সূরাঃ আল-মায়েদা | Al-Ma'ida | سورة المائدة - আয়াতঃ ১১৫
৫:১১৫ قَالَ اللّٰهُ اِنِّیۡ مُنَزِّلُهَا عَلَیۡکُمۡ ۚ فَمَنۡ یَّکۡفُرۡ بَعۡدُ مِنۡکُمۡ فَاِنِّیۡۤ اُعَذِّبُهٗ عَذَابًا لَّاۤ اُعَذِّبُهٗۤ اَحَدًا مِّنَ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۱۵﴾
قال الله انی منزلها علیکم ۚ فمن یکفر بعد منکم فانی اعذبهٗ عذابا لا اعذبهٗ احدا من العلمین ۱۱۵

আল্লাহ বললেন, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের প্রতি তা নাযিল করব; কিন্তু এরপর তোমাদের মধ্যে যে কুফরী করবে তাকে নিশ্চয় আমি এমন আযাব দেব, যে আযাব সৃষ্টিকুলের কাউকে দেব না।’ আল-বায়ান

আল্লাহ বললেন, আমি তোমাদের কাছে তা নাযিল করব, অতঃপর তোমাদের কেউ কুফরী করলে আমি তাকে এমনভাবে শাস্তি প্রদান করব, যে শাস্তি আমি বিশ্বজগতের কাউকে দেইনি। তাইসিরুল

আল্লাহ বললেনঃ আমি এই খাদ্য তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করব, অনন্তর তোমাদের মধ্য হতে যে এরপর অকৃতজ্ঞ হবে, আমি তাকে এমন শাস্তি দিব যে, বিশ্ববাসীদের মধ্যে ঐ শাস্তি আর কেহকেও দিবনা। মুজিবুর রহমান

Allah said, "Indeed, I will sent it down to you, but whoever disbelieves afterwards from among you - then indeed will I punish him with a punishment by which I have not punished anyone among the worlds." Sahih International

১১৫. আল্লাহ্‌ বললেন, নিশ্চয় আমি তোমাদের কাছে তা নাযিল করব; কিন্তু এর পর তোমাদের মধ্যে কেউ কুফরী করলে তাকে আমি এমন শাস্তি দেব, যে শাস্তি সৃষ্টিকুলের আর কাউকেও দেব না।(১)

(১) এ আয়াত থেকে জানা গেল যে, নেয়ামত অসাধারণ ও অনন্য হলে তার কৃতজ্ঞতার তাকীদও অসাধারণ হওয়া দরকার এবং অকৃতজ্ঞতার শাস্তিও অসাধারণ হওয়াই স্বাভাবিক। এক হাদীসে এসেছে, কুরাইশরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললঃ আপনি আপনার রবের নিকট দোআ করুন যেন তিনি আমাদের জন্য সাফা পাহাড়কে সোনায় পরিণত করে দেন, এরপর আমরা আপনার উপর ঈমান আনব। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা কি তা করবে? জবাবে তারা বললঃ হ্যাঁ।

তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোআ করলে জীবরাঈল এসে বললেনঃ আপনার প্রভূ আপনাকে সালাম দিচ্ছেন এবং বলছেনঃ যদি আপনি চান তবে তাদের জন্য তিনি সাফা পাহাড়কে সোনায় পরিণত করবেন। কিন্তু এরপর তাদের মধ্যে যদি কেউ কুফর করে তাহলে আমি তাকে এমন শাস্তি দেব, যে শাস্তি পৃথিবীর কাউকে কোনদিন দিব না, আর যদি আপনি চান তবে তাদের জন্য আমি তাওবাহ এবং রহমতের দরজা খুলে দেব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেনঃ বরং আমি চাই তাওবাহ এবং রহমতের দরজা। [মুসনাদে আহমাদঃ ১/২৪২, ২১৬৭, মুস্তাদরাকে হাকেমঃ ৫৩]

তাফসীরে জাকারিয়া

(১১৫) আল্লাহ বললেন, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের নিকট তা প্রেরণ করব, কিন্তু এরপরও তোমাদের মধ্যে কেউ অবিশ্বাস করলে তাকে এমন শাস্তি দেব, যে শাস্তি বিশ্বজগতের কাউকে দেব না।’ [1]

[1] এই খাদ্যপূর্ণ খাঞ্চা আসমান থেকে অবতীর্ণ হয়েছিল কি না, সে ব্যাপারে কোন সহীহ মারফু হাদীস বর্ণিত হয়নি। কিন্তু অধিকাংশ উলামাগণ সহ ইমাম শাওকানী ও ইমাম জারীর তাবারী (রঃ)গণের উক্তি হচ্ছে; তা আসমান থেকে অবতীর্ণ হয়েছিল। এর প্রমাণে কুরআনের এই আয়াত পেশ করেন, (إنِّي مُنَزِّلُهَا عَلَيْكُم) (নিশ্চয় আমি তোমাদের নিকট তা প্রেরণ করব)। এটা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি যা অবশ্যই সত্য। কিন্তু এটাকে আল্লাহর নিশ্চিত প্রতিশ্রুতি বলে ধরে নেওয়া সঠিক নয়, কেননা তার পরে (فَمَنْ يَّكْفُر) (কিন্তু এরপরও তোমাদের মধ্যে কেউ অবিশ্বাস করলে) শব্দ দ্বারা উক্ত প্রতিশ্রুতিকে শর্ত-সাপেক্ষ করা হয়। আর এ জন্যই অন্যান্য উলামাগণ বলেন যে, আল্লাহর নিকট এই শর্ত শোনার পর তারা বলেছিল, আমাদের এর কোন প্রয়োজন নেই, ফলে তা আর অবতীর্ণ হয়নি। ইমাম ইবনে কাসীর এ মর্মে ইমাম মুজাহিদ ও হাসান বাসরী কর্তৃক যে উক্তি বর্ণিত হয়েছে, সেই আসার (সলফদের উক্তি)গুলির সনদসমূহকে শুদ্ধ বলে মন্তব্য করেন। তারপর তিনি বলেন যে, এই আসার (উক্তি)গুলির সমর্থন এ কথা থেকেও পাওয়া যায় যে, খাঞ্চা অবতীর্ণ হওয়ার ব্যাপারটা খ্রিষ্টানদের মাঝে প্রসিদ্ধ নয় এবং তাদের কোন কিতাবেও তা উল্লেখ নেই। সুতরাং তা যদি অবতীর্ণ হত, তাহলে অবশ্যই তাদের মধ্যে তা প্রসিদ্ধ থাকা দরকার ছিল, আর সেই সাথে তাদের কিতাবেও একক অথবা বহুধাসূত্রে তা উল্লেখ থাকা প্রয়োজন ছিল।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান