর لَهْوٌ শুরু হয়। এরপর সে অঙ্গসজ্জায় ব্যাপৃত হয় এবং শেষ বয়সে সমসাময়িক ও সমবয়সীদের সাথে وَتَفَاخُرٌ فِي الْأَمْوَالِ وَالْأَوْلَادِ বা প্রতিযোগিতার প্রেরণা সৃষ্টি হয়। উল্লেখিত ধারাবাহিকতায় প্রতিটি অর্থেই মানুষ নিজ অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে। কিন্তু কুরআন পাক বলে যে, এই সবই হচ্ছে সাময়িক ও ক্ষণস্থায়ী। [দেখুন: সা’দী, তাবারী]
(২) দুনিয়ায় মানুষের কর্মকাণ্ড বর্ণনার পর পবিত্র কুরআন বর্ণিত বিষয়বস্তুর একটি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করেছে, (كَمَثَلِ غَيْثٍ أَعْجَبَ الْكُفَّارَ نَبَاتُهُ ثُمَّ يَهِيجُ فَتَرَاهُ مُصْفَرًّا ثُمَّ يَكُونُ حُطَامًا) এখানে غَيْث শব্দের অর্থ বৃষ্টি। الكفار শব্দটি মুমিনের বিপরীত অর্থে ব্যবহৃত হলেও এর অপর আভিধানিক অর্থ কৃষকও হয়। আলোচ্য আয়াতে কেউ কেউ এ অর্থই নিয়েছেন। আয়াতের উদ্দেশ্য এই যে, বৃষ্টি দ্বারা ফসল ও নানা রকম উদ্ভিদ উৎপন্ন হয়ে যখন সবুজ ও শ্যামল বর্ণ ধারণ করে, তখন কৃষকের আনন্দের সীমা থাকে না। কোনো কোনপ তাফসীরবিদ الكفار শব্দটিকে প্রচলিত অর্থে ধরে বলেছেন যে, এতে কাফেররা আনন্দিত হয়। [কুরতুবী] এখানে প্রশ্ন হয় যে, সবুজ, শ্যামল ফসল দেখে কাফেররাই কেবল আনন্দিত হয় না, মুসলিমরাও হয়। জওয়াব এই যে, মুমিনের আনন্দ ও কাফেরের আনন্দের মধ্যে বিরাট ব্যবধান রয়েছে। ফলে দুনিয়ার অগাধ ধন-রত্ন পেয়েও মুমিন কাফেরের ন্যায় আনন্দিত ও মত্ত হয় না। তাই আয়াতে কাফের আনন্দিত হয় বলা হয়েছে।
এরপর এই দৃষ্টান্তের সারসংক্ষেপ এরূপ বর্ণনা করা হয়েছে যে, ফসল ও অন্যান্য উদ্ভিদ যখন সবুজ শ্যামল হয়ে যায়, তখন দর্শক মাত্রই বিশেষ করে কাফেররা খুবই আনন্দিত ও মত্ত হয়ে উঠে। কিন্তু অবশেষে তা শুষ্ক হতে থাকে। প্রথমে পীতবর্ণ হয়, এরপরে সম্পূর্ণ খড়-কুটায় পরিণত হয়। মানুষও তেমনি প্রথমে তরতাজা ও সুন্দর হয়। শৈশব থেকে যৌবন পর্যন্ত এরূপই কাটে। অবশেষে যখন বার্ধক্য আসে, তখন দেহের সজীবতা ও সৌন্দর্য সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায় এবং সবশেষে মরে মাটি হয়ে যায়। দুনিয়ার ক্ষণভঙ্গুরতা বর্ণনা করার পর আবার আসল উদ্দেশ্য- আখেরাতের চিন্তার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য আখেরাতের অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে, (وَفِي الْآخِرَةِ عَذَابٌ شَدِيدٌ وَمَغْفِرَةٌ مِنَ اللَّهِ وَرِضْوَانٌ) অর্থাৎ আখেরাতে মানুষ এ দুটি অবস্থার মধ্যে যে কোন একটির সম্মুখীন হবে। একটি কাফেরদের অবস্থা অর্থাৎ তাদের জন্যে কঠোর আযাব রয়েছে।
অপরটি মুমিনদের অবস্থা; অর্থাৎ তাদের জন্যে আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সন্তুষ্টি রয়েছে। এরপর সংক্ষেপে দুনিয়ার স্বরূপ বর্ণনা করা হয়েছে, (وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا مَتَاعُ الْغُرُورِ) অর্থাৎ এসব বিষয় দেখা ও অনুধাবন করার পর একজন বুদ্ধিমান ও চক্ষুষ্মান ব্যক্তি এই সিদ্ধান্তেই উপনীত হতে পারে যে, দুনিয়া একটি প্রতারণার স্থল। এখানকার সম্পদ, প্রকৃত সম্পদ নয়, যা বিপদমুহুর্তে কাজে আসতে পারে। অতঃপর আখেরাতের আযাব ও সওয়াব এবং দুনিয়ার ক্ষণভঙ্গুরতার অবশ্যম্ভাবী পরিণতি এরূপ হওয়া উচিত যে, মানুষ দুনিয়ার সুখ ও আনন্দে মগ্ন না হয়ে আখেরাতের চিন্তা বেশী করবে। পরবর্তী আয়াতে তাই ব্যক্ত করা হয়েছে। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া(২০) তোমরা জেনে রেখো যে, পার্থিব জীবন তো ক্রীড়া-কৌতুক, জাঁকজমক, পারস্পরিক গর্ব প্রকাশ, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে প্রাচুর্য লাভের প্রতিযোগিতা ব্যতীত আর কিছুই নয়। এর উপমা বৃষ্টি; যার দ্বারা উৎপন্ন ফসল কৃষকদেরকে[1] চমৎকৃত করে, অতঃপর তা শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি তা পীতবর্ণ দেখতে পাও, অবশেষে তা টুকরা-টুকরা (খড়-কুটায়) পরিণত হয়[2] এবং পরকালে রয়েছে কঠিন শাস্তি[3] এবং আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি।[4] আর পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতীত কিছুই নয়।[5]
[1] كُفَّارٌ (কাফের) এখানে কৃষক বা চাষীদেরকে বলা হয়েছে। কারণ, তার আভিধানিক অর্থ হল, গোপনকারী। কাফেররা অন্তরে আল্লাহ ও পরকালের অস্বীকৃতি গোপন রাখে, তাই তাদেরকে কাফের বলা হয়। আর কৃষকদের ক্ষেত্রে এই শব্দ এই জন্য ব্যবহার করা হয়েছে যে, তারা জমিতে বীজ বপন করে। অর্থাৎ, তা মাটির তলায় গোপন করে থাকে। (ওরা অস্বীকার দ্বারা সত্য ঢাকে, আর এরা মাটি দ্বারা বীজ ঢাকে।)
[2] এখানে পার্থিব জীবনকে সত্বর ক্ষয় হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ফসলের সাথে উপমা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, যেভাবে ফসল শ্যামল ও সবুজবর্ণ হয়ে উঠলে, দেখতে বড়ই চমৎকার লাগে, কৃষকরা তা দেখে অত্যন্ত আনন্দিত হয়। কিন্তু তা শীঘ্রই শুকিয়ে পীতবর্ণ হয়ে খড়কুটায় পরিণত হয়, ঠিক এইভাবে দুনিয়ার সাজ-সজ্জা, সন্তান-সন্ততি এবং অন্যান্য সমস্ত জিনিস মানুষের অন্তরকে খুশীতে ভরে দেয়। কিন্তু নশ্বর এ জীবন কিছু দিনের জন্য; এর স্থায়িত্ব নেই।
[3] অর্থাৎ, কাফের ও অবাধ্যজনদের জন্য; যারা দুনিয়ার ক্রীড়া-কৌতুকেই মগ্ন থাকে এবং এটাকেই তারা জীবনের আসল লক্ষ্য মনে করে।
[4] অর্থাৎ, ঈমানদার ও অনুগত বান্দাদের জন্য। যারা দুনিয়াকেই সবকিছু ভাবে না, বরং তাকে অস্থায়ী, ধ্বংসশীল এবং পরীক্ষাগার ভেবে আল্লাহর নির্দেশানুযায়ী জীবন-যাপন করে।
[5] তার জন্য, যে এর প্রতারণায় পড়ে থাকে এবং পরকালের জন্য কিছুই সঞ্চয় করে না। পক্ষান্তরে যে দুনিয়ার এই জীবনকে আখেরাত অর্জনের জন্য ব্যবহার করে, তার জন্য এই দুনিয়াই এর থেকেও উত্তম জীবন লাভের মাধ্যম হয়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানহে ঈমানদারগণ, তোমরা সেই সম্প্রদায়ের সাথে বন্ধুত্ব করো না, যাদের প্রতি আল্লাহ রাগান্বিত হয়েছেন। তারা তো আখিরাত সম্পর্কে নিরাশ হয়ে পড়েছে, যেমনিভাবে কাফিররা কবরবাসীদের সম্পর্কে নিরাশ হয়েছে। আল-বায়ান
হে মু’মিনগণ! তোমরা এমন সম্প্রদায়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব করো না আল্লাহ যাদের প্রতি রাগান্বিত। তারা পরকাল সম্পর্কে তেমনি নিরাশ যেমন কবরবাসী কাফিররা নিরাশ (কারণ তারা পরকালকে অবিশ্বাস করার কারণে তার জন্য কোন প্রস্তুতি গ্রহণ করেনি।) তাইসিরুল
হে মু’মিনগণ! আল্লাহ যে সম্প্রদায়ের প্রতি রুষ্ট তোমরা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করনা, তারাতো আখিরাত সম্পর্কে হতাশ হয়ে পড়েছে যেমন হতাশ হয়েছে কাফিরেরা সমাধিস্থদের বিষয়ে। মুজিবুর রহমান
O you who have believed, do not make allies of a people with whom Allah has become angry. They have despaired of [reward in] the Hereafter just as the disbelievers have despaired of [meeting] the inhabitants of the graves. Sahih International
১৩. হে মুমিনগণ! আল্লাহ যে সম্প্রদায়ের প্রতি রুষ্ট তোমরা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করো না, তারা তো আখিরাত সম্পর্কে হতাশ হয়ে পড়েছে। যেমন হতাশ হয়েছে কাফিররা কবরবাসীদের বিষয়ে।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(১৩) হে বিশ্বাসীগণ! আল্লাহ যে সম্প্রদায়ের প্রতি রুষ্ট তোমরা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করো না, [1] তারা তো পরকাল সম্পর্কে হতাশ হয়ে পড়েছে, যেমন হতাশ হয়েছে অবিশ্বাসীরা কবরবাসীদের বিষয়ে। [2]
[1] এ থেকে কেউ ইয়াহুদীদের, কেউ মুনাফিকদের এবং কেউ সমস্ত কাফেরদেরকে বুঝিয়েছেন। আর এই শেষের উক্তিটাই বেশী সঠিক মনে হচ্ছে। কেননা, এতে ইয়াহুদী ও মুনাফিকরাও এসে যায়। এ ছাড়া সমস্ত কাফেররা আল্লাহর ক্রোধের শিকার হওয়ারই যোগ্য। অতএব অর্থ হবে, কোন কাফেরের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক রেখো না। যেমন, কুরআনের আরো কয়েকটি স্থানে এ বিষয়টি আলোচিত হয়েছে।
[2] পরকাল সম্পর্কে হতাশ হওয়ার অর্থ, কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার কথা অস্বীকার করা। কবরবাসী থেকে নিরাশ হওয়ার অর্থও এটাই যে আখেরাতে পুনরায় তাদেরকে উঠানো হবে না। এর দ্বিতীয় অর্থ এও করা হয়েছে যে, কবরস্থ কাফের সর্বপ্রকার মঙ্গল থেকে নিরাশ। কেননা, মৃত্যুবরণ করার পর সে তার কুফরীর পরিণাম দেখে নিয়েছে। অতএব সে মঙ্গলের কি আর আশা করতে পারে? (ইবনে জারীর ত্বাবারী)
তাফসীরে আহসানুল বায়ানঅবশ্যই সাফল্য লাভ করবে যে আত্মশুদ্ধি করবে, আল-বায়ান
সাফল্য লাভ করবে সে যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে, তাইসিরুল
নিশ্চয়ই সে সাফল্য লাভ করবে যে পবিত্রতা অর্জন করে। মুজিবুর রহমান
He has certainly succeeded who purifies himself Sahih International
১৪. অবশ্যই সাফল্য লাভ করবে যে পরিশুদ্ধ হয়।(১)
(১) এখানে পরিশুদ্ধ বা পবিত্রতার অর্থ কুফর ও শির্ক ত্যাগ করে ঈমান আনা, অসৎ আচার-আচরণ ত্যাগ করে সদাচার অবলম্বন করা এবং অসৎকাজ ত্যাগ করে সৎকাজ করা। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে যা নাযিল হয়েছে তার অনুসরণ করা। আয়াতের আরেক অর্থ, ধনসম্পদের যাকাত প্ৰদান করা। তবে যাকাতকেও এ কারণে যাকাত বলা হয় যে, তা ধন-সম্পদকে পরিশুদ্ধ করে। এখানে تَزَكَّىٰ শব্দের অর্থ ব্যাপক হতে পারে। ফলে ঈমানগত ও চরিত্রগত পরিশুদ্ধি এবং আর্থিক যাকাত প্ৰদান সবই এই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হবে। [দেখুন: ফাতহুল কাদীর]
তাফসীরে জাকারিয়া১৪। নিশ্চয় সে সাফল্য লাভ করে, যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে।[1]
[1] অর্থাৎ, যে নিজের আত্মাকে নোংরা আচরণ থেকে এবং অন্তরকে শিরক ও পাপাচারের পঙ্কিলতা থেকে পবিত্র করে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর তার রবের নাম স্মরণ করবে, অতঃপর সালাত আদায় করবে। আল-বায়ান
আর তার প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে ও নামায কায়েম করে। তাইসিরুল
এবং স্বীয় রবের নাম স্মরণ করে ও সালাত আদায় করে। মুজিবুর রহমান
And mentions the name of his Lord and prays. Sahih International
১৫. এবং তার রবের নাম স্মরণ করে ও সালাত কায়েম করে।(১)
(১) কেউ কেউ অর্থ করেছেন, তারা তাদের রবের নাম স্মরণ করে এবং সালাত আদায় করে। বাহ্যতঃ এতে ফরয ও নফল সবরকম সালাত অন্তর্ভুক্ত। কেউ কেউ ঈদের সালাত দ্বারা এর তাফসীর করে বলেছেন যে, যে যাকাতুল ফিতর এবং ঈদের সালাত আদায় করে। কোন কোন মুফাসসির বলেন, “নাম স্মরণ করা’ বলতে আল্লাহকে মনে মনে স্মরণ করা এবং মুখে তা উচ্চারণ করাও উদ্দেশ্য হতে পারে। অর্থাৎ আল্লাহকে মনে মনে বা মুখে উচ্চারণ করে স্মরণ করেছে, তারপর সালাত আদায় করেছে। সে শুধু আল্লাহর স্মরণ করেই ক্ষান্ত থাকেনি বরং নিয়মিত সালাত আদায়ে ব্যাপৃত ছিল। মূলত: এ সবই আয়াতের অর্থ হতে কোন বাধা নেই। [ফাতহুল কাদীর]
তাফসীরে জাকারিয়া১৫। এবং নিজ প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে ও নামায আদায় করে।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানবরং তোমরা দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দিচ্ছ। আল-বায়ান
কিন্তু তোমরা তো দুনিয়ার জীবনকেই প্রাধান্য দাও, তাইসিরুল
কিন্তু তোমরা পার্থিব জীবনকে পছন্দ করে থাক, মুজিবুর রহমান
But you prefer the worldly life, Sahih International
১৬. কিন্তু তোমরা দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দাও,
-
তাফসীরে জাকারিয়া১৬। বরং তোমরা পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দিয়ে থাক।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানঅথচ আখিরাত সর্বোত্তম ও স্থায়ী। আল-বায়ান
অথচ আখিরাতই অধিক উৎকৃষ্ট ও স্থায়ী। তাইসিরুল
অথচ আখিরাতের জীবনই উত্তম ও অবিনশ্বর। মুজিবুর রহমান
While the Hereafter is better and more enduring. Sahih International
১৭. অথচ আখিরাতই উৎকৃষ্ট(১) ও স্থায়ী।(২)
(১) হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আখেরাতের তুলনায় দুনিয়া তো শুধু এমন যেন তোমাদের কেউ সমূদ্রে তার আঙ্গুল ডুবিয়েছে। তারপর সে যেন দেখে নেয় সে আঙ্গুল কি নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে?” [মুসলিম: ২৮৫৮]
(২) অর্থাৎ আখেরাত দু'দিক দিয়ে দুনিয়ার মোকাবিলায় অগ্ৰাধিকার পাওয়ার যোগ্য। প্রথমত তার সুখ, স্বাচ্ছন্দ, আরাম-আয়েশ দুনিয়ার সমস্ত নিয়ামতের চাইতে আনেক বেশী ও অনেক উচ্চ পর্যায়ের। দ্বিতীয়ত দুনিয়া ধ্বংসশীল এবং আখেরাত চিরস্থায়ী। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া১৭। অথচ পরকালের জীবনই উত্তম ও চিরস্থায়ী। [1]
[1] কেননা, পৃথিবী এবং তার সমস্ত বস্তু ধ্বংসশীল। পক্ষান্তরে পরকালের জীবনই হল চিরস্থায়ী জীবন। বলা বাহুল্য, জ্ঞানী ব্যক্তি কোন দিন চিরস্থায়ী বস্তুর উপর ধ্বংসশীল ক্ষণস্থায়ী বস্তুকে অগ্রাধিকার দেয় না।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান