আল্লাহ তা'আলার পরিচয় বিষয়ক আয়াতসমূহ ২৫ টি
৪০ গাফির (আল মু'মিন)
৪০:৬৭ هُوَ الَّذِیۡ خَلَقَكُمۡ مِّنۡ تُرَابٍ ثُمَّ مِنۡ نُّطۡفَۃٍ ثُمَّ مِنۡ عَلَقَۃٍ ثُمَّ یُخۡرِجُكُمۡ طِفۡلًا ثُمَّ لِتَبۡلُغُوۡۤا اَشُدَّكُمۡ ثُمَّ لِتَكُوۡنُوۡا شُیُوۡخًا ۚ وَ مِنۡكُمۡ مَّنۡ یُّتَوَفّٰی مِنۡ قَبۡلُ وَ لِتَبۡلُغُوۡۤا اَجَلًا مُّسَمًّی وَّ لَعَلَّكُمۡ تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۶۷﴾

তিনিই তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। তারপর শুক্রবিন্দু থেকে, তারপর ‘আলাকা’* থেকে। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে শিশুরূপে বের করে আনেন। তারপর যেন তোমরা তোমাদের যৌবনে পদার্পণ কর, অতঃপর যেন তোমরা বৃদ্ধ হয়ে যাও। আর তোমাদের কেউ কেউ এর পূর্বেই মারা যায়। আর যাতে তোমরা নির্ধারিত সময়ে পৌঁছে যাও। আর যাতে তোমরা অনুধাবন কর। আল-বায়ান

তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে, অতঃপর শুক্রবিন্দু থেকে, অতঃপর জমাট বাঁধা রক্ত থেকে, অতঃপর তোমাদেরকে বের করে এনেছেন শিশুরূপে, অতঃপর তিনি তোমাদের বৃদ্ধি দান করেন যাতে তোমরা তোমাদের পূর্ণ শক্তির বয়সে পৌঁছতে পার, অতঃপর আরো বৃদ্ধি দেন যাতে তোমরা বৃদ্ধ হও। তোমাদের মধ্যে কারো কারো আগেই মৃত্যু ঘটান যাতে তোমরা তোমাদের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছে যাও আর যাতে তোমরা (আল্লাহর সৃষ্টি কুশলতা) অনুধাবন কর। তাইসিরুল

তিনিই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন মাটি হতে, পরে শুক্র বিন্দু হতে, তারপর তাদেরকে বের করেন শিশু রূপে, অতঃপর তোমরা উপনীত হও যৌবনে, তারপর হও বৃদ্ধ। তোমাদের মধ্যে কারও এর পূর্বেই মৃত্যু ঘটে এবং এটা এ জন্য যে, তোমরা নির্ধারিত কাল প্রাপ্ত হও এবং যাতে তোমরা অনুধাবন করতে পার – মুজিবুর রহমান

It is He who created you from dust, then from a sperm-drop, then from a clinging clot; then He brings you out as a child; then [He develops you] that you reach your [time of] maturity, then [further] that you become elders. And among you is he who is taken in death before [that], so that you reach a specified term; and perhaps you will use reason. Sahih International

* ‘আলাকা’ সম্পর্কে দ্র. সূরা মু’মিনূন ২৩ এর ১৪ নং আয়াতের টীকা।

৬৭. তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে, পরে শুক্রবিন্দু থেকে, তারপর আলাকাহ থেকে, তারপর তিনি তোমাদেরকে বের করেন শিশুরূপে, তারপর যেন তোমরা উপনীত হও তোমাদের যৌবনে, তারপর যেন তোমরা হয়ে যাও বৃদ্ধ। আর তোমাদের মধ্যে কারো মৃত্যু ঘটে এর আগেই এবং যাতে তোমরা নির্ধারিত সময়ে পৌঁছে যাও। আর যেন তোমরা বুঝতে পার।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৬৭) তিনি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন, পরে শুক্রবিন্দু হতে,[1] তারপর জমাট রক্ত হতে, তারপর তোমাদেরকে শিশুরূপে বের করেন, তারপর তোমরা হও যৌবনপ্রাপ্ত, তারপর উপনীত হও বার্ধক্যে।[2] তোমাদের মধ্যে কারও কারও পূর্বেই মৃত্যু ঘটে[3] এবং এ জন্য যে, যাতে তোমরা তোমাদের নির্ধারিতকাল প্রাপ্ত হও[4] এবং যাতে তোমরা অনুধাবন করতে পার।[5]

[1] অর্থাৎ, তোমাদের পিতা আদম (আঃ)-কে মাটি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর তাঁর মাটি থেকে সৃষ্টি হওয়ার মানেই তাঁর সমস্ত সন্তান-সন্ততি মূলতঃ মাটি থেকে সৃষ্টি হয়েছে। তারপর মানব বংশের ধারা এবং তার স্থায়িত্ব ও বিদ্যমানতার জন্য মানুষের সৃষ্টিকে বীর্যের সাথে জুড়ে দিয়েছেন। এখন প্রত্যেক মানুষ সেই বীর্য বা শুক্রবিন্দু থেকে সৃষ্টি হয়, যা বাপের পৃষ্ঠদেশ থেকে বের হয়ে মায়ের গর্ভাশয়ে গিয়ে স্থির হয়। কেবল ঈসা (আঃ)-এর ব্যাপারটা স্বতন্ত্র; তিনি অলৌকিকভাবে বিনা বাপেই সৃষ্টি হয়েছেন। কুরআন কারীমের বিস্তারিত বর্ণনা থেকে এ কথা পরিষ্কার হয়ে গেছে এবং মুসলিম উম্মাহ এ ব্যাপারে ঐকমত্য প্রকাশ করেছে।

[2] অর্থাৎ, এই সমস্ত অবস্থার মাধ্যম দিয়ে অতিক্রম করান সেই আল্লাহই, যাঁর কোন শরীক নেই।

[3] অর্থাৎ, মায়ের গর্ভাশয়ে বিভিন্ন দশা ও অবস্থাকে অতিক্রম করে (পেট থেকে) বের হয়ে আসার পূর্বেই মায়ের পেটে, কেউ শিশুকালে, কেউ যৌবনকালে এবং কেউ বার্ধক্যের শুরুতেই মারা যায়।

[4] অর্থাৎ, মহান আল্লাহ এটা এই জন্য করেন যে, যাতে যার যতটা বয়স আল্লাহ নির্ধারিত করে দিয়েছেন, সে তার নির্ধারিত বয়স পর্যন্ত পৌঁছে যায় এবং ততটা জীবন সে দুনিয়াতে কাটিয়ে নেয়।

[5] অর্থাৎ, যখন তোমরা এই পর্যায়সমূহ ও স্তরগুলোর ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করবে যে, বীর্য থেকে জমাট রক্ত, অতঃপর তা হতে গোশতপিন্ড, তারপর শৈশব, তারপর যৌবন, তারপর বার্ধক্যের প্রারম্ভিক এবং পরে সম্পূর্ণ বার্ধক্য, তখন তোমরা জেনে নেবে যে, তোমাদের প্রতিপালক এক ও একক এবং তোমাদের উপাস্যও একক, তাঁর কোন শরীক নেই। এ ছাড়া এও জেনে নেবে যে, যে আল্লাহ এ সবকিছু করেন, তাঁর জন্য কিয়ামতের দিন মানুষদেরকে পুনরায় জীবিত করাও কোন জটিল ব্যাপার নয় এবং তিনি অবশ্যই সকলকে পুনর্জীবিত করবেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪০ গাফির (আল মু'মিন)
৪০:৬৮ هُوَ الَّذِیۡ یُحۡیٖ وَ یُمِیۡتُ ۚ فَاِذَا قَضٰۤی اَمۡرًا فَاِنَّمَا یَقُوۡلُ لَهٗ كُنۡ فَیَكُوۡنُ ﴿۶۸﴾

তিনিই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু দেন। আর তিনি যখন কোন কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন, তখন তিনি এজন্য বলেন ‘হও’, ফলে তা হয়ে যায়। আল-বায়ান

তিনিই জীবন দেন ও মৃত্যু ঘটান। যখন কোন কিছু করার সিদ্ধান্ত করেন, তার জন্য তিনি বলেন- হও, তখন তা হয়ে যায়। তাইসিরুল

তিনিই জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান এবং যখন তিনি কিছু করা স্থির করেন তখন তিনি বলেনঃ হও, এবং তা হয়ে যায়। মুজিবুর রহমান

He it is who gives life and causes death; and when He decrees a matter, He but says to it, "Be," and it is. Sahih International

৬৮. তিনিই জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান এবং যখন তিনি কিছু করা স্থির করেন তখন তিনি তার জন্য বলেন ‘হও’, ফলে তা হয়ে যায়।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৬৮) তিনিই জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান[1] এবং যখন তিনি কিছু করা স্থির করেন, তখন তিনি বলেন, ‘হও’ এবং তা হয়ে যায়।[2]

[1] জীবিত করা ও মারা তাঁরই এখতিয়ারাধীন ব্যাপার। তিনি প্রাণহীন শুক্রবিন্দুকে বিভিন্ন স্তরের উপর দিয়ে অতিক্রম করিয়ে একজন জীবন্ত মানুষের আকৃতি দান করেন। অতঃপর নির্দিষ্ট এক সময়ে জীবন্ত এই মানুষটির প্রাণ কেড়ে নিয়ে মৃত্যুর কোলে ঘুম পাড়িয়ে দেন।

[2] তাঁর মহাশক্তির অবস্থা হল এই যে, তাঁর كُنْ (হও) শব্দ দ্বারা সেই জিনিস অস্তিত্বে চলে আসে, যা (হওয়ার) তিনি ইচ্ছা করেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪০ গাফির (আল মু'মিন)
৪০:৭৯ اَللّٰهُ الَّذِیۡ جَعَلَ لَكُمُ الۡاَنۡعَامَ لِتَرۡكَبُوۡا مِنۡهَا وَ مِنۡهَا تَاۡكُلُوۡنَ ﴿۫۷۹﴾

আল্লাহই তোমাদের জন্য গবাদি পশু সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা এদের কতকের উপর আরোহণ করতে পার আর কতক তোমরা খেতে পার। আল-বায়ান

আল্লাহ- যিনি তোমাদের জন্য গবাদি পশু সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কতকগুলোর উপর আরোহণ করতে পার, আর কতকগুলো থেকে আহার করতে পার। তাইসিরুল

আল্লাহই তোমাদের জন্য চতুস্পদ জন্তু সৃষ্টি করেছেন, কতক আরোহণ করার জন্য এবং কতক তোমরা আহার করে থাক। মুজিবুর রহমান

It is Allah who made for you the grazing animals upon which you ride, and some of them you eat. Sahih International

৭৯. আল্লাহ্‌ যিনি তোমাদের জন্য গবাদিপশু সৃষ্টি করেছেন, যাতে তার কিছু সংখ্যকের উপর তোমরা আরোহণ কর এবং কিছু সংখ্যক হতে তোমরা খাও।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(৭৯) আল্লাহই তোমাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তু সৃষ্টি করেছেন,[1] কতক তোমাদের আরোহণ করার জন্য ও কতক আহার করার জন্য।[2]

[1] মহান আল্লাহ তাঁর অসংখ্য নিয়ামতের মধ্যে কিছু নিয়ামতের কথা উল্লেখ করছেন। চতুষ্পদ জন্তু বলতে, উট, গরু, ছাগল এবং ভেঁড়া। নর-মাদী মিলিয়ে সর্বমোট আটটি। সূরা আন্আমের ১৪৩-১৪৪ নং আয়াতে এর উল্লেখ হয়েছে।

[2] এগুলো বাহনের কাজেও আসে (যেমন উটে সওয়ার হওয়া যায়, গরু গাড়ি টানে) এবং তাদের দুধও পান করা হয়। (যেমন, ছাগল, গাই ও উটনীর দুধ)। এগুলোর গোশত মানুষের কাছে অতি প্রিয় খাদ্য এবং বোঝা বহনের কাজও তাদের থেকে নেওয়া হয়।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৪২ আশ-শূরা
৪২:১৭ اَللّٰهُ الَّذِیۡۤ اَنۡزَلَ الۡكِتٰبَ بِالۡحَقِّ وَ الۡمِیۡزَانَ ؕ وَ مَا یُدۡرِیۡكَ لَعَلَّ السَّاعَۃَ قَرِیۡبٌ ﴿۱۷﴾

আল্লাহ, যিনি সত্যসহ কিতাব ও মীযান* নাযিল করেছেন। আর কিসে তোমাকে জানাবে, হয়ত কিয়ামত খুবই নিকটবর্তী? আল-বায়ান

তিনিই আল্লাহ যিনি সত্য ও ইনসাফের মানদন্ড সহকারে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। তুমি কি জান, সম্ভবতঃ চূড়ান্ত ফয়সালার সময় নিকটবর্তী হয়ে গেছে। তাইসিরুল

আল্লাহই অবতীর্ণ করেছেন সত্যসহ কিতাব এবং তুলাদন্ড। তুমি কি জান, সম্ভবতঃ কিয়ামাত আসন্ন? মুজিবুর রহমান

It is Allah who has sent down the Book in truth and [also] the balance. And what will make you perceive? Perhaps the Hour is near. Sahih International

* সনদ, ন্যায় বিচার, ইনসাফ, ইত্যাদি।

১৭. আল্লাহ, যিনি নাযিল করেছেন সত্যসহকারে কিতাব এবং মীযান।(১) আর কিসে আপনাকে জানাবে যে, সম্ভবত কিয়ামত আসন্ন?

(১) অতঃপর উল্লেখ করা হয়েছে যে, কুরআন আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। এতে আল্লাহর হক ও বান্দার হকের জন্য পূর্ণাঙ্গ আইন-কানুন রয়েছে। (أَنْزَلَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ وَالْمِيزَانَ) এখানে ‘কিতাব’ বলে কুরআনসহ সমস্ত আসমানী গ্ৰন্থকে বোঝানো হয়েছে এবং হক বলতে পূর্বোক্ত সত্যদ্বীনকে বোঝানো হয়েছে। ميزان এর শাব্দিক অর্থ দাঁড়ি-পাল্লা। এটা যেহেতু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার এবং অধিকার পূর্ণ মাত্রায় দেয়ার একটি মানদণ্ড তাই ইবনে আব্বাস এর তাফসীর করেছেন ন্যায় বিচার। মুজাহিদ বলেন, মানুষ যে দাঁড়ি-পাল্লা ব্যবহার করে এখানে তাই বোঝানো হয়েছে। সুতরাং হক শব্দের মধ্যে আল্লাহর যাবতীয় হক এবং ميزان শব্দের মধ্যে বান্দার যাবতীয় হকের প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে। আর তখন ‘হকসহকারে’ এর অর্থ হবে, হকের বর্ণনা সম্বলিত। কোন কোন মুফাসসির বলেন, এখানে মীযান অর্থ আল্লাহর শরীয়ত, যা দাঁড়িপাল্লার মত ওজন করে ভুল ও শুদ্ধ, হক ও বাতিল, জুলুম ও ন্যায়বিচার এবং সত্য ও অসত্যের পার্থক্য স্পষ্ট করে দেয়। ওপরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুখ দিয়ে বলানো হয়েছে যে, “তোমাদের মধ্যে ইনসাফ করার জন্য আমাকে আদেশ দেয়া হয়েছে।” এখানে বলা হয়েছে যে, এই পবিত্ৰ কিতাব সহকারে সেই ‘মিযান’ এসে গেছে যার সাহায্যে এই ইনসাফ কায়েম করা যাবে। [তাবারী, কুরতুবী]

তাফসীরে জাকারিয়া

(১৭) আল্লাহই সত্যসহ গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছেন এবং (অবতীর্ণ করেছেন) তুলাদন্ড।[1] আর তুমি কি জান, সম্ভবতঃ কিয়ামত আসন্ন? [2]

[1] الْكِتَابَ বলতে সকল কিতাব। অর্থাৎ, সমস্ত নবীদের উপর যত কিতাবই অবতীর্ণ হয়েছে, সে সবই ছিল সত্য। অথবা বিশেষভাবে কুরআন মাজীদকে বুঝানো হয়েছে এবং তার সত্যতাকে সুস্পষ্টরূপে তুলে ধরা হয়েছে। ‘মীযান’ (তুলাদন্ড বা দাঁড়িপাল্লা)র অর্থ, ন্যায়পরায়ণতা ও সুবিচার। ইনসাফকে দাঁড়িপাল্লা বলে এই জন্য আখ্যায়িত করা হয়েছে যে, তা হল সমতা ও সুবিচারের যন্ত্র। এর মাধ্যমেই মানুষের মাঝে সমতা বজায় রাখা সম্ভব। এরই সমর্থক হল (নিম্নের) এই আয়াতগুলো, {لَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا بِالْبَيِّنَاتِ وَأَنْزَلْنَا مَعَهُمْ الْكِتَابَ وَالْمِيْزَانَ لِيَقُوْمَ النَّاسُ بِالْقِسِ} অর্থাৎ, আমি আমার রসূলগণকে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলীসহ প্রেরণ করেছি এবং তাদের সাথে অবতীর্ণ করেছি কিতাব এবং মীযান, যাতে মানুষ ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে।’’ (সূরা হাদীদ ২৫ আয়াত) {وَالسَّمَاءَ رَفَعَهَا وَوَضَعَ المِيْزَانَ، اَلاَّ تَطْغَوْا فِي الْمِيْزَانِ، وَأَقِيْمُوْا الْوَزَْنَ بِالْقِسْطِ وَلاَ تُخْسِرُوا الْمِيْزَانَ} অর্থাৎ, তিনি আকাশকে সমুন্নত এবং স্থাপন করেছেন তুলাদন্ড। যাতে তোমরা সীমলঙ্ঘন না কর তুলাদন্ডে। তোমরা ন্যায্য ওজন কায়েম কর এবং ওজনে কম দিয়ো না।’’ (সূরা রহমান ৭-৯ আয়াত)

[2] قريب ‘ মুযাক্কার’ (পুংলিঙ্গ) এবং ‘মুআন্নাষ’ (স্ত্রীলিঙ্গ) উভয়েরই ‘সিফাত’ (বিশেষণ) হিসাবে ব্যবহার হয়; বিশেষ করে ‘মউসুফ’ (বিশেষ্য) যদি কোন প্রাণী না হয়। যেমনঃ {اِنَّ رَحْمَتَ اللهِ قَرِيْبٌ مِنَ الْمُحْسِنِيْنَ} (ফাতহুল ক্বাদীর)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৬৫ আত-ত্বলাক্ব
৬৫:১২ اَللّٰهُ الَّذِیۡ خَلَقَ سَبۡعَ سَمٰوٰتٍ وَّ مِنَ الۡاَرۡضِ مِثۡلَهُنَّ ؕ یَتَنَزَّلُ الۡاَمۡرُ بَیۡنَهُنَّ لِتَعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اللّٰهَ عَلٰی كُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ۬ۙ وَّ اَنَّ اللّٰهَ قَدۡ اَحَاطَ بِكُلِّ شَیۡءٍ عِلۡمًا ﴿۱۲﴾

তিনি আল্লাহ, যিনি সাত আসমান এবং অনুরূপ যমীন সৃষ্টি করেছেন; এগুলির মাঝে তাঁর নির্দেশ অবতীর্ণ হয় যেন তোমরা জানতে পার যে, আল্লাহ সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান এবং আল্লাহর জ্ঞানতো সব কিছুকে বেষ্টন করে আছে। আল-বায়ান

আল্লাহই সাত আসমান বানিয়েছেন আর ওগুলোর মত পৃথিবীও, সবগুলোর মাঝে (অর্থাৎ সকল আসমানে আর সকল যমীনে) নেমে আসে আল্লাহর নির্দেশ যাতে তোমরা জানতে পার যে, আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান আর আল্লাহ (স্বীয়) জ্ঞানে সব কিছুকে ঘিরে রেখেছেন। তাইসিরুল

আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন সপ্ত আকাশ এবং পৃথিবীও সেই পরিমাণ। ওগুলির মধ্যে নেমে আসে তাঁর নির্দেশ; ফলে তোমরা বুঝতে পার যে, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান এবং জ্ঞানে আল্লাহ সব কিছুকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন। মুজিবুর রহমান

It is Allah who has created seven heavens and of the earth, the like of them. [His] command descends among them so you may know that Allah is over all things competent and that Allah has encompassed all things in knowledge. Sahih International

১২. আসমান এবং অনুরূপ যমীন, তাদের মধ্যে নেমে আসে তার নির্দেশ; যাতে তোমরা জানতে পার যে, আল্লাহ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান এবং জ্ঞানে আল্লাহ্‌ সবকিছু পরিবেষ্টন করে আছেন।

-

তাফসীরে জাকারিয়া

(১২) আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন সপ্ত আকাশ এবং পৃথিবীও অনুরূপ,[1] ওগুলোর মধ্যে নেমে আসে তাঁর নির্দেশ,[2] যাতে তোমরা বুঝতে পার যে, অবশ্যই আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান এবং জ্ঞানে আল্লাহ সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন। [3]

[1] أَيْ: خَلَقَ مِنَ الأَرْضِ مِثْلَهُنَّ সাত আসমানের ন্যায় সাত যমীনও আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। কেউ কেউ এর অর্থ করেছেন, সাতটি প্রদেশ। তবে এ কথা ঠিক নয়। বরং যেভাবে উপর্যুপরি সাতটি আসমান রয়েছে, অনুরূপ সাতটি যমীনও রয়েছে। এগুলোর মধ্যে দূরত্ব ও ব্যবধানও আছে এবং প্রত্যেক যমীনে আল্লাহর সৃষ্টি আবাদ রয়েছে। (ক্বুরত্ববী) বহু হাদীস দ্বারা এ কথার সমর্থনও হয়। যেমন, নবী (সাঃ) বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি যুলুম করে বিঘত পরিমাণ যমীন আত্মসাৎ করবে, কিয়ামতের দিন সাত তবক যমীনকে তার গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।’’ (মুসলিম, বাণিজ্য অধ্যায়, যুলুম করা হারাম পরিচ্ছেদ) সহীহ বুখারীর শব্দাবলী হল, (خُسِفَ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَى سَبْعِ أَرَضِينَ) ‘‘কিয়ামতের দিন তাকে সপ্ত যমীনের নীচ পর্যন্ত ধসিয়ে দেওয়া হবে। (বুখারী, মাযালিম অধ্যায়, যমীন আত্মসাৎ করার পাপ পরিচ্ছেদ) কেউ কেউ এটাও বলেন যে, প্রত্যেক যমীনে ঐ রকমই পয়গম্বর রয়েছেন, যে রকম পয়গম্বর তোমাদের যমীনে এসেছেন। যেমন, আদমের মত আদম, নূহের মত নূহ। ইবরাহীমের মত ইবরাহীম। ঈসার মত ঈসা (আলাইহিমুস সালাম)। কিন্তু এ কথা কোন সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।

[2] যেভাবে, প্রত্যেক আসমানে আল্লাহর বিধান কার্যকরী ও বলবৎ আছে, অনুরূপ প্রত্যেক যমীনে তাঁর নির্দেশ চলে। সপ্ত আকাশের মত সপ্ত পৃথিবীর পরিচালনাও তিনিই করেন।

[3] অতএব কোন জিনিস তাঁর জ্ঞানের বাইরে নয়, চাহে তা যেমনই হোক না কেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
দেখানো হচ্ছেঃ ২১ থেকে ২৫ পর্যন্ত, সর্বমোট ২৫ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2