সূরাঃ আল-মায়েদা | Al-Ma'ida | سورة المائدة - আয়াতঃ ৫০
৫:৫০ اَفَحُکۡمَ الۡجَاهِلِیَّۃِ یَبۡغُوۡنَ ؕ وَ مَنۡ اَحۡسَنُ مِنَ اللّٰهِ حُکۡمًا لِّقَوۡمٍ یُّوۡقِنُوۡنَ ﴿۵۰﴾
افحکم الجاهلیۃ یبغون و من احسن من الله حکما لقوم یوقنون ۵۰

তারা কি তবে জাহিলিয়্যাতের বিধান চায়? আর নিশ্চিত বিশ্বাসী কওমের জন্য বিধান প্রদানে আল্লাহর চেয়ে কে অধিক উত্তম? আল-বায়ান

তারা কি জাহিলী যুগের আইন বিধান চায়? দৃঢ় বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য আইন-বিধান প্রদানে আল্লাহ হতে কে বেশী শ্রেষ্ঠ? তাইসিরুল

তাহলে কি তারা অজ্ঞতা যুগের মীমাংসা কামনা করে? আর দৃঢ় বিশ্বাসীদের কাছে মীমাংসা কার্যে আল্লাহর চেয়ে কে উত্তম ফাইসালাকারী? মুজিবুর রহমান

Then is it the judgement of [the time of] ignorance they desire? But who is better than Allah in judgement for a people who are certain [in faith]. Sahih International

৫০. তবে কি তারা জাহেলিয়াতের বিধি-বিধান কামনা করে?(১) আর দৃঢ় বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য বিধান প্রদানে আল্লাহর চেয়ে আর কে শ্রেষ্ঠতর?

(১) জাহেলিয়াত শব্দটি ইসলামের বিপরীত শব্দ হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ইসলাম হচ্ছে পুরোপুরি জ্ঞানের পথ। কারণ, ইসলামের পথ দেখিয়েছেন আল্লাহ নিজেই। আর আল্লাহ সমস্ত বিষয়ের পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখেন। অপরদিকে ইসলামের বাইরের যে কোন পথই জাহেলিয়াতের পথ। আরবের ইসলামপূর্ব যুগকে জাহেলিয়াতের যুগ বলার কারণ হচ্ছে এই যে, সে যুগে জ্ঞান ছাড়াই নিছক ধারণা, কল্পনা, আন্দাজ, অনুমান বা মানসিক কামনা-বাসনার ভিত্তিতে মানুষেরা নিজেদের জন্য জীবনের পথ তৈরী করে নিয়েছিল। যেখানেই যে যুগেই মানুষেরা এ কর্মপদ্ধতি অবলম্বন করবে, তাকে অবশ্যই জাহেলিয়াতের কর্মপদ্ধতি বলা হবে।

মোটকথা: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার বিপরীত বিধান প্রদান করাই জাহিলিয়াত। [সা’দী] হাদীসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত ব্যক্তি হচ্ছে তিনজন। যে ব্যক্তি হারাম শরীফের মধ্যে অন্যায় কাজ করে, যে ব্যক্তি মুসলিম হওয়া সত্বেও জাহেলী যুগের রীতি-নীতি অনুসন্ধান করে এবং যে ব্যক্তি কোন অধিকার ব্যতীত কারো রক্তপাত দাবী করে। [বুখারীঃ ৬৮৮২] হাসান বসরী বলেন, যে কেউ আল্লাহর দেয়া বিধানের বিপরীত বিধান প্রদান করল সে জাহিলিয়াতের বিধান দিল। [ইবন আবি হাতিম, ইবন কাসীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৫০) তবে কি তারা প্রাগ-ইসলামী (জাহেলী) যুগের বিচার-ব্যবস্থা পেতে চায়?[1] খাঁটি বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য বিচারে আল্লাহ অপেক্ষা কে শ্রেষ্ঠতর? [2]

[1] কুরআন ও ইসলাম ব্যতীত সবই জাহেলিয়াত বা অন্ধকার। এরা কি ইসলামের আলো ও হিদায়াতকে ছেড়ে এখনও জাহেলিয়াত অনুসন্ধান করে? এখানে প্রশ্ন অস্বীকৃতি এবং ধমকের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। আর (ف) অব্যয়টি একটি ঊহ্য বাক্যের সাথে সংযোজকরূপে ব্যবহার হয়েছে; আসলে বাক্য হচ্ছে; أيعرضون عن حكمك بما أنزل الله عليك ويتولون عنه ويبتغون حكم الجاهلية অর্থাৎ, আল্লাহ তোমার উপর যা অবতীর্ণ করেছেন তার দ্বারা তোমার বিচার হতে তারা কি বিমুখ হতে চায় এবং পৃষ্ঠ-প্রদর্শন করে, আর জাহেলী যুগের বিচার-পদ্ধতি অনুসন্ধান করে? (ফাতহুল ক্বাদীর)

[2] হাদীস শরীফে এসেছে, আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেছেন; তিন ব্যক্তি আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বেশী অপছন্দনীয়; যে (মক্কার) হারামে পাপাচার করে, যে ইসলামে জাহেলী (অজ্ঞতা) যুগের চাল-চলন ও নিয়ম-কানুন অনুসন্ধান করে এবং যে অকারণে কারো নিকট থেকে খুনের দাবী করে। (বুখারী, দিয়াত অধ্যায় )

তাফসীরে আহসানুল বায়ান