সূরাঃ আলে-ইমরান | Al-i-Imran | سورة آل عمران - আয়াতঃ ১২৭
৩:১২৭ لِیَقۡطَعَ طَرَفًا مِّنَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡۤا اَوۡ یَکۡبِتَهُمۡ فَیَنۡقَلِبُوۡا خَآئِبِیۡنَ ﴿۱۲۷﴾
لیقطع طرفا من الذین کفروا او یکبتهم فینقلبوا خاىبین ۱۲۷

যাতে তিনি কাফিরদের একটি অংশকে নিশ্চি‎হ্ন করেন অথবা তাদেরকে লাঞ্ছিত করেন। ফলে তারা নিরাশ হয়ে ফিরে যাবে। আল-বায়ান

যাতে তিনি কাফিরদের দলবিশেষকে ধ্বংস করে দেন কিংবা লাঞ্ছিত করেন, ফলে তারা নিরাশ হয়ে প্রত্যাবর্তন করে। তাইসিরুল

যারা অবিশ্বাসী হয়েছে - তিনি এরূপে তাদের একাংশকে কর্তিত করেন অথবা তাদেরকে দুর্বল করেন, যাতে তারা অকৃতকার্য সহকারে ফিরে যায়। মুজিবুর রহমান

That He might cut down a section of the disbelievers or suppress them so that they turn back disappointed. Sahih International

১২৭. যাতে তিনি কাফেরদের এক অংশকে ধ্বংস করেন বা তাদেরকে লাঞ্ছিত করেন(১); ফলে তারা নিরাশ হয়ে ফিরে যায়।

(১) আল্লাহ তা'আলা উক্ত আয়াতে বলেন যে, তিনি তার বান্দাদেরকে সাহায্য করবেন দু'টি কারণের কোন একটি কারণে। এক. তিনি হত্যা, বন্দী, গণীমত, শহর বিজয় ইত্যাদির মাধ্যমে কাফেরদের এক শক্তি ও ভিত্তি ভেঙে দেবেন; ফলে মুমিনরা শক্তিশালী হবে ও কাফেররা দুর্বল হবে। কারণ ইসলামের বিরুদ্ধে তাদের মূল শক্তি হল সৈন্য, ধন-সম্পদ, অস্ত্র ও ভূ-সম্পত্তি। এসব কিছুর মধ্যে কোন কিছু যদি দুর্বল করে দেয়া যায়, তবে তাদের শক্তি কমে যাবে। দুই. কাফেররা মুসলিমদের উপর জয়ী হওয়ার জন্য আশা করবে এবং প্রচেষ্টা চালাবে, কিন্তু আল্লাহ্ তাআলা মুসলিমদেরকে বিজয়ী করবেন ফলে তারা লাঞ্ছিত ও নিরাশ হয়ে ফিরে যাবে। মূলত আল্লাহ তা'আলার সাহায্য দুটির কোন একটি হয়ে থাকে; হয় তিনি মুসলিমদেরকে কাফেরদের উপর বিজয়ী করবেন, নতুবা কাফেরদেরকে লাঞ্ছিত করবেন। আয়াতে এ দুটি দিকই উল্লেখ করা হয়েছে। [তাফসীর সা’দী]

তাফসীরে জাকারিয়া

(১২৭) এই জন্য যে, তিনি অবিশ্বাসীদের এক অংশকে নিশ্চিহ্ন অথবা লাঞ্ছিত করেন; ফলে তারা অকৃতকার্য হয়ে ফিরে যায়। [1]

[1] এখানে মহান পরাক্রমশালী ইচ্ছাময় আল্লাহর সাহায্যের ফলাফল বর্ণনা করা হচ্ছে। সূরা আনফালে (৯নং আয়াতে) ফিরিশতাদের সংখ্যা এক হাজার বলা হয়েছে। [إِذْ تَسْتَغِيثُونَ رَبَّكُمْ فَاسْتَجَابَ لَكُمْ أَنِّي مُمِدُّكُمْ بِأَلْفٍ مِنَ الْمَلائِكَةِ] ‘‘তোমরা যখন স্বীয় প্রতিপালকের নিকট ফরিয়াদ করছিলে, তখন তিনি তোমাদের ফরিয়াদ শুনে বললেন যে, আমি এক হাজার ফিরিশতা দ্বারা তোমাদের সাহায্য করব।’’ শব্দের দিকে লক্ষ্য করলে বুঝা যায় যে, আসলে ফিরিশতা এক হাজারই প্রেরণ করা হয়েছিল এবং মুসলিমদের উৎসাহ ও মনোবল বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য আরো তিন থেকে পাঁচ হাজার পর্যন্ত পাঠানোর শর্ত ভিত্তিক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। অতঃপর পরিস্থিতি অনুযায়ী মুসলিমদের সান্ত্বনার জন্যও অতিরিক্তি ফিরিশতা প্রেরণ করার প্রয়োজন মনে করা হয়নি। এই জন্যই কোন কোন মুফাসসেরের মতে এই তিন ও পাঁচ হাজার ফিরিশতা প্রেরণ করা হয়নি। কারণ, উদ্দেশ্য ছিল মুসলিমদের মনোবল বৃদ্ধি করা। তাছাড়া প্রকৃত সাহায্যকারী তো মহান আল্লাহই। তিনি সাহায্য করার জন্য ফিরিশতা অথবা অন্য কারো মুখাপেক্ষী নন। বলা বাহুল্য, তিনি মুসলিমদের সাহায্য করলে বদর যুদ্ধে মুসলিমরা ঐতিহাসিক সফলতা অর্জন করেন। কুফরী শক্তি দুর্বল হয়ে যায় এবং কাফেরদের অহংকার মাটিতে মিশে যায়। (আয়সারুত তাফাসীর)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান