৩৩ সূরাঃ আল-আহযাব | Al-Ahzab | سورة الأحزاب - আয়াতঃ ৩৪
৩৩:৩৪ وَ اذۡکُرۡنَ مَا یُتۡلٰی فِیۡ بُیُوۡتِکُنَّ مِنۡ اٰیٰتِ اللّٰهِ وَ الۡحِکۡمَۃِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ کَانَ لَطِیۡفًا خَبِیۡرًا ﴿۳۴﴾
و اذکرن ما یتلی فی بیوتکن من ایت الله و الحکمۃ ان الله کان لطیفا خبیرا ۳۴

আর তোমাদের ঘরে আল্লাহর যে, আয়াতসমূহ ও হিকমত পঠিত হয়- তা তোমরা স্মরণ রেখো। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতি সূক্ষ্মদর্শী, সম্যক অবহিত। আল-বায়ান

তোমাদের গৃহে আল্লাহর আয়াত ও হিকমত থেকে যা পাঠ করা হয় তার চর্চা কর। আল্লাহ অতি সূক্ষ্ণদর্শী, সর্ববিষয়ে খবর রাখেন। তাইসিরুল

আল্লাহর আয়াত ও জ্ঞানের কথা, যা তোমাদের গৃহে পঠিত হয়, তা তোমরা স্মরণ রাখবে; আল্লাহ অতি সূক্ষ্মদর্শী, সর্ব বিষয়ে অবহিত। মুজিবুর রহমান

And remember what is recited in your houses of the verses of Allah and wisdom. Indeed, Allah is ever Subtle and Acquainted [with all things]. Sahih International

৩৪. আর আল্লাহর আয়াত ও হিকমত থেকে যা তোমাদের ঘরে পাঠ করা হয়, তা তোমরা স্মরণ রাখবে(১); নিশ্চয় আল্লাহ্‌ অতি সুক্ষ্মদর্শী, সম্যক অবহিত।

(১) মূলে وَاذْكُرْنَ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। এর দু'টি অর্থ: ‘স্মরণ রেখো’ এবং ‘বৰ্ণনা করো’। প্রথম অর্থের দৃষ্টিতে এর তাৎপর্য এই দাঁড়ায়: হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা কখনো ভুলে যেয়ো না যে, যেখান থেকে সারা দুনিয়াকে আল্লাহর আয়াত, জ্ঞান ও প্রজ্ঞার শিক্ষা দেয়া হয় সেটিই তোমাদের আসল গৃহ। তাই তোমাদের দায়িত্ব বড়ই কঠিন। তোমাদের গৃহে যেসব বিষয় আলোচনা হয় সেসব বিষয় স্বয়ং স্মরণ রেখো —যার ফলশ্রুতি ও পরিচয় হলো এগুলোর উপর আমল করা। দ্বিতীয় অর্থটির দৃষ্টিতে এর তাৎপর্য হয়: হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা যা কিছু শোনো এবং দেখো তা লোকদের সামনে বর্ণনা করতে থাকো। কারণ রাসূলের সাথে সার্বক্ষণিক অবস্থানের কারণে এমন অনেক বিধান তোমাদের গোচরীভূত হবে যা তোমাদের ছাড়া অন্য কোন মাধ্যমে লোকদের জানা সম্ভব হবে না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে যেসব শিক্ষা প্রদান করেছেন, উম্মতের অন্যান্য লোকদের সঙ্গে সেসবের আলোচনা করা এবং তাদেরকে সেগুলো পৌছে দেয়া তাদের দায়িত্ব।

এ আয়াতে দু'টি জিনিসের কথা বলা হয়েছে। এক, আল্লাহর আয়াত, দুই, হিকমাত বা জ্ঞান ও প্রজ্ঞা। আল্লাহর আয়াত অর্থ হচ্ছে, আল্লাহর কিতাবের আয়াত। কিন্তু হিকমাত শব্দটি অত্যন্ত ব্যাপক অর্থবোধক। সকল প্রকার জ্ঞানের কথা এর অন্তর্ভুক্ত, যেগুলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লোকদেরকে শেখাতেন। আল্লাহর কিতাবের শিক্ষার ওপরও এ শব্দটি প্রযোজ্য হতে পারে। কিন্তু কেবলমাত্র তার মধ্যেই একে সীমিত করে দেবার সপক্ষে কোন প্রমাণ নেই। কুরআনের আয়াত শুনানো ছাড়াও নবী সাল্লাল্লাহ্ আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের পবিত্র জীবন ও নৈতিক চরিত্র এবং নিজের কথার মাধ্যমে যে হিকমাতের শিক্ষা দিতেন তাও অপরিহার্যভাবে এর অন্তর্ভুক্ত। [দেখুন: তাবারী, ফাতহুল কাদীর; কুরতুবী]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৩৪) আল্লাহর আয়াত ও জ্ঞানের কথা যা তোমাদের গৃহে পঠিত হয়, তা তোমরা স্মরণ রাখ।[1] নিঃসন্দেহে আল্লাহ সমস্ত গোপন রহস্য জানেন, খবর রাখেন সর্ববিষয়ের।

[1] অর্থাৎ, তার উপর আমল কর। ‘حكمة’ (জ্ঞানের কথা)র অর্থ হাদীস বা নবী (সাঃ)-এর সুন্নত। উক্ত আয়াত থেকে দলীল নিয়ে অনেকে বলেন যে, কুরআনের মত হাদীসকেও নেকীর উদ্দেশ্যে পড়া যাবে। এ ছাড়া এ আয়াতও নবী-পত্নীগণের ‘আহলে বায়ত’ হওয়ার কথা প্রমাণ করে। কারণ অহীর অবতরণ, যার বর্ণনা এই আয়াতে হয়েছে, তা নবী-পত্নীগণের গৃহেই হত; বিশেষ করে আয়েশা (রাঃ) -র গৃহে, যেমন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান