সূরাঃ আলে-ইমরান | Al-i-Imran | سورة آل عمران - আয়াতঃ ১০০
৩:১০০ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنۡ تُطِیۡعُوۡا فَرِیۡقًا مِّنَ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ یَرُدُّوۡکُمۡ بَعۡدَ اِیۡمَانِکُمۡ کٰفِرِیۡنَ ﴿۱۰۰﴾
یایها الذین امنوا ان تطیعوا فریقا من الذین اوتوا الکتب یردوکم بعد ایمانکم کفرین ۱۰۰

হে মুমিনগণ, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে, তোমরা যদি তাদের একটি দলের আনুগত্য কর, তারা তোমাদের ঈমানের পর তোমাদেরকে কাফির অবস্থায় ফিরিয়ে নেবে। আল-বায়ান

হে মু’মিনগণ! তোমরা যদি কিতাবীদের মধ্য হতে কোন দলের কথা মেনে নাও, তবে তারা তোমাদের ঈমান আনার পর আবার তোমাদেরকে কাফির বানিয়ে ছাড়বে। তাইসিরুল

হে মু’মিনগণ! যাদেরকে গ্রন্থ প্রদত্ত হয়েছে, যদি তোমরা তাদের এক দলের অনুসরণ কর তাহলে তারা তোমাদেরকে তোমাদের ঈমান আনয়নের পর কাফির বানিয়ে দিবে। মুজিবুর রহমান

O you who have believed, if you obey a party of those who were given the Scripture, they would turn you back, after your belief, [to being] unbelievers. Sahih International

১০০. হে মুমিনগণ! যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে, তোমরা যদি তাদের দল বিশেষের আনুগত্য কর, তবে তারা তোমাদেরকে ঈমান আনার পর আবার কাফের বানিয়ে ছাড়বে(১)।

(১) এ আয়াতে আল্লাহ তা'আলা মুমিনদেরকে সাবধান করছেন যে, তারা যেন আহলে কিতাব তথা ইয়াহুদী ও নাসারাদের আনুগত্য না করে। কেননা তারা মুমিনদেরকে আল্লাহ তা'আলা যে নবী ও কিতাবের নেয়ামত প্রদান করেছেন সেটার হিংসায় জ্বলে যাচ্ছে কারণ তাদের অনুসরণ করলে তারা মুমিনদেরকে কাফের বানিয়ে ছাড়বে। অন্য আয়াতেও আল্লাহ তা'আলা সেটা ঘোষণা করেছেন। যেমন, “কিতাবীদের অনেকেই চায়, যদি তারা তোমাদেরকে তোমাদের ঈমান আনার পর কাফেররূপে ফিরিয়ে নিতে পারত। সত্য স্পষ্ট হওয়ার পরও তাদের নিজেদের পক্ষ থেকে বিদ্বেষবশতঃ (তারা এটা করে থাকে)” [সূরা আল-বাকারাহ ১০৯]।

কাতাদা বলেন, আয়াতের অর্থ, আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে ইয়াহুদী-নাসারাদের বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছেন যেমনটি তোমরা শুনলে, তোমাদেরকে তাদের ভ্রষ্টতা সম্পর্কেও সাবধান করেছেন, সুতরাং তোমরা কোনভাবেই তোমাদের দ্বীনের ব্যাপারে নিরাপদ ভেবো না। আর তোমাদের জানের ব্যাপারেও কল্যাণকামী মনে করো না। পক্ষেই তারা পথ ভ্রষ্ট হিংসুটে শক্র। কিভাবে তোমরা এমন এক সম্প্রদায়কে নিরাপদ মনে করতে পার যারা তাদের কিতাবের সাথে কুফর করেছে, রাসূলদের হত্যা করেছে, দ্বীনের ব্যাপারে বিভ্রান্তিতে লিপ্ত রয়েছে এবং নিজেরা অপারগ হয়ে গেছে। আল্লাহর শপথ, এরা নিঃসন্দেহে অবিশ্বাস্য ও শক্র। [তাবারী]

তাফসীরে জাকারিয়া

(১০০) হে বিশ্বাসিগণ! যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছে, তোমরা যদি তাদের দলবিশেষের আনুগত্য কর, তাহলে তারা তোমাদেরকে ঈমানের (বিশ্বাসের) পর আবার অবিশ্বাসী (কাফেরে) পরিণত করে ছাড়বে।[1]

[1] ইয়াহুদীদের চক্রান্ত ও প্রতারণা এবং তাদের পক্ষ হতে মুসলিমদের ভ্রষ্ট করার নিকৃষ্টতম প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করার পর মুসলিমদেরকে সতর্ক করা হচ্ছে যে, তোমরাও তাদের কূট-চক্রান্তের ব্যাপারে হুঁশিয়ার থাকবে। সাবধান! কুরআন তেলাঅত এবং রসূল (সাঃ)-এর বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও তোমরা যেন তাদের জালে ফেঁসে না যাও। তফসীরের বর্ণনায় এর প্রেক্ষাপট এইভাবে তুলে ধরা হয়েছে যে, আনসারের দু’টি গোত্র আউস এবং খাযরাজ কোন এক মজলিসে এক সাথে বসে আলাপ-আলোচনা করছিল। ইত্যবসরে শাস বিন ক্বাইস ইয়াহুদী তাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের পারস্পরিক এই সৌহার্দ্য দেখে জ্বলে উঠল। যারা একে অপরের কঠোর শত্রু ছিল, তারা আজ ইসলামের বর্কতে দুধে চিনির মত পরস্পর অন্তরঙ্গ বন্ধুতে পরিণত হয়েছে! সে একজন যুবককে দায়িত্ব দিল যে, তুমি তাদের মাঝে গিয়ে সেই ‘বুআষ’ যুদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দাও, যা হিজরতের পূর্বে তাদের মাঝে সংঘটিত হয়েছিল এবং সেই যুদ্ধে তারা একে অপরের বিরুদ্ধে যে বীরত্ব প্রকাশক কবিতাগুলো পড়েছিল, তা ওদেরকে শুনাও। সে যুবক গিয়ে তা-ই করল। ফলে উভয় গোত্রের পূর্বের আক্রোশ-আগুন পুনরায় জ্বলে উঠলো এবং পরস্পরকে গালাগালি করতে লাগল। এমন কি অস্ত্র ধারণের জন্য একে অপরকে ডাকাডাকি শুরু করে দিল। আপোসে যুদ্ধের জন্য প্রস্ত্তত হয়ে পড়েছিল। এমন সময় রসূল (সাঃ) উপস্থিত হয়ে তাদেরকে বুঝালেন। তারা বিরত হয়ে গেলো। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই আয়াত এবং পরের আয়াতও নাযিল হয়। (ইবনে কাসীর ও ফাতহুল ক্বাদীর ইত্যাদি)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান